সোমবার ● ৩০ মার্চ ২০২০
প্রথম পাতা » কক্সবাজার » উখিয়ায় লকডাউনকালীন ক্রিকেট খেলা বন্ধের প্রতিবাদ করায় সন্ত্রাসী হামলায় আহত-৩
উখিয়ায় লকডাউনকালীন ক্রিকেট খেলা বন্ধের প্রতিবাদ করায় সন্ত্রাসী হামলায় আহত-৩
উখিয়া প্রতিনিধি :: কক্সবাজারের উখিয়ায় করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে লকডাউনের সময় ক্রিকেট খেলা বন্ধ করতে বলায় তিন যুবককে চুরিকাঘাত করে রক্তাক্ত করেছে সন্ত্রাসীরা।
২৯ মার্চ রাত ৮টার দিকে উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়নের সোনাইছড়ি গ্রামের উত্তর পাড়া এলাকায় এঘটনা ঘটে। ঘটনায় আপন সহোদর সহ তিন জন গুরুতর আহত হয়েছে। আহতরা হলো, সোনাইছড়ি গ্রামের ছৈয়দ আলমের পুত্র দেলোয়ার হোসাইন (৩০), মোবারক হোসাইন (২৪) ও তারেক হোসাইন (১৭) আহতদের মধ্যে মোবারক হোসাইনের অবস্থা আশংকাজনক বলে তার পরিবার নিশ্চিত করেছে।
আহতদের এলাকাবাসী উদ্ধার করে উখিয়া হাসপাতালে নিয়ে গেলে অবস্থা আশংকাজনক দেখে কর্তব্যরত চিকিৎসক কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে।
এলাকাবসী সূত্রে জানা গেছে সোনাইছড়ি গ্রামের আলি হোসেন এর পুত্র নুরুল আবছার প্রকাশ (সন্ত্রাসী নান্নু) করোনার এই মহামারিতে সোনাইছড়ি খেলার মাঠে একটি ক্রিকেট টুর্নামেন্টের আয়োজন করে। এই মহামারি অবস্থার মধ্যে ক্রিকেট খেলা বন্ধ রাখার জন্য একই এলাকার মোবারক হোসাইন অনুরোধ করলে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়।খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এক সময় নুরুল আবছার নান্নু হুমকি দিয়ে ফেইস বুকে স্ট্যাটাস দেয়। পরে মোবারক হোসেন খেলার বন্ধের দাবী জানিয়ে উখিয়া থানাকে অবহিত করে। উখিয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে তৎক্ষনাৎ পদক্ষেপ নিয়ে খেলা বন্ধ করে দেয় বলে আহত দেলোয়ার জানায়।
তিনি জানান, আলী হোসেনের পুত্র নুরুল আবছার নান্নু, আহমদ শরিফ ও পিতা আলী হোসেন সহ সংঘবদ্ধ হয়ে সন্ত্রাসী কায়দায় দা, লোহার রড ও লোহার চেইন দিয়ে এলো পাতাড়ি হামলা চালিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে বলে অভিযোগ করেন।
এ বিষয়ে জালিয়াপালং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল আমিন চৌধুরী’র কাছে জানতে চাইলে তিনি ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।
এ রিপোর্ট লেখাকালীন উখিয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে সংযোগ না পাওয়ায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে উক্ত ঘটনায় জড়িতের বিরুদ্ধে মামলার প্রক্রিয়া চলছে বলে সুত্রে জানা গেছে।
করোনা সচেতনতায় উখিয়াবাসীর উদ্দেশ্যে ওসি মরজিনা’র বার্তা
পলাশ বড়ুয়া, উখিয়া :: কক্সবাজারের উখিয়া থানার নবাগত অফিসার ইনচার্জ মরজিনা আকতার। তিনি ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ সালে উখিয়া যোগদানের পরপর নানা গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল। উখিয়ার স্থানীয় ৩ লাখের মতো মানুষ, মিয়ানমার থেকে নির্যাতনের শিকার হয়ে পালিয়ে আসা ১০ লাখের বেশি বিশাল রোহিঙ্গা জনগোষ্টি এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতি, মাদক ও অপরাধ নির্মূল করে উখিয়ার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পারবে তো ? এ ধরণরে নানান মানুষের নানা প্রশ্ন।
আবার অনেকে বলতে শোনা গেছে বিশ্ববাসীকে বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নের কথা জানাতে সরকারের উপর মহলের সিদ্ধান্তে তাঁকে উখিয়া থানায় পদায়নের কথা। কেউ কেউ বলেছেন একজন নারী ওসি হিসেবে মরজিনা আকতার এতো বড় দায়িত্ব সামলাতে পারবেন তো ?
এদিকে আবার হঠাৎ পুরো বিশ্বে করোনা ভাইরাসের যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল। ফলে মহামারি খ্যাত এই ভাইরাস সংক্রমণ রোধে উখিয়ায় লকডাউনের আওতায় আনা হয়। তিনি যোগদানের পর থেকে এখনো পর্যন্ত উখিয়ায় হত্যাকান্ড কিংবা আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির ঘটনা ঘটেনি। উখিয়াবাসীর সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাত-বিরাতে সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে টহল জোরদার করেছে। এছাড়াও তিনি সাধারণ মানুষের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করতে নিজে মাইক হাতে প্রচারণা, স্টেশন ও বাজার গুলোতে পাইপ হাতে জীবাণুনাশক পানি ছিটানোর কাজের সাথে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমানে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। যা নিচে হুবহু তুলে ধরা হলো :-
প্রিয় উখিয়াবাসী,
আসসালামু আলাইকুম।
# আবারো আপনাদের উদ্দেশ্যে অবশ্য করণীয় কিছু বিষয় নিয়ে হাজির হলামঃ
# আপনাদের সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, আজ পর্যন্ত কোভিড-১৯ কিংবা করোনা ভাইরাসের কোন প্রতিষেধক অথবা কোন ঔষধ আবিষ্কার হয় নাই।
# তাই করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকানোই হবে আমাদের প্রধান কাজ।
# মাননীয় প্রধানমন্ত্রী করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধ কল্পে একে যুদ্ধ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন।
# আর এই যুদ্ধে জয় লাভের প্রধানতম শর্ত হচ্ছে, নিজ বাসা-বাড়ি কিংবা ঘরে অবস্থান করা।
#নিজে সচেতন হয়ে অন্যকে সচেতন করে তুলতে হবে।
# নিজ এলাকা, গ্রাম, পাড়া-প্রতিবেশিদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে।
# সর্বদা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে । #বাসা-বাড়ি, মার্কেট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের আশপাশ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে
# ঘন ঘন সাবান/হ্যান্ড স্যানিটাইজার/হ্যান্ড ওয়াশ ইত্যাদি দিয়ে কম্পক্ষে ২০ সেকেন্ড হাত পরিস্কার করে ধুতে হবে।
# কারণ অপরিস্কার হাতে চোখ-মুখ-নাক স্পর্শ করা যাবে না।
# অবশ্যই সামাজিক দূরত্ব মেনে পরস্পরের মধ্যে তিন ফুট বা দুই হাত দূরত্ব মেনে চলাচল করতে হবে।
# মুখে মাস্ক, হ্যান্ডগ¬াভস ও সম্ভব হলে সানগ¬াস ব্যবহার করতে হবে।
# যতটা সম্ভব ফুল¯ি¬ভ কাপড়,শার্ট পরিধান করে বাইরের প্রয়োজন সেরে নিন!
# ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কিংবা অফিস- দোকানের সামনে লাল বা অন্য যে কোন রঙ ব্যবহার করে তিন ফুট বা দুই হাতের দূরত্ব নিশ্চিত করতে হবে।
# জরুরী প্রয়োজন ব্যতীত বাসা-বাড়ির বাইরে আসা পরিহার করতে হবে। অর্থাৎ অযথা বাইরে ঘোরাঘুরি করবেন না!
# ঘন ঘন পানি ও ফলের রস পান করে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে হবে।
# জনসমাগম ও ভীড় এড়িয়ে চলতে হবে।
# অপরিচিত , প্রবাসী কিংবা ঢাকা ভ্রমণ কারীদের সঙ্গ পরিহার করে চলতে হবে।
# ভ্রমণ ইতিহাস আছে এমন ব্যক্তি গণকে অবশ্যই কমপক্ষে ১৪/১৫ দিন হোম কোয়ারেন্টাইন থাকতে হবে।
# পরিবারের অন্য সদস্যগণ অবশ্যই দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিবেন এবং সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিবেন।
# প্রতিদিন আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আপনাদের সচেতন ও সতর্ক করার লক্ষ্যে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নিমিত্তে আপনাদের পাড়ায় -পাড়ায়, মহল¬ায়, এলাকায়, বাজার-ঘাট সর্বত্রই প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি।
#আপনারা যদি এতটুকু সচেতন হোন এবং আমাদের সহযোগিতা করেন তাতেই আমাদের করোনা প্রতিরোধে সফলতা মনে করবো।
#সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে আপনারাও এই যুদ্ধে নিজের জীবন ও মানুষের জীবন বাঁচাতে ভুমিকা রাখতে পারেন।
#সরকারি ঘোষণা ও নিয়ম মেনে চলা প্রত্যেক নাগরিকেরই কর্তব্য।
#আপনাদের সকলের সুস্থতা ও নিরাপদ জীবনই — আমাদের কাম্য।
#আসুন সবাই পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকিকরোনা ভাইরাস মুক্ত সুস্থ সুন্দর জীবন গড়ি।
#কক্সবাজার পুলিশ প্রশাসনের পক্ষে উখিয়া থানা পুলিশ সর্বদাই আপনার/আপনাদের সাথে আছি।
# যে কোন প্রয়োজনে ০১৮৪০-১১৮২১১ (ডিউটি অফিসার) কিংবা ০১৭১৩-৩৭৩৬৬৫ (ওসি)এই নম্বর গুলোতে যোগাযোগ করতে বলেছেন ওসি মরজিনা আকতার।