বৃহস্পতিবার ● ১২ মার্চ ২০২০
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » বনভোজনের বাসে ঘুমন্ত যুবকের মৃত্যু
বনভোজনের বাসে ঘুমন্ত যুবকের মৃত্যু
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: সহকর্মীদের সঙ্গে বার্ষিক বনভোজনে গিয়েছিলেন কবির। বাসে উঠে কিছুক্ষণ পরেই ঘুমিয়ে পড়েন তিনি। বনভোজনের বাস গন্তব্যে পৌঁছলে তার সহকর্মীরা ঘুম থেকে ডাকেন কবিরকে। কিন্তু কবির এর আগেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। এই ঘুম যে আর কখনও ভাঙবে না। এমনই এক হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার মোবারকগঞ্জ সুগার মিলের গ্যারেজ সেক্টরের বার্ষিক বনভোজনে। মৃত কবির হোসেন উপজেলার বাবরা গ্রামের মৃত কামাল হোসেনের ছেলে। বাসে থাকা শহিদুল ইসলাম নামে এক সহকর্মী জানান, রাত ২টায় বনভোজনের বাসটি সুগার মিল থেকে ছেড়ে যায়। গাড়ির মধ্যে কবির বেশ উৎফুল্ল ছিল। এর কিছুক্ষণ পরেই একটি সিটে হেলান দিয়ে তিনি ঘুমিয়ে পড়েন। এর পর বাঘা লালপুর এলাকায় কিছুক্ষণ দাঁড়ায় বাসটি। এ সময় তিনি কবিরের শরীরে হাত দিয়ে দেখতে পান, পুরো শরীর ঠা-া ও মুখ দিয়ে লালা বের হচ্ছে। তিনি আরও জানান, সঙ্গে সঙ্গে রাজশাহী সিটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। গত তিন বছর আগে বাবাকে হারায় কবির। এর পরের বছর গাছ থেকে পড়ে তার ছোট ভাইটি মারা যায়। এবার মাকে রেখে তিনিও চলে গেলেন অনন্তকালে।
কালীগঞ্জে তিন শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে এলাকায় চলছে হৈচৈ
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার কামালহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীকে বিভিন্নভাবে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় এলাকায় আলোচনা সমালোচনার ঝড় বয়ে চলেছে। ভুক্তভোগি শিক্ষার্থীদের পরিবার দোষিকে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ভাবে শাস্তি দাবি করেছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার দুপুরে কামাল হাট প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন দক্ষিণ পাশের্^ বসবাসরত মৃত ছামছুদ্দিনের ছেলে আনোয়ার হোসেন ওরফে আনো (৫০) নামের এক লম্পট প্রায়ই স্কুলের শিক্ষার্থীদের অশালীন আচরণ, কুরুচিপূর্ন কথাবার্তা ও কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল। এ বিষয় নিয়ে ইতিপূর্বে স্কুলের শিক্ষকবৃন্দের আলোচনার মাধ্যমে একাধিকবার তাকে সতর্ক করা হলেও গত শনিবার ৪র্থ শ্রেণীতে পড়–য়া এক শিক্ষার্থীর স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়। এবং পাশের পানের বরজের ভিতরে নেওয়ার চেষ্টা করে। সেসময় অন্য দুই শিক্ষার্থী দেখে ফেলায় তাদেরকে ভয় ভীতি প্রদর্শন করে। এক পর্যায়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষক অনিল কুমার ভদ্র এর কাছে শিক্ষার্থীরা ঘটনার কথা বলে। এ ব্যাপারে কামালহাট গ্রামের সুমন নামের এক ব্যাক্তি জানান, ইতিপূর্বে তিনি স্কুলের শিক্ষার্থী ছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় এ ধরণের ঘটনা অনেক বার ঘটিয়েছেন। স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় থাকার কারণে তার কেউ সঠিক বিচার করতে পারে না। তাই আমি প্রশাসনকে বলবো ্এমন ঘটনার সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে দৃষ্টান্ততমূলক শাস্তি হওয়া উচিত। আনোয়ার হোসেন ওরফে আনোর বাড়িতে গিয়ে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তার স্ত্রী বলেন, তিনি আত্মগোপনে আছেন। বিষয়টি মিথ্যা। আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে কামালহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অনিল কুমার ভদ্র বলেন, এটি একটি নেক্কার জনক ঘটনা। প্রত্যেকটি শিক্ষার্থীর আলাদা আলাদা অভিযোগ কেকর্ড করা হয়েছে। আমি বিষয়টি নিয়ে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তাছাড়াও স্কুলের ম্যানিজিং কমিটি ও শিক্ষার্থীসহ তাদের অভিভাবকদের সকলকে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ দেওয়া প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
সরকারী রাস্তার ইট মান্দারবাড়িয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের বাড়িতে
ঝিনাইদহ :: নতুন করে রাস্তায় ইটের (এইচ.বি.বি) কাজ হচ্ছে, তাই পুরাতন ইট উঠিয়ে বাড়িতে নিয়ে গেলেন স্থানিয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিদুল ইসলাম। এই ইট তার বাড়িতে রাখা আছে। ৩ শত মিটার গ্রামের রাস্তায় পূর্বে ছিল ইট বিছানো, আর এখন হচ্ছে এইচ.বি.বি। ঘটনাটি ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার মান্দারবাড়িয়া ইউনিয়নের শংকরহুদা গ্রামের। অবশ্য চেয়ারম্যান বলছেন, ইটগুলো হাতছাড়া না করে গ্রামের অন্য একটি রাস্তায় ব্যবহারের জন্য তিনি বাড়িতে রেখেছেন। কয়েকদিনের মধ্যে কাজ করে ফেলবেন বলে জানান। সরেজমিনে দেখা গেছে, শংকরহুদা গ্রামের মধ্যে বেশ কয়েকটি রাস্তা রয়েছে। যার কিছু আছে পিচঢালা, আবার কিছু আছে ইট বিছানো। তেমনই একটি রাস্তা শংকরহুদা রনজু বিশ্বাসের বাড়ি হতে জামাল হোসেনের বাড়ি পর্যন্ত। এই রাস্তায় দুই বছর পূর্বে স্থানিয় সরকার বিভাগের এলজিএসপি’র অর্থায়নে ৩ শত ফুট ইট বিছানো কাজ করা হয়। যাকে স্থানিয় ভাবে সোলিং বলে। সেই রাস্তায় এবার ৫২ লাখ ১১ হাজার ৪১৫ টাকা ব্যয় করে ১ হাজার মিটার এইচ.বি.বি (হেরিং) করণ কাজ করছে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস। ইতিমধ্যে তারা রাস্তাটির কাজ শুরু করেছেন। এদিকে প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস সোলিং রাস্তায় এইচ.বি.বি করছে এমন খবর পেয়ে রাস্তার পুরানো ইট তুলে নেন মান্দারবাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শফিদুল ইসলাম। তিনি শ্রমিক নিয়োগ করে সব ইট উঠিয়ে তার বাড়িতে রেখেছেন। স্থানিয়রা বলছেন, ইটগুলো কোন উদ্দেশ্যে তার বাড়িতে নিয়ে রাখা হয়েছে তা তারা বুঝতে পারছেন না। তবে সরকারি ইট এভাবে বাড়িতে রাখা যায় না। এছাড়া শেষ পর্যন্ত ইটের সঠিক হিসাবও থাকবে না বলে জানান স্থানিয়রা। এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মেহেরুন নেছা জানান, তারা প্রকল্প নিয়ে দরপত্রের মাধ্যমে ঠিকাদার নির্বাচন করে কাজ করতে গিয়েছেন। রাস্তায় যে পুরাতন ইট ছিল সেগুলো চেয়ারম্যান সরিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু ইটগুলো কোথায় রেখেছেন সেটা তার জানা নেই। আর চেয়ারম্যান শফিদুল ইসলাম জানান, ইট তিনি বাড়িতে নিয়ে রেখেছেন। এই ইট অন্য একটি রাস্তায় ব্যবহার করা হবে। ইটগুলো নষ্ট না করে তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কত ইট উঠানো হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন এই হিসাব তিনি করেননি। রাস্তায় যে ইট পেয়েছেন সেগুলো উঠিয়ে নিয়ে রেখেছেন। মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা সহকারী কমিশনার (ভুমি) সুজন সরকার জানান, রাস্তার কিছু ইট উঠিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের রাখা হয়েছে এমনটি তিনি জানতেন, কিন্তু বাড়িতে রেখেছেন এটা তার জানা নেই। বিয়ষটি তিনি খোজ নিবেন বলে জানান।
বেশী মূল্যে মাস্ক বিক্রি করায় শৈলকুপায় ও কালীগঞ্জ শহরে জরিমানা
ঝিনাইদহ :: করোনা ভাইরাসের আতংককে কাজে লাগিয়ে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অধিক মূল্যে মাস্ক বিক্রি করায় ঝিনাইদহের শৈলকুপায় ৪ কাপড় ব্যবসায়ীকে ৯০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমান আদালত। বুধবার দুপুরে শৈলকুপা বাজারে অভিযান চালিয়ে ভ্যাম্যমান আদালতে এ জরিমানা করেন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ইউএনও মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ইউএনও মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন গোপন সংবাদে তিনি জানতে পারেন শৈলকুপা বাজারে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী করোনা ভাইরাসের আতংককে কাজে লাগিয়ে অধিক দামে মাস্ক বিক্রি করছে। এ সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার দুপুরে অভিযান চালিয়ে স্কুল মার্কেটের তিসা গার্মেন্টসকে ১০ হাজার, আলম গার্মেন্টসকে ৪০ হাজার, নোহা শাড়ীঘরকে ৩০ হাজার এবং আলিম গার্মেন্টেস এর মালিককে ১০ হাজার মোট ৯০ হাজার টাকা অর্থদন্ড করা হয় ভ্রাম্যমান আদালতে। এদিকে কালীগঞ্জ থেকে শাহরিয়ার রহমান সোহাগ জানান, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে বেড়েছে মাস্কের ব্যবহার। এই মাস্ক বিক্রি বেড়ে যাওয়ায় কিছু কিছু ব্যবসায়ী অধিক মুল্যে বিক্রি করছেন। মাস্কের দাম বেশি রাখায় ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলায় দুই ব্যবসায়ীকে মোট ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমান আদালত। উপজেলার সালমান ফার্মেসীর মালিক সরোয়ার হোসেনকে ১০ হাজার টাকা ও লাবনী স্টোর খেলাঘর এর এস.এম হাবিব কে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। বুধবার বিকেলে কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুবর্ণা রাণী সাহা এ ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন। কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুবর্ণা রানী সাহা জানান, উপজেলার বিভিন্ন দোকানে মাস্ক বিক্রিতে দাম বেশি রাখার ব্যাপারে অভিযান চালানো হয়। এ সময় বিভিন্ন ব্যক্তিকে দোকানে পাঠিয়ে মুল্য যাচাই করেন। ক্রেতাদের কাছ থেকে ইচ্ছামত দাম নেওয়ায় সালমান ফার্মেসীকে ১০ হাজার ও লাবনী স্টোর খেলাঘরকে ৫ হাজার টাকা ভ্রাম্যমান আদালতে জরিমানা করা হয়।