সোমবার ● ৩০ মার্চ ২০২০
প্রথম পাতা » ঢাকা » গণমাধ্যমে প্রণোদনা নিয়ে অনেক কথা
গণমাধ্যমে প্রণোদনা নিয়ে অনেক কথা
গণমাধ্যমে প্রণোদনা নিয়ে অনেক কথা শুরু হয়েছে। অনেকেই বলেছেন এই শিল্পে প্রণোদনা দরকার। আমি আমার ব্যক্তিগত মত প্রকাশ করেছি। এতে বলেছি প্রণোদনা এই শিল্পে দরকার । আর সেটি পাবেন সাংবাদিক কর্মচারী বন্ধুরা। মালিক বা কতৃপক্ষ নয়।
এ নিয়ে বিএফইউজে সভাপতি জনাব মোল্লা জালাল সাহেব ও লিখেছেন। তিনি বলেছেন প্রণোদনা হতে হবে সাংবাদিকদের জন্য। একই সুরে তাল মিলেয়েছেন ডিইউজে সভাপতি জনাব কুদ্দুস আফ্রাদ।
এবার আসুন মোদ্দাকথায়। তার আগে বলে নেই , সোমবার মাননীয় তথ্যমন্ত্রীর সাথে দেখা করেছেন নোয়াব , অ্যাটকো , সম্পাদক পরিষদ এবং এডিটরস গিল্ডের জায়ান্ট নেতৃবৃন্দ। শুনেছি তারা এই শিল্পের জন্য হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা দাবি করেছেন। ওহ যা বলেছিলাম : আমার সাংবাদিকতা শুরু হয় বার্তা সংস্থা ইউএনবি দিয়ে। এরপর ইত্তেফাকে কয়েকবছর কাটিয়ে যোগ দেই টাইমসগ্রুপের পত্রিকা দৈনিক সমকাল এ। টানা সাতবছর কাজ করার পর আমাকে ২০১৬ সালে চাকরি ছাড়তে বাধ্য করেন প্রয়াত সম্পাদক জনাব গোলমাল সারওয়ার। ২০১৬ সালে মার্চ মাসে আমাকে চাকরিচ্যুত করার পর ওই মাসের বেতনটুকুও প্রদান করেননি তৎকালিন ওই সম্পাদক। আর টার্মিনেট বেনিফিট বা অন্যান্য পাওনার কথা নাইবা বললাম।
ওহ একটি কথা বলে রাখি ওই পত্রিকার মালিক হলেন হামীম গ্রুপের কর্ণধার ও সংবাদপত্র মালিকদের প্রতিষ্ঠান নোয়াবের বর্তমান সভাপতি জনাব আবদুল কাদের আজাদ ওরফে একে আজাদ । একটু বলে নেই সমকালের চাকরির সময়ের বঞ্চনার কথা। ওই সময়ে চাকরি করার সময় সাত বছরে ইনক্রিমেন্ট পেয়েছিলাম মাত্র দুইবার। যদিও এটি প্রতিবছর হওয়ার কথা ছিলো। ছিলোনা নাইট এলাউন্স। ছিলোনা স্বাস্থ্যবীমার সুবিধাসহ অনেককিছুই। আরেকটি হলো ২০১৩ সালে সরকার ৭ম ওয়েজবোর্ড রোয়েদাদ ঘোষণা করলে সেটি ওই প্রতিষ্ঠানে বাস্তবায়ন করা হয় প্রায় ২১ মাস ( কম/বেশি হতে পারে ) পর। দেয়নি কোন মহার্য্ন ভাতা।
এবার আসি মূল কথায় , কয়েকমাস ঘুরাঘুরির পর আমাকে কোন পাওনা দেয়নি সমকাল কতৃপক্ষ। বিশেষ করে তৎকালিন সম্পাদক এবং মালিক বর্তমান নোয়াব সভাপতি জনাব এ কে আজাদ।
আমি পাওনা চেয়ে ব্যর্থ হয়ে আদালতের দ্বারস্থ হই। এখানেও বাধা, একবার কোর্টে হাজিরার পর বারবার সময় নেয় সমকাল কতৃপক্ষ। শেষে যখন মামলার রায়ের সময় আসে তখনই তারা মামলাটি উচ্চ আদালতে বাঘা বাঘা আইনজীবী ধরে মামলা স্থগিত করে দেয়। ব্যস , আমার অবস্থা হলো গরীবে হাইকোর্ট চিনে না এর মত। কারণ উচ্চ আদালতে যাওয়ার মতো টাকা আমার কাছে নেই।
এই নোয়াব সভাপতি যখন সরকারের কাছে প্রণোদনা দাবি করেন তখন সাংবাদিকরা কতটুকু উপকৃত হবেন তা ভাবনার বৈকি ! আপনারা বলবেন , এত কথা কেন বললাম। এটি বললাম কিছু শিক্ষিত লোকের চেহারা উন্মোচনের জন্য। এই জগতে সবাই মেরুদন্ডহীন হয়না। কিছু মানুষের প্রতিবাদ করার সাহস থাকতে হয়। আমি হয়তো সেই কয়েক সাহসীর একজন। তাই বলছি যে প্রণোদনা প্রয়োজন সাংবাদিকদের জন্য। মালিকের জন্য নয়। আমি হলফ করে বলতে পারি কয়েকটি পত্রিকা ছাড়া কোন গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানই সরকারের কোন গ্যাজেটের তোয়াক্কা করেন না। আর বেতনের কথা নাই বললাম।
চাকরি আছে , অনেকের কাছে এটাই অনেক কিছু ।
গণমাধ্যম কর্মীদের সুরক্ষায় সরকার কেন , মিডিয়া মালিকরা কি তা পারেন না। এইটুকু যোগ্যতা আমি মনে করি সকল গণমাধ্যম মালিকের আছে। যার নেই আমি মনে করি তিনি টিম পরিচালনার যোগ্যতা রাখেন না।
আরেকটি কথা , গণমাধ্যম নিঃসন্দেহে আলু-পটলের দোকান নয়। যে রোজ এনে রোজ খেতে হবে। এক/দুই মাস প্রতিষ্ঠান চালানোর যোগ্যতা ও মালিকদের থাকা উচিত বলে আমি মনে করি। সাংবাদিকদের মাথা বিক্রি করে এসব রথী- মহারথীরা কত কি করছেন তা সকলেই জানি। সাংবাদিক-কর্মচারী ঠকাচ্ছেন প্রতিনিয়ত।এবার কোটি কোটি টাকা পেলে তো আপনারা সরকারকেই গিলে ফেলবেন ! ( যদিও এই চেষ্টা করে অনেক মালিক সম্পাদক ব্যর্থ হয়েছেন ) ধন্যবাদ সকলকে , এই রচনা পড়ার জন্য ।
ডিইউজে’র যুগ্ন সম্পাদক খায়রুল আলমের ফেসবুক থেকে নেওয়া। সৌজন্য : channelbd.tv