সোমবার ● ৪ মে ২০২০
প্রথম পাতা » মৌলভীবাজার » ধলাই নদী থেকে চা শ্রমিকের লাশ উদ্ধার
ধলাই নদী থেকে চা শ্রমিকের লাশ উদ্ধার
এম এ কাদির চৌধুরী ফারহান,(মৌলভীবাজার) কমলগঞ্জ প্রতিনিধি :: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের ধলাই নদী থেকে মিরতিঙ্গা চা বাগানের নিখোঁজ হওয়ার চার দিন পর চা শ্রমিক সন্তান দুলন রাজভর(৩০) এর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আজ সোমবার ৪ মে বিকেলে ধলাই নদীর ধর্মপুর ঘাট থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত দুলন রাজভর মৃর্তিংগা চা বাগানের মৃত বুধু রাম রাজভরের ছেলে।
বাগানের শ্রমিকরা জানান, মৃত দুলন রাজভর তার বাবার মৃত্যুর পর থেকে মানসিক ভাবে ভেঙ্গে পড়ে। মানসিক সমস্যায় ভোগতে থাকা দুলন গত বৃহস্পতিবার হতে নিখোঁজ হয়। তার মা তাকে অনেক খুঁজাখুঁজি করে তার সন্ধান পায়নি।
সোমবার দুপুরে উপজেলার রহিমপুর ইউপির ধর্মপুর ঘাট এলাকার ধলাই নদীতে একটি লাশ ভাসমান অবস্থায় দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা কমলগঞ্জ থানায় খবর দিলে বিকালে স্থানীয় লোকজনের সহযোগীতায় পুলিশ নদী থেকে লাশ উদ্ধার করার পর তার পরিচয় নিশ্চিত হয়। পরে লাশের সুরতহাল তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার মর্গে পাঠানো হয়।
কমলগঞ্জ থানার ওসি মো. আরিফুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, একটি অপমৃত্যু দায়ের করা হচ্ছে। ময়না তদন্ত প্রতিবেদন আসার পর পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
কমলগঞ্জের সুনছড়া থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে পরিবহন চলছে
কমলগঞ্জ :: করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সরকারি নির্দেশনা খাদ্য সামগ্রী পরিবহন ব্যতীত সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। সরকারি এ নির্দেশনা উপেক্ষা করে একটি চক্র মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের আলীনগর ইউনিয়নের সুনছড়া থেকে অবাদে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে বিভিন্ন স্থানে পরিবহন করছে। অবৈধভাবে সুনছড়া থেকে বালু উত্তোলনে সরকার হারাচ্ছে প্রচুর পরিমাণে রাজস্ব।
আজ সোমবার ৪ মে দুপুরে সরেজমিন সুনছড়া এলাকা ঘুরে জানা যায়, স্থানীয় রশীদ উল্যা ও সেলিম মিয়ার নেতৃত্বে একটি চক্র প্রতিদিন সুনছড়া চা বাগানের প্লান্টেশন এলাকা সংলগ্ন ছড়া থেকে গড়ে ১০ থেকে ১৫ ট্রাক্টর বালু উত্তোলণ করে বিক্রি করছেন। বালু শ্রমিকরা এ বিষয়ে কোন কথা না বলতে রাজি হয়নি। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক গ্রামবাসী বলেন, সুনছড়া বালু ঘাট কোন ইজারা হয়নি। এ ছড়াটি চা বাগানের ভিতর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। ছড়া থেকে বালু উত্তোলনের সাথে সাথে টিলার মাটিও কেটে নেওয়া হচ্ছে।
মাঝে মাঝে আলীনগর চা বাগান থেকে ব্যবস্থাপক অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে আপত্তি জানালেও বালু উত্তোলনকারীরা সে আপত্তি মানেন না। রশীদ উল্যা ও সেলিম মিয়ার নেতৃত্বে এ দুটি ছড়া থেকে প্রতিদিনই বালু উত্তোলন করে চিৎলিয়া গ্রামের ভিতর দিয়ে বালু পরিবহন করে মঙ্গলপুর এলাকায় জামি রাখা হয়। সেখান থেকে বিভিন্ন নির্মাণাধীন ভবনের কাজে বালু বিক্রি করা হয়। তারা আরও বলেন, আগে মাঝে মাঝে উপজেলা প্রশাসন থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হত। এখন করোনাভাইরাস প্রতিরোধ নিয়ে সরকারি কর্মকর্তারা সবাই ব্যস্ত থাকার সুযোগে সুনছড়া থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে পরিবহন করা হচ্ছে। গত বছর সুনছড়ার একটি এলাকার ঘাট ইজারা হয়েছিল ১০ লাখ টাকায়। এবার ইজারা না হওয়ায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে সরকার ১০ লাখ টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করে আলীনগর চা বাগানের ব্যবস্থাপক এ প্রতিনিধির কাছে একটি চক্রের মাধ্যমে অবৈধ বালু উত্তোলন ও পরিবহনের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, চক্রটি প্রভাবশালী বলে কোন আপত্তিতে কাজ হয় না।
এ সম্পর্কে কথা বলতে শনিবার বিকেলে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারী রশীদ উল্যাকে না পেয়ে তার মুঠোফোনে (০১৭১০৭১২০৩৩) কয়েক দফা চেষ্টা করলে তিনি ফোন ধরেননি।
কমলগঞ্জ উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) নাসরিন চৌধুরী বলেন, সুনছড়া বালু ঘাট সরকারিভাবে কোন ইজারা হয়নি। যারা বালু উত্তোলন করছে তা অবৈধভাবে করছে। তাছাড়া করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকারি কর্মকর্তারা ব্যস্ত থাকার সুযোগে এই অবৈধ বালু উত্তোলন ও পরিবহন চলছে। তারপরও বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হবে। তিনি আরও বলেন, ঘাট থেকে বালু উত্তোলনকালে খবর পেলে দ্রুত গিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা যাবে।
কমলগঞ্জে করোনা প্রতিরোধে সাংবাদিকদের সাথে পৌর মেয়রের মতবিনিময়
কমলগঞ্জ :: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেছেন পৌরসভার মেয়র মো: জুয়েল আহমেদ।
আজ সোমবার ৪ মে দুপুর ৩টায় কমলগঞ্জ পৌরসভা কার্যালয়ে এ মতবিনিময় সভা করেন।
মতবিনিময় সভায় পৌর মেয়র মো: জুয়েল আহমেদ বলেন, করোনা ভাইরাসের এই সংকটময় পরিস্থিতিতে প্রশাসন, জনপ্রতিনিধির পাশাপাশি কমলগঞ্জে কর্মরত সাংবাদিকরা নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকনির্দেশনা অনুযায়ী ও করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে যে রূপরেখা তৈরি করেছেন সেই অনুযায়ী মাঠপর্যায়ে আমরা জনপ্রতিনিধিরা কাজ করছি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অসহায়, হতদরিদ্র ও কর্মহীন মানুষদের ত্রাণ সহায়তা দিচ্ছেন। সরকারের এই কার্যক্রম যাতে প্রশ্নবিদ্ধ না হয় সে দিকে সাংবাদিকদের নজর রাখার অনুরোধ জানান তিনি। সরকারি কোন কর্মকর্তা, কোন জনপ্রতিনিধি, কোন দপ্তর কিংবা কোন ব্যাক্তির কারণে সরকারের এই কার্যক্রম প্রশ্নবিদ্ধ হলে তার দায় নিজেদেরকেই নিতে হবে। আমার কারণে কিংবা আমার দপ্তরের কারণে কোনকিছু বন্টনে সরকার যদি প্রশ্নবিদ্ধ হয় তাহলে সেই দায় আমার সেটা আমাকে বুঝতে হবে।
কমলগঞ্জের কর্মরত সাংবাদিকরা করোনা সর্ম্পকিত খবরাখবর সুন্দরভাবে উপস্থাপন করছেন যা কমলগঞ্জবাসী সবসময় মনে রাখবে। কমলগঞ্জে সরকারের ত্রাণের পাশাপাশি আমরা জনপ্রতিনিধিরাও নিজ উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণ করে যাচ্ছি। সরকারি কোন কর্মকর্তা-কর্মচারীর অসচ্ছতার কারণে যদি সাধারণ মানুষ তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয় তাহলে জনগণ তা ক্ষমা করবে না। কমলগঞ্জের ৯টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় সরকারের যে ত্রাণ আসবে তা সচ্ছতার মাধ্যমে যাতে জনগণ পায় তার দিকে সাংবাদিকদের নজর রাখার আহবান জানান তিনি। এ অবস্থায় কে বড় কে ছোট তা দেখার সময় নয়। এখন সবাই একসাথে কাজ করে করোন ভাইরাসের এই সংকট মোকাবেলা করতে হবে।
মতবিনিময় সভায় পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও সাংবাদিকবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।