বৃহস্পতিবার ● ১৬ এপ্রিল ২০২০
প্রথম পাতা » গাইবান্ধা » গাইবান্ধায় করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে পুলিশি তৎপরতা
গাইবান্ধায় করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে পুলিশি তৎপরতা
সাইফুল মিলন, গাইবান্ধা :: করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে গাইবান্ধা জেলা শহরের রাস্তাঘাটগুলোতে ও বিভিন্ন মোড়ে অহেতুক ঘোরাফেরা ও আড্ডা বন্ধ করে বাড়ি ফিরে যেতে গাইবান্ধা সদর থানা পুলিশের পক্ষ থেকে পথচারিদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে।
আজ সকাল ১১টা থেকে জেলা শহরের বিভিন্ন সড়কে এ তৎপরতা শুরু করেছে পুলিশ। রিক্সা, মটর সাইকেলে দু’জন এবং অটোবাইকে এক সাথে গাদাগাদি করে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহনের ক্ষেত্রেও বাধা দিয়ে অতিরিক্ত যাত্রী নামিয়ে দিয়ে পরিবহন চালকদের বাড়ি ফিরে যেতে পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। তদুপরি সকাল ১১টার পর থেকে শহরের বাইরে থেকে রিক্সা, মটর সাইকেল ও বাই-সাইকেল নিয়ে শহরের মধ্যে প্রবেশ করার ক্ষেত্রেও বাধা দেয়া হয়। এমনকি রিক্সাসহ যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে রিক্সা চালকদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে।
এব্যাপারে গাইবান্ধা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ খান মো. শাহরিয়ার জানান, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে জনেসচেতনতা সৃষ্টি এবং শহরে অহেতুক ঘোরাফেরা না করে সরকার নির্ধারিত তারিখ পর্যন্ত ঘরে থাকতে পরামর্শ দেয়ার জন্য গাইবান্ধা সদর থানা পুলিশের পক্ষ থেকে এ তৎপরতা চালানো হচ্ছে।
চাল চোরদের গ্রেফতার ও রেশন কার্ডের মাধ্যমে চাল বিতরণের দাবিতে
গাইবান্ধায় সিপিবির অবস্থান কর্মসুচি পালিত
গাইবান্ধা :: করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে সরকারি চাল চোরদের গ্রেফতার, রেশন কার্ডের মাধ্যমে নিন্ম মধ্যবিত্ত ও নিন্ম আয়ের মানুষের মাঝে ১০ টাকা কেজির চাল রেশন কার্ডের মাধ্যমে বিতরণসহ বিভিন্ন অনিয়মের প্রতিবাদে বাংলাদেশের কমিউনিষ্ট পার্টি গাইবান্ধা জেলা কমিটির উদ্যোগে জেলার ৭টি স্থানে শারীরিক নিরাপদ দুরত্ব বজায় রেখে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার গাইবান্ধা শহরের সিপিবির জেলা কার্যালয়ের সামনে নেতাকর্মীরা বিভিন্ন প্লেকার্ড নিয়ে সাড়ে ১১টায় ঘন্টাব্যাপি এই অবস্থান কর্মসুচি পালন করে। এছাড়া একইভাবে প্লেকার্ড নিয়ে সদর উপজেলার দারিয়াপুরসহ সুন্দরগঞ্জ, সাঘাটা, ফুলছড়ির কঞ্চিপাড়া, পলাশবাড়ীর মেরিরহাটে একই সময়ে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
অবস্থান কর্মসূচীতে নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশে করোনা ভাইরাস বৃদ্ধির সাথে সাথে করোনা নিয়ন্ত্রণে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য সরকারী বরাদ্দকৃত চাল যেভাবে সরকারি দলসহ জনপ্রতিনিধিদের একাংশ চুরি করছে, তা রীতিমত লজ্জার, নেতৃবৃন্দ এসব চোরদের গ্রেফতার করে তাৎক্ষণিকভাবে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানান। নেতৃবৃন্দ, বিশ্বব্যাপী এই সমস্যা সমাধানে রাজনীতি না করে চিকিৎসার সাথে সংশ্লিষ্ট ডাক্তারসহ সকল পেশাজীবি সংগঠন, রাজনৈতিক দল, সামাজিক সাংস্কৃতিক দলের সমন্বতিত উদ্যোগ গ্রহণ করার দাবি জানান। এসময় নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, করোনা ঠেকাতে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে, এতে করে নিন্ম আয়ের মানুষ হঠাৎ করে কর্মহীন হয়ে পড়েছে। লকডাউন কার্যকর করতে হলে এসব নিন্ম আয়ের মানুষের তালিকা করে রেশন কার্ডের মাধ্যমে কড়াকড়িভাবে শারীরিক দুরত্ব বজায় রেখে অথবা বাড়ি বাড়ি খাদ্য সামগ্রী পৌছাতে না পারলে লকডাউনসহ করোনা রোধে কোন নিয়মই কার্যকর হবে না।
বক্তারা দীর্ঘ মেয়াদী এই করোনা রোধে জেলায় করোনা টেস্টিং ল্যাব স্থাপন করে পর্যাপ্ত টেস্টের ব্যবস্থাকরণ, চিকিৎসার সাথে সংশ্লিষ্ঠ ডাক্তার, নার্স, আয়া, পরিচ্ছন্নকর্মীসহ সকলকে পর্যাপ্ত পিপিইসহ সব ধরণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান। জেলার বিভিন্নস্থানে উপস্থিত ছিলেন সিপিবি কেন্দ্রীয় সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য ও জেলা সভাপতি মিহির ঘোষ, সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান মুকুল, করোনা প্রতিরোধে জেলা কন্ট্রোল রুমের সমন্বয়ক এ্যাডভোকেট মুরাদ জামান রব্বানী, জেলা নেতা মাহমুদুল গনি রিজন প্রমুখ।
গাইবান্ধায় হোম কোয়ারেন্টাইনে ১৩৮৮ জন
গাইবান্ধা :: গাইবান্ধায় গত ২৪ ঘন্টায় আজ বৃহস্পতিবার করোনা ভাইরাস সন্দেহে হোম কোয়ারেন্টাইনে চিকিৎসাধীন রোগী ১০৫ জন বেড়ে এখন মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩৮৮ জন। এছাড়া আমেরিকা প্রবাসী দুইজনসহ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী গাইবান্ধা সদর হাসপাতালের আইসোলেসনে দীর্ঘদিন অবস্থান করার পর সুস্থ হওয়ায় ৩ জনকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে।
এছাড়া জেলায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এখন হয়েছে ১২ জন। তাদের মধ্যে গাইবান্ধা জেলা সদর হাসপাতালের আইসোলেসনে ১০ জন ও হোম আইসোলেসনে রয়েছে ২ জন।
সিভিল সার্জন সুত্রে জানা গেছে, করোনা ভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহে গত ২৪ ঘন্টায় ১ হাজার ৩৮৮ ব্যক্তিকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। এরমধ্যে সুন্দরগঞ্জে ৮২, গোব্দিন্দগঞ্জে ১৩৭, সদরে ২৯৯, ফুলছড়িতে ৩০০, সাঘাটায় ৩৩০, পলাশবাড়িতে ১৯, সাদুল্যাপুর উপজেলায় ২২১ জন।
অপরদিকে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে নতুন করে আরও ১০৫ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে ৮০ জন রয়েছে।