রবিবার ● ১ মার্চ ২০২০
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের শিক্ষাবৃত্তি প্রদানে বৈষম্য
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের শিক্ষাবৃত্তি প্রদানে বৈষম্য
মোহাম্মদ আব্দুর রহিম, বান্দরবান প্রতিনিধি :: জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে পার্বত্য অঞ্চলকে শিক্ষা ক্ষেত্রে এগিয়ে নিতে নানা পদক্ষেপের মধ্যে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের শিক্ষাবৃত্তি প্রদানে ব্যাপক বৈষম্য ও জাতিগত পক্ষপাতিত্বের মাধ্যমে গরীব শিক্ষার্থীদের শিক্ষা বৃত্তি প্রদানে বৈষম্য ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। পাহাড়ে শিক্ষাবৃত্তি পাচ্ছে বেশিরভাগই উপজাতি শিক্ষার্থীরা। বান্দরবানে তবে বরাবরই অস্বীকার করে আসছেন উন্নয়ন বোর্ডের শিক্ষা ডিপার্টমেন্টের শীর্ষ কর্মকর্তারা। এতে অনেক অভিভাবকরা মনে করছেন পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুরের অগোচরে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডে কর্মরত অসাধু কর্মকর্তারা সাম্প্রদায়িক বৈষম্য তার ভিত্তিতে অনলাইনের মাধ্যমে আবেদনকৃত অনেক বাঙালি শিক্ষার্থীদের বঞ্চিত করে এইসব বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের মনোনীত করেন।
শিক্ষার্থীদের সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার বান্দরবান শহরের অরুণ সারকী টাউন হলে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের শিক্ষা বৃত্তি প্রদান করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড। এই সময় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপিকে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত রেখে ৩ শত ১৬ জন শিক্ষার্থীকে ৭ হাজার টাকা করে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হয়। তবে তার মধ্যে বেশির ভাগই ইপজাতি শিক্ষার্থী। এইসব শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাঙালি শিক্ষার্থীর সংখ্যা অতি নগন্য। তৎমধ্যে শিক্ষাবৃত্তি লাভের জন্য বাঙালি ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে ৮০ শতাংশ শিক্ষার্থীদের বঞ্চিত করে বৈষম্যতার ভিত্তিতে পাহাড়ি বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হয়। শিক্ষাবৃত্তি প্রদানের সময় বাঙালি শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের মধ্যে নানা গুঞ্জন শুরু হয়। পাহাড়ে বর্তমানে ৭৫% বাঙালি বসবাস করেন। তাদের ছেলে মেয়েরা কি শিক্ষার্থী নয়! তারা কি পাহাড়িদের মত পাহাড়ে বসবাস করে না! এমন অভিমত ব্যক্ত করেন কয়েকজন বাঙালি শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বান্দরবান সরকারি কলেজের এক শিক্ষার্থী বলেন, বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুয়া প্রত্যয়ন পত্রের মাধ্যমে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীরা প্রতিবছরই বিভিন্নভাবে তদবির করে জেলা পরিষদ ও উন্নয়ন বোর্ডের শিক্ষা বৃত্তি পেয়ে যায়। আর আমরা গরীব প্রকৃত শিক্ষার্থীরা এসব সরকারের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি কারণ আমরা পার্বত্য অঞ্চলে বসবাসরত গরিব বাঙালি।
এ ব্যাপারে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের বান্দারবান ইউনিটের নির্বাহী প্রকৌশলী ইয়াসির আরাফাত বলেন, শিক্ষার্থীদের অনলাইনে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কারা কারা শিক্ষা বৃত্তি পাবে রাঙামাটি অফিস থেকে তা মনোনয়ন করা হয়। তবে অরুণ সারকি টাউন হলে আমি অনুষ্ঠান আয়োজন করে থাকলেও এখানে আমার কোন হাত ছিল না। বিষয়টি রাঙামাটি অফিসের শিক্ষা ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তারা ভালো জানবেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের উপসচিব (সদস্য-পরিকল্পনা) ড. প্রকাশ কান্তি চৌধুরী মুঠোফোনে জানান, এবারে উন্নয়ন বোর্ডে অনলাইনের মাধ্যমে শিক্ষাবৃত্তির জন্য আবেদন এসেছে ৯ হাজার। ওখান থেকে বাছাই করে ৩ শত ১৬ জন শিক্ষার্থীকে ৭ হাজার টাকা করে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হয়েছে। বাঙ্গালী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদানের বৈষম্যতার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বৃত্তি পাওয়ার জন্য কারা মনোনীত হবেন এটা অনলাইন ও বোর্ড এর মাধ্যমে নির্বাচিত করা হয়। তবে বাঙালি কয়জন পাহাড়ি কজন শিক্ষা বৃত্তি পেয়েছে এই বিষয়ে আমার জানা নেই।