শনিবার ● ৯ মে ২০২০
প্রথম পাতা » কৃষি » ঝিনাইদহে বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেল কৃষকের স্বপ্ন
ঝিনাইদহে বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেল কৃষকের স্বপ্ন
জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে শ্রমিক সংকটে ধান কাটা নিয়ে এমনিতেই বিপাকে কৃষকরা। এর মধ্যে শুক্রবার রাতে দুই-আড়াই ঘণ্টা বৃস্টির পানিতে ডুবে গেছে ঝিনাইদহের ৬টি উপজেলা সহ মহেশপুর উপজেলার কয়েকশ একর বোরো ধান। বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে ধানের সঙ্গে কৃষকের সারা বছরের স্বপ্ন। বৃষ্টিপাতে তলিয়ে যাওয়া মাঠের পাকা ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকরা। উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, মহেশপুর উপজেলায় এ বছর বোরো ধানের আবাদ হয়েছে ১৭ হাজার ৪৮৫ হেক্টর জমিতে। তেমনি ভাবে ফলনও ভালো হয়েছে। বোরো ধান কেটে বাড়ি আনতে কৃষকের তিনগুণ পরিশ্রম হচ্ছে। তারপরও সোনালী ফসল ঘরে তুলতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। শুক্রবার রাতে হঠাৎ করে বৃষ্টির কারণে মাঠে কেটে রাখা ধান তলিয়ে গেছে। যার ফলে ভেজা ধান ঘরে তোলা ও ধান মাড়াই করে শুকাতে গিয়ে বিপদে পড়তে হচ্ছে কৃষকদের। চোখের সামনেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে কষ্টে উৎপাদিত শত শত একর জমির ধান। মহেশপুর উপজেলার নেপা গ্রামের কৃষক মোসলেম হোসেন, মিজানুর রহমান, ভৈরবা গ্রামের কৃষক আবদুল হাই ও পৌর এলাকার বগা গ্রামের কৃষক ইসানুর ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার সকালে তারা সবাই দুই থেকে তিন বিঘা করে জমির ধান কেটেছেন। কিন্তু শুক্রবার রাতের বৃষ্টিতে সব ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এখন ধান বাঁচানোর জন্য বিচালি (খড়) রেখেই ধান তুলতে হচ্ছে। তারা জানান, এমনিতেই বাজারে ধানের দাম কম তারপর বিচালি বাবদ বিঘা প্রতি ৩-৪ হাজার টাকা লোকসান হবে। এ অবস্থায় সঠিক সময়ে ধান শুকিয়ে ঘরে না তুলতে পারলে ওই ধান গবাদি পশুকে খাওয়ানো ছাড়া আর কোনো কাজে আসবে না। মহেশপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাছান আলী জানান, উপজেলায় প্রায় ৫০ শতাংশ ধান কাটা হয়েছে। প্রাকৃতিক সমস্যায় আমাদের কারও কিছুই করার নেই। বৃষ্টিতে যে সমস্ত বোরো ক্ষেত তলিয়ে গেছে সে সমস্ত ক্ষেতের আইল কেটে দ্রুত পানি বের করে দিতে হবে এবং যত দ্রুত সম্ভব বিচালি রেখেই ধান তুলতে হবে।
ঝিনাইদহে চিকিৎসকসহ ৪ জনের করোনা শনাক্ত
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহে নতুন করে চিকিৎসকসহ আরো ৪ জনের দেহে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। আজ শনিবার (৯ মে) সকালে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাঠানো ৪৭ টি নমুনার ফলাফলে ৪ টি পজিটিভ পাওয়া যায়। এর মধ্যে সদর হাসপাতালের ১জন মেডিকেল অফিসার, ইসলামী ব্যাংক কমিউনিটি হাসপাতালের ১জন সেবিকা এবং কোটচাঁদপুর উপজেলায় রিক্সা চালক বাবা ও ছেলে রয়েছেন। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৩৭ জনে, যার মধ্যে ৯ জন চিকিৎসকসহ ২১ জন স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মী রয়েছেন। এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত নমুনা ফলাফলে সংখ্যা ৩৬৬ টি। ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন অফিসের মুখপাত্র ও করোনা ইউনিটের চিকিৎসক ডা. প্রসেনজিৎ বিশ্বাস পার্থ জানান, আক্রান্তদের শারীরিক অবস্থা ভালো রয়েছে। নিয়মিত তাদের খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।
পথচারীদের পাশে ছাত্রলীগ নেত্রী সিথি
ঝিনাইদহ :: আমরা ছাত্রলীগের সেনা, নেত্রী মোদের শেখ হাসিনা, মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য, এ স্লোগানে করোনার প্রভাবে বিপাকে পড়া অসহায়, হত দরীদ্র ও নিন্ম আয়ের মানুষের মাঝে রমজানে রোজাদার পথচারীদের জন্য নিজ হাতে তৈরী ইফতার বিতরণ করেছেন ঝিনাইদহ কাঞ্চননগর মডেল স্কুল এন্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেনীর মেধাবী ছাত্রী ও জেলা ছাত্রলীগের ছাত্রী বিষয়ক সম্পাদক দিনাত জাহান সিথি। এবারের রমজানে রোজাদার পথচারীদের জন্য অন্যরকম ইফতারের উদ্যোগ নিয়ে ঝিনাইদহে আলোচনায় এসেছেন তরুণী ও সমাজ সেবীকা দিনাত জাহান সিথি। রমজানের শুরুতেই ইফতার আগ মুহূর্তে শহরের মুজিব চত্তর, পায়রা চত্বর, পুরাতন ডিসি কোর্ট হামদহ ও আরাপপুরসহ বিভিন্ন স্থানে ইজিবাইকচালক , রিক্সাচালক , ভ্যানচালক ও পথচারিদের মাঝে শতাধিক প্যাকেট ইফতারি বিতরন করে থাকেন তিনি। তরুণী দিনাত জাহান সিথি বলেন, করোনার কারণে কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অর্থনৈতিক ভাবে অসচ্ছল হয়ে পড়ায় ঝিনাইদহে নিম্ন আয়ের মানুষ ইফতার ঠিকমত করতে পারছেন না। তাদের জন্যই এ ক্ষুদ্র আয়োজন। এ আয়োজন চলবে শেষ রমজান পর্যন্ত। তিনি আরও বলেন, লেখা পড়ার খরচ বাঁচিয়ে সেখান থেকে কিছু টাকা জমিয়ে নিজ হাতে ইফতার বানিয়ে রোজাদারদের মাঝে বিতরণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি। বাকী রমজান গুলতেই ঠিক এমনি ভাবে অসহায়দের পাশে থেকে সেবা করতে চাই।
ঝিনাইদহে অসহায় হতদরিদ্রদের মাঝে বিতরণকৃত চাউলে পোকা, চেয়ারম্যানদের ক্ষোভ প্রকাশ
ঝিনাইদহ :: করোনা সহায়তায় হতদরিদ্রদের মাঝে বিতরণকৃত জেনারেল রিলিফ (জিআর) প্রকল্পের চালে কালো কালো এক ধরণের পোকা পাওয়া গেছে। এছাড়া গুদাম থেকে যে চাল সরবরাহ করা হয়েছে তা ডাস্টযুক্ত বলে কয়েকজন হতদরিদ্র অভিযোগ করেন। পোকাওয়ালা চাল নিয়ে কতিপয় চেয়ারম্যান ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। শনিবার ঝিনাইদহ সদর উপজেলার সাধুহাটী ইউনিয়নের জিআর প্রকল্পের ৫ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়। এই চালে পোকার অস্তিত্ব মিলেছে। ঝিনাইদহ সদরের হাটগোপালপুর খাদ্য গুদাম থেকে এই চাল সরবরাহ করা হয় বলে জানা গেছে। তবে বিষয়টি নিয়ে হাটগোপলপুর খাদ্য সরবরাহ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি এলএসডি) মাসুদ রানা জানিয়েছেন তিনি নতুন যোগদান করেছেন। তাই চালের মান নিয়ে কিছুই বলতে পারবেন না। তবে গুদামে রক্ষিত চালের যতœ করার জন্য নিয়মিত স্প্র্রে করা হচ্ছে। আশা করা যায় ভবিষ্যতের চাল ভাল হবে। তিনি বলেন চালের মান ভাল। তবে কিছু বস্তায় পোকা হয়ে গেছে। সাধুহাটী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাজী নাজির উদ্দীন চাউলে পোকা থাকার কথা স্বীকার করে বলেন, দেখে মনে হচ্ছে চাল গুলো পুরানো, তবে খওয়ার উপযোগী। হাটগোপলপুর খাদ্য গুদামের সাবেক ওসি এলএসডি মাসুদ রানা জানান, কুমড়াবড়িয়া ও সাধুহাটীসহ ৪জন ইউপি চেয়ারম্যান চাল উত্তোলন করেছেন। বাকী ১৩টি ইউনয়নের চাল গুদামে আছে। চাল গুলো দ্রুত নিয়ে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে। তিনি বলেন সাধুহাটী ইউনিয়নের যে চাল দেওয়া হয়েছে তা এক বছরের পুরানো হলেন মান ভাল। তিনি বলেন, পোকার হাত থেকে চাল রক্ষার জন্য এখন প্রতিদিন স্প্রে করা হচ্ছে।
ঘরে কেউ নেই, শৈলকুপায় বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট শিশুর মৃত্যু
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের শৈলকুপায় বিদ্যুৎ পৃষ্ট হয়ে সামিউল (৪) নামের এক বাক প্রতিবন্ধিী শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার দুপুরে উপজেলার উমেদপুর ইউনিয়নের ব্রাহিমপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সামিউল ব্রাহিমপুর গ্রামের মনিরুল খানের ছেলে। এলাকাবাসী জানায়, দুপুরে বাক প্রতিবন্ধি সামিউলের বাবা মা কাজের জন্য ঘরের বাইরে যায়। সেসময় ঘরে কেউ না থাকার সুযোগে মোবাইল চার্জারের বৈদ্যুতিক সকেটের ভিতর আঙুল ঢুকিয়ে দেয় সামিউল। এ সময় বিদ্যুৎতায়িত হয়ে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়। শৈলকুপা থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ বজলুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।
কালীগঞ্জে লিচু বাগানে নলকূপ বসাতে গিয়ে বের হচ্ছে গ্যাস
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ পৌর এলাকার খয়েরতলা গ্রামের লিচু বাগানে নলকূপ বসাতে গিয়ে নলকূপের গর্ত থেকে অবিরাম গ্যাস বের হচ্ছে। বুধবার সকালে উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা ফরিদ উদ্দিনের লিচু বাগানে বসানোর সময় গ্যাস বের হতে থাকে। প্রায় ৪ দিন ধোরে এ গ্যাস বের হচ্ছে। এলাকার অনেক উৎসুক মানুষ গ্যাস বের হওয়া দেখতে যাচ্ছে। নলকুপ সবানোর সময় গ্যাসে আগুন ধোরিয়ে দিলে তা অদ্যাবধি পর্যন্ত জলছে। অনেক চেষ্টা করে ও তা নিভানো যাচ্ছে না। আবার প্রশাসনিক ভাবে কেউ সেখানে পরিদর্শনে যাননি। ফরিদ উদ্দিন জানান, তার লিচু বাগানের জমিতে নিজের তত্ত্বাবধানে একটি টিউবওয়েল বসানোর কাজ চলছিল। প্রায় ২০০ ফুট বোরিং করার পর পানির স্তর পাওয়া যায়। এরপর ফিল্টার পাইপ লাগানোর জন্য পাইপ ওপরের দিকে তোলার সময় হঠাৎ করে বিকট শব্দে গ্যাস উঠতে থাকে। কিন্তু ৪ দিন অতিবাহিত হলে ও সরকারি কোন কর্মকর্তা সেখানে যায়নি। সরকারি নিয়ম রয়েছে এ ধরনের গ্যাস উত্তোলেনের খবর পেলে সরকারি বিভিন্ন সংস্থা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন সঠিক পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এদিকে গ্যাস নির্গমনের দৃশ দেখতে লিচু বাগানের আশপাশে ভিড় জমায় উৎসুক নারী-পুরুষ।
কোটচাঁদপুরে এবার বাবা-ছেলে করোনা শনাক্ত
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহে নতুন করে রিক্সাচালক বাবা-ছেলেসহ আরও ৪ জনের দেহে করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। শনিবার সকালে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এর জিনোম সেন্টার থেকে পাঠানো ৪৭ টি নমুনার ফলাফলে ৪ টিতে পজেটিভ পাওয়া যায়। আক্রান্তদের মধ্যে সদর হাসপাতালের ১ জন মেডিকেল অফিসার, ইসলামি ব্যাংক কমিউনিটি হাসপাতালের ১ জন সেবিকা এবং কোটচাঁদপুর উপজেলায় রিক্সা চালক বাবা ও ছেলে। কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবদুর রশিদ জানান, কোটচাঁদপুরে আক্রান্ত দুইজনের বাড়ি জগদীশপুর গ্রামে। তারা পুরো পরিবারই নারায়ণগঞ্জ ফেরত। তাদেরকে জগদীশপুর গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রাখা হয়েছে। তারা নারায়ণগঞ্জে রিক্সা চালাতো বলে শুনেছি। এ নিয়ে জেলায় মোট করোনা আক্রান্তদের সংখ্যা দাঁড়ালো ৩৭ জনে, যার মধ্যে ৯ জন চিকিৎসক সহ স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মী রয়েছে ২১ জন। এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত নমুনা ফলাফলে সংখ্যা ৩৬৬ টি। ঝিনাইদহ সিভিল সার্জন অফিসের করোনা ইউনিটের চিকিৎসক ডা. প্রসেনজিৎ বিশ্বাস পার্থ জানান, আক্রান্তদের শারীরিক অবস্থা ভালো রয়েছে।
কালীগঞ্জে ফের কৃষকের ধান কেটে দিলো ছাত্রদল
ঝিনাইদহ :: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় ও কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক হামিদুল ইসলাম হামিদ ও ঝিনাইদহ জেলা ছাত্রদলের সার্বিক তত্বাবধানে, অসচ্ছল, অসহায় ও দরিদ্র কৃষকের ধান কেটে দিলো কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের নেতা-কর্মিরা। শনিবার সকাল থেকে ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ পৌরসভার ফয়লা গ্রামের কৃষক সাহেব আলীর ২৩ শতাংশ জমির ধান কাটা কেটে, বেধে ঘরে তুলে দেবারও কথা বলেন ছাত্রদলের নেতা-কর্মিরা। এই ধান কাটা কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের যুগ্ম-সম্পাদক তবিবুর রহমান সাগর, কালীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক ক্রীড়া সম্পাদক ও পৌর যুবদলের সাবেক সাধারন সম্পাদক শাহজাহান আলী খোকন, মাহতাবউদ্দিন ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম-আহবায়ক শিপুল খান, মাহতাবউদ্দিন ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক আবু তাহের, উপজেলা ছাত্রদলের অন্যতম সংগঠক এশফাকুর রহমান শফিক, ঢাকা বাংলা কলেজ ছাত্রদলের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম সবুজ, উপজেলা ছাত্রদল এর অন্যতম নেতা হাবিব, শিমুল, শিমুল হোসেন, নাইমুর রহমান, তারেক পরিষদের যুগ্ম-সম্পাদক জাকির হোসেন, সাবেক পৌর ছাত্রনেতা আহসান হাবিব, পৌর ছাত্রদলের অন্যতম নেতা, ইখলাস আলী, খালিদ মাহমুদ, রাইহান উদ্দিন, শাওন মাহমুদ, কলেজ ছাত্রদলের অন্যতম নেতা, জনি রহমান, ইমরান, শামিম মাহমুদ জিম, তূর্য, রাকেশ মাহমুদ, মারুফসহ অন্যন্য নেতৃবৃন্দ। এ সময় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের যুগ্ম-সম্পাদক তবিবুর রহমান সাগর বলেন, দেশব্যাপী করোনা ভাইরাসের প্রভাবে জনজীবন স্থবির। মানুষ আতঙ্কের মধ্যে আছে। প্রতি বছর যে পরিমাণ ধান কাঁটার শ্রমিক বাহিরের জেলা থেকে আসতো এবার তুলনামূলক কম। শ্রমিক সংকটের কারণে কৃষকরা দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছেন। অপরদিকে প্রায় প্রতিদিনই ঝড়বৃষ্টি হচ্ছে। অসহায় কৃষকদের কষ্টের ফসল ঘরে তুলে দিতে আমরা ছাত্রদল সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছি। তিনি বলেন, ছাত্রদলের সাংগঠনিক অভিভাবক তারেক রহমানের নির্দেশ আছে মহামারি দুর্যোগে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর। এজন্য আমরা জেলা ও উপজেলার ছাত্রদল কৃষকের পাশে দাঁড়িয়ে ধান কেটে ঘরে তুলে দিচ্ছি। আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
ঝিনাইদহে বিচার না পেয়ে ভিক্ষার ঘোষণা তরমুজ চাষীর
ঝিনাইদহ :: করোনাকালের এই দুর্বিষহ অবস্থায় বিচার না পেয়ে আরও অসহায় হয়ে পড়লেন মিঠু খাঁ নামে এক প্রান্তিক চাষি। তার তিন বিঘা জমির ধরন্ত তরমুজ ক্ষেত রাতের আঁধারে দুর্বৃত্তরা সম্পূর্ণ কেটে দিলেও তার পাশে দাড়ায়নি কেউ। প্রায় ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা ক্ষতির মুখে ইউএনও, পুলিশ সুপার, জেলা প্রশাসক, কৃষি অফিস-সহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়ে ও পাননি কোনো প্রতিকার। ঘটনার দুই সপ্তাহ পার হতে চললেও পাশে কাউকে না পেয়ে খামারাইল গ্রামের এই কৃষক চাষ ছেড়ে ভিক্ষা করে থাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। উন্নত জাতের সবুজ তরতাজা গাছ গুলোর বোটায় বোটায় ঝুলে ছিল হাজার হাজার কালো তরমুজ। বোঁটা ছিড়ে মাটিতে পড়ার ভয়ে জাল হড়িয়ে রাখা হয়েছিল। কঠিন পরিশ্রম করার পর দরিদ্র কৃষক আমিরুল ইসলাম অপেক্ষায় ছিলেন এই তরমুজ বিক্রি করে কিছু পয়সা পাবেন, যা দিয়ে চাষের দেনা পরিশোধের পাশাপাশি করোনাকালের দুর্দিনে সংসারে সচ্ছলতা ফিরে আসবে। কিন্তু মুহুর্তের মধ্যে তার সব স্বপ্ন ভেঙে যায়। গত ২৮ এপ্রিল ক্ষেতে গিয়ে হাউমাউ করে কান্নায় ভেঙে পড়লে কৃষক আমিরুল। গাছ গুলো টেনে টেনে দেখেন সব গাছের গোড়া থেকে কেটে দেওয়া হয়েছে। এভাবে দুটি ক্ষেতে তার তিন বিঘা জমির সব তরমুজ গাছ কেটে দেয় দুর্বৃত্তরা। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার খামারাইল গ্রামের খোদাবক্সের ছেলে কৃষক আমিরুল ইসলাম মিঠু খাঁ, মাঠে তার চাষযোগ্য চার বিঘা জমি। তবে যেসব ফসল হতো তা দিয়ে সন্তান আর সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়ছিল। তাই চাষে একটু পরিবর্তন এনে তরমুজ লাগিয়ে ভালো লাভের আশা করেছিলেন। ঋণসহ ধার দেনায় খরচ হয়েছিল প্রায় ২ লাখ টাকা। ১০-১৫ দিন পরই তার ক্ষেতের তরমুজ বিক্রি করা যেত। বাজারে বর্তমানে এই তরমুজের কেজি ৫০ থেকে ৭০ টাকা। সে হিসেবে তার ক্ষেতের তরমুজ আনুমানিক পাঁচ-ছয় লাখ টাকায় বিক্রি করতে পারতেন। এখন দেনার দায়ে ভিক্ষা করা ছাড়া আর উপায় নেই বলে জানান হতাশ চাষি আমিরুল ইসলাম মিঠু। এ ব্যাপারে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলছেন, এলাকার একটি বাড়ি রাস্তা নিয়ে স্থানীয়দের বিরোধে গ্রামের একটি দুর্বৃত্ত চক্র এটি করতে পারে, তবে বিষয়টি সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার দেখবেন বলে আশ্বস্ত করায় পুলিশ হস্তক্ষেপ করেনি। এদিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, এটি খুবই দুঃখজনক, তার ধরন্ত তরমুজ ক্ষেত সবই কেটে দেওয়া হয়েছে। প্রান্তিক এই চাষিকে সরকারি প্রনোদনায় সহায়তা করা হবে, তবে সময় লাগবে বলে জানান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃপাংশু শেখর বিশ্বাস।
মানুষ সুস্থ থাক-কালীগঞ্জের লেবু চাষি তহিদুল ইসলাম মন্টু
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহ কালীগঞ্জের দুধরাজপুর গ্রামের তহিদুল ইসলাম মিন্টুর বাগানে আগাম ধর আসা লেবু নজর কেড়েছে সবার। বর্তমানে দামের বাজারে বাগান থেকেই বিক্রির মাধ্যমে বেশ লাভবান হচ্ছেন। তবে ওই কৃষকের ভাষ্য, লেবুতে বাড়তি লাভের দরকার নেই। তিনি ভাবছেন দেশ মহামারি করোনামুক্ত হোক। কালীগঞ্জ উপজেলার দুধরাজপুর গ্রামের মাঠের মাঝখানে দূর থেকে নজরে আসে তহিদুল ইসলামের লেবুর বাগান। বাগানটির অন্যপাশে পান বরজ আর ফসলি ক্ষেত। বাগানে ঢুকে দেখা যায় ভিন্ন বয়সী লেবু সব ডাল গুলোতে ঝুলে আছে। অবস্থাটা এমন বাগানের প্রতিটি গাছে যেন পাতার চেয়ে লেবু বেশি। আবার নতুন করে ফুলও আসছে। লেবু বাগানের মালিক তহিদুল ইসলাম মন্টু জানান, বাবা এবাদৎ হোসেন মারা যাওয়ার পর সম্পত্তি ৪ ভাই আর ৪ বোনের মাঝে ভাগাভাগির পর বসতবাড়ি আর মাঠ মিলে তিনি ৮০ শতক জমি পেয়েছেন। এতোটুকু জমির ওপর ভর করেই তাকে চলতে হয়। তারপরও ২ ছেলে সাজিদ আর রাফিদের লেখাপড়ার খরচ জোগাতে হয়। কখনো কখনো অভাব তাকে আটকিয়ে ধরে। তাই চাষের পাশাপাশি তিনি শুধু হাটের দিন বাজার থেকে পান কিনে ওই বাজারে বিক্রি করেন। তিনি প্রথমে ভেবেছিলেন তার ক্ষেতটিতে এমন কিছু চাষ করবেন যা মানুষের শরীরের জন্য উপকারী হয়। সে চিন্তা থেকেই কমখরচে বেশি উপকারী জিনিস হিসেবে তিনি কাগজি লেবুর চাষ করেছেন। তিনি জানান, ২০১৬ সালে তার মাঠের ৪৪ শতক জমিতে চাষ করতে বেনাপোল এলাকার পুটখালী থেকে ৬ হাজার টাকা দিয়ে ৪০০ চারা এনে রোপণ করেন। এরমধ্যে অনেক গুলো চারা মারা যায়। বর্তমানে তার ক্ষেতে ২৬৮টি গাছ আছে। একটি লেবু বাগান ঠিকমত পরিচর্যা করতে পারলে কমপক্ষে ৩০-৩৫ বছর লেবু পাওয়া সম্ভব। আবার অন্য ফসলের চেয়ে খরচ কম তবে লাভ বেশি। তিনি বলেন, তার ক্ষেতে রোপণের পরের বছরেই অনেক গাছে ফুল আসে। সে বছর প্রায় ২০ হাজার টাকার লেবু বিক্রি করেন। ২০১৮ সালে লেবু থেকে পান ৯০ হাজার টাকা, ২০১৯ সালে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকার লেবু বিক্রি করেন। চলতি বছরের এ পর্যন্ত ৮০ হাজার টাকা বিক্রি করেছেন। বর্তমানে বাজারে লেবুর আমদানি বেড়ে যাওয়ায় দাম এখন বেশ কম। প্রথম দিকে প্রতিটি লেবু ১০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করতে পেরেছেন। বর্তমানে প্রতিটি লেবু ৩ টাকায় পাইকারি বিক্রি করছেন। গাছে এখনো কমপক্ষে ৫ লাখ লেবু আছে। এগুলো দাম আরো কমে প্রতিটি ২ টাকা করে পাইকারি বিক্রি করতে পারলেও এখনো ক্ষেত থেকে কমপক্ষে ১০ লাখ টাকা আসবে। লেবু চাষি তহিদুল ইসলাম আরো জানান, তার ক্ষেতে পুরাটাই লেবুর চারা রোপণ করা। অন্যান্যের চেয়ে বেশ খানিকটা ভিন্ন তার ক্ষেত। প্রতি বছর ৩ বার লেবু ধরে তার ক্ষেতে। কলমের চারার গাছের চেয়ে তার বাগানে বেশি লেবু ধরে। প্রতিবেশি তবিবুর রহমান জানান, তহিদুল ইসলামের লেবু বাগানের গাছের সব ডালে লেবুর কারণে পাতা নজরে আসছে না। তিনি বলেন, বর্তমান করোনা থেকে বাঁচতে লেবু বা সি ভিটামিনের খুব দরকার এটা চিকিৎসকরা বলছেন। ফলে লেবু হয়ে গেছে হটকেক। প্রথম দিকে লেবু পাওয়া যাচ্ছিল না। তখন ৬০ টাকা করে হালিও বিক্রি করেছেন এই কৃষক। কিন্তু বর্তমানে দাম একটু কম। এ ছাড়া চলমান পবিত্র রোজায় লেবুর শরবত তৈরিতে লেবু ব্যবহার করছেন। তিনি বলেন, গ্রামের আরো অনেক কৃষকের বাড়িতে লেবু আছে। তারপরও কৃষক তহিদ মানুষকে ফ্রি লেবু দিয়ে থাকেন। তার ভাষ্য গাছের ফল খেলে কমবে না। কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহিদুল করিম জানান, কামারাইল গ্রামের কৃষক তহিদুল ইসলাম মিন্টু একটি দেশি জাতের কাগজি লেবুর বাগান গড়ে তুলেছেন। তার এ জাতের লেবু বছরে তিনবার ধরে। তিনি বলেন, লেবুতে রয়েছে মানবদেহের অনেক রোগের প্রতিরোধের ক্ষমতা। ফলে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় থাকা দরকার পরিমাণ মতো লেবু। তাই প্রত্যেক কৃষি পরিবারে লেবু গাছ থাকা জরুরি। আর বাণিজ্যিক ভাবে লেবু চাষ করতে পারলে তো কথায় নেই। এখন লেবুর অনেক দাম। তাই লেবুচাষিরা বেশ লাভবান হচ্ছেন। এ চাষে তেমন একটা খরচ নেই। সঠিক ভাবে যতœ নিলে একটি বাগান থেকে দীর্ঘদিন লেবু পাওয়া যায়। তিনি ওই কৃষকের লেবুর বাগান দেখেছেন বাগানে যেভাবে লেবু ধরে আছে এমনি ভাবে বছরে তিনবার ধরলে ব্যাপক লাভের ব্যাপার। বাগানে যে পরিমাণে লেবু ধরে আছে তাতে এ মৌসুমেই দাম কমে গেলেও কমপক্ষে ৭ থেকে ৮ লাখ টাকা আসবে। এ ব্যাপারে মেডিকেল অ্যাসিসিটেন্ট ট্রেনিং স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আলতাফ হোসেন জানান, লেবুকে বলা হয় সি ভিটামিনের একটি বড় উৎস। আর বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা রয়েছে ভিটামিন সিতে। করোনা প্রতিরোধে শরীর সুস্থ রাখতে ভিটামিন সি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
ঝিনাইদহে ৫ শতাধিক নিন্ম আয়ের মানুষের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করলেন এমকে এন্টারপ্রাইজ
ঝিনাইদহ :: করোনার প্রভাবে বিপাকে পড়া অসহায়, হত দরীদ্র ও নিন্ম আয়ের মানুষের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করলেন এমকে এন্টারপ্রাইজ। শনিবার সকালে ঝিনাইদহ শহরের পবহাটী বিশ্ব রোড সংলগ্ন সুরাইয়া মঞ্জিলের খসরু হোসেনের নিজ বাড়িতে ৫ শতাধিক পরিবারে মাঝে এ খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেন বঙ্গবন্ধু সড়কের এমকে এন্টারপ্রাইজ এর স্বত্তাধিকারী মুক্তার হোসেন মুক্ত। এ কাজের সহযোগিতায় ছিলেন, সমাজ সেবক গোলাম সরোয়ার, নাসির উদ্দীন, মহিউদ্দীন মধু, সমশের মোল্যা, জাহাঙ্গীর হোসেন, রেজাউল ইসলাম,সাদ আহাম্মেদ বাপ্পি, রাউফুল ইসলাম রাব্বি ও শিশু শির্ক্ষাথী জান্নাতুল ফেরদৌস মুক্তি। এসময় সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে আগতদের হাতে চাল, ডাল, আলু, তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়। এ খাদ্য সামগ্রী পেয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন অসহায় মানুষ গুলো।