বুধবার ● ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২০
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » উকিল পরিচয়ে প্রতারণা, হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার হাজার টাকা
উকিল পরিচয়ে প্রতারণা, হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার হাজার টাকা
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: ঝিনাইদহ জজ কোর্টের উকিল বারের নাম ভাঙিয়ে নিজেকে উকিল পরিচয়ে প্রতারণা করে যাচ্ছেন। নাসির উদ্দীন নামে এক প্রতারক। নাসির উদ্দীন ঝিনাইদহ সদর উপজেলার নারিকেল বাড়িয়া গ্রামের আকবর হোসেন মোল্লার ছেলে। জানা গেছে, নাসির উদ্দীন আর এফ এল কোম্পানীতে চাকরি করত। কিছুদিন পর সে চাকরি ছেড়ে ঝিনাইদহ চলে আসে, সখ্যতা গড়ে তোলে ঝিনাইদহ উকিল বারের এক উকিলের সাথে, কোর্ট চত্ত্বরে সে উকিল পরিচয় দিয়ে মামলার কাজ হাতে নিয়ে, হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার হাজার টাকা অথচ তার আইনজীবী সহকারী হওয়ার অনুমোদন বা আইনজীবী সনদ নেই। তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে দেখা যায়, নাসির উদ্দীনের হাতে দলিল ও পর্চা পাশেই বসে ছিল ভুক্তভোগি প্রতারিত সাধারন মানুষ। স্বপন মিয়া নামে একজন জানান, সে দীর্ঘদিন ধরে দলিলের ফটোকপির সাথে টাকাও দিয়েছে মিলছে না পর্চা কোর্ট চত্ত্বরে ঘুরছি দিনের পর দিন। এ বিষয়ে ঝিনাইদহ জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি,খান আখতারুজ্জামান জানান, নাসির উদ্দীন নামে কোন উকিল বা শিক্ষানবিশ আইনজীবী আমাদের বারে নাই। ভুয়া ক্লার্ক ও ভুয়া আইনজীবীদের এখানে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছি। ইতোমধ্যে আমাদের নির্বাহী পরিষদ থেকে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং যাহারা এখানে ভুয়া আইনজীবী সেজে আদালতের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে তাদের একটি তালিকাও করা হয়েছে আমরা এদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিব। এ সময় জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া মিলন জানান, আমি ইতিমধ্যে নাসির উদ্দীন নামে এই প্রতারকের ব্যাপারে জেনেছি সে আমাদের বারের কেউ না, তার বিরুদ্ধে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিব।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক হাজিরার জন্য বায়োমেট্রিক মেশিন কেনায় অনিয়ম ও দুর্ণীতি
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক হাজিরার জন্য বায়োমেট্রিক মেশিন কেনায় অনিয়ম ও দুর্ণীতির অভিযোগ উঠেছে। ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার ১৩৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ ৬ উপজেলার ৯০৭টি প্রতিষ্ঠানে এ মেশিন স্থাপন সম্পন্ন হয়েছে। হরিণাকুন্ডু উপজেলার ১৩৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্থাপন করা হয়েছে নিন্মমানের মেশিন। ঝিনাইদহের ৬ উপজেলাতে যে মেশিন কেনা হয়েছে সেখানে কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে দ্বিগুন দামে নিন্মমানের বায়োমেট্রিক মেশিন কেনার অভিযোগ উঠেছে। ঝিনাইদহে ৬ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৯০৭ টি। এসব বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের হাজিরার জন্য বায়োমেট্রিক মেশিন কেনা হয়েছে প্রায় ৬ কোটি টাকার। ৬টি উপজেলার ৯০৭ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্লিপ প্রকল্পের টাকা দিয়ে এ মেশিন কেনা হয়। ঢাকার গুরুনুল ইনষ্টিটিউট অফ আইটি নামের প্রতিষ্ঠান থেকে বাধ্য হয়ে বেশি দামে তিম্মি নামের বায়োমেট্রিক মেশিন কিনেছেন ঝিনাইদহের শিক্ষকরা। অভিযোগ উঠেছে সাড়ে ৬ হাজার থেকে ৭ হাজার টাকার মেশিন কেনা হয়েছে ১৮ হাজার টাকায়। এদিকে হরিণাকুন্ডু উপজেলার প্রধান শিক্ষকরা ১৮ হাজার টাকা করে জমা দেন। বিষয়টি নিয়ে হরিণাকুন্ডু উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম আব্দুর রহমান বলেন, প্রতিটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের হাজিরা মেশিন কেনার জন্য স্লিপ প্রকল্পে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা। এসব স্লিপের টাকায় বায়োমেট্রিক মেশিন কেনার জন্য মন্ত্রণালয়েরও নির্দেশনা রয়েছে। স্ব স্ব স্কুল র্কর্তৃপক্ষকে মানসম্মত মেশিন কিনতে বলা হয়েছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন’ বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিন কেনার জন্য শিক্ষকদের একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা দেয়া হয়েছে। সেসব টাকা দিয়েই শিক্ষকরা হাজিরা মেশিন কিনেছেন। আর যদি নিন্মমানের মেশিন বেশি দামে কেনা হয়ে থাকে তাহলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। জানা গেছে, গত বছর থেকে ঝিনাইদহসহ সারা দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিন ক্রয়ের নির্দেশনা দেয় সরকার। এরপর প্রাথমিক ও গনশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ’স্পেসিফিকেশন’ নির্ধারণ করে এ মেশিন কিনতে স্কুল কমিটিকে দায়িত্ব দেয়া হয়। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী সারাদেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিন ক্রয়ের উদ্যোগ নিতে শুরু করে। এক পর্যায়ে বাজারদর অনুযায়ী স্পেসিফিকেশন অনুসরণ করে কেনার নির্দেশ উপেক্ষা করে প্রাথমিক ও গনশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের একটি অসাধু চক্র অতিরিক্ত দামে ওই মেশিন ক্রয়ের বিষয়ে তৎপরতা শুরু করে। জানা গেছে, ওই চক্রের সদস্যরা নানা কৌশলে প্রতিটি মেশিন ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকা বেশি দামে কিনতে বাধ্য করেছে সংশ্লিষ্টদের। জেলার ৯০৭টি স্কুলে এ মেশিন কেনাও হয়েছে। প্রতিটি মেশিনে কম বেশি ১০ থেকে ১২ হাজার টাকার বাণিজ্য করা হয়েছে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সুত্র জানায়, ’বায়োমেট্রিক’ হাজিরা মেশিন কেনার জন্য কোন বিশেষ কোম্পানীকে নির্বাচন করা হয়নি। প্রাথমিক ও গনশিক্ষা মন্ত্রণালয় শুধু স্পেসিফিকেশন অনুমোদন করেছে। এ স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী স্কুল কর্তৃপক্ষ বাজার থেকে যাচাই করে সর্বোত্তম দামে নিজেদের পছন্দমতো বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিন কিনে স্কুলে স্থাপন করবেন।