শনিবার ● ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২০
প্রথম পাতা » ময়মনসিংহ » ঈশ্বরগঞ্জে নিখোঁজের ২০ দিন পর টয়লেট থেকে ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার
ঈশ্বরগঞ্জে নিখোঁজের ২০ দিন পর টয়লেট থেকে ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি :: ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা থেকে নিখোঁজের ২০ দিন পর পুরনো টয়লেট থেকে ব্যবসায়ী হেলাল উদ্দিন (৩৫)’র মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত হেলাল উদ্দিন ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার বড়হিত ইউনিয়নের মোঃ হাসিম উদ্দিনের ছেলে। তিনি উপজেলার উচাখিলা বাজারে চুন ও তামাক পাতা বিক্রির ব্যবসা করতেন।
আজ শনিবার ৮ ফেব্রুয়ারি সকালে ‘হেলাল উদ্দিনের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ(মমেক) হাসপাতাল মর্গে প্রেরণের প্রস্তুতি চলছে বলে ঈশ্বরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোখলেছুর রহমান জানান।
তার আগে শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি)দিনগত রাত ২টার দিকে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার রাধাভল্লবপুর গ্রামের একটি পুরোনো টয়লেট থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এরইমধ্যে ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ব্যবসায়ী হেলাল উদ্দিন ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার উচাখিলা বাজারে চুন ও তামাক পাতা বিক্রি শেষে গত ১৮ জানুয়ারি রাতে বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হন। পরে এ ঘটনায় নিখোঁজ ব্যবসায়ী হেলাল উদ্দিনের স্ত্রী মাজেদা খাতুন ২৯ জানুয়ারি ঈশ্বরগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। পরে ৪ ফেব্রুয়ারি একটি মামলাও দায়ের করেন।
এদিকে, ২১ জানুয়ারি রাতে বাংলালিংকের (০১৯৬১ ৬৮৫৯৬১) একটি নম্বর থেকে নিখোঁজ হেলালের বড় ভাই মোঃ দুলাল মিয়ার মোবাইলে ফোন আসে। ফোনের অপরপ্রাপ্ত থেকে বলা হয়- ‘তোর ভাই কি হারানো গেছে? তোর ভাইকে আমরা নিয়ে গেছি। ফেরত পেতে হলে ২ লাখ টাকা লাগবে।’ তখন দুলাল মিয়া এতো টাকা দিতে পারবে না বলে অনুনয় বিনয় করলে ১ লাখ টাকায় রফা হয়। উল্লেখিত টাকা উপজেলার উচাখিলা-লক্ষ্মীগঞ্জ সড়কে নিয়ে যেতে বলা হয়।
পরে ওই দিন ওই স্থানে গিয়ে নম্বরটিতে কল দিলে তা বন্ধ পান দুলাল। এ বিষয়টি পরে পুলিশকে জানানো হয়। পুলিশ মোবাইল ফোনের নম্বরটি দিয়ে প্রযুক্তির সহায়তায় ঈশ্বরগঞ্জ উচাখিলা ইউনিয়নের মঘা গ্রামের নুর ইসলাম ও তার ছেলে আজিজুলকে আটক করে। কিন্তু ঘটনার অন্তত ১৫ দিন আগে ফোনটি হারিয়ে যাওয়ায় এবং তাদের কাছ থেকে কোনো ধরনের তথ্য না পাওয়ায় পুলিশ স্থানীয় ইউপি সদস্যের জিম্মায় ওই দু’জনকে ছেড়ে দেন।
পরে পুলিশ ও র্যাব সদস্যরা প্রযুক্তির সহায়তায় এ ঘটনায় ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার আকাশ, কাঞ্চন, ফারুক, রিপন, খাইরুলকে গ্রেফতার করে। পরে তাদের দেওয়া তথ্য মতে সিলেট থেকে উত্তম নামে এক যুবককে গ্রেফতার করে শুক্রবার(০৭ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টার দিকে ঈশ্বরগঞ্জ থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। পরে উত্তমের দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পুলিশ ওইদিন রাতেই অভিযান চালিয়ে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার রাধাভল্লবপুর গ্রামের একটি পুরোনো টয়লেট থেকে নিখোঁজ ব্যবসায়ী হেলাল উদ্দিনের মরদেহ উদ্ধার করে।
ঈশ্বরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘বিভিন্ন দফায় পুলিশ এ ঘটনায় ছয় জনকে গ্রেফতার করেছে। ব্যবসায়ীর স্ত্রীর দায়ের করা মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তর হবে বলে আরো জানান তিনি।