বৃহস্পতিবার ● ১৬ এপ্রিল ২০২০
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » বাগেরহাটে রায়েন্দা বাজার অনির্দিষ্টকালের জন্য লকডাউন ঘোষনা
বাগেরহাটে রায়েন্দা বাজার অনির্দিষ্টকালের জন্য লকডাউন ঘোষনা
শেখ সাইফুল ইসলাম কবির, বাগেরহাট প্রতিনিধি :: কভিড-১৯ করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিতকরণে বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলা সদর রায়েন্দা বাজার অনির্দিষ্টকালে জন্য লকডাউন ঘোষনা করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী বুধবার দুপুরে রায়েন্দা বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির এক জরুরী সভায় এই সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত শুধুমাত্র ওষুধের দোকান ছাড়া অন্যান্য সকল দোকানপাট ও যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে।
পাশাপাশি কাচামাল ও মাছের বাজার মূল বাজার থেকে আলাদা করে রায়েন্দা সরকারি পাইলট হাই স্কুল মাঠে স্থানান্তর করা হয়েছে। সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে সেখানে সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই সামাজিক হাট চলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমপ্লেক্সে রায়েন্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আসাদুজ্জামান মিলনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় ইউএনও সরদার মোস্তফা শাহিন, ওসি এসকে আব্দুল্লাহ আল সাইদ, বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বাজারের ব্যবসায়ীদের উপস্থিতিতে লকডাউনের এই সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন।
অপরদিকে, ধানসাগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মইনুল ইসলাম টিপু নেতৃত্বে আমড়াগাছিয়া বহুমূখী মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে গত ৮এপ্রিল এবং রাজাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে ১৪এপ্রিল থেকে সামাজিক হাট বসানো হয়েছে।
রায়েন্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান মিলন জানান, করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাজার লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। লকডাউনের এই সময়ে বাজারে শুধুমাত্র ওষুধের ফার্মেসী খোলা থাকবে। পাশাপাশি বুধবার সকাল থেকে রায়েন্দা সরকারি পাইলট মাঠে সামাজিক হাট বসবে। সেখানে তরিতরকারি, মাছ, ফলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিক্রি করা হবে। জরুরী সেবার বাইরে সব ধরণের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে।
শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সরদার মোস্তফা শাহিন বলেন, দেশে করোনা পরিস্থিতি দিন দিন খারাপের দিকে যাচ্ছে। এই মুহূর্তে লোকসমাগম ঠেকাতে এবং সামাজিক দুরত্ব নিশ্চিত করতে লকডাউনের কোনো বিকল্প নেই। উপজেলার অন্যান্য বাজারগুলো আপাতত সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত খোলা রাখা হচ্ছে। পরিস্থিতি বুঝে সেগুলোর ব্যাপারেও পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বাগেরহাটে ফরিদপুর থেকে আসা ব্যক্তি প্রথম করোনা আক্রান্ত, ১৬ বাড়ি লকডাউন আতঙ্কে এলাকাবাসী
বাগেরহাট :: বাগেরহাটে ফরিদপুর থেকে আসা ব্যক্তি প্রথম করোনা আক্রান্ত, ১৬ বাড়ি লকডাউন আতঙ্কে এলাকাবাসী।
বাগেরহাটের চিতলমারীতে একজনের শরীরে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে নমুনা পরীক্ষায় তার শরীরে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ সনাক্ত হয়। বুধবার দুপুরে খুলনা মেডিকেল কলেজের পিসিআর থেকে বাগেরহাটের স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে এই তথ্য আসার পর সনাক্ত হওয়া ওই বাড়িসহ পাশের ১৬ বাড়ি লকড ডাউন ঘোষণা করেছে প্রশাসন। ওই বাড়ির সবার নমুনা সংগ্রহ করছে স্বাস্থ্য বিভাগ।বাগেরহাটে এই প্রথম কোন করোনা ভাইরাসের রোগী সনাক্ত হলো।এদিকে নারায়ণগঞ্জ, ঢাকাসহ অন্য জেলা থেকে চিতলমারীসহ বাগেরহাটের বিভিন্ন উপজেলায় আসা ৭৮৫ জনকে নিজ বাড়িতে হোম কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে। তাঁদের বাড়িতে লাল পতাকা টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ।
বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. কে এম হুমায়ুন কবির বলেন, বাগেরহাটের চিতলমারীর এক ব্যক্তির শরীরে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ সনাক্ত হয়েছে। এই আক্রান্ত ব্যক্তি সম্প্রতি জেলার বাইরে ফরিদপুর থেকে নিজের গ্রামের বাড়িতে ফিরেছেন। মঙ্গলবার পর্যন্ত বাগেরহাটের বিভিন্ন উপজেলা থেকে মোট ৫৪ জনের নমুনা সংগ্রহ করে খুলনা মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হয়। এটি জেলার প্রথম কোন করোনা রোগী সনাক্ত হল। খুলনা মেডিকেল কলেজের পিসিআর থেকে তথ্য আসার পর বুধবার বিকেলে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ, পুলিশ সুপার পংকজ চন্দ্র রায় এবং স্বাস্থ্য বিভাগের একটি মেডিকেল টিমকে সাথে নিয়ে ওই রোগীর বাড়িতে যাই। সেখানে গিয়ে নতুন করে ওই রোগীর আবারও স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে স্বাস্থ্য বিভাগ। আক্রান্তের শরীরে করোনা ভাইরাসের যেসব উপসর্গ থাকার কথা তা কিন্তু এখন নেই। তিনি এখনো আগের মতো সুস্থ স্বাভাবিক আছেন। তাকে বাড়িতে রেখেই চিকিৎসা দেয়া হবে। করোনা ভাইরাসের আক্রান্তের খবরে আতংকিত না হয়ে জেলাবাসীকে ঘরে থাকার অনুরোধ জানান এই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।
চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মারুফুল আলম বলেন, আক্রান্ত ব্যাক্তি ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার আজিমপুর ইউনিয়নের পাতরাইল জামে মসজিদের মোয়াজ্জিম ছিলেন। গত ৯ এপ্রিল তিনি ফরিদপুরের পাতরাইল থেকে বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার পাটরপাড়া গ্রামে আসেন। খুঁসখুঁসে কাশিসহ করোনা আক্রান্তের উপসর্গ থাকায় তাকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রেখে নমুনা পরিক্ষার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। আইইডিসিআরের রির্পোটে তার শরীরে করোনা পজেটিভ এসেছে। এই মোয়াজ্জিম বাগেরহাট জেলায় প্রথম করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি। তার বয়স ৩৫ বছর। জেলার বাইরে থেকে আসায় গত ১১ এপ্রিল স্বাস্থ্য বিভাগ তার বাড়িতে যায়। সেখানে গিয়ে তার শরীরে করোনা ভাইরাসের যেসব উপসর্গ থাকার কথা তার শরীরে তা ছিল না। তারপরেও যেহেতু তিনি বাগেরহাটের বাইরে থেকে এসেছেন তাই করোনা সন্দেহে তার শরীরের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজের পিসিআরে পাঠায় মেডিকেল টিম। বুধবার দুপুরে পিসিআর থেকে আসা রিপোর্টে তার শরীরে করোনা পজেটিভ সনাক্ত হওয়ায় ওই বাড়িসহ পাশের ১৬ বাড়ি লক ডাউন করা হয়েছে। ওই বাড়িসহ পাশের তিনটি বাড়ির সবাইকে ঘর থেকে না বেরোনোর জন্যও বলা হয়েছে।
আক্রান্ত রোগীকে তার বাড়িতে রেখে চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মামুন হাসান মিলনের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে বলে ওই কর্মকর্তা নিজেই নিশ্চিত করেছেন।
গ্রামের পথে পথে ব্যারিকেড
অপরদিকে, বাগেরহাটের চিতলমারীতে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার খবরে উপজেলা জুড়ে করোনা আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। উৎকণ্ঠিত এলাকাবাসী গাছেরগুড়ি ও বাঁশ দিয়ে ওই গ্রামে যাতায়াতের কুরমনি পালবাড়ি ও ঋষিপাড়া সড়কসহ পথে পথে ব্যারিকেড দিয়েছে।
বাগেরহাটে টিসিবি’র তেল কালোবাজারে বিক্রি ৩০ হাজার টাকা জরিমানা
বাগেরহাট :: বাগেরহাটের চিতলমারীতে কালোবাজারে বিক্রি হওয়া টিসিবি’র ১৯২ লিটার তেলের মধ্যে ৯০ লিটার তেল উদ্ধার করেছে উপজেলা প্রশাসন । বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে সদর বাজারের আবির স্টোর থেকে এ সয়াবিন তেল উদ্ধার করা হয়। এ সময় ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)-এর পণ্য কালোবাজারে বিক্রির দায়ে আবির স্টোরের মালিক ইসমাইল কাজীকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমান আদালত। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রে মোঃ মারুফুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তবে ঘটনার মূলহোতা চিতলমারী উপজেলা সেচ্ছা সেবক লীগের আহবায়ক মিলন মাঝি ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকায় এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রে মোঃ মারুফুল আলম সাংবাদিকদের জানান, চিতলমারী উপজেলায় জাহাঙ্গীর ট্রেডার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠান টিসিবি’র লাইসেন্স নিয়ে পণ্য বিক্রি করে আসছিল। যার প্রোপাইটার মোঃ জাহাঙ্গীর উকিল। বৃহস্পতিবার সকালে কালো বাজারে তেল বিক্রির খবর শুনে সদর বাজারের আবির স্টোরে ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান চালায়। এ সময় ওই দোকান থেকে ভ্রাম্যমান আদালত কালোবাজারে বিক্রি হওয়া টিসিবি’র ১৯২ লিটার তেলের মধ্যে ৯০ লিটার তেল উদ্ধার করে জব্দ করা হয়। সেই সাথে টিসিবি’র পণ্য কালোবাজারে বিক্রির দায়ে আবির স্টোরের মালিক ইসমাইল কাজীকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে জাহাঙ্গীর ট্রেডার্সের মালিক মোঃ জাহাঙ্গীর উকিল মুঠোফোনে বলেন, ‘আমি গত বছর হজ্বে যাওয়ার আগে টিসিবি’র ওই লাইসেন্সটি পরিচালনার জন্য চিতলমারী উপজেলা সেচ্ছা সেবক লীগের আহবায়ক মিলন মাঝিকে দিয়ে যাই। সেই থেকে মিলন মাঝি টিসিবির পণ্য তুলে বিক্রিসহ লাইসেন্সটি পরিচালনা করে আসছে। কালো বাজারে তেল বিক্রির বিষয়টি ইউএনও স্যার আমাকে বলেছেন। আমি আজই মিলন মাঝির কাছ থেকে লাইসেন্স কোজ করব।’
আবির স্টোরের মালিক ইসমাইল কাজী ও দোকানের কর্মচারী আব্দুল্লাহ কাজী জানান, তারা টিসিবি’র ওই তেল চিতলমারী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহবায়ক মিলন মাঝির নিকট থেকে কিনেছেন।
এ ব্যাপারে চিতলমারী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আহবায়ক মিলন মাঝি সব অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, তিনি লাইসেন্সটি পরিচালনা করছেন এটা সত্য । কালোবাজারির সাথে তিনি জড়িত নন।
করোনা মোরেলগঞ্জে শিক্ষক -কর্মচারীর লোনের মাসিক কিস্তি টাকা ব্যাংকগুলো কর্তনের অভিযোগ
বাগেরহাট :: বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে ব্যাংকগুলোকে মাসিক কিস্তির বা লোনের টাকা কর্তনের অভিযোগ করেছে শিক্ষক -কর্মচারী। গত সোমবার থেকে আজ বৃহস্পতিবার পর্যন্ত উপজেলাধীন বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার কর্মরর্ত কয়েকজন শিক্ষক- কর্মচারী এ অভিযোগ করেন। তারা বলেন, মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে আমাদের খুবই কষ্টের মধ্যে জীবন অতিবাহিত করতে হচ্ছে! নিত্য প্রয়োজনীয় কিছু দ্রব্য সামগ্রিক দামও বেড়ে গেছে ! আমাদের বাহ্যিক সকল ইনকাম বন্ধ হয়ে গেছে! এ মুহূর্তে আমাদের ব্যাংকগুলোকে লোনের মাসিক কিস্তি না কাটার অনুরোধ করেন।
তারা বলেন, উপজেলা প্রশাসন ও সরকারের নির্দেেশনা অনুযায়ী এনজিও বা সমবায় সমিতিগুলো দৈনিক, সাপ্তাহিক ও মাসিক কিস্তি বা লোনের টাকা আদায়ের বন্ধ রাখলেও সোনালী, জনতা ব্যাংক ,অগ্রণী ব্যাংক.ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক,ইসলামী ব্যাংক ও রুপালীব্যাংকসহ অন্যান্য ব্যাংকগুলো শিক্ষক-কর্মচারীর কিস্তি বা লোনের টাকা আদায় করা হচ্ছে বলে জানা যায়। এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজার,জানান, লোন বা কিস্তির টাকা কর্তন না করার সরকারি নির্দেশনা গতকাল ১৫ এপ্রিল আমরা জানতে পারি। কিন্তু প্রাইমারী স্কুলের বেতন হয়ে যায় এ মাসের দুই বা তিন তারিখ। তখন কোন নির্দেশনা না থাকায় আমরা বেতনের টাকার জমার সাথে লোন বা কিস্তির টাকাও কেটে রাখি।
সরকারের নিষেধাজ্ঞা মোংলা বন্দরে মানছেন না আউটারবার ড্রেজিং প্রকল্পের কর্মকর্তারা
বাগেরহাট :: সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে ঢাকা ও নারায়নগঞ্জ থেকে বাগেরহাটের ৯ উপজেলায় ঢুকে পড়ছে বিভিন্ন শ্রেনীর মানুষ। আবার বন্দরের উন্নয়ন মুলক কয়েকটি প্রজেক্টের লোকজনও অহরহ রাজধানী শহর থেকে মোংলা আসছে এবং মোংলা থেকে পুনরায় ঢাকা ও নারায়নগঞ্জ চলাচল করছে। গত এক সপ্তাহে প্রায় দুই শতাধিক লোক এসকল শহর থেকে মোংলা উপজেলার পৌর শহর ছাড়াও ইউনিয়নের ওয়ার্ড পর্যায়ে ঢুকে পড়েছে। বিশেষ করে বন্দরের এসকল প্রজেক্টের কর্মকর্তাগন সরকারের নিষেধাজ্ঞাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে অবাধে করছে চলাচল।
বন্দরের চায়না সিভিল এন্ড কন্সস্ট্রকশন ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন এর ঢাকা প্রতিনিধ সোহেলসহ বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা নিয়মনীতি না মেনে রাতের অন্ধকারে প্রজেক্টের কাজের কথা বলে ঢাকা হতে মোংলা প্রতি সপ্তাহে দুই বার আসা যাওয়া করে। ১৫ এপ্রিল রাতে মোংলায় অবস্থান করে, আবার তারা পুনরায় মোংলা থেকে ১৬ এপ্রিল সকাল ১১টায় আবার ঢাকায় চলে যান। এরকমও চলছে তাদের অবাধ যাতায়াত।
উপজেলার অন্যান্য এলাকায় ঢাকা বা নারায়নগঞ্জ থেকে লোকজন আসলে তাদের হোম কোয়ারেন্টাইনে আনতে সহায়তা করছেন প্রশাসনের সদস্যরা কিন্ত উপজেলা প্রশাসন বা মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মিদেরও কোন বিধি নিষেধ মানেন না আউটারবার ড্রেজিং প্রকল্পের কর্মকর্তাগন। আর এ সহায়তা করছেন মোংলা অফিসের দায়ীত্বে থাকা কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তারা রাতের অন্ধকারে এরকম অবাধ যাতায়াতের সুযোগ করে দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঢুকে পড়ছেন ঢাকা ও নারায়নগঞ্জ থেকে আসা লোকজন। ইতি মধ্যে বেশ কয়েকজনকে হোম কোয়ারেন্টাইনের ব্যাবস্থাও করেছে উপজেলা প্রশাসন।
এব্যাপারে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের নিরাপত্তা কর্মকর্তা লে. কমান্ডার নুর মোহাম্মাদ জানান, সরকারের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ড্রেজিং প্রকল্পের কর্মকর্তা ঢাকা-নারায়গঞ্জ আসা-যাওয়া করছে তা জানাছিলনা। তবে এখানকার প্রশাসনের সাথে আলাপ করে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহন করার আশ্বাস দেন তিনি।
সোনালী ব্যাংক মোরেলগঞ্জ শাখার কর্মকর্তা ও একই কথা বলেন,তিনি আরো বলেন, শিক্ষকদের মাসিক বেতন না হলে! তাহলে বেতন কর্তন করতাম না। কেটে রাখা টাকাগুলো কি? এখন তাদের একাউন্টে ফেরত দিয়া হবে, তখন বলেন, দেওয়া হবে না। তবে কারো কোন সমস্যার হলে তাহলে বিবেচনা করা হবে।
করোনায় কর্মহীন ৩ শতাধিক ইমাম পুরোহিত পরিবার অসহায় জীবন যাপন
বাগেরহাট :: বাগেরহাটের কচুয়ায় কোভিড-১৯করোনা ভাইরাসের প্রর্দুভাবে মসজিদ ও মন্দিরের সাথে জড়িত প্রায় ৩ শতাধিক পরিবার অসহায় জীবন যাপন করছে। ধর্মীয় উপসানলয় সাধারনত মুসল্লী ও পুজারিদের দানেই চলে। আর এই দানের অংশ থেকেই বেতন হয় ইমাম,পুরোহিতদের। এ সামান্য বেতন দিয়ে তাদের কোন রকমের জীবন চালিয়ে যেতে হয়। কোভিড-১৯ এ আত্রান্তের সংখ্যা বিশ্বব্যাপি বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকার মসজিদে না গিয়ে বাড়ীতে বসে নামাজ পড়ার সিদ্ধান্ত দেন। এতে বেশিরভাগ মুসল্লীরা ঘরে বসেই নামাজ পড়েন ও হিন্দুরা ঘরে বসেই পূজা-অর্চনা করে। মসজিদে মুসল্লি ও মন্দিরে পুজারীদের উপস্থিতি না থাকায় ইমাম ও পুরোহিতরা তাদের বেতন পাচ্ছেননা। বেতন না পাওয়ায় অধিকাংশ পরিবার নিয়ে চরম অর্থ কস্টে রয়েছেন।
জানাগেছে, কচুয়া উপজেলায় ৭টি ইউনিয়নে ১৯৬ টি মসজিদ ও ৩৮/৪০টি সার্বজনীন মন্দির রয়েছে। বাধাল ৩৩, কচুয়া ৪১, রাড়ীপাড়া ৩১, মঘিয়া ১৯, গজালিয়া ৩৮, ধোপাখালী ১৭, গোপালপুর ১৭ টি মসজিদ আছে। মসজিদ ও মন্দিরের সাথে জড়িত প্রায় ৩ শতাধিক ইমাম,মুয়াজ্জিন, পুরোহিত ও সেবাইত করোনাভাইরাসের মহামারির কারনে কর্মহীন হয়ে সংসার চালাতে হিমসিম খাচ্ছে।
বাধাল বাজারের রাধাগোবিন্দ মন্দিরের সেবাইত কল্যানী রানী ও জগন্নথ দাস জানান, মন্দির এলাকার বাজারে দোকান ও ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে ফুল তুলসি দিয়ে যে প্রনামির টাকা পেতাম তা থেকে মন্দির কমিটি তাদের বেতন দিতেন। তা দিয়েই সংসার চলতো। করোনাভাইরাসের মহামারির কারনে সকল দোকান ও ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় মন্দির কমিটি তাদের বেতন দিতে পারছে না। অসহায় অবস্থায় আমাদের দিন কাটছে। তারা সরকারি ভাবে সম্মানি ভাতার দাবি করছে ।
বাধাল বড়বাড়ি জামে মসজিদের ইমাম সিরাজুল ইসলাম বলেন, গত মাসের বেতন এখন পর্যন্ত দেয়নি। চলতি মাসে মসজিদ কমিটি কি করবে জানি না। করোনাভাইরাসের কারনে মুসল্লীরা এখন মসজিদে নামাজ পড়তে আসেনা বললেই চলে। পরিবার পরিজন নিয়ে সংসার চালাতে ভিষন কষ্ট হচ্ছে। সরকারি ভাবে আমাদের যদি সাহায্য করতো তাহলে হয়তো দু‘বেলা দু‘মুঠো খেতে পারতাম।
প:বাধাল জামে মসজিদের সভাপতি ফরিদুর রহমান শামিম শেখ বলেন, এলাকার মুসল্লীদের চাঁদার টাকায় আমাদের মসজিদ চলে। করোনাভাইরাসের কারনে মুসল্লিরা নামাজ পড়তে আসেনা এবং মাসিক চাঁদাও দেয় না, তাই আমরা ইমামদের বেতন দিতে পারছি না। একারনে আমাদের ইমাম এখন মসজিদে আসতে চাচ্ছে না।
কচুয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুজিৎ দেবনাথ বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে তাদের জন্য নগদ কোন অর্থ বরাদ্দ নেই। ইউপি চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে কিছু নাম এসেছে তাদেরকে খাবার দেওয়া হবে। যাদের খাবার নেই তারা আমাদের মোবাইল করে জানালে আমরা তাকে খাবার পৌছিয়ে দেবো।