বৃহস্পতিবার ● ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২০
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » থানচি উপজেলার ঘরে ঘরে বিদ্যুৎতের আলোতে আলোকিত
থানচি উপজেলার ঘরে ঘরে বিদ্যুৎতের আলোতে আলোকিত
মোহাম্মদ আব্দুর রহিম, বান্দরবান প্রতিনিধি :: প্রধান মন্ত্রীর স্বপ্ন ও ঘোষনা বাস্তবায়ন হচ্ছে ধীরে ধীরে বিদ্যুৎ সুবিধা বঞ্চিত অঞ্চলে কুপি বাতি হারিকেন ছেড়ে গত কয়েক বছরের আলোকস্বজ্জা ছড়িয়ে দিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড। বান্দরবানে থানচি উপজেলার ৪ ইউনিয়নের দুইটিতে বিদ্যুৎতে আলো ও অপর দুইটিতে সোলার প্যানেলের মাধ্যমে আলোকিত হয়েছে। বর্তমানে ইউনিয়নে সাড়ে তিন হাজার পরিবারের ঘরে ঘরে পরিবর্তন হচ্ছে অর্থনীতির চাক্কা ।
এক সময় থানচি উপজেলাকে দুর্গম বলা হলেও বর্তমানে সে দুর্গম আর নেই। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আবাসিক হোস্টেল,ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান,সড়কগুলোসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে সন্ধ্যা নামলেই জ্বলে উঠছে সৌর বিদ্যুতের আলো। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের প্রদত্ত সৌর বিদ্যুতে এখকার মানুষের জীবনমান উন্নয়ন হয়েছে দেখার মত।
বান্দরবান সদর হতে ৮০ কি.মি. দূরে থানচি সদর, থানচি সদর হতে ২৭ কি.মি. দূরবর্তী রেমাক্রি ও তিন্দু ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিদিন সন্ধ্যা নামলেই উপজাতীয় পল্লীগুলোতে সৌর বিদ্যুতের আলোয় পড়াশুনা করছে শিক্ষার্থীরা। বিদ্যুতের আলোতে মহিলারা গৃহস্থলীর কাজ করছে। এছাড়া গ্রামগুলোতে সৌর বিদ্যুতের সাথে আইপিএস ও জেনারেটর সংযুক্ত করে তারা এখন ফ্রিজ, কালার টিভি, ফ্যান, আয়রন ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারছেন।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড সুত্রে জানা যায়, থানচি উপজেলার রেমাক্রি ইউনিয়নে গত ১৬-১৭ অর্থ বছরে ৩৮০ ও ১৮-১৯ অর্থ বছর ৪২০টি পরিবারকে সৌর বিদ্যুত আওতায় আনা হয়েছে। তিন্দু ইউনিয়নে ১৬-১৭ অর্থ বছরে ২৫৬ ও ১৮-১৯ অর্থ বছরে বিতরণ করা হয়েছে ২০০টি সৌর বিদ্যুত।
রেমাক্রি বাজারের বাসিন্দা লাল পিয়াম বম বলেন, আমার বাসায় ফ্রিজ, টিভি, ফ্যানসহ ইলেক্সট্রনিক্স সব সামগ্রী ব্যবহার করছেন। আমার নিজস্ব কটেজে দেশি বিদেশী ভ্রমনে পর্যটকদেরও সেবা দিতে পারছেন অথচ এক সময় বিদ্যুতের স্বপ্নও দেখেনি। সরকারী ভাবে দেওয়া সৌর বিদ্যুতের কারনে অন্ধকারাচ্ছন্ন রেমাক্রির প্রতিটি গ্রাম আলোকিত হয়েছে বলে জানান তিনি।
রেমাক্রি উনিয়নের মহিলা মেম্বার মেপ্রু মারমা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়ার অঙ্গীকার করেছেন। সেই কারনে বিদ্যুত বিহীন এলাকায় সৌর বিদ্যুৎ বিতরণের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করছেন পার্বত্যমন্ত্রী বীর বাহাদুর। উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া এসব সৌর বিদ্যুতের কারনে মানুষের বসতী ও গ্রামীণ সড়ক আলোকিত হয়েছে।
রেমাক্রি ইউপি চেয়ারম্যান মুশৈথুই ও তিন্দু ইউপি চেয়ারম্যান মংপ্রুঅং মারমা বলেন, বর্তমান সরকারের সোলার স্থাপন প্রকল্পটি একটি যুগান্তকারী প্রকল্প। পার্বত্য উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে প্রদত্ত সৌর বিদ্যুত তাঁর ইউনিয়নের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান আলোকিত হয়েছে। এলাকার মানুষ রাতের আধারেও নির্বিঘেœ চলাফেরা করার সুযোগ তৈরী হয়েছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডে বান্দরবান ইউনিটের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বিন ইয়াছির আরাফাত বলেন, জনগণের বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে যে সকল এলাকায় বিদ্যুৎ পৌছানো সম্ভব হয়নি, সেসব এলাকায় সোলার প্যানেলের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহের উদ্দ্যোগ নিয়েছে সরকার। তৃণমূলের বিচ্ছিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ পৌছানো সম্ভব নয় সেসব প্রতিটি ঘরে সোলার সিস্টেম স্থাপনের মাধ্যমে আলোকিত করার পার্বত্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। সুতারাং ইউপি চেয়ারম্যানদের চাহিদা পত্রনুসারের বান্দরবানের প্রত্যেকটি দূর্গম এলাকাকেও বিদ্যুতের আওতায় আনা হবে।
এবিষয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর (উশৈসিং) এমপি বলেছেন, আওয়ামীলীগ সরকার উন্নয়নের মহা পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে। পাহাড় সমতল সবখানেই চলছে সরকারের নানামুখী উন্নয়ন কর্মকান্ড। আওয়ামীলীগ সরকার উন্নয়নের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে। সরকার উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখছে নিরলসভাবে। পাহাড়ের মানুষের উন্নয়নে সরকার অত্যন্ত আন্তরিক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পার্বত্যবাসীকে অনেক বেশি ভালোবাসেন। এ কারণে বৌদ্ধ বিহার শিক্ষা, স্বাস্থ্য ব্রীজ,কালভাট এবং সড়কসহ সর্বক্ষেত্রে উন্নয়নের জোয়ার বইছে পাহাড়ে।