শনিবার ● ১ ফেব্রুয়ারী ২০২০
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » বাফুফে’র ভুলে ঝিনাইদহে পন্ড হয়ে গেল বঙ্গবন্ধু ফুটবল চ্যাম্পিয়নশীপ
বাফুফে’র ভুলে ঝিনাইদহে পন্ড হয়ে গেল বঙ্গবন্ধু ফুটবল চ্যাম্পিয়নশীপ
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:: বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের দেওয়া ভুল ফিকশ্চারের কারণে ঝিনাইদহে পন্ড হয়ে গেছে বঙ্গবন্ধু জাতীয় ফুটবল চ্যাম্পিয়নশীপ’র তৃতীয় রাউন্ডের খেলা। আজ শনিবার বিকেলে ঝিনাইদহের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান স্টেডিয়ামে খুলনা জেলা ফুটবল এসোসিয়েশন খোলোয়াড়রা মাঠে নামে। সময় গড়িয়ে গেলে ঝিনাইদহ জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের কোন খেলোয়াড় মাঠে আসেনি। অপরদিকে খুলনা জেলা স্টেডিয়ামে বিকেল থেকে অপেক্ষা করে কোন খেলোয়াড় না থাকায় সেখান থেকেও জেলা ফিরতে হয় ঝিনাইদহ জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের খেলোয়াড়দের। খুলনা দলের কাছে বাফুফের ফিকশ্চারে দেখা গেছে শনিবার ঝিনাইদহ জেলা স্টেডিয়ামে ও ঝিনাইদহ দলের কাছে দেওয়া ফিকশ্চারে খুলনা জেলা স্টেডিয়ামে খেলা অনুষ্ঠিত হবে। যে কারণে খুলনা ফুটবল এসোসিয়েশন খোলোয়াড়রা ঝিনাইদহে ও ঝিনাইদহ জেলা ফুটবল এসোসিয়েশনের খেলোয়াড়রা খুলনায় অবস্থান করে। এ বিষয়ে ঝিনাইদহ জেলা স্টেডিয়ামে উপস্থিত বাফুফের ম্যাচ কমিশনার তৈয়বুর রহমান বাবু কোন মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
আদম ব্যবসায়ী খপ্পরে পড়ে সর্বশান্ত ১৫ টি পরিবার
জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ :: স্বপ্ন ছিল বিদেশ গিয়ে অন্যদের মত চাকরি করে স্বাবলম্বী হয়ে কিনবে গাড়ি, গড়বে বাড়ি। সন্তানদের লেখাপড়া শিখিয়ে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করে মানুষের মত মানুষ করে গড়ে তুলবে এমন আশায় বুক বেধে ছিল ঝিনাইদরে হরিনাকুন্ডু উপজেলার চাদপুর গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে আ্দুল জব্বার ও একই গ্রামের রুহুল আমিনের ছেলে মামুন নামের দুই যুবক। কিন্তু তাদের সে আশা আজ ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার গান্না ইউনিয়নের কুঠি দূর্গাপুর গ্রামের আদম ব্যাবসায়ী মহিউদ্দিন ও তার ছেলে রহিম এর খপ্পরে পড়ে তারা এখনও নিখোঁজ রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলার হরিনাকুন্ডু উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে আব্দুল জব্বার ও একই গ্রামের রুহুল আমিনের ছেলে মামুন এক বছর পূর্বে মালয়েশিয়ায় যাওয়ার জন্য সহায় সম্বল বিক্রি করে নগদ ৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা তুলে দেয় আদম ব্যবসায়ী মহিউদ্দিনের হাতে। এর পর তারা ওই দুইজনকে মালয়েশিয়ায় পাঠায়। পাঠানোর পর দালাল মহিউদ্দিন এর ছেলে মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত রহিমের খপ্পরে পড়ে ভুক্তভোগি আব্দুল জব্বার ও মামুন। প্রথমে রহিম ওই দেশে নিয়ে মামুন ও জব্বারকে একটি কাজ দেয়। তারপর তাদের কাজের উপার্জনকৃত অর্থ থেকে কমিশন নেয় সে। এভাবেই প্রায় ১ বছর যাবৎ কমিশন নিতে থাকে। এক পর্যায়ে তারা কমিশন দিতে অপরাগতা জানালে দালাল রহিম তাদের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে পাসপোর্ট কেড়ে নেয়। তখন তারা নিরুপায় হয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ে। পরে জীবন বাচাতে ক্ষুধার তাড়নায় কাজের সন্ধানে দিকবিদিক ছোটাছুটি করতে থাকে আব্দুল জব্বার ও মামুন। তারা তাদের জীবনের অসহনীয় ঘটনাবলী তুলে ধরে বাড়িতে স্বজনদেরকে জানিয়ে দেয় মোবাইল ফোনে। শুরু হয় পরিবারের মাঝে আহাজারি। এক পর্যায়ে স্বজনরা আদম বেপারি মহিউদ্দিনের বাড়িতে গিয়ে ভুক্তভোগিরা তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার কথা বলে। এ নিয়ে এলাকায় দফায় দফায় শালিশি বৈঠক বসে। সেখান থেকে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যাক্তিরা আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেয় তাদেরকে যত দ্রুত সম্ভব দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে এবং দুটি পরিবারকে ক্ষতিপূরণ বাবদ ৬ লক্ষ টাকা ফেরত দিতে হবে। বিষয়টি উভয়পক্ষই লিখিত ভাবে গ্রহণ করে। কিন্তু নিদ্দিষ্ট সময় অতিবাহিত হলেও অদ্যবদি তাদের কোন টাকা ফেরত দেওয়া হয়নি পাশাপাশি বিদেশ থাকা আব্দুল জব্বার ও মামুনকে ফেরত আনা হয়নি। স্বজনরা অভিযোগ করেন, চার মাস যাবৎ ধরে আব্দুল জব্বার ও মামুনের কোন সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। তারা মরে গেছে না বেচে আছে তাও বোঝা যাচ্ছে না। এ ঘটনায় দুটি পরিবারের মাঝে চলছে আহাজারি। পরবর্তীতে ভুক্তভোগিরা প্রশাসনসহ বিভিন্ন জায়গায় ধর্না ধরেও কোন সুবিচার পাচ্ছে না। এছাড়াও আদম ব্যবসায়ী মহিউদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে সে বিভিন্ন সময় প্রায় ১৫ জনকে বিদেশ পাঠানোর নামে তাদের সহায় সম্বল বিক্রি করে প্রায় অর্ধ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এ ধরণের অপকর্ম করেও বহাল তবিয়তে ঘুরছে আদম ব্যাপারী মহিউদ্দিন। বর্তমানে ওই সকল পরিবার মানবেতর জীবন যাপন করছে। তারা আদম ব্যবসায়ী মহিউদ্দিন ও তার ছেলে রহিমের শাস্তি দাবি করেছেন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত আদম ব্যবসায়ী মহিউদ্দিনের সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমি এ পর্যন্ত অনেককেই বিদেশ পাঠিয়েছি। আমার ছেলে রহিম মালয়েশিয়া আছে। সেখানে সে অনেকের কাজ দিয়েছে। এর আগে কখনও এরকম সমস্যায় হয়নি। তবে আব্দুল জব্বার ও মামুনের বিষয়ে একটু সমস্যা হয়েছে। সমাধানের জন্য আমি চেষ্টা করছি। তারা কোথায় আছে কিভাবে আছে এখনও জানা যায়নি। আশা করি মালয়েশিয়া থাকা আমার ছেলে রহিমের মাধ্যমে দ্রুতই তাদের খোজ খবর নিয়ে দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে। এই ব্যাপারে ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি মঈন উদ্দিন বলেন, এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তপূর্বক দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।