রবিবার ● ১২ এপ্রিল ২০২০
প্রথম পাতা » জনদুর্ভোগ » ভাঙ্গুড়ায় ১৮দিন অনুস্থিত সরকারি কর্মকর্তা বেতন পাননি অধীনস্থ ৩৪ জন
ভাঙ্গুড়ায় ১৮দিন অনুস্থিত সরকারি কর্মকর্তা বেতন পাননি অধীনস্থ ৩৪ জন
রফিকুল ইসলাম সুইট :: পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রহিমা খাতুন দীর্ঘ ১৮ দিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় ঐ অফিসের ৩৪ জন কর্মচারী গত মার্চ মাসের বেতন পান নি। ফলে ঐ অফিসের কাজে স্থবিরতা সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া তিনি ঐ অফিসের অতিরিক্ত মেডিকেল অফিসারের দায়িত্বে রয়েছেন। অধীনস্থদের অনুরোধে তিনি আজ রবিবার স্ব-পরিবারে গাজীপুর থেকে এসে হোম কোয়ারেনন্টাইন না মেনে অফিসে আসেন এতে ঐ অফিসের কর্মচারীরা আতঙ্কে পরে যান।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সরকার কর্তৃক সাধারন ছুটি ঘোষণা হয় গত ২৬ মার্চ। কিন্তু রহিমা খাতুন ২৫ মার্চেই তার বাসা গাজীপুরের জয়দেবপুর চলে যান। সেখানেই তিনি স্ব-পরিবারে বসবাস করেন। অথচ সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক সাধারণ ছুটিতে সকল সরকারি কর্মকর্তাকে নিজ কর্মস্থলে থাকার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
তবে পরিবার পরিকল্পনা অফিস সাধারণ ছুটির আওতাধীন নয়। তিনি বাসায় থেকে ফোনে অফিস পরিচালনার অফিসে ভজঘট অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তবে অফিসের কর্মচারীদের অভিযোগ বিষয়টি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার হালিমা খাতুন জেনেও কোনো ব্যবস্থা নেননি। বরিবার তিনি গাজীপুর থেকে এসে হোম কোরারেনন্টাইন না করে অফিস করছেন এমনকি তার অফিস থেকে দেড় কি.মি দুরে উপজেলান পরিষদ কার্যালয়েও গিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অফিসের এক কর্মচারী বলেন, পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রহিমা খাতুন সপরিবারে ঢাকায় বসবাস করেন। সেখান থেকে তিনি সপ্তাহে একদিন বা দুইদিন ভাঙ্গুড়া এসে অফিস করেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জানে। সম্প্রতি করোনা ভাইরাসের কারণে তিনি গত ১৮ দিন যাবৎ অফিসে আসেন না। এতে কর্মচারীরা মার্চ মাসের বেতন পাচ্ছে না। তাকে অনেক অনুরোধ করা হয়েছে অফিসে আসার জন্য। কিন্তু তিনি আসেননি। এরপরে রবিবার এসেও হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন।
ভাঙ্গুড়া উপজেলা ওয়েব পোর্টালে তার মোবাইল নম্বর না দিয়ে স্বামীর মোবাইল নম্বর দিয়ে রাখছেন রহিম খাতুন। স্বামীর মোবাইল নম্বরের মাধ্যমে, তার সাথে যোগাযোগ করলে অভিযোগের ব্যাপারে পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রহিমা খাতুন বলেন, করোনার কারণে কিছুটা সমস্যা হয়েছিল আমি সই করে দিয়েছি আশা করি সোমবার বেতন ছাড় পেয়ে যাবে সবাই বেতন তুলতে পারবে। ১৮ দিন অফিসে অনুপস্থিত থাকার বিষয়ে তিনি কোন কথা বলেন নাই। তিনি অভিযোগ করেছেন উপজেলা হিসাব রক্ষক কর্মকতা জালাল এর বিরুদ্ধে। জালালের গাফিলতির কারণে বেতন ছাড় পায় নাই। অন্যন্য সকল সরকারি কর্মকর্তা বেতন পেল অথচ আপনার অফিসের কর্মকর্তারা বেতন পেল না তাহলে হিসাব রক্ষক কর্মকর্তার দোষ কোথায় এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি সদ উত্তর দিতে পারে নাই।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার হালিমা খানম বলেন, পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার সাথে আমাদের অনেক কাজ জড়িত আছে। পরিবার পরিকল্পনা অফিস সরসারি আমাদের অধীনস্থ নয়। এ ব্যাপারে উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন তিনি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ আশরাফুজ্জামান বলেন, বিষয়টি আমার জানা নাই খোঁজ দিয়ে দেখব। একজন কর্মকর্তার এমন দায়িত্ব অবহেলা কিছুতেই মেনে নেওয়া যাবে না। তার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পাবনা জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ বলেন- কোন সরকারি কর্মকর্তার অনিয়ম মেনে নেয়া হবে না। ভাঙ্গুড়া উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা কোন প্রকার অনিয়ম করে থাকলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।