শুক্রবার ● ১৭ এপ্রিল ২০২০
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » সিলেটে মধ্যরাতে কালবৈশাখীর হানা
সিলেটে মধ্যরাতে কালবৈশাখীর হানা
হাফিজুল ইসলাম লস্কর, সিলেট প্রতিনিধি :: সিলেটে মধ্যরাতে কালবৈশাখীর ঝড় হানা দিয়েছে। নগর এলাকা ছাড়াও সিলেটের বিভিন্ন উপজেলায় তান্ডব চালিয়েছে কালবৈশাখী ঝড়। কালবৈশাখী ঝড়ের কারনে নগরীতে সাময়িক এবং নগরীর কিছু এলাকা ও সিলেটের কয়েকটি উপজেলায় এখনো বিদ্যুৎ বিভ্রাটে রয়েছে।
আজ শুক্রবার (১৭ এপ্রিল) রাত ১২ টে থেকেই আকাশ মেঘলা হতে শুরু করে। আর রাত ১-২০ মিনিটে তা রুপ নেয় কালবৈশাখীর তান্ডবে। মেঘের গর্জনের পর ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়। ঝড়ে ধুলোবালি উড়তে শুরু করে। সেই সাথে শুরু হয় বিদ্যুৎ বিভ্রাট। ফলে আকস্মিক বিড়ম্বনায় পড়েন নগরবাসী। তবে ১ ঘন্টা ৩০ মিনিট স্থায়ী এ কালবৈশাখীর তান্ডবে গাছ-গাছালী ভাঙ্গলেও হতাহতের কোন খবর পাওয়া যায়নি।
সিলেট নগরী ছাড়াও জেলার বিভিন্ন উপজেলার উপর দিয়েও ঝড়ো হাওয়াসহ বজ্রবৃষ্টি হয়েছে। কোন কোন স্থানে শিলাবৃষ্টিও হয়েছে বলে জানা গেছে। এসময় সিলেট শহর ও শহরতলিতে ৩৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
কালবৈশাখীর হঠাৎ তান্ডবে বিদ্যুতের লাইনের ওপর গাছের ডাল পড়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় বিদ্যুৎ সংযোগ। ফলে বেশ কয়েক ঘন্টা অন্ধকারে থাকে পুরো নগরী। কোন কোন জায়গায় শুক্রবার সকাল ১০টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। পুর্বেই সিলেটসহ দেশের সব অঞ্চলেই ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনার কথা আগেই জানিয়েছিল আবহাওয়া অধিদফতর।
উল্লেখ্য, আবহাওয়ার অধিদফতরের পূর্বাভাস ছিল, সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের অনেক জায়গায়, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা ও খুলনা বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা-ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি-বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে।
মুজিবনগর সরকারের সদস্যদের প্রতি বঙ্গবন্ধু লেখক সাংবাদিক ফোরামের শ্রদ্ধা
সিলেট : আজ শুক্রবার ১৭ এপ্রিল ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলায় (বর্তমান নাম মুজিবনগর) শপথ গ্রহণ করেছিল বাংলাদেশের প্রথম সরকার ‘মুজিবনগর সরকার’। মুজিবনগর দিবসের সিলেট জেলা বঙ্গবন্ধু লেখক সাংবাদিক ফোরাম (ইউকে) এক আলোচনা সভা আয়োজন করেছিল। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারনে পরিস্থিতি জটিল আকার ধারন করায় সেই আলোচনা সভা স্থগিত করা হয়েছে এবং আলোচনা সভার পরিবর্তে বিবৃতি প্রদান করা হয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষে মুজিবনগর সরকারের সকল সদস্যের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন ও দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছে বঙ্গবন্ধু লেখক সাংবাদিক ফোরাম (ইউকে) সিলেট জেলার নেতৃবৃন্দ বলেন, স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সবচেয়ে বেশি কার্যকরী ও সুদৃরপ্রসারী সাংবিধানিক পদক্ষেপ ছিল মুজিবনগর সরকার গঠন এবং প্রাতিষ্ঠানিকভাবে মন্ত্রিসভার শপথ অনুষ্ঠান আয়োজন করে বিশ্বব্যাপী প্রচারের ব্যবস্থা করা। এর ফলে বাঙালীদের সদ্য শুরু হওয়া সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধ লাভ করে বিশাল ব্যাপকতা এবং শুরু হয় বিশ্বব্যাপী আমাদের স্বপক্ষে জনসমর্থন অর্জনে ব্যাপক সাড়া।
প্রকৃতপক্ষে ১৯৭০ সালের জাতীয় নির্বাচনে বিজয়ী দলের নেতাদের দ্বারা আনুষ্ঠানিকভাবে মুজিবনগর সরকার গঠন করাটা ছিল স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার স্বপক্ষে বিশ্বব্যাপী জনমত গঠনে একটা অতীব গুরুত্বপূর্ণ ও উল্লেখযোগ্য প্রক্রিয়া যা একদিকে যেমন স্বাধীনতা অর্জনের জন্য সরকার প্রতিষ্ঠা থেকে শুরু করে অন্যান্য রাজনৈতিক তৎপরতার স্বপক্ষের কর্মকান্ড বিশ্ব মিডিয়াতে ব্যাপক প্রচারণা, অন্যদিকে পাকিসত্মানী বাহিনী কর্তৃক নিরীহ নিরস্ত্র দেশবাসীদের ওপর আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অমানুষিকভাবে হামলা চালিয়ে হাজার হাজার লোককে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনা ব্যাপক প্রচারণা ও বিশ্বব্যাপী নিন্দার জোয়ার ও স্বাধীনতার পক্ষে বিশ্বজনমত তৈরী করা।
মুজিবনগর সরকার গঠন করা ছিল একটা বাসত্মবসম্মত ও সময় উপযোগী সাংবিধানিক পদক্ষেপ। এটা আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম একটা উজ্জ্বল ঘটনা এবং জাতীয় জীবনের একটা বিশেষ গুরম্নত্বপূর্ণ দিন। ২৫ মার্চ রাতের অন্ধকারে পাকবাহিনীর জ্বালাও, পোড়াও, হত্যা ও লুটপাটের পৈশাচিক কর্মকান্ড শুরু করার পর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী এবং স্বাধীনতার স্বপক্ষের লোকেরা আত্মরক্ষার জন্য আত্মগোপন করতে বাধ্য হয় দেশের এখানে সেখানে। এমনি পরিস্থিতিতে স্বাধীনতার স্বপক্ষের সবাইকে একত্রিত করে একটা সরকার গঠন করা এবং পাকিস্থানের মতো একটি শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে অল্প সময়ের মধ্যে বিজয় ছিনিয়ে আনা ছিল সত্যিই একটা কঠিন কাজ। আর এই সুকঠিন কাজটা সুচারুভাবে সুসম্পন্ন করে ঈপ্সিত লক্ষ্য অর্জন করতে সমর্থ হয়েছিল মুজিবনগর সরকার। তাই আমরা মুজিবনগর সরকারের সকল সদস্যের প্রতি জানাই স্বশ্রদ্ধচিত্তে গভীর শ্রদ্ধা।