বৃহস্পতিবার ● ১৬ এপ্রিল ২০২০
প্রথম পাতা » কৃষি » বিশ্বনাথে শ্রমিক সংকট ধান কাটা শুরু
বিশ্বনাথে শ্রমিক সংকট ধান কাটা শুরু
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: করোনার প্রভাবে শ্রমিক সংকট দেখা দেয়ায় সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় ব্যাহত হচ্ছে ধান কাটা। এবারের বুরো ফসল ঘরে তুলতে বেকায়দায় পড়েছেন কৃষকরা। একদিকে শ্রমিক না পাওয়া অন্যদিকে কালবৈশাখী ঝড় ও শিলা বৃষ্টির আশঙ্কায় শংঙ্কিত কৃষককূল। ইতিমধ্যে নিজেরা একটু একটু করে কাটতে শুরু করেছেন মাঠের পাকা ধান।
সূত্র জানায়, এ বছর সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় বুরো ধান আবাদ হয়েছে ৭৬২ হেক্টর জমিতে। উৎপাদনও হয়েছে ভালো। প্রতি বছর এ সময়ে ধান কাটতে আসেন আশপাশ এলাকার শ্রমিকরা। এ বছর করোনা পরিস্থিতির কারণে তরা আসেন নি কেউ। এ করণে সময় মতো ধান কাটতে পারছেন না কৃষকরা।
উপজেলার দশঘর ইউনিয়নের বাউসী গ্রামের কৃষকরা জানান, অধিকাংশ বুরো জমিতে মেশিনে (কম্বাইনহারভেস্টার) ধান কাটা সম্ভব হয় না। তাই ফসল কাটতে শ্রমিকের প্রয়োজন হয়। অন্য বছর চাহিদানুসারে শ্রমিক পেলেও এবার তার ব্যতিক্রম। করোনার ভয়ে আসছে না মানুষ। সেই সাথে ঝড়-শিলা বৃষ্টিতেও রয়েছে ফসল নষ্টের আশঙ্কা। তাই নিজেরাই ক্ষেতে নেমেছি।
এ বিষয়ে কথা হলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রজমান আলী সাংবাদিকদের বলেন, অনেকেই ধান কাটা শুরু করেছেন। মেশিনও কাটছে ধান। এবার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে আরো ২টি। আশারাখি ফসল তুলতে তেমন একটা বেগ পোহাতে হবে না কৃষকদের।
বিশ্বনাথে প্রশাসনের সাথে ব্যবসায়ীদের লুকোচুরি
বিশ্বনাথ :: করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে লক্ষ্যে সিলেটের বিশ্বনাথে নির্দেশনা অমান্য করেন প্রশাসনের সাথে লুকোচুরি খেলা চালিয়ে যাচ্ছেন অনেক ব্যবসায়ী। নির্দিষ্ট সময়ে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দোকান, কৃষিপণ্যের দোকান ও ফার্মেসী খোলা রাখা ব্যতিত অন্যান্য সকল দোকানপাট পরবর্তী নির্দেশনা প্রদান না করা পর্যন্ত বন্ধ রাখার কথা থাকলে অনেকই তা মানছেন না। ফলে উদ্বিগ্ন রয়েছেন সচেতনমহল।
বিশ্বব্যাপী চলমান করোনার মহামারীতে বাংলাদেশেও আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় এপর্যন্ত কোন লোক করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া না গেলেও আতংকে রয়েছে পুরো উপজেলাবাসী। করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে গত ১১ এপ্রিল থেকে বিশ্বনাথ’সহ পুরো সিলেট জেলাকে অবরুদ্ধ (লকডাউন) ঘোষণা করা হয়। মানুষকে ঘরে রাখতেই এই কঠোর সিদ্ধান্ত নেয় জেলা প্রশাসন। লকডাউনের আওতায় জরুরী পরিসেবা, চিকিৎসা সেবা, কৃষি পণ্য, খাদ্যদ্রব্য সরবরাহ ও সংগ্রহ ব্যতিত সকল ধরণের গণপরিবহন ও জনসমাগম বন্ধ থাকার নির্দেশনা প্রদান করা হয়।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সর্বক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব বজার রাখার, সকাল থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দোকান ও কৃষিপণ্যের দোকান খোলা রাখতে, বিকেল ৫টার পর শুধুমাত্র ঔষধের দোকান (ফার্মেসী) ব্যতীত সকল দোকানপাট বন্ধ রাখতে এবং জরুরী প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের না হতে নির্দেশনা প্রদান করা হয়। বিশ্বনাথে এই নির্দেশনা যাতে কেউ অমান্য না করেন সেজন্য সার্বক্ষনিক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে উপজেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও থানা পুলিশ। কিন্ত আদেশ অমান্য কিছু ব্যবসায়ী প্রশাসনের সাথে লুকোচুরি খেলা করে যাচ্ছেন। তারা কৌশল অবলম্বন করে দোকানে চালিয়ে যাচ্ছেন ব্যবসা।
সরেজিমন দেখা যায়, বিশ্বনাথ উপজেলা সদরের নতুন বাজার ও পুরান বাজার এলাকায় প্রশাসনের আদেশ অম্যান্য করে প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কাপড়, জুতা, ইলেকট্রনিক্স, ঢেউটিন, রড-সিমেন্ট, লাইব্রেরী, স্টেশনারী, স্যানেটারী, ফাস্টফুড ও মিষ্টির দোকান এবং সেলুন কৌশলে দোকানের সাটা অল্প খোলা রেখে ব্যবসা পরিচালনা করছেন ব্যবসায়ীরা। নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট, পুলিশ কিংবা সেনাবাহিনীর উপস্থিতি টের পেলেই তারা দোকানের সাটার বন্ধ করে একটু দূরে গিয়ে অবস্থান নেন। আবার কেউ কেউ দোকানের ভিতরেও অবস্থান নিতে দেখা যায়। প্রশাসনের কর্মকর্তারা চলে গেলে তারা আবারো নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে শুরু করেন ব্যবসা। প্রশাসনের সাথে ব্যবসায়ীদের এমন লুকোচুরি খেলায় উদ্বিগ্ন রয়েছেন সচেতনমহল। দেশ ও দেশের সকল মানুষের স্বার্থেই মহামারী করোনা ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সরকার ও প্রশাসনের আদেশ মেনে চলা খুবই জরুরী এমনটাই মনে করছেন সচেতন মহল।
এদিকে, প্রশাসনের আদেশ অমান্য করে দোকান খোলা রাখায় বুধবার বিশ্বনাথে ৭টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করেছেন মোবাইল কোর্ট। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মো. কামরুজ্জামান ও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট সজিব আহমদ পৃথক অভিযান (মোবাইল কোর্ট) পরিচালনা করেন। অভিযানে ৭টি প্রতিষ্ঠানকে মোট ৯হাজার ২শত টাকা জরিমানা করা হয়। এর মধ্যে উপজেলা সদরের পুরান বাজারস্থ রাজু ইলেকট্রিককে ১ হাজার টাকা, রাজমহল মিষ্টির দোকানকে ১হাজার টাকা, কুটির শিল্প দোকানকে ২শত টাকা ও মোবাইল টেলিকমকে ৫শত টাকা এবং নতুন বাজারস্থ রসমালাই মিষ্টির দোকানকে ৪ হাজার টাকা, মোবাইল টেলিকমকে ৫শত টাকা ও রামপাশা বাজারস্থ ফিজা মিষ্টির দোকানকে ১হাজার ৫শত টাকা জরিমানা করা হয়।
জরিমানা আদায়ের সত্যতা স্বীকার করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মো. কামরুজ্জামান বলেন, অভিযান অব্যাহত থাকবে।