শুক্রবার ● ২৪ এপ্রিল ২০২০
প্রথম পাতা » কুষ্টিয়া » কুষ্টিয়ায় করোনার ছোবল : চিকিৎসকসহ ৫ জন আক্রান্ত
কুষ্টিয়ায় করোনার ছোবল : চিকিৎসকসহ ৫ জন আক্রান্ত
শামসুল আলম স্বপন,কুষ্টিয়া :: কুষ্টিয়ায় আরো দুইজন নতুন করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছেন কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারা উপজেলার এক জন চিকিৎসক ও কুমারখালী উপজেলার উনাশি বছরের এক বৃদ্ধ । বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডা. এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম এদের দুজনের করোনা ভাইরাসের আক্রান্ত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছেন। এ নিয়ে গত দুই দিনে ( বুধ ও বৃহস্পতিবার ) কুষ্টিয়ার ৪টি উপজেলায় ৫ জন করোনা রোগী সনাক্ত হলো। আক্রান্ত ৫ জনই পুরুষ। এদের মধ্যে একজন চিকিৎসক, একজন পুলিশের এসআই, একজন ব্যাংক কর্মকর্তা ও ২জন ষাটোর্দ্ধ ব্যক্তি।
আক্রান্তরা হলেন ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্্েরর মেডিকেল অফিসার ডা. রাকিব আল ইমরান (২৮), কুষ্টিয়া শহরের আড়ুয়াপাড়ার বাসিন্দা ব্যাংক কর্মকর্তা এসএম মাহবুব চপ্পল (৩০), খোকসা উপজেলার কাজী আতাউল হোসেন (৩৫) তিনি পুলিশের এস আই , কুমারখালী উপজেলার গট্টিয়া গ্রামের আক্কাস আলী(৬৯) ও জগন্নাথপুর ইউনিয়নের চরমহেন্দ্র পুরের সামাদ মন্ডল (৪০)। কয়েকদিন আগে সামাদ মন্ডলের ছেলে স্ব-পরিবারে নারায়ণগঞ্জ থেকে বাড়িতে আসে। গত ২১ এপ্রিল তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়। কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আকুল উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডা. এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম এদের ৫ জনের করোনাভাইরাসের আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আক্রান্ত মাহাবুব আহম্মেদ চপ্পল (৩০) মাদারীপুর জেলায় সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অফিসার পদে কর্মরত আছেন। গত ২৫ মার্চ তিনি মাদারীপুর থেকে কুষ্টিয়ায় নিজ বাড়িতে আসেন। এর পর থেকে তিনি কুষ্টিয়াস্থ নিজ বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। অপরজন কুষ্টিয়া কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের গট্টিয়া গ্রামের আক্কাস আলী (৬৯) তিনি কুষ্টিয়া জেলা ছেড়ে অন্য কোন জেলায় জাননি বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে। গত কদিন ধরে এই দুজনের জ্বর, ঠান্ডা ও শ্বাসকষ্ট দেখা দেওয়ায় গত ২০ এপ্রিল বিকেলে দুজনের শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পরের দিন ২১ এপ্রিল সকালে পরীক্ষার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। বুধবার (২২ এপ্রিল) সকালে ঢাকা থেকে এই দুজনের পজেটিভ রিপোর্ট আসে।
এলাকাবাসী জানায়, আক্কাস আলী স্থানীয়ভাবে তৈরী ছোট মেশিন দিয়ে বাড়ি বাড়ি ধান মাড়াই এর কাজ করেন। অনেক আগে থেকেই তার এ্যাজমার সমস্যা রয়েছে।
সিভিল সার্জন ডা. এইচ এম আনোয়ারল ইসলাম আরো জানান, আক্রান্ত ৫জন এতদিন বাড়িতে ছিলেন। পজেটিভ রেজাল্ট আসার পর রোগীদের মধ্যে ৪ জনকে নিজ নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে । আক্কাস আলীর অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাকে কুষ্টিয়া ২৫০ বেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে । কুষ্টিয়া সিভিল সার্জনের প্রতিনিধি ডা. নাজমুল মনির আমাদের সময়কে জানান, কুষ্টিয়া জেলায় এটাই প্রথম ৫জন করোনাভাইরাস আক্রান্ত সনাক্ত হলো। তিনি বলেন, কুষ্টিয়া জেলায় ৩৩৯ জনের করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৫৫ জনের নেগেটিভ রিপোর্ট এসেছে। বাকিদের রিপোর্ট এখনো আসেনি।
এদিকে স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা কুষ্টিয়া জেলায় আরো করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হওয়ার আশংকা করছেন। জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, রাজধানী ঢাকা ও নারায়নগঞ্জ থেকে প্রায় ২২শ’র বেশি মানুষ গত দু’সপ্তাহে কুষ্টিয়ায় এসেছেন। এদেরকে বাধ্যতামূলক হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে বলা হলেও তারা তা না মেনে লোকালয়ে চলাফেরা করছেন। সিভিল সার্জন জানান, যে এলাকায় করোনা রোগী সনাক্ত হয়েছে সে এলাকা লকডাউন করা হয়েছে ।
আজ বৃহস্পতিবার থেকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে করোনাভাইরাস সনাক্তের পরীক্ষা শুরু হয়েছে।