সোমবার ● ৩০ মার্চ ২০২০
প্রথম পাতা » করোনা আপডেট » করোনা আতংকে গাইবান্ধা জেলা হাসপাতাল রোগী শূন্য
করোনা আতংকে গাইবান্ধা জেলা হাসপাতাল রোগী শূন্য
সাইফুল মিলন, গাইবান্ধা :: গাইবান্ধা জেলা শহরের ২০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালসহ উপজেলা সদরের স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতে চিকিৎসার সুযোগ থাকলেও করোনা আতংকে চিকিৎসা নিতে আগ্রহী হচ্ছেন না দরিদ্র রোগীরা।
সোমবার গাইবান্ধা জেলা হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, আগে যেখানে হাসপাতালের সিট পাওয়া তো দুরের কথা, মেঝে এবং করিডরেও রোগী ভর্তি করে চিকিৎসা দিতে হতো হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোতেও ছিল একই অবস্থা। কিন্তু করোনা ভাইরাস আতংকে হাসপাতালে দেখা গেল ভিন্ন চিত্র। করিডর মেঝে তো দুরের কথা প্রত্যেকটি কক্ষে এখন সিটগুলোও শূন্য পড়ে আছে। শুধু মাত্র ২/১ টি কক্ষে কিছু রোগী ভর্তিকৃত দেখা যায়। এছাড়া আউটডোরে কোন রোগীর সন্ধান পাওয়া যায়নি। অথচ কিছুদিন আগেও লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে রোগীদের গাইবান্ধা জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে। তবে আউটডোরে এবং এমার্জেন্সিতে শুধুমাত্র দু’জন চিকিৎসককে উপস্থিত থেকে চিকিৎসা দিতে দেখা গেছে। এছাড়া ওয়ার্ডে ভর্তিকৃত রোগীদের সেবায় ২ নার্স ও ১ জন আয়াকে কর্মরত দেখা গেছে। তবে আউটডোরে রোগীর উপস্থিতি ২ থেকে ৩ জন।
করোনা ভাইরাস আতংকে গাইবান্ধায় অন্যান্য অসুখে আক্রান্ত রোগীরা চিকিৎসার সুযোগ পাচ্ছে না। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা করোনা ভাইরাসের প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার সংকটের অজুহাতে আসছেন না। এছাড়া কোন চিকিৎসক প্রাইভেট চেম্বারে আগে যেমন চিকিৎসা দিতেন এখন প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার অজুহাতে চিকিৎসা প্রদান করছেন না।
এতে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ, গাইবান্ধা সদর, সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলার ২০টি ইউনিয়নের ৬৫টি চরাঞ্চলসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলের দরিদ্র মানুষেরা ঋতু পরিবর্তনের এই সময়টিতে সর্দি, জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট, হাপানি, হৃদরোগসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত রোগীরা চরম বিপাকে পড়েছে।
এব্যাপারে সিভিল সার্জন ডাঃ এবিএম আবু হানিফ বলেন, করোনা ভাইরাস আতঙ্কে হাসপাতালে সাধারণত এখন রোগী চিকিৎসা নিতে এবং ভর্তি হতে আসছে অপেক্ষাকৃত কম। তবে রোগীরা যাতে চিকিৎসা নিতে আসে সেজন্য জেলা ও উপজেলা হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসকদের উপস্থিতি এবং সেবা নিশ্চিত করার বিষয়টির উপর সর্বাধিক গুরুত্ব আরোপ করা হচ্ছে। সেজন্য তিনি যে কোন রোগে আক্রান্ত রোগীদের জরুরী চিকিৎসা সহায়তা নিতে জেলা ও উপজেলা হাসপাতালগুলোতে আসার জন্য আহবান জানান।
পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতায় গাইবান্ধা পৌরসভার ব্যাপক তৎপরতা
গাইবান্ধা :: করোনা ভাইরাস আতংকে সচেতনতা সৃষ্টি ও পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতায় গাইবান্ধা পৌরসভার মেয়রের নেতৃত্বে কাউন্সিলররা ব্যাপক কর্মতৎপরতা চালাচ্ছেন।
গাইবান্ধা পৌর মেয়র অ্যাড. শাহ মাসুদ জাহাঙ্গীর কবীর মিলন জানান, গাইবান্ধা জেলা শহরসহ পৌর এলাকায় করোনা ভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহে যে সমস্ত রোগীদের হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে তাদের প্রতিটি বাড়িতে প্রয়োজনীয় খাবার, ওষুধপত্র প্রতিদিন নিয়মিত সরবরাহ করা হচ্ছে। এছাড়া জীবানু নাশক মিশ্রিত পানি প্রতিদিন গাইবান্ধা শহরের সড়কগুলোতে ছিটানো হচ্ছে। যাতে পৌর এলাকার সড়কগুলো ধুলাবালি এবং জীবানু মুক্ত থাকে। এছাড়া প্রতিদিন ময়লা-আবর্জনায় পৌরসভার কর্মীরা জীবানুনাশক ¯েপ্র করছেন। তদুপরি গাইবান্ধা পৌরসভার তত্ত্বাবধানে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা জীবানুনাশক পানি দিয়ে পৌর এলাকার আবর্জনা, সড়কসহ বিভিন্ন এলাকায় ¯েপ্র করছে।
এছাড়াও পৌরসভার পক্ষ থেকে শ্রমজীবি ও কৃষিজীবি কর্মহীন দরিদ্র মানুষদের খাদ্য এবং আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। তদুপরি পরিবেশ দূষণ ও করোনা ভাইরাস সংক্রামণ প্রতিরোধে ইতোমধ্যে গাইবান্ধা পৌর পার্কটি লক ডাউন করা হয়েছে। সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রতিদিন পৌরসভার পক্ষ থেকে মাইকিং এবং লিফলেট বিতরণ করে জনগণকে করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় সচেতন করা হচ্ছে বলেও পৌর মেয়র জানান।