মঙ্গলবার ● ৩১ মার্চ ২০২০
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » করোনাভাইরাস : মানবসেবায় হলো পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ধর্ম
করোনাভাইরাস : মানবসেবায় হলো পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ধর্ম
অর্ণব মল্লিক, কাপ্তাই প্রতিনিধি :: অভিশপ্ত করোনাভাইরাস কেবল মাত্র পৃথিবীকে অসহায় করে তুলেনি, অসহায় আজ পৃথিবীতে থাকা দুইমুঠো অন্নের জন্য খেটে খাওয়া হতদরিদ্র মানুষগুলো। করোনার প্রকোপে বন্ধ হয়ে গেছে সেইসব মানুষগুলোর আয়রোজগারের পথ। হয়তো তারা আজ কিভাবে পরিবার চালাবে সেই চিন্তায় রাতের ঘুমটুকু হারিয়ে ফেলেছে। এখনই সময় এসেছে সমাজের বিত্তবান মানুষ গুলোকে জাতি ধর্ম,বর্ণ নির্বিশেষে হতদরিদ্র মানুষগুলোর পাশে দাঁড়ানোর।
যখন দেশে যখন করোনাভাইরাস সংকট মোকাবেলায় সমস্ত কিছু বন্ধ হয়ে গেছে, থমকে গেছে জনজীবন, নিন্ম আয়ের মানুষের চলা মুশকিল হয়ে পড়েছে ঠিক সেই মূহুর্তে কাপ্তাই উপজেলার ২ নং রাইখালী ইউনিয়নের রাইখালী বাজারের বাসিন্দা উচিমং মারমা এবং তাঁর স্ত্রী উমাচিং মারমা এগিয়ে আসলেন আত্মমানবতার সেবায়।
আজ মঙ্গলবার ৩১ মার্চ সকালে এই পরিবারের উদ্যোগে রাইখালী ইউনিয়নের জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে ১১০ টি পরিবারের হাতে তুলে দিলেন পরিবার প্রতি ১০ কেজি চাল, আধা কেজি করে ডাল, তেল, লবন এবং একটি করে সাবান। উচিমং মারমা ও তার পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত থেকে এই অসহায় মানুষগুলোকে তুলে দেন এই সব ত্রান সামগ্রী।
রাইখালী ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এনামুল হক তাদের এই উদ্যোগের প্রশংসা করে জানান, সমাজের ধনী শ্রেনীর লোকজন এইভাবে এগিয়ে আসলে সমাজের খেটে খাওয়া মানুষগুলো এই চরম সংকটে না খেয়ে থাকবে না।
মানবেতর জীবন পালন করছে কাপ্তাইের সিএনজি ড্রাইভারা
কাপ্তাই :: কাপ্তাই উপজেলার প্রায় ৯০০ সিএনজি চালক আজ বেকার হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। মহামারি করোনা ভাইরাসের প্রকোপে থেমে পড়েছে সবকিছু। গত ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে সব ধরনের গণপরিবহন, শুধু তাই নয় সরকারি ও বেসরকারী সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সরকারি নির্দেশ মোতাবেক করোনা প্রতিরোধে সবাইকে নিজ নিজ বাসস্থানে থাকার জন্য বলা হয়েছে। এমতা অবস্থায় রাস্তায় কোন যাত্রী না থাকায় এবং গাড়ি চালাতে না পারায় মানবেতর জীবনযাপন করছে কাপ্তাই উপজেলার সিএনজি চালকেরা।
কাপ্তাইয়ের বড়ইছড়ি - ঘাগড়া সড়কে দীর্ঘদিন ধরে গাড়ী চালিয়ে পরিবার চালান ষাটোর্ধ বয়সী সিএনজি চালক উষা মারমা, মো. ইব্রাহিম। বর্তমান পরিস্হিতিতে কেমন চলছে এই প্রশ্ন করা হলে, তারা বলেন খুব অভাব অনাটনে এই দিনগুলো চলছে। দেশের বর্তমান অবস্থায় গাড়ি বের করতে না পারায় অনেকে এখন ঘরবন্দী। আজ মঙ্গলবার ৩১ মার্চ সকালে কাপ্তাই উপজেলা সদর সিএনজি স্টেশনে কথা হয় চালক মো. বাবুল, মো. কাদের ও সুইলাচিং মারমার সাথে। তারা সকলে জানান, তারা কেউ সরকারি বরাদ্দ পাই নাই। কেউ খবর রাখেনা তাদের এবং তাদের পরিবারের।
রাঙামাটি জেলা অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন বড়ইছড়ি শাখার সভাপতি মো. আমির হোসেন সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে জানান, তাদের সমিতির আওতায় এই মুহুর্তে সকল সিএনজি চালকরা বেকার হয়ে বসে আছে, সংগঠনের কল্যান ফান্ড না থাকায় কাউকে সহায়তা করতে পারছি না, তাই সকলকে সরকারি সহায়তা প্রদানের জন্য প্রশাসনের নিকট আকুল আবেদন জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশ্রাফ আহমেদ রাসেল এর দৃষ্টি আর্কষণ করা হলে তিনি সিএইচটি মিডিয়া প্রতিনিধিকে জানান, এই মূহুর্তে কোন অসহায় গরীব সিএনজি, ভ্যান এবং রিক্সা চালক সরকারি সাহায্য হতে বঞ্চিত হবেন না, সকলের তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। সবাইকে সহযোগীতা করা হবে বলে তিনি আশস্ত করেন।