মঙ্গলবার ● ২৬ জানুয়ারী ২০১৬
প্রথম পাতা » গাজিপুর » গাজীপুরে বয়লার বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৭, মালিকসহ ৩ জনের নামে মামলা
গাজীপুরে বয়লার বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৭, মালিকসহ ৩ জনের নামে মামলা
মুহাম্মদ আতিকুর রহমান আতিক, গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি :: গাজীপুরের পূবাইল এলাকায় স্মার্ট মেটাল অ্যান্ড কেমিক্যাল লিমিটেডে টায়ার থেকে তেল তৈরি কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণের ঘটনায় দগ্ধ আরো একজনের মৃত্যু হয়েছে৷ এ নিয়ে ওই কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৭ জনে৷
তিনি ২৬ জানুয়ারি মঙ্গলবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতলে চিকিত্সাধীন অবস্থায় মারা যান৷
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মোজাম্মেল হোসেন আমাদের গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি মুহাম্মদ আতিকুর রহমান আতিককে জানান, সকাল ৭টার দিকে কামাল হোসেন (৪৯) মৃত্যুবরণ করেন৷
জানা গেছে, তিনি স্মার্ট মেটাল অ্যান্ড কেমিক্যাল লিমিটেড কারখানার সুপারভাইজার ছিলেন এবং তিনি নরসিংদীর ঘোড়াশাল এলাকার মৃত ইউনুছ আলীর ছেলে৷
এদিকে এ কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনায় জয়দেবপুর থানার পূবাইল পুলিশ ক্যাম্পের এএসআই গোলাম সারোয়ার বাদী হয়ে কারখানার মালিকসহ তিনজনের নামে এবং আরো কয়েক অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে ২৫ জানুয়ারি সোমবার জয়দেবপুর থানায় মামলা দায়ের করেছেন৷
মামলার আসামিরা হলো- কারখানা মালিক গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বসুগাঁও পশ্চিমপাড়া এলাকার মৃত ইছহাক হাওলাদারের ছেলে মো. ইমান উদ্দিন (৪৭), কারখানার ম্যানেজার মো. শাহীন (৩৫) ও জমির মালিক গাজীপুর সদর উপজেলার বড় কয়ের এলাকার দুদু বেপারির ছেলে বাছেদ বেপারী (৬৫)৷
বাদী মামলায় উলেস্নখ করেন, কারখানার মালিকসহ ওই তিনজন এবং অজ্ঞাত কয়েক আসামি পরস্পর যোগসাজসে সরকারি অনুমোদন ব্যতীত এবং সরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান কর্তৃক পরীক্ষা নিরীক্ষা ব্যতীত ও আসামিদের অভিজ্ঞতা ছাড়া যে কোনো সময় বিস্ফোরণ ঘটবে ও প্রাণহানি ঘটবে জেনেও পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে শ্রমিকদের পুরাতন টায়ার গলিয়ে তেল জাতীয় পদার্থ উত্পাদন করার মত ঝুঁকিপূর্ণ কাজে উত্সাহ দিয়ে নিজ উদ্যোগে কাজ করাচ্ছিল৷
জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার রেজাউল হাসান আমাদের গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি মুহাম্মদ আতিকুর রহমান আতিককে জানান, মামলায় কারখানার মালিক বসুগাঁও পশ্চিমপাড়ার মৃত ইছহাক হাওলাদারের ছেলে মো. ঈমান উদ্দিনকে প্রধান আসামি ছাড়া আরও দুই জনকে আসামি করা হয়েছে৷ তারা হলেন- কারখানার ম্যানেজার মো. শাহীন এবং জমির মালিক পূবাইলের বড় কয়ের এলাকার দুদু বেপারীর ছেলে বাছেদ বেপারী৷ আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে৷
এ ঘটনায় নিহতরা হলেন- খুলনার দাকোপ উপজেলার নলিয়ান গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে শফিকুল ইসলাম (২১), মাদারীপুর সদরের খামারবাড়ি এলাকার সোবহান তালুকদারের ছেলে আলহাজ (২৩), স্থানীয় বারইবাড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা সিদ্দিকা জেবুন্নেসা (৩০)৷ তিনি নেত্রকোনা জেলার মদন উপজেলার চানগাঁও গ্রামের দিলোয়ার হোসেনের স্ত্রী৷ এছাড়া কাখানার নিরাত্তাকর্মী স্থানীয় বসুগাঁও এলাকার আব্দুল মান্নানের ছেলে সেলিম মোলস্না (৪৫), মাদারীপুরের ডাসার থানার ভাগুরিয়া এলাকার আ. রাজ্জাকের ছেলে কাওসার বিশ্বাস (৩৪) এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রবিবার সকালে মারা যান কারখানার সুপারভাইজার আব্দুল কাদের (৫৫) এবং সুপারভাইজার কামাল হোসেন (৪৯)৷
উলেস্নখ্য, ২৩ জানুয়ারি শনিবার বিকেলে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের পূবাইলের স্মার্ট মেটাল অ্যান্ড ক্যামিকেল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে৷ বিস্ফোরণে টিনসেটের ওই কারখানার চাল ধসে পড়ে এবং আগুন ধরে যায়৷ এ সময় কারখানার পাশ্ববর্তী জয়দেবপুর-পূবাইল সড়কে দিয়ে যাওয়ার সময় অটোরিকশা যাত্রী স্কুল শিক্ষিকাসহ ৫ জন অগি্নদগ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হয৷ অগি্নদদগ্ধ হয় আরো ৩ জন৷ টঙ্গী ও জয়দেবপুর ফায়ার সার্ভিসের ৬ কর্মীরা প্রায় দেড় ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে৷
এদিকে এ ঘটনায় অগি্নদগ্ধ সুপারভাইজার আব্দুল কাদের রবিবার এবং সুপারভাইজার কামাল হোসেন মঙ্গলবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতলে চিকিত্সাধীন অবস্থায় মারা যান৷
আপলোড : ২৬ জানুয়ারী ২০১৬ : বাংলাদেশ : সময়: রাত ৯.১০ মিঃ