শুক্রবার ● ১০ এপ্রিল ২০২০
প্রথম পাতা » খাগড়াছড়ি » ৩৩৩ নম্বরে ফোন করে খাবার পাবো কল্পনাও করিনি
৩৩৩ নম্বরে ফোন করে খাবার পাবো কল্পনাও করিনি
নুরনবী অন্তর মাহমুদ, মাটিরাঙ্গা প্রতিনিধি :: খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলার ভূঁইয়াপাড়া এলাকায় পরিবার নিয়ে বসবাস করেন রং মিস্ত্রি মো. জাহাঙ্গীর আলম। তিনি প্রাণঘাতি করোনাভাইরাসের কারণে গত দুই সপ্তাহ ধরে কর্মহীন । হাতে কোনো টাকা নেই ঘরে খাবার নেআ। ফলে তিনদিন ধরে ছেলে-মেয়ে ও স্ত্রী নিয়ে অনাহারে অর্ধাহারে আছেন তিনি।
নিজের পরিবারের খাদ্য সঙ্কটের কথা জেনে এক আত্মীয় ৩৩৩ নম্বরে ফোন করে খাদ্য সঙ্কটের কথা জানানোর পরামর্শ দেন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি যেখানে খাদ্যসামগ্রী দেননি সেখানে ফোন করে খাদ্যসামগ্রী পাবেন বিশ্বাস হয়নি জাহাঙ্গীরের। এরপরও খাবার পাবার আশায় ৩৩৩ নম্বরে ফোন করেন তিনি।
৩৩৩ নম্বরে ফোন দিয়ে নিজের কষ্টের কথা জানিয়ে খাদ্য সহায়তা চাইলে তাৎক্ষণিক ৩৩৩ কাস্টমার কেয়ার থেকে ফোন আসে মাটিরাঙ্গার ইউএনও বিভীষণ কান্তি দাশের কাছে। মুহূর্তেই তিনি অসহায় জাহাঙ্গীর আলমের সাথে মুঠোফোনে কল দিয়ে বাড়ীর অবস্থান জেনে পরিষদের ব্যবহৃত গাড়ী নিয়ে নিজেই বৃহস্পতিবার (০৯ এপ্্িরল) দুপুরে জাহাঙ্গীর আলমের কাছে যান। সেখানে তিনি জাহাঙ্গীর আলমের খোজ-খবর নেন এবং তার হাতে চাল, ডাল, তেল, লবণ ও সাবানসহ প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী তুলে দেন।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, অনেক দিন ধরে কাজ নেই। কাজ করলে খাবার জোটে, না করলে নেই। ঘরে জমানো নেই টাকা-পয়সা। স্থানীয় প্রতিনিধি সবার ঘরে ঘরে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করলেও আমি পাইনি। উপায় না পেয়ে ৩৩৩ নম্বরে ফোন করেছি। তবে খাদ্যসামগ্রী পাব বিশ্বাস করতে পারিনি।
একইদিন মুঠোফোনে পাওয়া এসএমএসে খাদ্য সঙ্কটের কথা জানতে পেরে মাটিরাঙ্গার নতুপাড়ায় বিধবা করফুলের নেছার বাড়িতে গিয়েও খাদ্য সহায়তা দেন ইউএনও বিভীষণ কান্তি দাশ।
করোনা প্রতিরোধে জীবানুনাশক স্প্রে কার্যক্রম
মাটিরাঙ্গা ::খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় করোনাভাইরাস সংক্রমণের ভয়াবহতা সম্পর্কে জনসাধারণের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি ও জীবানুনাক স্প্রে কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। মাটিরাঙ্গা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ রফিকুল ইসলাম ও মাটিরাঙ্গা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সুবাস চাকমা এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। এরপর তারা দু‘জন-ই জীবানুনাশক স্প্রে-মেশিন কাঁধে নিয়ে অন্যান্যদের সাথে মাটিরাঙ্গা উপজেলা সদরের বিভিন্ন জায়গা স্প্রে করেন।
এ সময় মাটিরাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ রফিকুল ইসলাম, জীবানুনাশক স্প্রে কার্যক্রম পরিচালনার মত এমন মহতী উদ্যোগ গ্রহন করায় মাটিরাঙ্গা উপজেলা মানবাধিকার কমিশনকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানান। তিনি মাটিরাঙ্গাবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, সরকারিভাবে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত সকলে নিজ নিজ বাড়ীতে অবস্থান করবেন। অযথা বাজারে বা পাড়া মহল্লার দোকানে আড্ডা দিতে যাবেন না। মনে রাখবেন মহামারী মোকাবেলায় রাস্ট্রকে সাহায্য করা আপনার নাগরিক দায়িত্ব।
শুক্রবার ১০ এপ্রিল সকালে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন মাটিরাঙ্গা উপজেলা ও পৌর শাখার উদ্যোগে পরিচালিত উক্ত কার্যক্রমের পরিচালক মাটিরাঙ্গা উপজেলা মানবাধিকার কমিশনের সভাপতি মোঃ বাবুল আহমেদ ও প্রধান সমন্বয়ক ও সহ-সভাপতি মোঃ দেলোয়ার হোসেন রিপন জীবানুনাশক কার্যক্রমে সহায়তাকারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের মাটিরাঙ্গা পৌর শাখার সাধারণ সম্পাদক মোঃ তছলিম উদ্দিন রুবেল বলেন, সাধারণ মানুষকে নিরাপদ রাখতে ও করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে মুক্ত রাখতে আমাদের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
জীবানুনাশক স্প্রে কার্যক্রমে মাটিরাঙ্গা পৌর ও ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সহযোগিতায় মাটিরাঙ্গা পৌরসভার বিভিন্ন পাড়া- মহল্লায় নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড- ১৯) সংক্রমন প্রতিরোধে জীবানুনাশক স্প্রে, গ্লাভস, মাস্ক, সুরক্ষা টুপি বিতরণ করা হয়। এ সময় মাটিরাঙ্গা উপজেরা মানবাধিকার কমিশন ও ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।