বৃহস্পতিবার ● ২৩ জানুয়ারী ২০২০
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » মানবিক বাংলাদেশ গড়তে প্রকৌশলীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে : পরিকল্পনা মন্ত্রী
মানবিক বাংলাদেশ গড়তে প্রকৌশলীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে : পরিকল্পনা মন্ত্রী
আমির হামজা, স্টাফ রিপোর্টার :: সরকারের পরিকল্পনা মন্ত্রী এম.এ. মান্নান, এমপি বলেছেন, “জাতির ইতিহাসে প্রথমবারের মত আমরা আমাদের কর্তৃত্ব আমাদের হাতে পেয়েছি। দেশটাকে আমাদের মত করেই গড়ে তোলার সুযোগ পেয়েছি। অবকাঠামোগত উন্নয়ন আমরা যদি এখন না করি তবে পরবর্তী প্রজন্ম ঠিকই করবে। কিন্তু দাস জাতি কোন মহৎ কাজ করতে পারবে না। আমাদের এখন উন্নত জাতি তৈরি করতে হবে। গত ১৫ বছরে দেশের মানুষের জীবনমানে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। অবকাঠামোগত, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবাসহ সবক্ষেত্রেই আমাদের দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদেরকে একটি আত্মমর্যাদাসম্পন্ন জাতি হিসেবে তৈরি করার মিশনে নেমেছেন। আমাদের শিক্ষার্থীরা দেশের অগ্রগামী সৈনিক। তাদের হাতেই আধুনিক, বিজ্ঞানমনস্ক ও মানবিক বাংলাদেশ গড়ে উঠবে। এক্ষেত্রে প্রকৌশলীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।” তিনি বলেন, “চুয়েট অত্যন্ত সুন্দর ক্যাম্পাস। দারুণ সাজানো-গোছানো। শিক্ষার চমৎকার পরিবেশ। একে খান পারিবার যেভাবে আধুনিক স্থাপত্যশৈলীর মাধ্যমে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভবন তৈরি করে দিচ্ছে সেটা অভূতপূর্ব। তাদের এসব উদ্যোগ প্রশংসনীয় ও অনুকরণীয়।”তিনি ২৩ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার বিকালে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)-এ চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী শিল্প পরিবার এ.কে. খান ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে এবং চুয়েটের গবেষণা ও সম্প্রসারণ দপ্তরের সহযোগিতায় নবনির্মিত আবাসিক ছাত্রী হল ‘শামসেন নাহার খান হল’-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। চুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলমের সভাপতিত্বে শামসেন নাহার খান হল প্রাঙ্গণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ রেলপথ বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সংসদ সদস্য এবি.এম ফজলে করিম চৌধুরী, এমপি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সম্মানিত অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খান, এমপি, কম্পট্রোলার এন্ড অডিটর জেনারেল অফ বাংলাদেশ মোহাম্মদ মুসলিম উদ্দিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)-এর চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো. জহিরুল আলম দোভাষ এবং এ.কে. ফাউন্ডেশনের সম্মানিত ট্রাস্টি সেক্রেটারি সালাহউদ্দিন কাসেম খান। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. সুদীপ কুমার পাল। নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এটিএম শাহজাহান এবং মানবিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নাহিদা সুলতানার যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন এ.কে. খান ফাউন্ডেশনের ট্রাস্টি জনাব এম. জিয়াউদ্দিন খান, ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মশিউল হক, শামসেন নাহার খান হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সামসুল আরেফিন ও সুফিয়া কামাল হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. ফারজানা রহমান জুথী। অনুষ্ঠানের শুরুতেই এ.কে. খান ও শামসেন নাহার খানের জীবনী তুলে ধরেন শামসেন নাহার খান হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আশরাফুল জান্নাত ও ফাহমিদা হামিদ। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সংসদ সদস্য এ.বি.এম. ফজলে করিম চৌধুরী, এমপি বলেন, ২০২২ সালের মধ্যে চট্টগ্রাম শহর থেকে রেললাইন চুয়েট হয়ে কাপ্তাই চলে যাবে। এছাড়া চুয়েট ক্যাম্পাসকে ঘিরে সিলিকন ভ্যালির আদলে একটা আইটি ভিলেজ গড়ে তোলার প্রচেষ্টা চলছে। আমার পক্ষ থেকে সব ধরণের সহযোগিতা থাকবে। চুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, আজ থেকে চুয়েটের মেয়েদের আবাসিক হলে আসন সঙ্কট থাকবে না। শিক্ষাবান্ধব বর্তমান সরকারের গতিশীল ও বিচক্ষণ নেতৃত্বের ফলে দেশে নারীদের উচ্চশিক্ষা ও গবেষণায় ব্যাপক আগ্রহের সঞ্চার হয়েছে। চুয়েটের আহ্বানে সাড়া দিয়ে এরইমধ্যে চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী শিল্প পরিবার এ.কে. খান গ্রুপের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এ.কে. খান ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে দৃষ্টিনন্দন একটি ছাত্রী হল নির্মিত হয়েছে। এই মহতী উদ্যোগের জন্য এ.কে.খান ফাউন্ডেশনের সম্মানিত সকল ট্রাস্টিসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি চুয়েট পরিবারের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। পরে চুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলর প্রধান অতিথির হাতে সম্মাননা স্মারক প্রদান করেন।
উল্লেখ্য, প্রায় ১৮ কোটি ব্যয়ে এক লক্ষ বর্গফুট আয়তনের ৬ তলা বিশিষ্ট (বেইসমেন্টসহ) চারদিকে সবুজ ঘাসে ঘেরা হলটি যেন স্থাপত্যশৈলীর এক অপূর্ব নিদর্শন। সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও দৃষ্টিনন্দন স্থাপত্যশৈলীর প্রয়োগে নির্মিত হলটিতে প্রায় ৫০০ জন ছাত্রীর আবাসনের সুবিধা রয়েছে। অত্যাধুনিক ও পরিবেশবান্ধব স্থাপত্যশৈলী ও প্রযুক্তিতে নির্মিত এই আবাসিক ছাত্রী হলটির নকশা করেছেন চুয়েটের স্থাপত্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক স্থপতি বিপ্লব কান্তি বিশ্বাস এবং স্থপতি সজীব পাল।