বুধবার ● ৮ জানুয়ারী ২০২০
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » সিলেটে বেড়েছে গরম কাপড় ও লেপ-তোষকের বিক্রি
সিলেটে বেড়েছে গরম কাপড় ও লেপ-তোষকের বিক্রি
হাফিজুল ইসলাম লস্কর, সিলেট প্রতিনিধি :: সিলেটে ক্রমশই বাড়ছে শীত। পৌষের অন্তিম লগ্নে আর মাঘ শুরুর আগেই ঝেঁকে বসেছে শীত। শীতের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে কুয়াশা। প্রত্যহ সন্ধ্যা হলেই পড়ছে হালকা কুয়াশা। বিশেষ করে সিলেটের গ্রামীন জনপদ গুলো হালকা কুয়াশা ও মাঝারি ধরনের কুয়াশার চাঁদরে ঢাকা পরে। একই সাথে গত ক‘দিন ধরে হিমালয় থেকে বয়ে আসা শৈত্যপ্রবাহের কারণে ক্রমশই যেনো শীতের প্রকোপ বেড়েই চলেছে। দিনের বেলা প্রখর রোদের কারনে শীতের পরিমাণ কম থাকলেও সন্ধ্যার পর থেকে সকাল পর্যন্ত শীতের দাপট একটু বেশিই অনুভূত হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ক’দিন ধরে যে পরিমাণ শীত অনুভূত হচ্ছে তাকে পর্যাপ্ত শীতই বলা যায়। এদিকে, শীত একদিকে যেমন প্রশান্তির ঘুমের জন্য উপযোগী ঋতু অন্যদিকে শীতকে মোকাবেলা করতে প্রয়োজন হয় গরম কাপড়ের। তাইতো শীত জেঁকে বসার আগেই এখানকার সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ গরম কাপড়, লেপ ও তোষক ক্রয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে দেখা যায়, শীতকে সামনে রেখে লেপ ও তোষক তৈরীতে ব্যস্ত সময় পার করছেন এখানকার লেপ-তোষক তৈরীর কারিগরা।
কারিগরা জানান, শীতের সময়টুকু বাদ দিয়ে অন্য সময়ে বিশেষ কোন অর্ডার ছাড়া তাদের তেমন ব্যস্ততা থাকে না। বছরের ৭ থেকে ৮ মাস অনেকটা অলস সময় কাটাতে হয়। তাই অগ্রাহায়ন- পৌষ মাসের অপেক্ষায় থাকতে হয় তাদের।
কারিগররা আরো জানান, অগ্রাহায়ন- পৌষ মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে শুরু হয় লেপ ও তোষক তৈরীর কাজ। আর পৌষ ও মাঘ মাস থেকে যেন দম ফেলার সময় থাকে না। সময় যতো গড়াচ্ছে শীত ততো বেশী পড়ছে আর শীতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অর্ডার নিলেও সঠিক সময়ে তা সরবারহ দিতে তারা হিমশিম খাচ্ছেন। অপরদিকে, শীতের তীব্রতা যতো বাড়ছে জমে উঠতে শুরু করেছে গরম কাপড়ের বেচাকেনা। শীতের মোকাবেলায় গরম কাপড় কিনতে শপিংমল, হাট-বাজারের ফুটপাতের দোকানে ভিড় করছেন ক্রেতারা। তবে প্রতেকটা বাজারেই পুরনো কাপড়ের ক্রেতাদের সংখ্যাই একটু বেশি। স্বল্প মূল্যে ভাল মানের কাপড় কিনতে পাওয়া যায় বলে এখানকার দিনমজুর থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার অধিকাংশ মানুষ ফুটপাত থেকেই শীতের পোশাক কিনছেন।
সিলেটের ফুটপাতে গরম কাপড় ক্রয় করতে আসা এক ক্রেতা বলেন, পৌষের প্রথম থেকেই শীত পড়েছে। কিন্তু শেষ সময়ে এসে হঠাৎ করে শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় সন্ধ্যার পর স্বাভাবিক পোশাকে ঘরের বাহিরে বের হওয়া যাচ্ছেনা। তাই শহরে গরম কাপড় কিনতে এসেছি। স্বল্পমূল্যে দেখেশুনে অনেক ভালো মানের কাপড় কেনা যায় বলে ফুটপাতের দোকানগুলোতে গরম কাপড় ক্রয় করছি। তবে অন্য বছরের চেয়ে বিক্রেতারা এবার কাপড়ের দাম একটু বেশি হাকছেন।
ফুটপাতের কাপড় বিক্রেতারা মোবারক জানান, বাজারে নতুন কাপড়ের চেয়ে বিদেশি পুরনো কাপড়ের চাহিদা একটু বেশি। ওই কাপড় কম দামে এবং দেখতে মানসম্মত, সুন্দর ও টেকসই হওয়ায় ক্রেতারা এসব কাপড়ই বেশি কিনছেন। মহাজনরা অন্য বছরের চেয়ে এবার দাম একটু বেশি নিচ্ছেন বলে তাদেরও একটু বেশি দরে কাপড় বিক্রি করতে হচ্ছে। কোর্ট প্রাঙ্গনের সামনে জয়নাল নামের এক কাপড় বিক্রেতা জানান, গরম কাপড়ের দাম অন্য বছরের চেয়ে একটু বেশি হওয়ায় ক্রেতাদের সাথে দর-কষাকষি করে কাপড় বিক্রি করতে হচ্ছে। বেচাকেনা খুব বেশি না হলেও অনেক্ষণ দর-কষাকষি করে কাপড় বিক্রি করতে হচ্ছে বলে ক্রেতাদের ভিড় লেগেই থাকছে। পুরোদমে বেচাকেনা জমে উঠতে আরো কিছুটা সময় অপক্ষো করতে হবে তাদের।