বৃহস্পতিবার ● ১৬ এপ্রিল ২০২০
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » গাবতলীতে ত্রাণের ৬৩ বস্তা চালসহ গ্রেফতার-২
গাবতলীতে ত্রাণের ৬৩ বস্তা চালসহ গ্রেফতার-২
বগুড়া :: বগুড়ার গাবতলীর উজগ্রাম মগড়াপাড়ার ২টি স্থান থেকে ত্রাণ এর ৬৩বস্তা চালসহ পুলিশ ২জনকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠিয়ে দিয়েছেন। এ ছাড়া কালো বাজারের উদ্দেশ্যে সরকারী খাদ্য (চাল) নিজের কাছে রাখার অপরাধে থানার এসআই আইয়ুব আলী বাদী হয়ে আজ বুধবার থানায় মামলা দায়ের করেছেন। উপজেলার দক্ষিনপাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ও স্থানীয় ওয়ার্ড মহিলা মেম্বার লিমা বেগম ওরফে লেদী’র স্বামী মুন্জুরুল আলম মন্জুকে প্রধান আসামীসহ ৪জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়। অন্যান্য আসামীরা হলো একই গ্রামের গ্রেফতার হওয়া রুবেল মিয়া (২৮) ও নজরুল ইসলাম (৪৫)। পলাতক থাকা দক্ষিনপাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ও স্থানীয় ওয়ার্ড মহিলা মেম্বার লিমা বেগম ওরফে লেদী’র স্বামী মুন্জুরুল আলম মন্জু ও মাহফুজার রহমান গুটলু। তবে উদ্ধার হওয়া ত্রাণের ৬৩ বস্তা চালের মধ্যে ৩০বস্তা চালের মালিক জাহাঙ্গীর আলম অজ্ঞাত কারনে মামলায় অর্ন্তভূক্ত হয়নি। এ বিষয়ে থানার ওসি সাবের রেজা আহম্মেদ প্রতিবেদক নুরনবী রহমানকে জানিয়েছেন, ২টি স্থান থেকে ত্রাণ এর ৬২বস্তা চাল উদ্ধার করা হয়েছে, জাহাঙ্গীর আলমের নাম মামলায় অর্ন্তভূক্ত করা না হলেও তদন্তে আনা হবে। সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (গাবতলী সার্কেল) সাবিনা ইয়াসমীন জানান, অবৈধভাবে রাখা ৩০বস্তা চালের মালিক জাহাঙ্গীর আলমের নাম কেন বা কি কারনে মামলায় অর্ন্তভূক্ত হয়নি সে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। জানা গেছে, গত মঙ্গলবার রাত পৌনে ১০টায় উপজেলার দক্ষিনপাড়া ইউনিয়নের উজগ্রাম মগড়াপাড়া গ্রামের তমু প্রামানিকের ছেলে মাহফুজার রহমান গুটলু’র বাড়িতে বেশ কিছু ত্রাণের চাল রাখা আছে এমন খবর যায় থানা পুলিশের কাছে। পুলিশ সেখানে গিয়ে জানতে পারেন অবৈধভাবে রাখা ৩৩বস্তা চাল দক্ষিনপাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি ও স্থানীয় ওয়ার্ড মহিলা মেম্বার লিমা বেগম ওরফে লেদী’র স্বামী মুন্জুরুল আলম মন্জু রেখে গেছে। ওই স্থান থেকে পুলিশ চাল গুলো উদ্ধার করলেও মুল নায়ক কালো বাজারী মুন্জুরুল আলম মন্জুকে গ্রেফতার করতে না পারলেও একই গ্রামের ছালেক প্রামানিকের ছেলে রুবেল মিয়া (২৮) কে গ্রেফতার করা হয়। এ ছাড়া প্রথম ঘটনার প্রায় ৫’শ গজ দরে আব্দুল লতিফের ছেলে কালো বাজারী জাহাঙ্গীর আলমের ৩০বস্তা চাল তার বাড়ির পাশে চাচা নজরুল ইসলামের একটি জায়গায় ঢেকে রেখে যাওয়া চাল গুলো পুলিশ জানতে পেয়ে উদ্ধার করে এবং নজরুল ইসলাম (৪৫) কে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়। তবে কালো বাজারী জাহাঙ্গীর আলম অজ্ঞাত কারনে ধরা ছোয়ার বাহিরে রয়েছে। এমনকি দায়েরকৃত মামলায় অর্ন্তভূক্তও হয়নি বলে জানা গেছে। জাহাঙ্গীর আলমের সাথে কথা বলতে তার বাড়িতে যাওয়া হলে তাকে পাওয়া না গেলেও আশে পাশের বেশ কিছু লোকজন এগিয়ে আসে এবং তার স্ত্রী রিমা বেগমের সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমার স্বামী বহু আগে থেকেই এই ব্যবসা করে আসছে। তিনি আরো বলেন, গত মঙ্গলবার আমাদের চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম সাইফুল ত্রাণের চাল বিতরণ করেছে, চাল গুলো ১০কেজিও হয়নি ৮/৯ কেজি হয়েছে। অনেকে এ গুলো চাল খেতে চায় না, সেগুলো চাল কেউ বিক্রি করলে আমার স্বামী জাহাঙ্গীর ক্রয় করে ব্যবসা করে। জাহাঙ্গীরের স্ত্রী রিমা বেগম বলেন, আমার চাচা শশুর নজরুল ইসলাম নির্দোষ, তিনি চালের বিষয় কিছুই জানতো না, আমরা পুলিশের ভয়ে তার জায়গায় ঢেকে রেখে ছিলাম। মামলার প্রধান আসামী কালো বাজারী মুন্জুরুল আলম মন্জু’র সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হলে তাকে বাড়িতে পাওয়া যায়নি। তবে তার স্ত্রী স্থানীয় ওয়ার্ড মহিলা মেম্বার লিমা বেগম ওরফে লেদী বাড়িতে আছেন প্রথমে জানালেও পরে বলা হয় বাড়িতে নেই। ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম সাইফুল জানান, পুলিশ রাতেই চাল গুলো উদ্ধার করে ২জনকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, মন্জু ও জাহাঙ্গীর তারা আগে থেকেই এ ধরনের বব্যসা করে আসছে। তবে তারা চাল গুলো কোথায় থেকে সংগ্রহ করেছে তা আমার জানা নেই। চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম সাইফুল আরো জানান, গ্রেফতার হওয়া নজরুল ইসলামকে অনেকে ভাল মানুষ হিসেবে জানেন। দক্ষিনপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি তোফাজ্জল হোসেনসহ বিভিন্ন মতের রাজনীতি করেন এমন ধরনের ব্যক্তিগণ, জনপ্রতিনিধিগণ, শিক্ষকবৃন্দসহ এলাকার বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ গ্রেফতার হওয়া নজরুল ইসলামের পক্ষে বেশ ভাল মানুষ হিসেবে বলেছেন। অবৈধভাবে এতো চাল কোথায় থেকে এলো এবং আগামীতে এ ধরনের কাজ যাতে আর না হয় সে জন্য বিষয়টি খতিয়ে দেখতে স্থানীয় খাদ্য বান্ধব ডিলার ও ইউপি চেয়ারম্যানের চাল বিতরণের সময় কড়াভাবে নজর দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন এলাকাবাসি ও সচেতন মহল।