বৃহস্পতিবার ● ৩০ এপ্রিল ২০২০
প্রথম পাতা » সকল বিভাগ » নারায়নগঞ্জ ফেরত যুবককে হোমকায়েন্টিনে থাকতে বলায় হামলা : আহত-১০
নারায়নগঞ্জ ফেরত যুবককে হোমকায়েন্টিনে থাকতে বলায় হামলা : আহত-১০
উত্তম কুমার পাল হিমেল, নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি :: নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জে নারায়নগঞ্জ থেকে আসা যুবককে মসজিদে নামাজ পড়তে না গিয়ে হোমকোয়ান্টিনে থাকতে বলায় হামলা লুটপাট ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। এদিকে হামলার স্বীকার ৪ জনকে গুরুতর আহত অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যান্য আহতরা নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
জানা যায়,নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের প্রজাতপুর গ্রামের আলীফর উল্লার পুত্র গার্মেন্টস কর্মী মাহিদ মিয়া গত শুক্রবার নারায়নগঞ্জ থেকে নিজ বাড়ি প্রজাতপুর গ্রামে আসে। বাড়ীতে এসে সে গ্রামে অবাধে চলাফেরা করে। ধর্মমন্ত্রণালয় কর্তৃক তারাবী নামাজে ১২ জনের বেশী মুসল্লী নামাজ না পড়তে বিধিনিষেধ দেয়া হলেও মাহিদ প্রথম রোজা থেকেই গ্রামের মসজিদে নামাজ পড়ে আসছে।
এমন অবস্থায় গত ২রমজান সন্ধায় একই গ্রামের মৃত ছাও মিয়ার পুত্র মইনুল ইসলাম মাহিদকে ঘর থেকে বের না হয়ে সরকারের নির্দেশনা মেনে ১৪দিন হোমকোয়ান্টিনে থাকতে অনুরোধ করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মাহিদ বলে আমি কোথায় থাকবো না থাকবো তাতে তোর কি। এ নিয়ে দুজনের মধ্য তর্কবিতর্ক হয়। এ সময় মাহিদের পক্ষ নেয় তার সঙ্গী শাহিন আহমদ বুসুর ও নুর আলম। তারা মইনুলের উপর আক্রমন করতে চাইলে গ্রামের সিরাজুল ইসলাম,স্বপন মিয়াসহ কয়েকজন লোক স্থলে আসলে আক্রমনকারীদের হাত থেকে রক্ষা পায় মইনুল।
এর জের ধরে মৃত আব্দুস ছাত্তারের পুত্র শাহিন আহমেদ বুসুর ও মঈন উদ্দিনের পুত্র নুর আলমের নেতৃত্বে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে মাহিদসহ তার অন্যান্য লোকজন বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রে শজ্জিত হয়ে গতকাল বুধবার (২৯ এপ্রিল) ঘুমন্ত অবস্থায় মইনুল ইসলাম,তার চাচাতো ভাই স্বপন মিয়া ও সিরাজুল ইসলামের বাড়ীতে হামলা চালায়। সিরাজুল ইসলামের বাড়ীতে লুটপাট ও ভাংচুর করা হয়। হামলায় ১০জন গুরুতর আহত হোন। আহতদের মধ্য তারেক মিয়া(২২),স্বপন আহমেদ(৩০)ইমরান মিয়া(২০) ও সালামিন (২৫) কে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যান্য আহতরা হলেন,সেলিম মিয়া(৩৫),উজ্ঝল আহমেদ(৩৩),মইনুল ইসলাম (২৮),প্রবীর মিয়া(২৫).হাফিজুল ইসলাম(২৯)। তাদেরকে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। খবর পেয়ে ঘুম থেকে উঠে মইনুলের লোকজনসহ গ্রামবাসী ঘটনা স্থলে ছুটে আসলে হামলাকারীরা ঘটনা স্থল ত্যাগ করে। ইনাতগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক সামছদ্দিন খাঁন জানান,খবর পেয়ে ঘটনা স্থলে যাই। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
নবীগঞ্জে ধান কেটে বাড়ি পৌঁছে দিল ছাত্রলীগ
নবীগঞ্জ :: হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলা জুড়ে রয়েছে জমির পাকা ধান। ঘরে উঠবে ফসল। ভরবে কৃষকের গোলা। খুশি আর আনন্দে ভরে উঠবে কৃষকের মন। কিন্তু নবীগঞ্জের উপজেলার সর্বত্র পাকা ধান দেখে কৃষকের মাথায় দুশ্চিন্তা ভর করেছে। এই দুশ্চিন্তাটা হলো ধান কাটার শ্রমিক সঙ্কটের কারনে। দুশ্চিন্তাকে পেছনে ফেলে কৃষকের মুখে হাসি ফুটাতে পাকা ধান কেটে বাড়ি পৌঁছে দিয়েছে নবীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে হবিগঞ্জ জেলার সর্বত্র।এরই মধ্যে কৃষকের ক্ষেত জুড়ে পাকা ধান দোল খাচ্ছে। সাথে শুরু হয়েছে কালবৈশাখী ঝড়। তাই সঠিক সময়ে ধান ঘরে তুলতে না পাড়লে বিফলে যাবে গেল ৬ মাসের কষ্ট। কিন্তু লকডাউনের ফলে শ্রমিক সঙ্কট প্রকট আকার ধারণ করেছে।ফলে দিশেহারা কৃষক। এই খবর পেয়ে নবীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সল তালুকদার ও সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান রাজুর নেতৃত্বে অর্ধশতাধিক ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা উপজেলা সদর ইউনিয়নের পঞ্চিম তিমিরপুর গ্রামের দরিদ্র কৃষক সফিক মিয়ার ৩ বিঘা জমির ধান কেটে বাড়িতে পৌঁছে দেন। ধান কাটায় উপস্থিত ছিলেন নবীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগে সভাপতি শাহ ফয়সল তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান রাজু,সাবেক যুগ্ম সাধারন সম্পাদক,জাহিদুল ইসলাম রুবেল, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মিজান খান, ছাত্রলীগ নেতা লায়েখ আহমেদ,কিবরীয়া আহমেদ, তারেক আহমেদ ,হৃদয় দাশ,নয়ন মিয়া শামিম উসমান,তারেক আহমেদ,রনি রায়,অপু রায়,অপু আহমদ সহ উপজেলা ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিটের প্রায় ৩০ জন নেতাকর্মী। নবীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়ছল তালুকদার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ও বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নির্দেশনা মোতাবেক শ্রমিক সঙ্কট দূর করতে কৃষকের পাশে দাঁড়িয়েছে ছাত্রলীগ। আমরা সারাদিন কৃষকের ধান কেটে তার বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছি। সাধারণ সম্পাদক মাহববুর রহমান রাজু বলেন, আমরা প্রতিদিন সকল নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে এ ভাবেই কৃষকদের পাশে দাঁড়াব। নবীগঞ্জের ১৩ টি ইউনিয়নের সকল ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে কৃষকদের ধান কেটে বাড়ি পৌঁছে দিতে সহয়তা করতে। উল্লেখ্য, উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে নবীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগ করোনাভাইরাসের প্রভাবে কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষের মধ্যে খাদ্য সামগ্রী বিতরন সহ বিভিন্ন মানবিক কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। এছাড়া ওই দিন ধান কাটার সময়সহ হাওরে ধান কাটারত অন্যান্য শ্রমিকদের মধ্যে কলা,কেক ও বিস্কুট সহ বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী বিতরন করেছে নবীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগ।