মঙ্গলবার ● ৫ মে ২০২০
প্রথম পাতা » মৌলভীবাজার » কমলগঞ্জের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অফিস সহকারী করোনায় আক্রান্ত
কমলগঞ্জের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অফিস সহকারী করোনায় আক্রান্ত
কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি :: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অফিস সহকারীর শরীরে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্ত অফিস সহকারী রণবাবু সিংহ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের অক্টিয়ারখলায় তার বাড়িতে পাঠিয়ে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক কর্মচারীদের নমুনা গত সপ্তাহে ঢাকায় পাঠানোর পর মঙ্গলবার (৫মে) আসা ফলাফলে ওই অফিস সহকারীর শরীরে করোনা ভাইরাস সনাক্ত হয়। এ নিয়ে কমলগঞ্জ উপজেলায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৪, মৃত ১ জন।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এম, মাহবুবুল আলম ভুঁইয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেন বলেন, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধের শুরু থেকেই এ কমপ্লেক্সের চিকিৎসক, নার্স, কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্যকর্মী ও অফিস কর্মচারীরা ঝুঁকি নিয়ে দিন রাত কাজ করছেন। তাদের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হলে মঙ্গলবার প্রাপ্ত ফলাফলে রণ বাবু সিংহের করোনা পজেটিভ পাওয়া যায়। ফলাফল পাওয়ার পর তাকে তার বাড়ি মাধবপুরের অক্টিয়ার খলা গ্রামে পাঠিয়ে একটি কক্ষে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। আর পরিবার সদস্যদের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আক্রান্ত অফিস সহকারীর বাড়ি লকডাউন করা হবে।
কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এম মাহবুবুল আলম ভুঁইয়া আরো বলেন, এখন হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্সসহ সংশ্লিষ্ট সকলের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে।
শ্রীসূর্য্য কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্যকর্মীকে নাজেহাল ও অবরুদ্ধের অভিযোগ
কমলগঞ্জ :: সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চিকিৎসা সেবা ও ঔষধ নিতে বলায় রোগীর স্বামী ও সন্তান যৌথভাবে কমিউনিটি ক্লিনিকের এক স্বাস্থ্যকর্মীকে নাজেহাল করে অবরুদ্ধ করে রাখার অভিযোগ উঠেছে। খবর পেয়ে পুলিশ কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্যকর্মীকে উদ্ধার করে। ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার দুপুরে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার পতনউষার ইউনিয়নের শ্রীসূর্য্য কমিউনিটি ক্লিনিকে।
কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি (স্বাস্থ্যকর্মী) মো. রুহুল আমীন অভিযোগ করে বলেন, ধূপাটিলা গ্রামের রাজা মিয়ার স্ত্রী জোৎছনা বেগম কয়েকজন নারীকে নিয়ে কমিউনিটি ক্লিনিকে সেবা ও ঔষধ নিতে আসেন। এসময় তাদের এক সাথে এতজন না এসে ৩ ফুট দুরত্বে থেকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে আসতে অনুরোধ করি। এ নিয়ে ঐ নারী ক্ষোভ প্রকাশ করে বাড়ি গিয়ে তার স্বামী রাজা মিয়া ও ছেলে রিমন মিয়াকে পাঠান। তারা এসে আমার শার্টের কলারে ধরে টানা হেচড়া ও গালিগালাজ করে হামলা চালিয়ে আহত করে। পরে কমিউনিটি ক্লিনিকের বাইরে দরজায় তালা দিয়ে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে বিষয়টি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে অবহিত করি। পরে পুলিশ এসে আমাকে উদ্ধার করে।
তবে অভিযুক্ত রাজা মিয়ার ছেলে রিমন মিয়া বলেন, স্বাস্থ্যকর্মী শুরু থেকেই তার মায়ের সাথে খারাপ আচরন করছেন। তাছাড়া ২ টাকার টিকেটের বদলে তিনি ৫ টাকা দাবি করেন। তার মায়ের কাছে টাকা না থাকায় তিনি বাড়ি থেকে টাকা নিতে এসে তাকে বিষয়টি জানালে, সে মায়ের সাথে খারাপ আচরনের কারণ জানতে গিয়েছিল। সে ও তার বাবা স্বাস্থ্যকর্মীকে কোনভাবে নাজেহাল ও অবরুদ্ধ করেনি বলেও জানায়।
কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এম মাহবুবুল আলম ভূঁইয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, করোনা সংক্রমণকালে ঝুঁকি নিয়ে কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বাস্থ্যকর্মীরা কাজ করছেন। সেখানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কথা বলায় স্বাস্থ্যকর্মীকে নাজেহাল ও অবরুদ্ধ করে রাখলে পুলিশি সহায়তায় তাকে উদ্ধার করা হয়। বিষয়টি ইউএনও এবং থানার ওসি সাহেবকে অবহিত করা হয়েছে।
শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক (তদন্ত) অরুপ কুমার চৌধুরী কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্যকর্মী লাঞ্চিতের ঘটনা স্বীকার করে বলেন, সেখানে অবরুদ্ধের মতো কিছু পাওয়া যায়নি। তবে অভিযুক্ত ছেলের বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ করলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে তিনি জানান।