মঙ্গলবার ● ১৪ এপ্রিল ২০২০
প্রথম পাতা » কুষ্টিয়া » ত্রাণ বিতরণে আমাদের জনপ্রিয় সেনা বাহিনীকে কেন দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে না ?
ত্রাণ বিতরণে আমাদের জনপ্রিয় সেনা বাহিনীকে কেন দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে না ?
শামসুল আলম স্বপন :: ইউএন মিশন থেকে শ্রেষ্ঠ সুনাম অর্জনকারী আমাদের জনপ্রিয় সেনাবাহিনীকে কেন ইগনোর করা হয় তা ভাবতে খুব কষ্ট লাগে। অতীতের সকল সরকারই সেনাবাহিনীকে শুধু ব্যবহার করেছে নিজেদের ক্ষমতা টিকিয়ে রাখার জন্য । দুর্যোগে অথবা দু:সময়ে সেনা বাহিনীকে জাতীয় দায়িত্ব না দিয়ে ট্রাফিকের কাজও করানো হয়েছে যা অত্যন্ত দু:খ জনক। আমি ক্ষমতাসীনদের কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই এমন কোন ঘটনা কি কখনো ঘটেছে যে, সেনাবাহিনী জাতীয় দায়িত্ব পালন কালে অবহেলা করেছে অথবা অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছে ? তাদের দায়িত্ব কি শুধু মাতৃভূমির স্বাধীনতা রক্ষা করা ? সেনা বাহিনী কি সিভিল প্রশাসনের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে জাতির উন্নয়নে কাজ করতে পারে না ?
এবার করোনা ভাইরাসের দুর্যোগে জনগণকে ঘরে রাখার জন্য সেনাবাহিনী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাস্তায় নেমে দায়িত্ব পালন করছে । সরকারের নিয়মিত চিকিৎসকরা প্রাণের ভয়ে নানা অজুহাতে যখন হাসপাতাল ছেড়ে কোয়ারেন্টিনে দিন কাটাচ্ছে সেই ভয়াবহ দু:সময়ে সেনাবাহিনীর অকুতোভয় চিকিৎিসক দল মাঠে নেমে দেশের জনসাধারনকে চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে ।
সরকার প্রধানের কাছে দেশের জনসাধারণের দাবি ছিল এই দুর্যোময় মুহুর্তে সেনাবাহিনীর মাধ্যমে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হোক। কিন্তু সে দাবি উপেক্ষা করে জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে কর্মহীন মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করার সিদ্ধান্ত কতটা ভুল তা আজ প্রমানিত। দায়িত্ব প্রাপ্ত জনপ্রতিনিধিরা ভুক্তভোগী জনগণকে চাল না দিয়ে আত্মসাৎ করে চোর উপাধি লাভ করছে । এটা কি সরকারের জন্য মঙ্গল হচ্ছে ? ত্রাণ বিতরণে অনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না প্রধানমন্ত্রী এমন ঘোষণা দেয়ার পরও কি ভাবে ত্রাণ চুরি করার সাহস পাচ্ছে ?
আমি মনে করি বর্তমান সরকারকে দেশের মানুষের কাছে হেয় প্রতিপন্ন করা এবং জনপ্রিয়তা হ্রাস করার ্ জন্য দলের ভিতর থেকে এবং প্রশাসনের একটি কুচক্রী মহল ষড়যন্ত্র করছে । যদিও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন বিএনপি-জামাতের লোকেরা দলে ঢুকে এই অপকর্ম করছে। প্রশ্ন হচ্ছে বিএনপি-জামাতের লোকদের আওয়ামীলীগে ডুকালো কারা ? যদি বর্ণ চোরার মত কেউ আওয়ামীলীগে ঢুকে থাকে তা হলে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হচ্ছে না কেন? এ প্রশ্ন কিন্তু দেশবাসীর মনে ঘুরপাক খাচ্ছে ? মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি বার বার বলছেন ত্রাণ চোরদের ছাড় দেয়া হবে না । তাদের কঠোর হস্তে দমন করা হবে ?
এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১৩শ জন চাল চোর ধরা পড়েছে । তাদের কারো কারো বিরুদ্ধে মামলা হলেও অনেকের বিরুদ্ধে এখনো আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। আর মামলা নিলেই বা কি হবে ? চুরির দায়ে ৩৭৯/৩৮০ ধারা অথবা সরকারি সম্পদ আত্মসাতের জন্য না হয় একটু শক্ত মামলা হবে? এই সব চোরদের জেল থেকে ছাড়িয়ে আনার জন্য তো অনেক আইনজীবি অপেক্ষা করছেন । জামিন পাওয়ার পর চোরের গলায় ফুলের মালা দিয়ে চোরের সাগরেদরা জেল খানা থেকে বের করে শ্লোগান দিয়ে রাস্তায় মিছিল করবে তা দেখতে হবে দেশবাসীকে । মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশের জনগণ শুধুমাত্র আপনাকে এবং সেনাবাহিনীকে আন্তরিক ভাবে বিশ্বাস করে । আর কাউকে নয় ।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, ভিডিও কনফারেন্সে ডিসি সাহেব ও রাজনৈতিক নেতারা সব ঠিক আছে বললেও হতদরীদ্র,নিন্ম মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত মানুষের ঘরে কিন্তু খাবার নেই । পেটের দায়ে তারা ঘর থেকে বের হতে বাধ্য হচ্ছে ।
তাই অনুরোধ এখনো সময় আছে সেনাবাহিনীর মাধ্যমে দেশের এই ক্রান্তিকালে হতদরীদ্র,নিন্ম মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত মানুষের ঘরে খাবার পৌছে দেয়ার ব্যবস্থা করুন। তা হলে আপনার নির্দেশ মেনে তারা যেমন ঘরে থাকবে তেমন দেশের জনগণের অফুরন্ত দোয়া পাবেন আপনি । মহান আল্লাহপাকের রহমত বর্ষিত হবে আপনার ও দেশবাসীর উপর। মহান আল্লাহ পাকের দরবারে আপনার ও আপনার পরিবারের সুস্থ্যতা কামনার পাশাপাশি দেশাবাসীকে আল্লাহ করোনা ভাইরাস থেকে হেফাজত করুন এই কামনা করি ।
লেখক : শামসুল আলম স্বপন, সম্পাদক, বিজয় নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম
ও
সভাপতি
বাংলাদেশ অনলাইন নিউজ পোর্টাল এসোসিয়েশন (বনপা)।