সোমবার ● ৯ মার্চ ২০২০
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » ভূমি দস্যুরা গিলে খাচ্ছে নদ-নদী গুলো
ভূমি দস্যুরা গিলে খাচ্ছে নদ-নদী গুলো
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: দিনে দিনে বেপরোয়া হয়ে উঠছে ঝিনাইদহের মহেশপুরের ভূমি দস্যুরা। ফলে ভূমি দস্যুরা গিলে খাচ্ছে সীমান্তবর্তী এ উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া নদ-নদীগুলো। জেলার মহেশপুর উপজেলা ও উপর দিয়ে বয়ে গেছে ভৈরব, কপোতাক্ষ, কোদলা, ইছামতি ও বেতনাসহ পাঁচটি নদ-নদী। কুষ্টিয়ার গড়াই থেকে ভৈরব ও মাথাভাঙ্গা নদী চুয়াডাঙ্গা হয়ে ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুরে প্রবেশ করেছে কপোতাক্ষ নদ। এ নদটি জীবননগর থানার বকুন্ডিয়া, মারুফদা কোল ঘেষে মহেশপুর উপজেলার পুরন্দপুর, খালিশপুর, সাড়াতলা, কদমতলা, ফতেপুর, বেগমপুর, বৈচিতলা, মহেশপুর, ভালাইপুর, সুন্দরপুর, কোটচাঁদপুর হয়ে যশোর জেলার চৌগাছা, ঝিকরগাছা, কেশবপুর, সাগরদাড়ী চলে গেছে। মাইকেল মধুসুদন দত্তের জন্মস্থান সাগরদাড়ী কবি নদের কথা স্বরণ করেন ফ্রান্সের ভার্সই নগরে বসে বিখ্যাত কপোতাক্ষ নদ কবিতাটি লেখেন। কবির লেখা কবিতার এ কপোতাক্ষ নদটি যুগ যুগ ধরে আমাদের নানাভাবে উপকার করে। সেই নদটির খালিশপুর বাজার ও মহেশপুর পৌরসভার অংশের দুই ধারে ভূমি দস্যুদের দ্বারা দখল হয়ে গেছে। ফলে এক সময়ের প্রবাহমান নদটি আজ মরতে বসেছে। এভাবে বছরের পর বছর দখল বেদখল হয়ে আসলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোন মাথা ব্যাথা নেই। বাঁশবাড়িয়া ও কাজীরবেড়র ইউনিয়নের কোদলা নদীটি বিভিন্ন লোকজন দখল করে পুকুর খনন করে মাছ চাষ করছে। যাদবপুর ও নাটিমা ইউনিয়নে বেতনা নদী প্রায় সবটুকু দখল হয়ে গেছে। স্বরুপপুর, শ্যামকুড় ও নেপা ইউনিয়নের ইছামতি নদী দখল বেদখলে এখন মরা খাল। সরকার জেলা উপজেলায় নদ-নদী দখলদারকে উচ্ছেদের নির্দেশ দিলেও মহেশপুরে উপজেলা এখনও এটি কার্যকর হয়নি। বর্তমানে মহেশপুরে নদী দখল করে চলছে কৃষি আবাদ, পুকুর খনন, ঘর-বড়ী নির্মান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম। এ সকল দখলদাররা যখন যে সরকার ক্ষমতায় আসে তখন তাদের ছত্রছায়ায় থাকে। এক শ্রেনীর রাজনৈতিক নেতারা পৃষ্টপোষক হিসেবে কাজ করে। স্থানীয় সচেতন মহল দাবী জানিয়েছে যেহেতু সরকার অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে আন্তরিক ও হাই কোর্টের নির্দেশনা রয়েছে সে ক্ষেত্রে শুষ্ক মৌসুমে দ্রুত নদী কমিশনের আইন অনুযায়ী জরিপ চালিয়ে নদীর জায়গা উদ্ধার এবং খনন করে পানির প্রবাহ ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়েছে। মহেশপুর উপজেলা সাহিত্য পরিষদের সভাপতি ও মহেশপুর সরকারী পাইলট মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এটিএম খাইরুল আনাম জানান, একসময় এ উপজেলা উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া নদ-নদীতে পাল তোলা নৌকা চলতো। সে সময় যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম ছিল পানি পথ। এ ছাড়া নদীর দুকূলে বসবাসকারীরা নদীর মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন। এখন সে সব নদ-নদী দখল-বেদখলে মৃত্যু প্রায়। অনেক নদ-নদী ভরাট হয়ে গেছে। সম্প্রতি খাল নদ-নদী খনন কার্যক্রম কর্মসূচি গ্রহন করা আওয়ামী লীগ সরকারকে দন্যবাদ জানান প্রাক্তন এই প্রধান শিক্ষক। এ বিষয়ে মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) সুজন সরকার বলেন, যাদের বিরুদ্ধে নদী দখলের অভিযোগ পাওয়া গেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং এ বছরেই নদী জরিপ করে পুনঃখননের কাজ করা হবে বলে যোগ করেন।
সোমবার সকাল থেকে শুরু হচ্ছে উচ্ছেদ অভিযান : খাল দখলদারদের তালিকা প্রকাশ
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের হরিণাকু- উপজেলার আওতাধীন রামনগর সাত ব্রীজ বাজার সংলগ্ন জিকে সেচ প্রকল্পের বিভিন্ন খালের তীরবর্তী অবৈধ দখলদারদের তালিকা প্রকাশ করেছে ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ড। প্রকাশিত তালিকায় দেখা গেছে হরিণাকুন্ডুর ৯টি গ্রামের ১০৭ জন সরকারী খালের উপর দোকান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাসা বাড়ি করে দখল করে আছেন। কাল সোমবার থেকে সেখানে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করবে ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ড। অবৈধ দখলদাররা হলেন, হরিশপুর গ্রামের তোয়া মল্লিক, আব্দুর রাজ্জাক, মওলা, খয়বার, আলমগীর হোসেন, ইজ্জতআলী, চঞ্চল, রুকু, আইন উদ্দীন, লুৎফর রহমান, জাহান আলী, লাল্টু মিয়া, রিন্টু, রায়বুল, শুকুর আলী, লিয়াকত হোসেন, রুবেল, দেলোয়ার, সবুজ, নিটু মাষ্টার, আলমগীর হোসেন, টিক্কা, সেলিম, মওলা বক্স, মতিয়ার রহমানের ৩টি, আতিয়ার রহমান, আকুল, মোশাম, লিয়াকত, সেলিম, মোমিন কাজী, হাসান, হাসিবুল, জবা, আব্দুল খালেক, মওলাবক্স, শহিদুল বকুল, আব্দুল ওহাব ভান্ডারী, সাবান, রণ জোয়ারদার, রামনগর গ্রামের রিায়াজুল, রানা, আনছার, মনির, মক্কেল, আতিক, কুদ্দুস, নজরুল, রিয়াজুল, বদর উদ্দীন, হাফিজুর, আজমল, রাজু, মোনতাজুর রহমান মোহন, নিজাম মেম্বর, শিমুল, হাবিল, সানোয়ার, মনোয়ার, আছাল, আক্তার, মজিদ, মিনাজ উদ্দীন, তোরাব আলী, শাহাদৎ, মোকাম, সড়াতলা গ্রামের বানাত মালিথা, তাহেরহুদা গ্রামের মকবুল হোসেন, বলরামপুর গ্রামের আব্দুল খালেক শেখ, কুলবাড়িয়া গ্রামের সেকের আলী, তরিকুল ইসলাম, চতুর আলী, গাজিপুর গ্রামের রানু মন্ডল, জাহাঙ্গীর হোসেন, নাজিম উদ্দীন মন্ডল, মহির উদ্দীন, মিল্টন, নাজির, রতন, আব্দুল আজিজ, মিজানুর, জানার উদ্দীন, মহিরুদ্দীন, শমসের, জাহার উদ্দীন, আনছার, মুনছুর, শিলা বেগম, শের উদ্দীন, আব্দুর রাজ্জাক, ছয়ফাল, বছির উদ্দীন, আব্দুল আজিজ, সোহেল, জনাব উদ্দীন, ভবানীপুর গ্রামের আব্দুল খালেক ও ফলসি গ্রামের চন্ডি ঠাকুর। ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন প্রকৌশলী জাকির হোসেন ও সেলিম রেজা জানান, জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের যৌথ উদ্যোগে নিরপেক্ষ জরিপের মাধ্যমে দখলদার চিহ্নিত করা হয়েছে। কাল সোমবার সকাল থেকে আমরা উচ্ছেদ অভিযান শুরু করবো।
আসামী পক্ষের লোকজন তাদের এবার গ্রাম ছাড়া
ঝিনাইদহ :: সামান্য আহতের ঘটনায় কেন মামলা দেওয়া হলো, এবার দেখে নেওয়া হবে। হুমকী দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হলো আহত কৃষক শাহাবুদ্দিন আহম্মেদের (৪৫) মাঠের চাষাবাদ। মামলা উঠিয়ে না নেওয়া পর্যন্ত পরিবারের সদস্যদের মাঠে যেতে মানা। শুরু করা হলো কৃষক শাহাবুদ্দিনের পরিবারের উপর নানামুখি নির্যাতন। নির্যাতিত এই পরিবারটি হচ্ছে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বুজিডাঙ্গামুন্দিয়া গ্রামের। এতো কিছুর পরও পরিবারের সদস্যরা কষ্ট সহ্য করছিলেন, আশায় ছিলেন সম্পূর্ণ চিকিৎসা শেষে গৃহকর্তা বাড়ি ফিরবেন। শেষ পর্যন্ত আহত শাহাবুদ্দিন বাড়ি ফিরেছেন তবে জীবিত নন, মৃত। লাশ হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে ফেরেন তিনি। আর মামলার বাদি তার স্ত্রী রওশানারা বেগম শত হুমকী মোকাবেলা করলেও এখন স্বামীর মৃত্যুর পর অসহায় হয়ে পড়েছেন। তার আশংকা আসামী পক্ষের লোকজন তাদের এবার গ্রাম ছাড়া করবে। শাহাবুদ্দিন আহম্মেদের কন্যা ফারহান আক্তার সুমি জানান, তার বাবা একজন কৃষক। তারা তিন বোন আর এক ভাই, যাদের মধ্যে তিনিই বড়। ছোট দুই বোন ও এক ভাই পড়ালেখা করে। সুমি জানান, গত ২০১৯ সালের ২৩ নভেম্বর বিকালে বাড়ির পাশে খেলা করছিল তার ছোট বোন শৈতী আক্তার (৮)। এ সময় তারই চাচাতো বোন শারমিন খাতুন (১৪) এর সঙ্গে শৈতীর বচসা হয়। এক পর্যায়ে তার বাবা শাহাবুদ্দিন, চাচা শুকুর আলী ও চাচী পারুল বেগম গোলমালে জড়িয়ে পড়েন। চাচা শুকুর আলী পাশে থাকা একটি খড়কাটা বটি’র পেছনের কাঠের অংশ দিয়ে বাবা শাহাবুদ্দিনের মাথায় আঘাত করেন। তখন তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এবং রক্ত ঝরতে থাকে। এই অবস্থায় বাবাকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসার পর দ্রুত খুলনা মেডিকেলে নিতে বলা হয়। তারা খুলনায় নিয়ে গেলে সেখান থেকে ঢাকায় পাঠানো হয়। এরপর তিনি ঢাকায় চিকিৎসা নেন। রওশানারা বেগম জানান, তার স্বামী শাহাবুদ্দিন আহম্মেদের মাথার আঘাতটি এতোটা খারাপ ছিল যে চিকিৎসকরা একদফা অস্ত্রপচার করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। বলে দেন তিন মাস পর আবার অস্ত্রপচার করতে হবে। সেভাবে গত ১৫ দিন পূর্বে তিনি আবারো ঢাকা মেডিকেলে যান এবং মাথায় অস্ত্রপচার করেন। এই অস্ত্রপচারের দুইদিন পর বুধবার রাতে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। রওশানারা বেগম জানান, তার স্বামী আহত হবার পর গ্রামের কিছু মানুষ তাদের মামলা করতে দিচ্ছিলেন না। এদিকে স্বামীর অবস্থা ক্রমেই খারাপ হচ্ছিল। ঠিক সেই সময় ১৮ ডিসেম্বর তিনি কালীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যে মামলায় ওই দুইজনকে আসামী করা হয়। ওই মামলার প্রধান আসামীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে, এখনও তিনি কারাগারে রয়েছেন। নওশানারা বেগম আরো জানান, এই মামলা করার পর তার ও তার বাচ্চাদের উপর নানা নির্যাতন শুরু হয়। মাঠে তাদের তিন বিঘা চাষযোগ্য জমি আছে যা চাষ করতে দেওয়া হয়নি। এখনও জমি গুলো পড়ে আছে। আসামীর পক্ষের লোকজন সারাক্ষণ হুমকী দিয়েছে মামলা মিটিয়ে নিতে হবে। সামান্য বিষয় দাবি করে তারা মামলা মিটিয়ে নিতে চাপ দিচ্ছিলেন। শেষ পর্যন্ত তার স্বামী মারাই গেলেন। বুধবার রাতে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। ৫ মার্চ বৃহস্পতিবার রাত ১১ টায় তার লাশ বাড়িতে পৌছায়। সাড়ে ১১ টার দিকে পারিবারি কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে। তিনি বলেন, স্বামী চলে গেলেন এখন তার চিন্তা পরিবার নিয়ে কিভাবে বেঁচে থাকবেন। আসামীরা বড় কোনো ক্ষতি করতে পারে এই আশংকা রওশানারা বেগমের। বড় মেয়ে ফারহানা আক্তার সুমি’র বিয়ে দিয়েছেন। মেঝো মেয়ে সোনালী আক্তার (১৯) অনার্স পড়ছে। ছোট মেয়ে শৈতী আক্তার (৭) তৃতীয় শ্রেনীতে পড়ে, আর একমাত্র ছেলে সাজ্জাদ হোসেন (১৫) দশম শ্রেণীর ছাত্র। এদের পড়ালেখা কিভাবে করাবেন তাই নিয়ে চিন্তিত তিনি। এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কালীগঞ্জ থানার এসআই আবুল খায়ের জানান, আহত ব্যক্তি শাহাবুদ্দিন আহম্মেদ মারা যাওয়ায় মামলাটি হত্যা মামলায় রুপান্তর হয়েছে। প্রধান আসামী কারাগারে আছেন, অন্য আসামীকেও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। চাষাবাদ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এমন অভিযোগ তাকে কেউ দেয়নি বলে জানান। তবে বিষয়টি খোজ নিয়ে দেখবেন বলে জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা।
কলকাতায় ট্রেনের ধাক্কায় স্বামী নিহত হওয়ার পর এবার চলে গেলেন স্ত্রী
ঝিনাইদহ :: ভারতের পশি^মবঙ্গে ট্রেনের ধাক্কায় ঝিনাইদহের স্কুল শিক্ষক কবির রানা খবিরের (৫১) মৃত্যুর পর এবার চলে গেলে তার স্ত্রী শাহারা কবির (৪৫)। দুর্ঘটনায় তিনি গুরুতর আহত হয়ে কলকাতার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। রোববার দুপুরে তিনি চিকৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু বরণ করেন বলে তার আত্মীয় আবু সাঈদ জানান। জানা গেছে শুক্রবার সন্ধ্যায় কলকাতার শিয়ালদাহ স্টেশনে ট্রেনের ধাক্কায় তারা স্বামী স্ত্রী গুরুতর আহত হন। নিহত শাহারা কবির ঝিনাইদহের শৈলকুপা পৌর এলাকার চর আউশিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কবির রানার স্ত্রী। পারিবারিক সুত্রে জানা গেছে, চিকিৎসার জন্য কবির রানা গত শুক্রবার বাংলাদেশের দর্শনা স্থল বন্দর দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন। ওই দিন সন্ধ্যায় কোলকাতার শিয়ালদাহ স্টেশনে প্রচন্ড ভীড়ের মধ্যে ট্রেনে উঠতে গিয়ে ছিটকে পড়েন। এ সময় স্বামীকে বাঁচাতে গিয়ে স্ত্রী শাহারা কবিরও চলন্ত ট্রেন থেকে ঝাপ দিয়ে গুরুতর আহত হন। ট্রেনের ধাক্কায় স্বামী কবির রানা ঘটনাস্থলেই নিহত ও স্ত্রী শাহারা কবির আহত হন। কবির রানার জামাই ইসরাফিল জানান, তার শশুর কিছুদিন আগে শারীরিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে উন্নত চিকিৎসার জন্য শ্বাশুড়ির সাথে শুক্রবার ভারতে যান। এই দম্পত্তির একমাত্র সন্তান ফিরোজ আহম্মেদ সরকারের কাছে তার পিতা মাতার মৃত দেহ দ্রুত বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনার দাবী জানিয়েছেন। চর আউশিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম জানান, নিহত কবির রানা কিছুদিন পরেই অবসরে যাওয়ার কথা। স্বামী স্ত্রীর মৃত্যুর খবরে স্কুল ও শৈলকুপার চর আউশিয়া গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। নিহতদের ভাতিজা রবিউল ইসলাম সাবু জানান, সোমবার তার চাচা কবীর রানা’র লাশ ফেরত আসার কথা ছিল। এর মাঝে রোববার দুপুরে তার চাচির মৃত্যুর খবর পাওয়ায় এলকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
কালীগঞ্জ থানা পুলিশের অভিযানে বিভিন্ন মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত ৮ আসামি গ্রেফতার
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থানা পুলিশ বিভিন্ন মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত ৮ আসামিকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে ২ জন সাজাপ্রাপ্ত ৪ জন বিভিন্ন মামলার ও ২ জন মাদক মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি। রোববার ভোরে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে। দুপুরে আদালতের মাধ্যমে গ্রেফতারকৃতদের জেল-হাজতে পাঠানো হয়েছে।
কালীগঞ্জ থানার অফিসার-ইন-চার্জ (ওসি) মুহাঃ মাহফুজুর রহমান মিয়া জানান, পুলিশ ওয়ারেন্টভুক্ত আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চালায়। এ সময় উপজেলার চাঁচড়া গ্রাম থেকে শহিদুল ইসলামের ছেলে শরিফুল ইসলাম (২৯), আড়পাড়া ব্রীকফিল্ড থেকে সেকেন্দারের ছেলে নুর ইসলাম কটা (৩০), নিশ্চিন্তপুর গ্রামের জুব্বার গাজীর ছেলে আকতার গাজী (৩২), শিবনগর দাস পাড়ার পরিতোষ সরকারের ছেলে টুটুল (৩৫), মিঠাপুকুর গ্রামের শেখ সদর উদ্দীনের ছেলে এম এ খালেক (৩৪), হাসিলবাগ গ্রামের আয়ুব খানের স্ত্রী চিয়ারন বেগম (৩৬), বেথুলী গ্রামের সাহেব আলী ছেলে ইমরান (২০) ও সোনালীডাঙ্গা গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে পিকুল হোসেন (৩০) কে গ্রেফতার করে। তিনি আরো জানান, এদের মধ্যে শরিফুল ইসলাম ও নুর ইসলাম কটা সাজাপ্রাপ্ত আসামি। গ্রেফতারকৃত আসামিদের দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
কোটচাঁদপুর উপজেলা ভূমি অফিস, প্রতিষ্ঠানটি দেখার যেন কেউ নেই
ঝিনাইদহ :: কর্মকর্তা কর্মচারী শুন্যতায় ধুকে ধুকে চলছে কোটচাঁদপুর উপজেলা ভূমি অফিস। যে কারণে অফিসটিতে কাজ কর্মে চরম ধীর গতি। ফলে সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তির স্বীকার হচ্ছেন। অথচ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ এ প্রতিষ্ঠানটি দেখার কেউ নেই ! উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটিতে গত ৮মাস যাবৎ এসি ল্যান্ড নেই। একটি মাত্র পদ কানুনগো তাও রয়েছে ২০০৪ সাল থেকে শুন্য। অফিস সহকারী ও সমমানের ৭টি পদে নেই ৬ কর্মচারী। যে কারণে ভূমি ব্যবস্থাপনার সকল কাজ হ-য-ব-র-ল অবস্থায় সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ভূমি অফিসের প্রধান সহকারীকাম হিসাব রক্ষক শাহাদত হোসেন এ প্রতিবেদককে বলেন- এসি ল্যান্ড স্যার না থাকায় অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন ইউএনও নাজনিন সুলতানা স্যার। ইউএনও স্যার তার দপ্তরিক কাজে তাকে ব্যস্ত থাকতে হয় সব সময়। তবুও তিনি যথাসাধ্য চেষ্টা করেন ভূমি অফিসের কাজকর্ম সমাধা করতে। তারপরও অন্যান্য কর্মকর্তা কর্মচারীর পদ শূন্য থাকায় ভূমি ব্যবস্থাপনার সকল কাজে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। আমরা বেশী শ্রম দিয়েও নিদিষ্ট সময়ে কাজ করে দিতে না পারায় ভূক্তভোগীরা আমাদেরকে ভুল বুঝছেন। মাঝে মাঝে কেউ কেউ উচ্চ বাক্যে কথা বলছেন আমাদের সাথে। যা আমাদেরকে বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে ফেলে। খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে কোটচাঁদপুর উপজেলা ভূমি অফিস সরকারের একটি অবহেলিত ভূমি অফিস হিসাবে প্রচার আছে। ২০০২ সালের ১লা এপ্রিল এসি ল্যান্ড মোঃ সবিরুল ইসলাম অন্যত্র বদলি নিয়ে চলে যান। তার পর থেকে ২৮/ ০৯/২০১৭ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ১৫ বছরের অধিক সময় ধরে প্রতিষ্ঠানটিতে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণ। ২৮/০৯/২০১৭ সালে এসি ল্যান্ড হিসাবে যোগদান করেন রোজিনা আক্তার। তিনি মাত্র ২মাস অফিস করে ০৩/১২/২০১৭ তারিখে অন্যত্র বদলী নিয়ে চলে যান। আবারো ওই দিন অতিরিক্ত দায়িত্বে আসেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজনিন সুলতানা। প্রতিষ্ঠানটিতে ০৬/১২/২০১৭ তারিখে তাসলিমা আক্তার এসি ল্যান্ড হিসাবে যোগদান করেন। তিনি ১বছর ৬মাস দায়িত্ব পালন করলেও ৬মাস মাতৃত্বকালীন ছুটি কাটান। পরবর্তীতে তিনি ০৯/০৬/২০১৯ তারিখে পদন্নতি নিয়ে অন্যত্র বদলী হয়ে চলে যান। এরপর থেকে আবারো দীর্ঘ ৮মাসের অধিক সময় ধরে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজনিন সুলতানা। বিষয়টি জানতে বৃহস্পতিবার সরেজমিনে উপজেলা ভূমি অফিসে যায় এ প্রতিবেদক। তখন সময় বেলা ১১টা। বেশ কিছু ভোক্তভোগী দাঁড়িয়ে আছেন উপজেলা ভূমি অফিসের বারান্দাতে। তারা এসেছেন জমির নামজারিসহ জমি’র কাগজপত্রের সমস্যার সমাধান করতে। কেউ কেউ অফিসের ভিতরে অফিসের কর্মচারীদের সাথে কথা বলছেন। অফিসের বারান্দায় একটি বেঞ্চিতে মুখে হাত দিয়ে বসে থাকা মহিলাটিকে ভীষণ চিন্তিত বলে মনে হলো। নাম রেহেনা রহমান, তিনি পৌরসভার বড়বামুন্দা গ্রামের মশিয়ার রহমানের স্ত্রী। তিনি আক্ষেপ করে বলেন- বিপদ থেকে রেহায় পেতে জমি বিক্রির জন্য প্রায় তিন মাস আগে জমির নামপত্তনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়েছিলাম। অথচ আমাদেরকে গত ২তারিখে শুনানির জন্য ডাকা হয়। এখন এসেছি কবে নাগাদ নামপত্তনের কাগজ হাতে পাবো সেটি জানতে। তিনি বলেন, নামপত্তনে এত দীর্ঘ সময় লাগায় সময় অনুযায়ী জমি বিক্রি করতে পারিনী। যে কারণে ক্ষতি যা হবার হয়ে গেছে! আরেক জন রফিকুল ইসলাম বাড়ী উপজেলার দুতিয়ার কুঠি গ্রামে। তিনি বলেন-এক মাস আগে জমির নামপত্তনের জন্য কাগজপত্র জমা দিয়েছি এখনো শুনানির জন্য ডাকেনি। যে কারণে জানতে এলাম আর কতদিন সময় লাগবে। তিনি বলেন আমি গরীব মানুষ পরের জমিতে কামলা খেটে খায়। বাড়ী ৭কিলোমিটার দুরে। সেখান থেকে কাজকর্ম বন্ধ করে কয় দিন আসা যায় আপনারাই বলেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজনিন সুলতানাকে ভূমি অফিসের অতিরিক্ত দায়িত্ব নিয়ে সমস্যা হচ্ছে কি-না এবং ভূমি অফিসের কাজ কর্মে ধীর গতির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, পারছিনা কথাটি বলার সুযোগ নাই! তবে লোকবল কম হওয়ায় কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। কিছু কিছু মামলার কিছুটা সময়ও লাগে। তারপরও ঝিনাইদহের অন্যান্য উপজেলার তুলনায় আমার ভূমি অফিসে পেন্ডিং মামলা কম আছে। খুব একটা সমস্যা হচ্ছে না বলে তিনি দাবী করেন। এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শরিফুননেছা মিকি বলেন, আমার কাছে প্রায়ই সাধারণ মানুষ অভিযোগ করে থাকেন এসিল্যান্ড ও অন্যান্য কর্মকর্তা কর্মচারী না থাকায় উপজেলা ভূমি অফিসের কাজ কর্মে চরম ধীর গতি। যে কারণে তারা দিনের পর দিন ভোগান্তির স্বীকার হচ্ছেন।
ঝিনাইদহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মুজিব কর্ণার উদ্বোধন
ঝিনাইদহ :: বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী মুজিববর্ষ উপলক্ষে ঝিনাইদহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মুজিব কর্ণার উদ্বোধন করা হয়েছে। শনিবার বিকেলে পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়ে এ কর্ণারের উদ্বোধন করেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রনালয়ের স্থানীয় কমিটির সদস্য সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য খালেদা খানম। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সমিতি বোর্ডের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান, সমিতির জেনারেল ম্যানেজার ইছাহাক আলী, এজিএম আমিনুল ইসলাম, সিফাতুল্লাহসহ কর্মকর্তাগন। এসময় জানানো হয়, মুজিব কর্ণারে বঙ্গবন্ধুর কর্ম, শিক্ষা ও রাজনৈতিক জীবন নিয়ে ৭০ টি বই সংরক্ষণ করা হয়েছে। এছাড়াও বঙ্গবন্ধুর কর্মজীবনের বিভিন্ন সময়ের ধারনকৃত ছবি কর্ণারে সংরক্ষণ করা হয়েছে। মুজিব বর্ষ উপলক্ষে কর্ণারটি সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।