শনিবার ● ১৮ এপ্রিল ২০২০
প্রথম পাতা » গাইবান্ধা » করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসনের সংবাদ সম্মেলন
করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসনের সংবাদ সম্মেলন
সাইফুল মিলন, গাইবান্ধা :: কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাসের পরিস্থিতি নিয়ে আজ শনিবার গাইবান্ধা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল মতিন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আলমগীর কবির, সিভিল সার্জন ডাঃ এবিএম আবু হানিফ, জেলা কৃষি কর্মকর্তা প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনে জেলার প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রেস রিলিজে উল্লেখ করা হয়, করোনা ভাইরাসের চিকিৎসায় জেলার প্রস্তুতি হিসেবে ৭টি সরকারি হাসপাতালে মোট ৪শ’ ৮১টি বেড রয়েছে। এরমধ্যে প্রস্ততকৃত বেডের সংখ্যা ৩৫টি ও বেসরকারি ১৯টি। এছাড়া জেলায় মোট ১শ ২৬ জন ডাক্তার ও বেসরকারি ১৯ জন ডাক্তার বর্তমানে কর্মরত রয়েছে। সরকারি নার্স ১শ’ ৯০ জন এবং বেসরকারি নার্স ১৯ জন। চিকিৎসকদের জন্য ১ হাজার ৩শ’ ৭১টি ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) মজুদ রয়েছে। করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের জরুরী চিকিৎসায় স্থানান্তরের নিমিত্তে ২টি এ্যাম্বুলেন্স ও ২টি মাইক্রোবাস সর্বক্ষনিক প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া চিকিৎসা কেন্দ্রে জরুরী বিভাগে ১শ’টি আইসোলেসন কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে।
করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে জরুরী সরকারি সহায়তা অব্যাহত রয়েছে। এ পর্যন্ত জেলার ৭টি উপজেলা ও ৪টি পৌরসভায় ৬৮ হাজার ৭শ’ দরিদ্র শ্রমজীবি কৃষক পরিবারের মধ্যে ৬শ’ ৮৭ মে. টন খাদ্য সামগ্রী ও ৫২ হাজার ৮শ’ ৭০টি পরিবারের মধ্যে ২৭ লাখ ৫৯ হাজার টাকা বিতরণ করা হয় এবং বিতরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। জেলায় জিআর ৮ লাখ ৮২ মে. টন চাল, জিআর নগদ ৩৮ লাখ ৪৫ হাজার টাকা, শিশু খাদ্য ক্রয় বাবদ ৮ লাখ উপ-বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও বর্তমানে জেলায় ১ লাখ ১৩ মে. টন চাল এবং ৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা মজুদ রয়েছে।
জেলা প্রশাসক প্রেস ব্রিফিংয়ে উল্লেখ করেন, সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করণ, জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সর্বত্র মাইকিং এবং দুঃস্থদের জন্য সহায়তা কার্যক্রমসহ বাজার মূল্য মনিটরিং কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। জেলা প্রশাসনের ১৬ জন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিষ্ট্রেট জেলায় এ পর্যন্ত ৯৭টি ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেছে। এতে ৪৯৯টি মামলায়৯মোট ৩ লাখ ৯১ হাজার ৪শ’ ৭০ টাকা অর্থদন্ড ও ৮ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে।
করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) রোগীদের চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত ডাক্তার এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের আবাসনের জন্য (কোয়ারেন্টাইন) ফেন্ডশীপ সেন্টার প্রস্তুত করা হয়েছে। পরবর্তীতে আরও প্রয়োজন হলে ২শ’ বেড বিশিষ্ট টিটিসিকে আইসোলেসন ও কোয়ারেন্টাইন সেন্টার হিসেবে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জেলার ৪টি পৌরসভায় শীঘ্রই ওএমএস কার্যক্রম চালু হবে। এ লক্ষ্যে উপকারভোগীদের তালিকা প্রণয়নের কাজ চলমান রয়েছে এবং তালিকা প্রণয়নের পর কার্ড প্রদান করা হবে। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে কার্ডভিত্তিক ওএমএস এর চাল বিতরণ করা হবে।
এছাড়া খাদ্য বান্ধব কর্মসূচি ও ভিজিডি চাল আত্মাসাত করার দায়ে সাঘাটা উপজেলার ৩শ’ কেজি চাল আত্মসাতের অভিযোগে ডিলার মজদার রহমান, গোবিন্দগঞ্জে ৫শ’ ৪০ কেজি চাল অটোচালক মো. জাহিদুল ইসলাম ও ডিলার মো. জাহিদুল ইসলাম এবং সুন্দরগঞ্জে ভিজিডি চালের ৫০ বস্তা চাল ব্যবসায়ি মো. আয়নাল হক ও মকবুল হোসেনকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে তাদের নামে মামলা করা হয়েছে।
গাইবান্ধায় হোম কোয়ারেন্টাইনে ১৭৫৬ জন
গাইবান্ধা :: গাইবান্ধায় গত ২৪ ঘন্টায় শনিবার হোম কোয়ারেন্টাইনে চিকিৎসাধীন রোগী ১৮৮ জন বেড়ে এখন মোট সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৭৫৬ জন। এছাড়া একজন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী গাইবান্ধা সদর হাসপাতালের আইসোলেসনে দীর্ঘদিন অবস্থান করার পর সুস্থ হওয়ায় ৪ জনকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে।
সিভিল সার্জন সুত্রে জানা গেছে, জেলায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা এখন রয়েছে ১২ জন। তারা জেলা সদর হাসপাতালের আইসোলেসনে রয়েছে। করোনা ভাইরাস আক্রান্ত সন্দেহে গত ২৪ ঘন্টায় ১ হাজার ৭৫৬ ব্যক্তিকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। এরমধ্যে সদরে ৩২৯, সুন্দরগঞ্জে ৮৭, গোব্দিন্দগঞ্জে ২৮৫, ফুলছড়িতে ৩৪৫, সাঘাটায় ৪২৬, পলাশবাড়িতে ২১, সাদুল্যাপুর উপজেলায় ২৬৩ জন।
অপরদিকে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে নতুন করে আরও ১৮৮ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে ৮০ জন রয়েছে।