বৃহস্পতিবার ● ১৬ জানুয়ারী ২০২০
প্রথম পাতা » ঢাকা » জাতীয় সংসদে ধর্ষকদের ‘ক্রসফায়ারে মেরে ফেলার দাবি’ ভয়ংকর : কমরেড সাইফুল হক
জাতীয় সংসদে ধর্ষকদের ‘ক্রসফায়ারে মেরে ফেলার দাবি’ ভয়ংকর : কমরেড সাইফুল হক
ঢাকা :: বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাইফুল হক আজ ১৬ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে জাতীয় সংসদে ধর্ষণকারীদের ‘ক্রসফায়ারে’ মেরে ফেলার প্রস্তাবনাকে ‘ভয়ংকর ও জাতীয় সংসদের জন্য চরম অবমাননাকর’ হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন এবং আইন প্রণেতাদের বেআইনী প্রস্তাবনায় তীব্র ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি সংসদ সদস্যদের এহেন প্রস্তাবে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন তারা কি দেশকে জঙ্গলের শাসনে ঠেলে দিতে চায়। তিনি বলেন এই ধরনের দাবি সরকারের কথিত আইনের শাসনের পরিপন্থী এবং গোটা দেশকে নৈরাজ্যের দিক নিয়ে যাবার প্রস্তাবের সামিল। তিনি বলেন, ধর্ষক, খুনীসহ যেকোন অপরাধেরই প্রচলিত আইনে অপরাধ অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান রয়েছে। প্রয়োজনে এসব অপরাধের বিচার প্রক্রিয়াকে আরো দ্রুত নিস্পন্ন করা যেতে পারে। কিন্তু কোন সভ্য, গণতান্ত্রিক ও আধুনিক রাষ্ট্র তার কোন নাগরিককে বিচারের প্রক্রিয়া বাদ দিয়ে ‘ক্রসফায়ার’ ‘এনকাউন্টার’ বা ‘বন্দুকযুদ্ধের’ নামে হত্যা করতে পারে না। এই ধরনের বিচার বহির্ভূত হত্যার অনুমতি দিলে আইন-আদালত-সংবিধান-পার্লামেন্ট প্রভৃতি আইনী ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের আর কোন প্রাসঙ্গিকতা বা প্রয়োজন থাকে না। তিনি সংসদ সদস্যদের ‘ক্রসফায়ারে’ মেরে ফেলার দাবি সম্বলিত যাবতীয় বক্তব্যকে এক্সপাঞ্জ করার জন্য সংসদের স্পীকারের প্রতি আহ্বান জানান। এই ধরনের বক্তব্য সংসদের মত সর্বোচ্চ আইনী প্রতিষ্ঠানের কার্যবিবরণীেেত থাকার কোন সুযোগ নেই।
বিবৃতিতে তিনি উল্লেখ করেন সাম্প্রতিক সময়ে মাদক নির্মুলে চার শতাখিধক ব্যক্তিকে ক্রসফায়ারে হত্যা করা হয়েছে; কিন্তু তাতে মাদক ও মাদকের ব্যবসা বন্ধ হয়নি, মাদক নির্মূল হয়নি।
তিনি বলেন, উপর থেকে নীচ পর্যন্ত রাষ্ট্র ও সমাজের গভীর ব্যাধি, রাষ্ট্রীয় প্রশাসন ও বিচার ব্যবস্থার অকার্যকারীতা, ধর্ষক ও খুনীদের প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক ছত্রছায়া, মূল্যবোধের চরম অবক্ষয়, হতাশা প্রভৃতি নানা কারণে ধর্ষণের মত অপরাধ বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। এর টোটকা কোন সমাধান নেই। সামগ্রিক পদক্ষেপের মাধ্যমেই দেশকে এইসব অপরাধ মুক্ত হতে হবে।
তিনি হত্যা, ধর্ষণ, অপহরণের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধও জোরদার করার আহ্বান জানান।