রবিবার ● ৫ এপ্রিল ২০২০
প্রথম পাতা » করোনা আপডেট » আত্রাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাসেবা মুখ থুবরে পড়েছে
আত্রাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাসেবা মুখ থুবরে পড়েছে
নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই (নওগাঁ) প্রতিনিধি :: নওগাঁর আত্রাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনা ভাইরাসের অজুহাতে চিকিৎসা ব্যবস্থা মুখ থুবরে পড়েছে। রোগীরা ঠিকমত চিকিৎসাসেবা না পাওয়ায় আউটডোর ও ইনডোরে রোগীর সংখ্যা অনেক কমে গেছ। অনেক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে রোগীদের সাথে অসৌজন্য মূলক আচরণের অভিযোগও উঠেছে।
জানা যায়, উপজেলার বিপুল সংখ্যক জনগোষ্ঠির চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরকার কোটি কোটি টাকা ব্যয় করছে। ৫০ শয্যা বিশিষ্ট এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এক সময় রোগীদের প্রচুর ভিড় থাকলেও বর্তমানে রোগী সংখ্যা অনেক কমে এসেছে। তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, গত দুই/তিন মাস আগেও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আউটডোরে প্রতিদিন আড়াই/তিন শতাধিক রোগী চিকিৎসা গ্রহন করেছেন। এ ছাড়াও ইনডোরে চিকিৎসারত থাকতেন অনেক রোগী। বর্তমানে এ সংখ্যা কমে আউটডোরে ৫০ থেকে ৬০ জন রোগী চিকিৎসা গ্রহন করছেন। ইনডোরেও দেখা গেছে রোগীর সংখ্যা খুবই কম। অধিকাংশ বেড রোগীশূন্য ফাঁকা পড়ে রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক ছাড়াও রোগীদের সাথে চিকিৎসকদের অসৌজন্য মূলক আচরণের কারনে রোগীরা এখানে আসতে অনিহা প্রকাশ করছেন বলে জানা যায়। বিশেষ করে ২ জন মহিলা চিকিৎসকের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ অহরহ উঠছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার রোখসানা হ্যাপি বলেন, স্বাস্থ্যসেবা ভেঙ্গে পড়ে নাই। যেসব রোগী আসছে তাদেরকে যথাযথ চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। যে ২ জন মহিলা চিকিৎসকের বিরুদ্ধে রোগীদের সাথে অসৌজন্য মূলক আচরণের অভিযোগ উঠেছে বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব।
পুকুরের পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু
আত্রাই (নওগাঁ) :: নওগাঁর আত্রাই উপজেলার শাহাগোলা ইউনিয়নের কয়সা গ্রামে পুকুরে ডুবে সোহানা আক্তার (৮) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
আজ শনিবার বেলা ১২টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত সোহানা আক্তার উপজেলার শাহাগোলা ইউনিয়নের কয়সা গ্রামের সেলিমের মেয়ে।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, শনিবার সকালে খেলাধুলার জন্য ঘর থেকে বের হয় সোহানা। পুকুর পাড়ে খেলার সময় সোহানা পানিতে পড়ে তলিয়ে যায়। দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার পর পরিবারের লোকজন তাকে দেখতে না পেয়ে খোঁজাখুজি করতে থাকে। কিছুক্ষণ পর তার স্থানীয়রা সোহানাকে পুকুরের পানিতে ভাসতে দেখে। সাথে সাথে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে আত্রাই থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মোসলেম উদ্দিন বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। এবং ছোট্ট নিষ্পাপ শিশু সোহানা আক্তারের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
“আসুন আমরা নিজ নিজ জায়গা থেকে সতর্কতা অবলম্বন করে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ করি” :: এমপি ইসরাফিল আলম
আত্রাই (নওগাঁ) :: নওগাঁ-৬ (আত্রাই-রাণীনগর) আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক ইসরাফিল আলম বলেছেন আমরা নিজেরা যদি নিজ নিজ জায়গা থেকে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সতর্ক না হই তাহলে আমাদের সর্বনাশ আমরাই ডেকে আনবো। কারণ এই করোনা ভাইরাস যদি কাউকে স্পর্শ করে তাহলে শুধু ওই ব্যক্তিই মারা যাবে না পুরো ওই গ্রাম এমনকি ওই অঞ্চলটি মৃত্যুপুরিতে পরিণত হবে। তাই আসুন আমরা ঘরের বাহিরে বের না হয়ে একটু কষ্ট হলেও তা মেনে নিয়ে নিজ নিজ জায়গা থেকে সতর্কতা অবলম্বন করে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে যুদ্ধ ঘোষনা করি। এই সংকট চলাকালীন সময়ে আপনাদের অভাবের কথা ঘরে ঘরে গিয়ে শোনা হবে এবং প্রয়োজনীয় খাবার সামগ্রীসহ অন্যান্য উপকরন পৌছে দিয়ে আসা হবে। সরকারের পাশাপাশি আমিসহ আমার লোকেরা রাণীনগর ও আত্রাই উপজেলার প্রতিটি কর্মহীন মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে আপনাদের খোঁজ খবর নিয়ে সহযোগিতা দিয়ে আসবো। শুধুমাত্র আপনারা ঘরে বসে আল্লাহর কাছে দোয়া করবেন যেন আমাদের দেশে এই ভাইরাস মহামারি আকার ধারন না করে। আমি প্রতিদিন আমার গাড়ির পেছনে খাবারের প্যাকেট নিয়ে দুই উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দিন-রাত ঘুরছি আর কর্মহীন মানুষদের খুজে খুজে বের করে খাবার সামগ্রী হাতে তুলে দিচ্ছি। যেখান থেকে কর্মহীন মানুষদের ফোন ও খবর পাচ্ছি সেখানেই সঙ্গে সঙ্গে খাবার পৌছে দিচ্ছি। যতদিন এই সংকট শিথিল না হচ্ছে ততদিন আমি ফেরি করে আপনাদের ঘরে ঘরে গিয়ে প্রয়োজনীয় খাবার সামগ্রী পৌছে দিয়ে আসবো শুধুমাত্র দয়া করে আপনারা কেউ জরুরী প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাহিরে বের হবেন না এবং কোন মোড়ে কিংবা বাজারে অযথা জটলা পাকাবেন না। তাই আসুন এই মরণঘাতক ভাইরাসের হাত থেকে আমি নিজে বাঁচি অন্যকেও বাঁচতে সহায়তা ও সতর্ক করি। তিনি আরো বলেন সরকার করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় ভিজিএফ, ভিজিডি, ১০টাকা কেজি চাল ও বিশেষ খাদ্য সহায়তা দিতে যে ব্যাপক ব্যবস্থা নিয়েছে তার সঠিক বাস্তবায়ন হলে কোনো মানুষই অভূক্ত থাকবে না। নির্বাচনের সময় যে ভাবে আমি বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চেয়েছি ঠিক সেই ভাবেই আমার নেতৃত্বে স্বেচ্ছাসেবীদের মাধ্যমে কর্মহীন মানুষদের ঘরে ঘরে গিয়ে খাদ্য সামগ্রী পৌছে দিচ্ছি। কারণ আল্লাহর পর আমি আত্রাই ও রাণীনগর উপজেলার মানুষদের অভিভাবক। আমার ভান্ডারে পর্যাপ্ত পরিমান খাবার মজুদ আছে। আপনা ভয় পাবেন না। এছাড়াও এই খাবার বিতরন নিয়ে কেউ কোন অনিয়ম করলে তার বিরুদ্ধে আমার আদালতে দৃষ্টান্তর মূলক শাস্তির ব্যবস্থা করবো। আপনারা করোনা মোকাবেলায় ঘরে বসে থাকুন আতংকিত না হয়ে আপনি নিজে সচেতন হোন এবং আপনার আশেপাশের সবাইকে সচেতন হতে উদ্বুদ্ধ করুন।
আত্রাই উপজেলা আওয়ামীলীগের দলীয় কার্যালয়ে শুক্রবার রাতে কর্মহীন, অসহায়, দিনমজুর, খেটে-খাওয়া ও হতদরিদ্র মানুষদের মাঝে খাবার সামগ্রী বিতরণকালে তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে এই কথাগুলো বলেন। সাংসদ ইসরাফিল আলমের নিজস্ব অর্থায়নে ও ইসরাফিল আলম ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে মানবিক খাদ্য সহায়তা কেন্দ্র থেকে প্রতিজন মানুষকে খাবার সামগ্রী হিসেবে ৫কেজি চাল, দেড় কেজি আলু, ১কেজি ডাল, ১লিটার তেল, লবণ, পেঁয়াজ, রসুন, মরিচ, সাবানসহ অন্যান্য উপকরন বিতরন করা হয়। এছাড়াও উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের মেম্বার, চেয়ারম্যান, দলীয় নেকাকর্মীদের মাধ্যমে প্রকৃত কর্মহীন মানুষদের তালিকা করে খাবার সামগ্রী ঘরে ঘরে গিয়ে পৌছে দেওয়া হচ্ছে। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব এবাদুর রহমান, উপজেলা আওয়াশীলীগের সভাপতি নৃপেন্দ্রনাথ দুলাল, সাধারন সম্পাদক চৌধুরী গোলাম মোস্তফা বাদল, রাণীনগর উপজেলা যুবলীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম চাঁদ, ভাইস চেয়ারম্যান শেখ মো: হাফিজুল ইসলাম, আওয়ামীলীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের সকল নেতৃবৃন্দ।