মঙ্গলবার ● ৭ জানুয়ারী ২০২০
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না করেই বিশ্বনাথে মাকুন্দা নদীর পুনঃখনন কাজ শুরু
অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না করেই বিশ্বনাথে মাকুন্দা নদীর পুনঃখনন কাজ শুরু
স্টাফ রিপোর্টার :: পূর্বের সীমানা নির্ধারণ ও নদীর তীরে গড়ে উঠা সকল প্রকারের অবৈধ স্থপনা উচ্ছেদ না করেই শুরু হয়েছে সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার ‘খাজাঞ্চী-খাপনা-মাকুন্দা-সিঙ্গুয়া’ নদীর পুনঃখনন কাজ। আর পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধীনে শুরু হওয়া পুনঃখনন কাজের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১৩ কোটি টাকা। উপজেলার রাজাগঞ্জ বাজার, বাংলাবাজার, সিঙ্গেরকাছ, বৈরাগী বাজার, টুকের বাজার ও রসুলগঞ্জ বাজার এলাকায় নদীর তীরে গড়ে উঠা কয়েক হাজার অবৈধ স্থাপনা বহাল রেখেই পুনঃখনন কাজ শুরু হওয়ায় জনমনে চলছে নানান জল্পনা-কল্পনা। তাছাড়া পুনঃখনন কাজেও অনিয়ম চলছে বলে অভিযোগ রয়েছে এলাকাবাসীর।
২৮ কিলোমিটার দৈঘ্যের নদীটি এক নামে নয়, চারটি নামে পরিচিতি পেয়েছে জনসাধারণের কাছে। সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় লামাকাজী ইউনিয়নের তিলকপুর নামক স্থান থেকে সুরমা নদী থেকে যার উৎপত্তি হয়ে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার নলুয়ার হাওরে গিয়ে শেষ হয়েছে। তবে জনশ্রুতি রয়েছে নলুয়ার হাওর নয়, নদীটির সংযোগ ছিল কুশিয়ারা নদীর সাথে। ভরাট ও অবৈধ দখলের ফলে নদীটির শেষ অংশের অস্থিত্ব আজ বিলীন হয়েছে গেছে।
জানা গেছে, এক সময় তীব্র খড়স্রোতা ছিল ‘খাজাঞ্চী বা খাপনা বা মাকুন্দা বা সিঙ্গুয়া’ নদী। কিন্তু কালের পরিবর্তে দখল আর দূষণে নদীটি বর্তমানে এক মরা খালে পরিণত হয়েছে। তাই এখন বর্ষাকালেও নদীতে তেমন স্রোত থাকে না। আর শুকনো মৌশুমে নদীর অনেক স্থানে যেমন তলদেশ ভেঁসে উঠে, তেমনি আবার অনেক স্থানে হাটুজল থাকে। ফলে পানির অভাবে যেমনি কমছে মাছের আবাসস্থল, তেমনি পানির অভাবে নদী তীরের জমিগুলোতে চাষাবাদ করা থেকে বি ত থাকতে হচ্ছে কৃষকদেরকে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিশ্বনাথ-ছাতক-জগন্নাথপুর উপজেলার এলাকা দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীটির তীর অবৈধভাবে দখল করে ‘রাজাগঞ্জ বাজার, বাংলাবাজার, সিঙ্গেরকাছ, বৈরাগী বাজার, টুকের বাজার ও রসুলগঞ্জ বাজার’র বিভিন্ন স্থানে প্রভাবশালী ও ভূমিখেকোরা নির্মাণ করেছেন দু’তলা-তিনতলা স্থায়ী দালানসহ কয়েক হাজার অবৈধ স্থাপনা। দখলের পরও নদীর উৎপত্তি অংশের অস্থিত্ব দেখা গেলেও শেষের অংশ অবৈধ দখলের কারণে একে বারেই বিলীন হয়ে গেছে। সারাদেশে নদীর তীরের বৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম সরকার চালিয়ে গেলেও বিশ্বনাথে এখনও তা শুরু হয়নি। যার ফলে বাসিয়া-খাজাঞ্চী-খাপনা-মাকুন্দাসহ সকল নদীর তীরের অবৈধ স্থাপনা বহাল রয়েছে। এমনকি অবৈধ দখলের কারণে উপজেলার অনেক নদী একে বারেই বিলীন হয়ে গেছে।
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি প্রায় ১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধিনে ২৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে ‘খাজাঞ্চী-খাপনা-মাকুন্দা-সিঙ্গুয়া’ নদীকে দুটি অংশে ভাগ করে টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্নের পর দুই অংশের পুনঃখনন কাজের উদ্বোধন করেছেন বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম নুনু মিয়া। সুরমা নদী থেকে ‘খাজাঞ্চী-খাপনা-মাকুন্দা-সিঙ্গুয়া’ নদীর উৎপত্তিস্থল হইতে পুনঃখনন শুরু হয়ে বিশ্বনাথ-ছাতক-জগন্নাথপুর উপজেলার সীমানা পর্যন্ত পুনঃখনন সম্পন্ন করা হবে। টেন্ডারে নদীর প্রথম অংশ থেকে ১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত পুনঃখননের কাজ পান যৌথভাবে ‘ইরশাদ এন্টার প্রাইজ ও এসএএসআই এন্টারপ্রাইজ’ নামের দুটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এবং দ্বিতীয় অংশের ১৩ কিলোমিটার পুনঃখননের কাজ পান মেসার্স পূবালী এন্টার প্রাইজ নামের আরেকটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, নদীর দুই অংশের পুুনঃখনন কাজ শুরু হলেও অংশগুলোতে থাকা অবৈধ স্থাপনা এখন উচ্ছেদ করা হয় নি। এমনকি এসকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করার উদ্যোগ গ্রহনেরও কোন প্রক্রিয়া চলতে বলে জানা যায়নি। আর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ না করার ফলে তা পুনঃখনন কাজে বড় ধরণের বাঁধা হয়ে দাঁড়াবে বলে আশংখা এলাকাবাসীর। আর এতে করে সঠিক ভাবে নদী পুনঃখননের কাজ সম্পন্ন হবে না বলেও অভিযোগ তাদের।
জানতে চাইলে সিলেটের পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসও আল-আমিন সরকার বলেন, কাজ শুরুর আগে জুন মাসের প্রথম দিকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করেছেন।
বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম নুনু মিয়া বলেন, নদীর পুনঃখনন কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন করা হবে। আর অবৈধ স্থাপনাগুলো উচ্ছেদ করার ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সংশ্লিস্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
বিশ্বনাথে দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত-১০
বিশ্বনাথ :: সিলেটের বিশ্বনাথে বাড়ির রাস্তা নির্মাণ নিয়ে দু-পক্ষের সংঘর্ষে অনন্ত ১০জন আহত হয়েছেন। আজ ৭ জানুয়ারী মঙ্গলবার সকালে উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের নরসিংপুর গ্রামের সজ্জাদ আলী ও আজির উদ্দিন লোকজনের মধ্যে এঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন-আজির উদ্দিন, মহিব আলী, কামরুল ইসলাম, লায়েক আহমদ, শহিদ মিয়া, ইব্রাহিম আলী, লুৎফুর রহমান, হারুন মিয়া। বাকি আহতদের তাৎক্ষনিক নাম জানাযায়নি। তবে এরই মধ্যে গুরুতর আহতদের সিলেট ওসমানী হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, উপজেলার নরসিংপুর গ্রামের আজির উদ্দিন ও সজ্জাদ মিয়ার মধ্যে রাস্তা নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। মঙ্গলবার ওই রাস্তা নিয়ে উভয় পক্ষের লোকজনের মধ্যে কথাকাটাটি হয়। এরই এক পর্যায়ে উভয় পক্ষ দেশীয় লাঠি-সোটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে উভয় পক্ষের অনন্ত ১০জন আহত হয়েছেন। পরে স্থানীয় লোকজন ছুটে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন।সংঘর্ষের সত্যতা স্বীকার করে বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) শামীম মুসা বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।