শুক্রবার ● ৩ এপ্রিল ২০২০
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম » চট্টগ্রামে প্রথমবারের মত করোনাভাইরাসের হানা : রোগীর বাড়ি লকডাউন
চট্টগ্রামে প্রথমবারের মত করোনাভাইরাসের হানা : রোগীর বাড়ি লকডাউন
রাউজান প্রতিনিধি :: চট্টগ্রামে নমুনা পরীক্ষায় একজনের দেহে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্ব মিলেছে। আজ শুক্রবার (৩ এপ্রিল) চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার ফৌজদারহাটে ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকসাস ডিজিজেজ- বিআইটিআইডিতে নমুনা পরীক্ষায় করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে।
চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন শেখ ফজলে রাব্বি আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রামে প্রথমবারের মত কোন রোগীর দেহে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, আক্রান্ত ওই রোগী পুরুষ। বয়স ৬৭ বছর। তার বিদেশ থেকে আসা বা বিদেশী কারো সংস্পর্শে এসেছিলেন কিনা এই প্রশ্নে তিনি বলেন, করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ শুরু করেছি। তিনি কীভাবে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন তা আমরা বের করার চেষ্টা করছি।
করোনা মোকাবিলায় গঠিত স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) বিভাগীয় সমন্বয় কমিটির সদস্য ডা. মিনহাজুর রহমান সারাবেলাকে বলেন, ওই রোগী বর্তমানে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
বিএমএ চট্টগ্রাম জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. ফয়সাল ইকবাল চৌধুরী জানান, আক্রান্ত রোগীর বাসা চট্টগ্রাম মহানগরীর দামপাড়া এলাকায়।
চট্টগ্রাম জেনারেল জেনারেল হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. অসীম কুমার নাথ বলেন, ৬৭ বছর বয়সী এই রোগীর বিদেশ থেকে আসা কারো সংস্পর্শে যাওয়ার ইতিহাস নেই । জ্বর, শ্বাসকষ্ট, ব্রঙ্কাইটিসের উপসর্গ নিয়ে ওই রোগি বৃহস্পতিবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। তাকে শুরু থেকেই আইসোলেশনে রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে বর্তমানে চারজন আছেন। তাদের মধ্যে দুইজনের নমুনা পরীক্ষার ফলাফল এসেছে। এদের একজন পজিটিভ এলেও অন্যজনের নমুনায় করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। বাকি দুইজনের নমুনা সংগ্রহ করা হলেও পরীক্ষার ফলাফল এখনো আসেনি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির বলেন, ‘করোনা শনাক্ত হওয়ার পর তিনি যে বাসায় থাকেন, সেখানে পুরো ভবন লকডাউন করার জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর ওনার স্বাভাবিক যে চিকিৎসা তা চলবে।’
স্থানীয় চকবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নেজাম উদ্দিন বলেন, ‘দামপাড়ায় করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্তের খবর পাবার পর তাদের ভবনসহ আশপাশের ছয়টি বাড়ি লকডাউন করা হযেছে। বাসিন্দারা আপাতত কেউ ভবন ছাড়তে পারবেন না।’
বিআইটিআইডি’র ল্যাব ইনচার্জ ডা. শাকিল আহমেদ বলেন, আজ ‘শুক্রবার ৩১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এখানে শুধুমাত্র একজন পজিটিভ। বিআইটিআইডিতে এ পর্যন্ত ৮৭ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।’
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মো. ইলিয়াস হোসেন বলেন, পুলিশ রোগীর বাড়ি লকডাউন করে দিয়েছে। কমিউনিটি ট্রান্সমিশন থেকে লোকটি আক্রান্ত হতে পারেন। কিন্তু চট্টগ্রামের লোকজন এখনো ভয়াবহ ভাইরাসটি সম্পর্কে গুরুত্ব দিচ্ছে না। বাইরে অবাধ বিচরণ করছে। মসজিদেও ভিড় কমছে না। এটাই চিন্তার বিষয়। সবাই সতর্ক না হলে বিপদ থেকে রক্ষা পাবে কীভাবে?