সোমবার ● ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২০
প্রথম পাতা » গাইবান্ধা » গাইবান্ধায় স্কুল নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ
গাইবান্ধায় স্কুল নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ
গাইবান্ধা :: গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার চর কালাসোনা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গৃহনির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। প্রয়োজনীয় তদারকির অভাবে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান দায়সারাভাবে কাজটি সম্পন্ন করা করছে।
জানা গেছে, গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলার উড়িয়া ইউনিয়নের চর কালাসোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি বিগত সময়ে নদী ভাঙনের শিকার হলে ব্রহ্মপুত্র নদের পশ্চিম পাড়ে স্থানান্তর করা হয়। স্থানান্তরিত স্থানে ছাত্রছাত্রীদের লেখাপড়ার তেমন কোন ঘর না থাকায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতায় উক্ত বিদ্যালয়ের গৃহ নির্মাণের জন্য (প্রাকল্লিত মূল্য) ২৭ লাখ টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়। যা পরবর্তীতে চুক্তিমূল্য ২৫ লাখ ৬৫ হাজার টাকা হিসেবে টেন্ডারের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের গৃহ নির্মাণের কাজ পায় গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মেসার্স রফিক ট্রেডার্স নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। পরবর্তীতে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান স্থানীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ইয়ানুর ট্রেডার্সের নিকট এ কাজ হস্তান্তর করেন। ইয়ানুর ট্রেডার্স অধিক লাভের আশায় সংশ্লিষ্ট স্টীমেট (নকশা) অনুযায়ী কাজ না করে সিংহ ভাগ টাকা আত্মসাতের পায়তারা চালাচ্ছেন।
স্থানীয়রা জানায়, বিদ্যালয়ের মেঝে ঢালাই ও গৃহ নির্মাণ কাজে ব্যবহার করা হয়েছে ময়লাসহ নিম্নমানের বালু, ইট ও সিমেন্ট। গৃহ নির্মাণ কাজের সময় উপজেলা প্রকৌশলীর কোন প্রতিনিধি উপস্থিত না থাকায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নিন্মমানের কাজের সুযোগ পাচ্ছে বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
নিন্মমানের কাজের বিষয়ে স্থানীয়রা উপজেলা প্রকৌশলীকে জানালে তিনি লিখিত অভিযোগ ছাড়া এ বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নিতে পারবেন না বলে জানান। বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক রাসেল আহমেদ বলেন, গৃহ নির্মাণের কাজ অধিকাংশ সময়ে বিদ্যালয় বন্ধের দিন করা হয়ে থাকে। সময় সুযোগ না থাকায় কাজের তদারকি করা সম্ভব হয় না। এ কারণে কাজের মানের বিষয়ে তিনি মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান। স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল মান্নান সরকার বলেন, বিদ্যালয়ের গৃহ নির্মাণের কাজ দেখতে গিয়ে অবাক হয়েছি। নিন্মমানের বালু ও অল্প পরিমাণে সিমেন্ট ব্যবহার করে গৃহ নির্মাণের কাজ করা হচ্ছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান স্থানীয় হওয়ায় তার দাপটে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না। এভাবে কাজ করা হলে বিদ্যালয়ের গৃহটি বেশিদিন টেকসই হবে না।
উড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মহাতাব উদ্দিন বলেন, বিদ্যালয়টির গৃহ নির্মাণ কাজের অনিয়মের বিষয়ে অনেক ব্যক্তি অভিযোগ করেছে। বন্যাকবলিত এলাকায় এভাবে নিন্মমানের কাজ করা হলে গৃহটি অল্প দিনেই ব্যবহারের অনুপযোগি হয়ে পরবে। তিনি বলেন, ঠিকাদারের সাথে উপ-সহকারী প্রকৌশলী মাহমুদা রোজীর যোগসাজস থাকতে পারে। কারণ উক্ত ঠিকাদারের অধিকাংশ কাজেই তিনি তদারকি করে থাকেন। এরআগেও বেশ কয়েকটি কাজ নিন্মমানের করেছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি। তিনি নির্মাণাধীন গৃহটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তদারকি করা উচিত বলে মনে করেন।
এ ব্যাপারে ফুলছড়ি উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) ইমতিয়াজ আহমেদ ইমু বলেন, চর কালাসোনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গৃহ নির্মাণ কাজ যেভাবে চলছে চলুক। নির্মাণ শেষে তদন্ত করে কাজের মান নিন্ম হলে ঠিক করে নেয়া হবে।
গাইবান্ধায় বিবাহযোগ্য মেয়েদের আয়বর্ধক প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধন
গাইবান্ধা :: গাইবান্ধার অন্যতম স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কর্মীরহাতের উদ্যোগে আজ সোমবার যৌতুক বিরোধী প্রকল্পের আওতায় ১৫ ও ১৬তম ব্যাচের আয় বর্ধক ও দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচী বিষয়ক প্রশিক্ষণ উদ্বোধন করা হয়। সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রসূন কুমার চক্রবর্তী আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন ও প্রশিক্ষণের উপকরণ বিতরণ করেন।
নারায়নপুরস্থ নাবিক কর্মীরহাত হাসপাতালের হলরুমে সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ আব্দুল হক চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও কর্মীরহাতের ম্যানেজার মোঃ মাহমুদুল হক রতন এর সঞ্চালনায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন কর্মীরহাতের সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর সাবু, সহ-সভাপতি আমিনুল ইসলাম খোকন, সহ-সাধারণ সম্পাদক সামিউল ইসলাম পিপলু, সহ-সভাপতি মোঃ মকবুলার রহমান, নির্বাহী সদস্য মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, আলমগীর কবির বাদল, রকিবুল হক চৌধুরী প্রমুখ। অনুষ্ঠানে প্রশিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ উপকরণ হিসাবে খাতা, কলম, পেন্সিল, ইরেজার, সার্পনার ও স্কেল ইত্যাদি প্রদান করা হয়।
দাতা সংস্থা নর্থ আমেরিকান বাংলাদেশী ইসলামিক কমিউনিটি (নাবিক) ইউএসএ এর অর্থায়নে সদর উপজেলার অতি দরিদ্র পরিবারের বিবাহযোগ্য মেয়েদের যৌতুকের অভিশাপ থেকে মুক্ত হতে আয়-বর্ধক ও দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে আত্মনির্ভরশীল হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচী বাস্তবায়িত হচ্ছে। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কর্মীরহাত সম্পূর্ন বিনামূল্যে চার মাসব্যাপী এই প্রশিক্ষণ প্রদান করছে। এ বছর যৌতুক বিরোধী প্রকল্পে সকাল ও বিকাল দুটি ব্যাচে গাইবান্ধা জেলার বিভিন্ন এলাকার ৪০ জন অবিবাহিত মেয়েকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। প্রশিক্ষণ কর্মসূচীর আওতায় পোশাক তৈরি, সূচী কর্ম, ব¬ক, বাটিক, রান্না শিক্ষা, নার্সেস এইড, প্রাথমিক স্বাস্থ্য সচেতনতা, আত্ম-সুরক্ষা ও ও ইভটিজিং প্রতিরোধ বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। প্রশিক্ষণ শেষে প্রত্যেক প্রশিক্ষণার্থীকে বিনামূল্যে ১টি করে পা-চালিত সেলাই মেশিন, নগদ অর্থ, সনদপত্র ইত্যাদি প্রদান করা হবে।
এই প্রকল্পের আওতায় এ পর্যন্ত ২শ’ ৯৪ জনকে প্রশিক্ষণ প্রদানসহ ২শ’ ৯৪টি পা-চালিত সেলাই মেশিন, সনদপত্র এবং আর্থিক সহায়তা হিসেবে নগদ ৪ লাখ ৪৮ হাজার টাকা প্রদান করা হয়েছে।