শুক্রবার ● ২৭ মার্চ ২০২০
প্রথম পাতা » নওগাঁ » আত্রাইয়ে ঝাঁজ ছড়াচ্ছে আদা ও রসুন : কমছে পেঁয়াজের দাম
আত্রাইয়ে ঝাঁজ ছড়াচ্ছে আদা ও রসুন : কমছে পেঁয়াজের দাম
নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই (নওগাঁ) প্রতিনিধি :: নওগাঁর আত্রাইয়ে করোনা আতঙ্কে ক্রেতাদের অতিরিক্ত ক্রয়ে সব ধরনের নিত্যপণ্যের বাজার দর বাড়লেও এখন সেটা কমতে শুরু করেছে। উপজেলার খুচরা বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ নেমে এসেছে ৪০-৪৫ টাকায়। তবে আগের চড়া দামেই এখনও বিক্রি হচ্ছে চাল। নতুন করে বেড়েছে আমদানি করা আদা ও রসুনের দাম।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে জানা যায়, বাজারগুলোতে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে মান ভেদে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। কিছু দিন আগেও যা ছিল ৭৫ থেকে ৮০ টাকায়।
খুচরা পেঁয়াজ ব্যবসায়ী দেল মোহাম্মদ বলেন, গত কয়েক দিন আগে পেঁয়াজ ৮০ টাকা বিক্রি করেছি। গতকাল হাটে (পাইকারি বাজারে) পেঁয়াজ কেনা পড়েছে ৩৬ টাকা। তাই আজ ৪০ থেকে ৪৫ টাকা বিক্রি করছি। তিনি আরও বলেন, গত সপ্তাহের শেষ দিকে পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়। এর কারণ মানুষ আতঙ্ক হয়ে বেশি বেশি কিনতে থকে। যার লাগবে এক কেজি নিয়েছে ১০ কেজি। বেশি অর্ডার কাটায় পাইকাররা দাম বাড়িয়ে দিয়েছিল। এখন র্যাব, পলিশ, উপজেলা প্রসাশনসহ বিভিন্ন সরকারি সংস্থা অভিযান করছে। বাধ্য হয়ে দাম কমিয়েছে। আর পাইকারি বাজারে দাম কমায় আমরা কম দামে বিক্রি করছি।
এদিকে পেঁয়াজের দাম কমলেও এখনও বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে চাল। এক সপ্তাহ আগে চাল কেজিতে চার থেকে ছয় টাকা বাড়িয়েছিল। খুচরা বাজারে ওই বাড়তি দামেই এখনও বিক্রি হচ্ছে চল।
এ ব্যাপারে চাল ব্যবসায়ীরা বলেন, গত পরশু চাল কিনেছি দাম কমেনি। বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে। আজ মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৬ টাকা আরেকটা ৬০ টাকা, নাজিরশাইল ৫৫ থেকে ৭০ টাকা। মাঝারি মানের বিআর-২৮ জাতের চাল ৪৫ টাকা, পাইজাম বিক্রি হচ্ছে ৪৮ থেকে ৫৫ টাকা।
এদিকে নতুন করে বাজারে দাম বেড়েছে আমদানি করা আদা ও রসুনের দাম। খুচরা বাজারে আমদানি রসুন কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা। আর আদা বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা। তবে দেশি আদা-রসুনের দাম কম রয়েছে। দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে মান ভেদে ৬০ টাকা থেকে ১২০ টাকা। আর আদা বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা।
এখনও আগের বাড়তি দামে প্রতি হালি ফার্মের মুগির লাল ডিম ১০০ টাকা থেকে ১০৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা। ডাল বিক্রি আগের দামেই। মসুর ডাল ছোটদানা ১১০ থেকে ১২০ টাকা আর বড় দানা ৭০ থেকে ৮০ টাকা। মুগডাল ১২০ থেকে ১৪০ টাকা, মটর ডাল ৮০ থেকে ১০০ টাকা। অ্যাংকর বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা।
বাজার করতে ভবানীপুর এলাকার এক বাসিন্দা ওয়াজেদ আলী লিটন জানান, উপজেলা প্রশাসনসহ সরকারি সংস্থাগুলো যেভাবে পেঁয়াজের বাজারে অভিযান করে দাম কমিয়েছে। একইভাবে চালসহ নিত্যপ্রযোজনীয় পণ্যের বাজারে বেশি বেশি অভিযান করা দরকার। কারণ চালের দাম এখনও বেশি।
তিনি বলেন, যাদের টাকা আছে তারা বেশি কিনে মজুত করেছে। সুযোগে ব্যবসাযীরা দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এর মূল্য দিতে হচ্ছে আমাদের মতো স্বল্পআয়ের মানুষদের। তাই সরকারকে কঠোর হতে হবে পাশাপাশি আমাদের ভোক্তাদেরও সচেতন হতে হবে। আমরা সুযোগ না দিলে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়াতে পারবে না।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো.ছানাউল ইসলাম জানান, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও করোনা ভাইরাস সংক্রমণরোধে সতর্কতামূলক ব্যবস্থার অংশ হিসেবে নওগাঁ জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার সিদ্ধান্ত মোতাবেক নওগাঁর আত্রাই উপজেলার বিভিন্ন সাপ্তাহিক হাট বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। করোনা ভাইরাস যেহেতু ছোঁয়াচে, তাই জনসমাগম বন্ধ করার জন্য এই ব্যবস্থা। আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হওয়ার জন্য সকলকে আহ্বান জানান তিনি। এছাড়াও বিদেশ থেকে কেউ আসলে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশকে অবহিত করতে বলেন। তিনি আরো বলেন প্রতিদিন বাজার মনিটরিং অব্যাহত রয়েছে।