বুধবার ● ১ এপ্রিল ২০২০
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে সাধারণ জনগণের পাশে ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার
করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে সাধারণ জনগণের পাশে ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার
জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: বিশ্বজুড়ে ভয়াবহ আকারে আঘাত করেছে ভয়ংকর করোনা ভাইরাস।বিধংসী প্রাণসংহারকারী করোনা ভাইরাস যখন তার অঘোষিত দাপট প্রদর্শন করে চলেছে দুনিয়া ব্যাপী, বাংলাদেশে করোনার প্রভাবে কার্যকত পুরো দেশ ২৬মার্চ থেকে লকডাউন রয়েছে। ঠিক তখনই এই প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে চলমান যুদ্ধে সাধারণ জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছেন আর্ত-মানবতার সেবায় মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান পিপিএম। তিনি প্রমাণ করলেন দেশের ক্রান্তিলগ্নে, মানুষের দুঃসময়ে মানুষের পাশে এসে দাঁড়ানোই হলো প্রকৃত মানুষের সেবা তথা পুলিশ বিভাগের দ্বায়িত্ব ও কর্তব্য। পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান পিপিএম এর নেতৃত্বে মঙ্গলবার বিকালে শহরের চুয়াডাঙ্গা বাসষ্ট্যান্ড, মতলুবুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে, উয়াজির আলী হাই স্কুল মাঠেসহ পৌরসভার বিভিন্ন স্থানে জেলা পুলিশের উদ্যোগে জেলার হতদরিদ্র ভ্যান, রিকসা চালক, দিনমজুর-শ্রমজীবি মানুষদের মাঝে খাদ্য সহায়তা হিসেবে চাল, ডাল, ভোজ্য তেল, আলু,মাস্ক,সাবান, স্যাভলন, হ্যান্ড স্যানিটাইজার,সহ ভাসমান মানুষের মাঝে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সহ খাদ্য সামগ্রী বিতরন করা হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিলু মিয়া বিশ্বাস, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক আল মেহেদী, সহকারী পুলিশ সুপার (শৈলকুপা-হরিণাকুন্ডু) সার্কেল আরিফুল ইসলাম,সদর থানার ওসিসহ পুলিশের কর্মকর্তাগন। জেলার অল্প আয়ের খেটেখাওয়া মানুষেরা পড়েছেন অনেকটাই বিপদে, এরই মধ্যে অনেকের আয়ের পথ বন্ধ হয়েছে। ভ্যান, রিক্সা চালক দিনমজুর যৎসামান্য আয় করা মানুষ গুলো পরিবারের সদস্যদের দু’বেলা খাবার যোগানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে সেই অসহায় মানুষদের পাশে দাড়ালেন ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান। দরিদ্র ও দিনমজুরদের পরিবারের ঘরে ঘরে পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় চাল,ডাল,তেল,আলু সহ নিত্যপন্য প্রয়োজনীয় জিনিষপত্র পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন তিনি। পুলিশ সুপার হাসানজ্জামান এর এমন কর্মকান্ডকে সাধারণ মানুষ অতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় গ্রহণ করেছেন । সদর উপজেলার গান্না ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন মালিতা তার অনুভূতি জানাতে গিয়ে বলেন, “আমাদের জেলার পুলিশ সুপার এমনই। এ জেলার অসহায় সাধারণের জন্য তিনি সব সময় পাশে দাঁড়ান। চেয়ারম্যান আরো বলেন, “আল্লাহ আমাদের পুলিশ সুপার স্যারকে দীর্ঘজিবী করুন ।দেশের জাতীয় দুর্যোগে আপনার এই উদারতা ঝিনাইদহবাসী কৃতজ্ঞতা চিত্তে স্মরণ রাখবে। মনবতায় বেচে থাক হাজারও পুলিশ সুপার মোঃ হাসানুজ্জামান পিপিএম”। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামান পিপিএম বলেন, করোনাভাইরাস মহামারিতে বিশ্ব থমকে গেছে। যার প্রভাব পড়েছে নি¤œ আয়ের দরিদ্র মানুষের ওপর। তাদের আয় বন্ধ হয়ে গেছে। পুলিশ সুপার এ জেলার দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়াতে সমাজের বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান জানান। এই সংকটে বিত্তবানদের দরিদ্র মানুষদের সহযোগিতা করার জন্য আহ্বান করেন। পুলিশ সুপার বলেন, সারাদেশে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকার অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি সকলের জন্য মঙ্গলজনক কিন্তু অনেক নি¤œআয়ের মানুষ সাময়িক সময়ের জন্য সমস্যায় পড়েছেন। তিনি বলেন, আমি এ জেলাতে যতদিন দ্বায়িত্বে থাকবো ততদিন পর্যন্ত অসহায় মানুষের সেবা দিয়ে যাব। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শেষ না হওয়া ও জেলার সার্বিক পরিস্থিতি আবার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে না আসা পর্যন্ত জেলা পুলিশ বিভাগের এ ধরনের উদ্দ্যোগ অব্যাহত থাকবে। মহান আল্লাহ তাআলা আমার শেষ নিশ্বাস থাকা পর্যন্ত যেন ঝিনাইদহ বাসির সেবা করে যাওয়ার তৌফিক দান করেন। পুলিশ সুপার জনজীবন সচল রাখতে চিকিৎসা, ওষুধ, নিত্যপণ্য, খাদ্যদ্রব্য, বিদ্যুৎ, ব্যাংকিং ও মোবাইল ফোনসহ আবশ্যক সকল জরুরী সেবার সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তি ও যানবাহনের অবাধ চলাচল নিশ্চিত করনে এবং দায়িত্ব পালনকালে সাধারণ জনগণের সাথে বিনয়ী, সহিষ্ণু ও পেশাদার আচরণ বজায় রাখার জন্য অধীনস্থ সকলদের আহবান জানান।
কালীগঞ্জে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা নিয়ে সংঘর্ষে আহত ৪
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার মধুগঞ্জ বাজারের ঢাকালেপাড়ায় হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা নিয়ে সংঘর্ষে নারীসহ অন্তত ৪ জন আহত হয়েছেন। বুধবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। আহতরা হলেন, গৃহবধু রাজিয়া সুলতানা, আকাশ, নয়ন হোসেন, তার স্ত্রী রানী খাতুন। আহতরা সবাই কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মধুগঞ্জ বাজারের ঢাকালেপাড়া এলাকায় গৃহবধু রাজিয়া সুলতানার মেয়ে-জামাই কয়েকদিন আগে ঢাকা থেকে এসেছে। এর আগে এলাকাবাসী তাদের বাড়ি থেকে বের না হওয়ার অনুরোধ করেন। কিন্তু তারা বাইরে ঘোরাঘুরি করতে থাকেন। আজ বুধবার সকালে গৃহবধু রাজিয়াকে তাদের মেয়ে ও জামাইকে বাইরে বের না হতে বলেন প্রতিবেশী মহিলা তাসলিমা বেগম। নিষেধ করতেই তাসলিমা বেগমকে মারধর করে রাজিয়া ও রানী খাতুন। মারধরের দৃশ্য তাসলিমা বেগমের ছেলে ইমরান দেখার পর এগিয়ে এলে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এ সময় গৃহবধু রাজিয়ার মাথায় আঘাত পান। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। কালীগঞ্জ থানার ওসি মুহা: মাহফুজুর রহমান মিয়া জানান, খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিত নিয়ন্ত্রনে আছে।