রবিবার ● ৫ এপ্রিল ২০২০
প্রথম পাতা » গাইবান্ধা » গাইবান্ধায় প্রস্তুত ১শ’ শয্যার করোনা আইসোলেসন সেন্টার
গাইবান্ধায় প্রস্তুত ১শ’ শয্যার করোনা আইসোলেসন সেন্টার
সাইফুল মিলন, গাইবান্ধা :: করোনাভাইরাস সারবিশ্বে মহামারি আকারে দেখা দিয়েছে। কোনভাবেই যেন থামছে না মৃত্যুর মিছিল। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে মৃত্যুর হার তেমন না হলেও ভয় যেন কাটছেনা সাধারণ মানুষের। করোনা ভাইরাস সংক্রামিতদের জরুরী ভিত্তিতে চিকিৎসা সহায়তায় গাইবান্ধা জেলার ধানঘড়াস্থ আনসার ও ভিডিপি প্রশিক্ষণ সেন্টারে মাত্র তিনদিনে ১শ’ শয্যার মানসম্পন্ন একটি অস্থায়ী আইসোলেসন সেন্টার প্রস্তুত করা হয়েছে।
নদী ভাঙন কবলিত দরিদ্র খেটে খাওয়া মানুষের কথা চিন্তা করে করোনা ভাইরাসের এই দূর্যোগ মোকাবেলায় বিভিন্ন ধরণের সচেতনতামূলক কাজ করার পাশাপাশি তিনদিনে একটি উন্নতমানের আইসোলেসন সেন্টার প্রস্তুত করে মানবিকতার এক অনন্য ভূমিকা রেখেছে জেলার অন্যতম স্বেচ্ছসেবী সংগঠন এসকেএস ফাউন্ডেশন।
জেলা করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রন কমিটির উদ্যোগে ও এসকেএস ফাউন্ডেশনের নির্বাহী প্রধান রাসেল আহমেদ লিটনের নির্দেশনায় এবং সার্বিক ব্যবস্থাপনায় মাত্র ২৫ জন শ্রমিক ও এসকেএস ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারিরা মিলে ৩ দিনেই আনসার ও ভিডিপির একটি ভবনে করোনা ভাইরাস সংক্রামিতদের চিকিৎসা সেবায় এই আইসোলেসন সেন্টারের সার্বিক কাজ সম্পন্ন হয়।
এ বিষয়ে সংস্থাটির পাবলিক রিলেশন সমন্বয়কারী মো. আশরাফুল আলম জানান, অতি স্বল্প সময়ে প্রস্তুতকৃত এই আইসোলেসন সেন্টারে রোগী এবং ডাক্তারের আবাসন ব্যবস্থা, খাদ্য সরবরাহ, পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা, অনুকুল পরিবেশ বজায়সহ যাবতীয় ব্যবস্থাপনা করবে এসকেএস ফাউন্ডেশন। অন্যদিকে ওষুধ এবং চিকিৎসক সহায়তা দিবে জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় এবং সার্বক্ষনিক তদারকিতে থাকবে জেলা প্রশাসন ও জেলা করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রন কমিটি।
এব্যাপারে সিভিল সার্জন ডাঃ এবিএম আবু হানিফ, ডাঃ আ.খ.ম. আসাদুজ্জামান, এসকেএস ফাউন্ডেশনের সোস্যাল বিজনেস এর সমন্বয়কারি আবু সাঈদ সুমন, পাবলিক রিলেশন এন্ড কমিউনিকেশনের সমন্বয়কারি মো. আশরাফুল আলম পরিদর্শন করেন।
শনিবার জেলা প্রশাসন ও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে এই আইসোলেসন সেন্টারটি আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়।
গাইবান্ধায় বিদ্যুৎ স্পৃষ্টে মা ও ছেলের মৃত্যু
গাইবান্ধা :: গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলার কামারপাড়া ইউনিয়নের নুরপুর গ্রামে ধানের জমিতে কিটনাশক ঔষধ দেওয়ার সময় বিদ্যুতের তারের সাথে জড়িয়ে কলেজ ছাত্র ও তার মায়ের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। নিহতেরা হচ্ছেন শ্রী উৎফল কুমার সরকার (১৮) ও তার মা সাধনা রানী (৫৪)।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, কলেজ ছাত্র উৎফল শুক্রবার বিকালে প্রতিবেশী মনি মিয়ার ধানের জমিতে কিটনাশক ঔষধ দেওয়ার সময় পার্শ্ববর্তী ইটভাটার বৈদ্যুতিক তার জমিতে পরে ছিলো। অবৈধভাবে নেয়া বৈদ্যুতিক তারের সাথে জড়িয়ে ঘটনাস্থলে উৎফল এর মৃত্যু হয়। পরে সন্ধ্যায় উৎফলের মা সাধনা রানী ছেলেকে খুজতে গেলে দেখেন তার ছেলে বৈদ্যুতিক তারসহ জমিতে পড়ে আছে, সাধনা রানী ছেলেকে পড়ে থাকা দেখে, তাকে উদ্ধার করতে গেলে সেও বিদ্যুতের তারে স্পৃষ্ট হয়ে মারা যান।
অন্যদিকে গ্রামের কিছু প্রভাবশালীরা ঘটনাটিকে ধামা চাপা দেওয়ার চেষ্টা করলে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দেয়। সাদুল্যাপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। এঘটনায় মামলা দায়ের প্রস্ততি চলছে।
স্থানীয়রা জানায়, এসএসবি বিকস্ এর মালিক শহিদুল ইসলাম বাবলা গত ০৭/০৮ মাস আগে ইটভাটাটি তড়িঘড়ি করে চালু করেন এবং পার্শ্ববর্তী একটি প্রতিষ্টান থেকে জমির উপর দিয়ে বাশের খুটির সাহায্য বিদ্যুতের লাইন নেন তার ইটভাটায়। এনিয়ে স্থানীয় ও জমির মালিকগন বারবার অভিযোগ করলেও তিনি কোন ব্যবস্থা নেননি। ঘটনার পর থেকে মালিকসহ প্রতিষ্টানের কর্মচারিরা গা ঢাকা দিয়েছে। স্থানীয়রা এর সুষ্ট বিচার দাবী করেছেন।
গাইবান্ধায় অবৈধ বালু উত্তোলন হুমকির মুখে তিনটি সেতু
গাইবান্ধা :: গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার মহিমাগঞ্জ এলাকার বাঙ্গালী নদীর সতীতলা মজিদেরঘাট, দেওয়ানতলা সড়কসেতু ও দেওয়ানতলা রেলসেতু এলাকা থেকে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে ভূগর্ভস্থ বালু উত্তোলনের মহোৎসব শুরু হয়েছে। একই সাথে নদীর চরের বালু চুরি করে বিক্রি করায় দেওয়ানতলা রেলসেতুসহ তিনটি সড়ক সেতু হুমকির সম্মুখিন হয়ে পড়েছে।
জানা গেছে, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাথে পাশর্^বর্তী সাঘাটা, ফুলছড়ি এবং গাইবান্ধা সদরের সাথে যোগাযোগের মাধ্যম দেওয়ানতলা সড়কসেতু এলাকায় এবং দেওয়ানতলা রেলসেতু এলাকায় এক শ্রেণির স্বার্থান্বেষী বালু ব্যবসায়ী চক্র প্রচলিত আইন ও প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে দিনরাত নদী থেকে শ্যালো মেশিন দিয়ে ভূ-গর্ভস্থ বালু উত্তোলন করছে। এতে ওই এলাকার রেলসেতু এবং দেওয়ানতলা সড়ক সেতুটি মারাতœক হুমকির সম্মুখিন হয়েছে পড়েছে। এছাড়াও এখান থেকে মাত্র এক কিলোমিটার ভাটি এলাকায় অবস্থিত মজিদেরঘাট এলাকায় ভূ-গর্ভস্থ ও নদীচরের মাটি চুরি করে অবাধে বিক্রি করছে স্থানীয় দুই বালুদস্যু। এতে একদিকে যেমন গুরুত্বপূর্ণ সড়কসেতুও একই কারণে ধ্বসে পড়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। এ কারণে এসব এলাকার জনবসতি এবং আবাদি জমি ধ্বংস হওয়ার আশংকা করছে স্থানীয় গ্রামবাসীরা। ইতোমধ্যেই বেশকিছু আবাদী জমি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে তাঁরা।
অন্যদিকে বালুবাহী অবৈধ ট্রাক্টরগুলো বালু বোঝাই করে দিনরাত দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এখানকার বিভিন্ন সড়কে। এতে ঘটছে নানা ধরণের দুর্ঘটনা এবং নষ্ট হয়ে যাচ্ছে রাস্তাঘাট। ইতোমধ্যেই ট্রাক্টরের বালু পড়ে বালুময় হয়ে পড়েছে বেশকিছু সড়ক। যানবাহন চলাচলের ফলে ধূলোয় অন্ধকার হয়ে পড়ছে গোটা এলাকা। বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর কিছুদিন পূর্বে প্রশাসনের উদ্যোগে দেওয়ানতলা এলাকায় অভিযান চালিয়ে বালু উত্তোলনের কাজে বেশ কয়েকটি শ্যালো মেশিন ধ্বংস করা হয়। কিন্তু আবারও প্রশাসনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আবারও বালু উত্তোলনের মহোৎসব শুরু করেছে বালুদস্যুরা। অবিলম্বে স্থানীয় জনবসতি, আবাদী জমি এবং এলাকার গুরুত্বপূর্ণ একটি রেলসেতু সহ বৃহৎ তিনটি সড়ক সেতু রক্ষায় প্রশাসনকে কঠোর ও কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের আবেদন জানিয়েছেন সচেতন মানুষ।
এব্যাপারে মহিমাগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রুবেল আমিন শিমুল জানান, দীর্ঘদিন যাবত বালুদস্যুরা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সেতু হুমকির মুখে ফেলেছে। তাই এসব বালুদস্যুদের বিরুদ্ধে দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।
গাইবান্ধায় হোম কোয়ারেন্টাইনে ১৬৩
গাইবান্ধা :: করোনা ভাইরাসে গাইবান্ধায় শনিবার নতুন করে আক্রান্ত হওয়ার কোন খবর পাওয়া যায়নি। তবে গত ২৪ ঘন্টায় ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার পর তাদের করোনা ভাইরাস সংক্রমনের কোন প্রমাণ না পাওয়ায় ১০ জনকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এদিকে এখন পর্যন্ত আমেরিকা প্রবাসী দু’জনসহ তার সংস্পর্শে আসা আরও দু’জনসহ মোট ৪ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত। এরমধ্যে ৩ জন গাইবান্ধা জেলা সদর হাসপাতালের আইসোলেসন ও অপরজন সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের আইসোলেসনে রয়েছে।
সিভিল সার্জন ডাঃ এবিএম আবু হানিফ জানান, শনিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে বিদেশ ফেরত ১৬৩ ব্যক্তিকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। ঢাকা থেকে রক্ত পরীক্ষার ফলাফল না জানা পর্যন্ত সন্দেহজনক রোগীদের হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হচ্ছে।
শনিবার জেলা প্রশাসকের এক প্রেস রিলিজে জানা গেছে, এ পর্যন্ত জেলার ৭টি উপজেলা ও ৪টি পৌরসভায় ১৬ হাজার ৪শ’ দরিদ্র শ্রমজীবি কৃষক পরিবারের মধ্যে ১শ’ ৬০ মে. টন খাদ্য সামগ্রী ও ১৬ হাজার ৫শ’ পরিবারের মধ্যে ৮ লাখ ২৫ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়। এছাড়া বিতরণের জন্য জেলা প্রশাসনের ত্রাণ ভান্ডারে ২শ’ ১ মে. টন খাদ্য সামগ্রী ২ লাখ ৬৫ হাজার টাকা মজুদ রয়েছে।