শনিবার ● ৪ এপ্রিল ২০২০
প্রথম পাতা » জাতীয় » প্রধানমন্ত্রীর কাছে বাম জোটের স্মারকলিপি : করোনা মোকাবেলায় সর্বদলীয় বৈঠক আহ্বানের প্রস্তাব
প্রধানমন্ত্রীর কাছে বাম জোটের স্মারকলিপি : করোনা মোকাবেলায় সর্বদলীয় বৈঠক আহ্বানের প্রস্তাব
ঢাকা :: বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের এক সভা আজ ৪ এপ্রিল শনিবার দুপুর ১২টায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হয়। সভা থেকে দেশের বর্তমান করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় এবং এর ভয়াবহতা সম্পর্কে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে কতিপয় প্রস্তাব সম্বলিত স্মারকলিপি ই-মেইলযোগে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রেরণ করা হয়।
ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন বাম জোটের সমন্বয়ক ও বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ, বাম গণতান্ত্রিক জোট কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সদস্য বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমরেড খালেকুজ্জামান, সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক কমরেড শাহ আলম, প্রসিডিয়াম সদস্য আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাইফুল হক, আকবর খান, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক কমরেড মোশাররফ হোসেন নান্নু, আব্দুস সাত্তার, বাসদ (মার্কসবাদী) নেতা মানস নন্দী, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড মোশরেফা মিশু, শহিদুল ইসলাম সবুজ, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী কমরেড জুনায়েদ সাকী ও সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক কমরেড হামিদুল হক।
সভার প্রস্তাবে বলা হয়, অভূতপূর্ব এই মরণঘাতি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের মহা সংকট মোকাবেলা করা একা সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়। ফলে এ সংকটকে ‘জাতীয় দুর্যোগ’ ঘোষণা করে দেশের সকলের অংশগ্রহণে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের লক্ষ্যে সকল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের সর্বদলীয় সভা আহ্বানের দাবি জানানো হয়।
অপরাপর প্রস্তাবে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে জনগণের চিকিৎসা নিশ্চিত করা; ডাক্তার-নার্স-স্বাস্থ্যসেবাকর্মীদের প্রয়োজনীয় পর্যাপ্ত সুরক্ষা সামগ্রী সরবরাহ করা; প্রত্যেক জেলায় করোনা পরীক্ষা ল্যাব স্থাপন করে রেনডম পদ্ধতিতে ব্যাপক জনগণের করোনা পরীক্ষা করা; অন্যান্য সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা নিশ্চিত; বেসকরারি হাসপাতালের ল্যাবসমূহ যেগুলো করোনা পরীক্ষার উপযোগী সেগুলো সরকারি নিয়ন্ত্রণে এনে বিনামূল্যে পরীক্ষার ব্যবস্থা করা; প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন ব্যবস্থা বাড়ানোর জন্য দেশের তারকা হোটেল ও জেলা সদরের ভালো হোটেলসমূহ ৬ মাসের জন্য অধিগ্রহণ করে এ কাজে ব্যবহার করা; করোনা সনাক্তদের চিকিৎসা অন্যান্য সাধারণ হাসপাতালে না করে ডেডিকেটেড হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা করানো এবং এজন্য ব্রাজিল, চীনের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে আর্মি স্টেডিয়ামসহ সকল জেলা-উপজেলা সদরের স্টেডিয়ামসমূহে অস্থায়ী ফিল্ড হাসপাতাল নির্মাণ করা; এক্ষেত্রে সেনাবাহিনীর ফিল্ড হাসপতালের সরঞ্জাম ও অভিজ্ঞতার ব্যবহার করা যেতে পারে।
করোনার এই জাতীয় দুর্যোগ মোকাবেলায় পর্যাপ্ত তহবিল গঠন করা, এজন্য বাজেটের পুনর্বিন্যাস করে অপ্রয়োজনীয়খাতের বরাদ্দ কেটে এবং প্রয়োজনে উন্নয়ন প্রকল্পের বরাদ্দ কেটে এ তহবিলে বরাদ্দ করা।
বস্তিবাসী, হকার, রিকশা-ভ্যান-অটো রিকশা-সিএনজি চালক, পরিবহন শ্রমিক, ফুটপাতের ছিন্নমূল মানুষ, অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমজীবী, গ্রামের দিনমজুর, ভূমিহীন নিন্মবিত্ত মানুষসহ হতদরিদ্র সকলের আগামী ৬ মাসের খাদ্য সহায়তা ও অন্যান্য প্রয়োজন মেটানোর জন্য নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করা। শুধু আমলা প্রশাসন ও সরকার দলীয় লোক দিয়ে নয় সর্বদলীয় জাতীয় কমিটির মাধ্যমে করোনা ত্রাণ সহায়তা বিতরণ করা যাতে সকলের ত্রাণ প্রাপ্তি নিশ্চিত হয়। ফুটপাতের ছিন্নমূল মানুষদের আপদকালীন সময়ের জন্য বন্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কমিউনিটি সেন্টারে থাকার ব্যবস্থা করে প্রয়োজনীয় খাদ্য সহায়তা প্রদান করা।
সভায় উপরোক্ত প্রস্তাবসমূহ বাস্তবায়নের জন্য সর্বদলীয় সভা করে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়। যদি সরকার সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের জন্য সর্বদলীয় সভা আহ্বান না করে তাহলে বাম গণতান্ত্রিক জোট দেশের সকল গণতান্ত্রিক জোটের সাথে যোগাযোগ করে দ্রুত বৈঠকের উদ্যোগ নেবে এবং সকলের মতামতের ভিত্তিতে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় করণীয় নির্ধারণ ও বাস্তবায়নে সমন্বিত উদ্যোগ নেয়া হবে বলেও সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
স্মারকলিপি সাথে যুক্ত করা হলো :
তারিখ : ৪ এপ্রিল ২০২০
প্রতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়
তেজগাঁও, ঢাকা।
মাধ্যম : মুখ্য সচিব, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়
বিষয় : বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাস এর সংক্রমণকে ‘জাতীয় দুর্যোগ’ ঘোষণা এবং প্রতিরোধে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের লক্ষ্যে সর্বদলীয় বৈঠক আহ্বান প্রসঙ্গে।
সম্মানিত প্রধানমন্ত্রী,
বাম গণতান্ত্রিক জোট কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও সালাম গ্রহণ করুন।
গত বছর ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে মরণঘাতি ভাইরাস নভেল করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর প্রথম প্রকাশিত হয়। পরবর্তীতে এর নামকরণ করা হয় কভিড-১৯। ভাইরাসটির সংক্রমণ দ্রুত মহামারীর রূপ নিতে থাকে এবং পর্যায়ক্রমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে থাকে। বাংলাদেশেও গত ৮ মার্চ প্রথম ১ জনের সংক্রমণের বিষয় সনাক্ত হয়। ১২ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এটাকে বৈশ্বিক মহামারী হিসেবে ঘোষণা করে।
ইতিমধ্যে ৪ এপ্রিল ২০২০ পর্যন্ত বিশ্বের ১১ লক্ষাধিক মানুষ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার এবং প্রায় ষাট হাজার মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। বাংলাদেশেও সরকারি হিসেবে ৭০ জন আক্রান্ত এবং ৮ জনের মৃত্যু ঘটেছে। বাংলাদেশের জনঘনত্ব বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বলে কোনভাবে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়লে তা রোধ করা কঠিন হয়ে পড়বে। এ ধরনের মহামারী গোটা বিশ্ব এবং বাংলাদেশ ইতিপূর্বে কখনো প্রত্যক্ষ করেনি। ফলে এই মহাসংকট সরকারের একার পক্ষে মোকাবেলা সম্ভব নয়, দরকার সকলের অংশগ্রহণে সমন্বিত উদ্যোগ। এ জন্য সরকার তথা প্রধানমন্ত্রীকেই উদ্যোগ নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠক করা জরুরি।
সরকারের তরফ থেকে মহামারী প্রতিারোধে গত ২৬ মার্চ থেকে প্রথমে ৪ এপ্রিল, পরে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে দেশবাসীকে ঘরে থাকতে এবং শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে আহ্বান জানানো হয়েছে। জনগণ যাতে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলে সে জন্য প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি সেনাবাহিনীও মোতায়েন করা হয়েছে। রপ্তানি শিল্পের জন্য ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা, হতদরিদ্রদের জন্য ১০ টাকা কেজি দামে চাল বিক্রি ও জেলা-উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে খাদ্য সহায়তা প্রদানের কথা বলা হয়েছে।
কিন্তু দুঃখের বিষয় সরকার প্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রী আপনার ঘোষণার যথাযথ বাস্তবায়ন হচ্ছে না। বিভিন্ন স্থানে দেখা যাচ্ছে ভোটার তালিকা ও দলীয় পরিচয় দেখে করোনা খাদ্য সহায়তা দেয়া হচ্ছে। যা এ দুর্যোগমূহুর্তে অনাকাঙ্খিত। কারণ অনেক শ্রমজীবী শহরে কাজ করলেও ভোটার হয়তো তার গ্রামের এলাকায়। ফলে ভোটার তালিকা বা দলীয় পরিচয় নয়, দলীয়করণ বন্ধ করে সকল হতদরিদ্রদের খাদ্য সহায়তা প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে। ইতিমধ্যে সাধারণ ছুটির ১০ দিন অতিবাহিত হলো। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের ৮৫ ভাগ মানুষ কর্মহীন হয়ে দুঃসহ জীবন যাপন করছে। শহরের বস্তিবাসী, হকার, গৃহকর্মী, রিকশা, সিএনজি, অটো রিকশা চালক, পরিবহন শ্রমিক, ফুটপাতের ছিন্নমূল মানুষ, গ্রামের দিনমজুর, ভূমিহীন, নিন্মবিত্ত মানুষের কাজ নেই তাই উপার্জন নেই ফলে খাবার সংস্থানও নেই। সে জন্য সরকারের ঘোষণা ও পুলিশ, সেনা টহল সত্ত্বেও অভাবী মানুষ পেটের ক্ষুধা নিবারণের তাগিদে ঘর থেকে বারে বারে বেরিয়ে আসতে চাইছে। কিন্তু করোনা মহামারী প্রতিারোধে স্বেচ্ছা সঙ্গনিরোধ বড় উপায়। এটা জানার পরও মানুষ যে তা মানছে না তার একটা কারণ অসচেতনতা আরেকটা হলো ক্ষুধা, দারিদ্র এবং ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা। শুধু আইন করে মানুষকে ঘরে আটকিয়ে রাখা যাবে না। এই অনিশ্চয়তা কাটাতে করোনাকে যেমন মোকাবেলা করতে হবে, তেমনি ক্ষুধা-দারিদ্রের কবল থেকেও দেশবাসীকে রক্ষা করার জন্য বাজেট পুনঃবণ্টন করে অপ্রয়োজনীয় খাত থেকে এবং প্রয়োজনে উন্নয়ন প্রকল্পের বরাদ্দ কাঁটছাট করে এই সংকট মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করতে হবে। ফুটপাতের ছিন্নমূল মানুষ তাদেরকে বন্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা কমিউনিটি সেন্টারে এমূহুর্তে আপদকালীন সময়ে থাকার জায়গা করে দিয়ে তাদের খাবার নিশ্চয়তা বিধান করে কমিউনিটি ট্রান্সমিশন রোধ করতে হবে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,
একটি বিষয় গোটা দেশবাসীকে চরমভাবে ক্ষুব্ধ করে চলেছে, তাহলো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যেখানে বলছে পরীক্ষা, পরীক্ষা এবং পরীক্ষাই পারে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে। কিন্তু এ বিষয়টিই আমাদের দেশে এখনও পর্যন্ত উপেক্ষিত হচ্ছে। যার ফলে সরকারের ঘোষিত আক্রান্তের ও মৃতের সংখ্যা নিয়ে জনমনে সন্দেহ অবিশ্বাস সৃষ্টি হয়েছে। এটা দূর করতে হলে অন্তত প্রত্যেক জেলায় করোনা পরীক্ষা ল্যাব স্থাপন করে রেনডম পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। যেমন করে দক্ষিণ কোরিয়াসহ কয়েকটি দেশ করোনা প্রতিরোধে সফল হয়েছে।
আরো একটি বিষয় দেশের মানুষের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে তা হলো সাধারণ রুগীরাও চিকিৎসার সুযোগ পাচ্ছে না যা মানবতার চরম লংঘণ হিসেবে পরিগণিত হচ্ছে। অসুস্থ হয়ে সাধারণ সর্দি, জ্বর, কাশিসহ অন্যান্য রোগীরা চিকিৎসা বঞ্চিত হয়ে মৃত্যু মুখে ঢলে পড়ছে। দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।
চিকিৎসকেরাও তাদের পর্যাপ্ত সুরক্ষা সামগ্রী না থাকায় মরণব্যাধির সংক্রমণ ভয়ে রোগীদের চিকিৎসা দিতে রাজী হচ্ছে না। একাধিক সরকারি বেসরকারি হাসপাতাল ঘুরেও কোথাও ভর্তি হতে না পেরে রাস্তায় মৃত্যুবরণ করছে অনেকেই। এছাড়া গত ৩দিন আগেও একমাত্র প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআরের কাছে নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষার কর্তৃত্ব থাকায় সাধারণ দেশবাসী করোনা সংক্রমণ ঘটেছে কিনা তা সনাক্ত করতে না পেরে অনিশ্চিতায় আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। দেশে সরকারি বেসরকারি অনেকগুলো ল্যাব থাকার পরও গত ৩ মাসে কেন আগে ভাগেই পর্যাপ্ত কীট সংগ্রহ, চিকিৎসকদের সুরক্ষা সামগ্রী সরবরাহের উদ্যোগ আয়োজন নেয়া হয়নি এটাও জনগণের কাছে বড় প্রশ্ন। এখনও পর্যন্ত বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে করোনা পরীক্ষা ও চিকিৎসার আওতায় আনা হয়নি। বেসরকারি যে হাসপাতালগুলোতে করোনা পরীক্ষার ল্যাব আছে ঐগুলো অন্তত ৬ মাসের জন্য সরকারের নিয়ন্ত্রণে এনে করোনার পরীক্ষার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা সম্পর্কে আমরা জানি। তাই পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের অভিজ্ঞতা থেকে আমাদের শিক্ষা নেয়া দরকার। ব্রাজিল, চীনসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে স্টেডিয়ামগুলোতে অস্থায়ী হাসপাতাল নির্মাণ করে করোনা সংক্রমণ মোকাবেলা করছে। আমাদের দেশেও এরকম উদ্যোগ জরুরি। এক্ষেত্রে সেনা বাহিনীর ফিল্ড হাসপাতালের সরঞ্জাম ও অভিজ্ঞতার সহায়তা নেয়া যেতে পারে। হোম কোয়ারেন্টাইনের বিষয়টিও দেশে যথাযথভাবে মানা হচ্ছে না। ফলে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনের বিষয়টিকেই প্রাধান্য দেয়া জরুরি। এজন্য দেশের তারকা হোটেলগুলোসহ জেলা সদরের ভাল হোটেলগুলো সরকার ৬ মাসের জন্য অধিগ্রহণ করে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন এর জন্য ব্যবহার করতে পারে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
আমরা বাম জোটের পক্ষ থেকে মার্চের শুরুতেই সংবাদ সম্মেলন করে আহ্বান জানিয়েছিলাম করোনা ভাইরাসের সংক্রমণকে ‘জাতীয় দুর্যোগ’ ঘোষণা করে সকল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে সর্বদলীয় বৈঠক করে জাতীয় কমিটি গঠন করার এবং চিকিৎসক, গবেষক, বিজ্ঞানী, ভাইরোলজিস্টদের সমন্বয়ে টেকনিকাল কমিটি গঠন করে সকলের মতামতের ভিত্তিতে সমন্বিত উদ্যোগে এ মহামারী প্রতিরোধে কর্মপন্থা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে।
কিন্তু দুঃখের বিষয় আজও পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে সকলের অংশগ্রহণে করোনা মোকাবেলার সমন্বিত কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। ফলে আমরা আবারো আপনার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি অবিলম্বে গোটা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে আমাদের সীমিত সম্পদের সদ্ব্যবহার করে করোনা মহামারী প্রতিরোধে সকল গণতান্ত্রিক দলের সাথে বৈঠক করে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করুন। দেশ-জাতি-জনগণকে রক্ষা করুন। সবশেষে আপনার সুস্বাস্থ্য কামনা করছি এবং আমাদের প্রস্তাবসমূহ বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করবেন বলে আশা করছি।
পুনঃশুভেচ্ছান্তে
বজলুর রশীদ ফিরোজ
সমন্বয়ক
বাম গণতান্ত্রি জোট
কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদ।