শুক্রবার ● ৩ এপ্রিল ২০২০
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » নবীগঞ্জে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে সাদা রঙের প্রলেপ দিচ্ছে সেনাবাহিনী
নবীগঞ্জে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতে সাদা রঙের প্রলেপ দিচ্ছে সেনাবাহিনী
উত্তম কুমার পাল হিমেল,নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি :: প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারের সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। নবীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের সমন্বয়ে প্রতিদিনই উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সামাজিক দূরত্ব ও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জনগণকে উৎসাহিত করছেন সেনাবাহিনীর লোকজন। পাশাপাশি তারা বিদেশফেরতদের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনের বিষয়টিও পর্যবেক্ষণ করছে। এতে সরকারী নির্দেশ অমান্য করলে ভ্রাম্যমান আদালতও পরিচালনা করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
আজ শুক্রবার সকাল থেকে উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি),নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুমাইয়া মমিন ও সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন এ.এস.এম শিহাবুজ্জামান শিহাবের সমন্বয়ে উপজেলার দেবপাড়া, গোপলারবাজার, সদরঘাট, গজনাইপুর জনতার বাজার, পৌর শহর, শিবপাশাসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালানো হয়।
এ সময় সেনা সদস্যরা ঔষধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন দোকানের সামনে দূরত্ব বজায় রেখে কেনাকাটা করতে রং দিয়ে দাঁড়ানোর জায়গা চিহ্নিত করে দেন।
বাজারের মুদির দোকান, শাক-সবজি ও মাছ-মাংসের দোকানসহ ওষুধের দোকানে ক্রেতারা কিভাবে দাঁড়াবেন, কতফুট দূরত্বে দাঁড়াবেন, কিভাবে পণ্য কিনবেন তার নির্দেশনাও দেন। পরে সেনাবাহিনীর চিহ্নিত করে দেয়া জায়গায় দাঁড়িয়ে প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করেন ক্রেতারা।
সেনা সদস্যরা সামাজিক দূরত্ব বজায় ও সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক বাজারের ব্যবসায়ীদের সতর্ক করে দেন। প্রতি দোকানে একাধিক ক্রেতা যাতে এক সাথে ঢুকতে না পারে সে ব্যাপারেও নির্দেশনা প্রদান করেন।
এদিকে, সরকারী নির্দেশ অমান্য করে দোকান খোলা রাখায় ৩ টি দোকানের মালিককে ৬ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুমাইয়া মমিন।
নবীগঞ্জে সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনায় মামলা, গ্রেফতার-১
নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) :: নবীগঞ্জে তিন সাংবাদিককে মারধরের ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান মহিবুর রহমান হারুনকে প্রধান আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে সাংবাদিক মুজিবুর রহমান বাদি হয়ে এ মামলা দায়ের করেন। মামলায় মোট ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে রাতেই অভিযান চালিয়ে মামলার ৬ নং আসামী অরবিট হসপিটালের ম্যানাজার খালেদ আহমেদ নামের এক হামলাকারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এর আগে একাধিক স্থানে অভিযান চালিয়েও প্রধান আসামী মহিবুর রহমান হারুনকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
উল্লেখ্য, আউশকান্দি ইউনিয়নে নিন্ম আয়ের মানুষদের ১০ কেজি করে চাল দেওয়ার কথা থাকলেও ইউপি চেয়ারম্যান তাদের দেন ৫ কেজি করে। এ নিয়ে গত ৩০ মার্চ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ‘আসুন অসহায় দিনমজুরদের মনের কথা শুনি’ শিরোনামে এক লাইভে সাধারণ মানুষের বক্তব্যসহ অনিয়মের বিষয়টি তুলে ধরেন সাংবাদিক সুলতান।
স্থানীয়রা বলেন, এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত বুধবার বিকেলে ২০/২৫ জন সন্ত্রাসী নিয়ে দেশীয় অস্ত্র সহকারে আউশকান্দি বাজারে শাহ সুলতান আহমেদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়। এসময় ইউপি চেয়ারম্যান মুহিবুর রহমান হারুন নিজেই ক্রিকেট খেলার ব্যাট দিয়ে পিটিয়ে আহত করেন সুলতানকে। এ খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করতে গেলে দৈনিক আমার সংবাদের প্রতিনিধি মুজিবুর রহমান ও চ্যানেল এস এর প্রতিনিধি বুলবুল আহমেদকেও মারধর করে সন্ত্রাসীরা। পরে স্থানীয় লোকজন শাহ সুলতানকে উদ্ধার করে আশঙ্কাজনক অবস্থায় নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।
এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২ টার দিকে সাংবাদিক মুজিবুর রহমান বাদী হয়ে নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুহিবুর রহমান হারুনকে প্রধান আসামি করে ২৫ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেন। এরই প্রেক্ষিতে নবীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ মিনাজপুর গ্রামে ঝটিকা অভিযান চালায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে প্রধান আসামী হারুন পালিয়ে গেলেও পরে অরবিট হসপিটালের ম্যানাজার, চাল চোর চক্রের অন্যতম সদস্য খালেদ মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়।
মামলা ও গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আজিজুর রহমান বলেন, বাকি আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।