সোমবার ● ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২০
প্রথম পাতা » অর্থ-বাণিজ্য » করোনা ভাইরাস : রাঙামাটির বাজারে চীনা মালামালে আগুন
করোনা ভাইরাস : রাঙামাটির বাজারে চীনা মালামালে আগুন
নির্মল বড়ুয়া মিলন :: জানুয়ারি মাসে চীনে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার দোহায় দিয়ে রাঙামাটি শহরের হার্ডওয়্যার মালামালের দামে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে পাইকারী ও খুচরা হার্ডওয়্যার ব্যবসায়ীরা। জিআই পাইপ, জিআই ফিটিংস, এলবো, নিপল, টি, ইউনিয়ন চকেট, ওয়াল কেলাম, গেট ভাল্ব, প্লাষ্টিক দরজা, হার্ডওয়ারের সকল মালামাল, সেনিটারী ও ইলেক্টট্রিকেল চায়না ও মালয়েশিয়া ভিত্তিক দাবি করে ভোক্তাদের কাছ থেকে প্রায় দ্বিগুন দামে বিক্রি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ব্যবসায়ীদের যুক্তি চায়নাতে করোনা ভাইরাসের কারণে বাংলাদেশে পণ্য আমদানী বন্ধ হওয়ায় চীনা হার্ডওয়্যার মালামালের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
জানুয়ারি মাসের শুরুতে মেসার্স আবরার ট্রেডার্সে জিআই ফিটিংসের আধা ইঞ্চি প্রতিটি এলবোর দাম ছিল ২২ টাকা, কয়েকদিনের ব্যবধানে ৮ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে ৩০টাকা, আধা ইঞ্চি এস নিপল ২০ টাকা থেকে ২৮ টাকা, আধা ইঞ্চি চকেট ২০ টাকা থেকে ২৮ টাকা, ইউনিয়ন চকেট ৪৫ টাকা থেকে ৫০ টাকা, আধা ইঞ্চি ওয়াল কেলাম ৮ টাকা থেকে ১০ টাকা এভাবে প্রত্যক মালামালের বাড়তি দামে বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়া প্লাষ্টিক পাইপ ও প্লাষ্টিক ফিটিংসের দাম বৃদ্ধি করে গ্রাহকের পকেট থেকে বাড়তি টাকা আদায় করছে ব্যবসায়ীরা।
রাঙামাটি শহরে ঘুরে দেখা গেছে ছোটবড় প্রত্যেকটি হার্ডওয়্যারের দোকানে মূল্য বৃদ্ধির হিড়িক পরেছে। হার্ডওয়্যার মালামালের পাশাপাশি সেনিটারী, টাইলস, রড, সিমেন্ট, পেইন্টিং সামগ্রী, রং, থাই, এ্যালুমিনিয়াম, গ্লাস, প্লাষ্টিক দরজা, ইলেকট্রিক মালামাল ও নির্মাণ সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
এ বিষয়ে রাঙামাটি রাজবাড়ি এলাকার পুনম হার্ডওয়্যারের মালিক মাধব কুমার নাগ সিএইচটি মিডিয়াকে বলেন, হার্ডওয়্যার, সেনিটারি, টাইলস, ইলেকট্রিক ও নির্মাণ সামগ্রীর মালামালের গায়ে মূল্য লেখা থাকেনা, এই সুযোগে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ক্রেতাদের পকেট থেকে বাড়তি টাকা নিতেও পারে। যেমন আমি গত তিন দিন আগে চায়না থেকে আমদানিকৃত টাইলস ও গ্লাস সামগ্রীর জন্য চট্টগ্রামে যোগাযোগ করি চট্টগ্রামের তিন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পূর্বের চেয়ে অতিরিক্ত মূল্য চাওয়াতে আমি ঢাকায় যোগাযোগ করি কিন্তু ঢাকায় দুইটি প্রতিষ্ঠানে বাড়তি দাম চাওয়ায়, পরে আরো একটি প্রতিষ্ঠানে যোগাযোগ করে আমি পূর্বের মূল্যে মালামাল ক্রয় করি। কেউ হয়তো মাল আছে বেশী দামে বিক্রি করছে আবার কেউ পূর্বের দামে বিক্রি করছে।
হঠাৎ করে উল্লেখিত সামগ্রির মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে রাঙামাটি হার্ডওয়্যার দোকান মালিক সমিতির সভাপতি বি আলম ট্রেডার্সের মালিক রোকন উদ্দিন সিএইচটি মিডিয়াকে বলেন, আমরা চট্টগ্রামের জুবলী রোড, এনায়েত বাজার, কাজীর দেউরী, নন্দন কানন, আসাদগঞ্জ ও ঢাকার নবাবপুর ও কাপ্তান বাজার থেকে মালামাল নিয়ে আসি। আমদানী বন্ধ থাকার কারণে ঐসব ব্যবসায়ীরা দামবৃদ্ধি করায় আমাদেরও একটু বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। তাছাড়া আমদানি বন্ধ থাকার কারণে মালামালের সংকট বাড়তি দাম বাড়তি দিয়েও পাওয়া যাবেনা। তবে কোন ব্যবসায়ী যদি অসদুপায় অবলম্বন করে বাড়তি দামে মালামাল বিক্রি করে আমরা ব্যবস্থা নিব বলেন এই ব্যবসায়ী নেতা।
এবিষয়ে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক একেএম মামুনুর রশিদ সিএইচটি মিডিয়াকে বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিলনা, আপনার মাধ্যমে জানলাম, হার্ডওয়্যার ব্যবসায়ীরা মালামালের বাড়তি মূল্য নেওয়ার যাদের কাছে প্রমাণ আছে আমাদের রাঙামাটি জেলা প্রশাসনে তথ্য প্রমাণ (ক্যাশ মেমো/বিল) সহকারে অভিযোগ জমা দিলে আমরা ভোক্তা অধিকার আইনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।