রবিবার ● ১০ মে ২০২০
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » সামাজিক দুরত্বের বালাই নেই বিপণী বিতান গুলোতে উপচে পড়া ভিড়
সামাজিক দুরত্বের বালাই নেই বিপণী বিতান গুলোতে উপচে পড়া ভিড়
জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি :: দুই মাস পর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও দোকানপাট খোলার পর মানুষের যেন হুড়োহুড়ির শেষ নেই। সমাজিক দুরত্ব না মেনে প্রচন্ড ভীড় উপেক্ষা করে মানুষ কেনাকাটায় মত্ত হয়ে পড়েছে। ঝিনাইদহে করোনাকে উপক্ষো করে শহরের বিপণী বিতান গুলোতে আজ রবিবার দিনব্যাপী এমন দৃশ্য চোখে পড়েছে। করোনা ভাইরাসের ভয়াল থাবা থেকে মানুষকে রক্ষার জন্য সরকার নিত্যপ্রয়োজনী পণ্যের দোকান ও ঔষধের দোকান ব্যতীত সকল ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষনা করে। কিন্ত দীর্ঘ প্রায় ২ মাস পর সরকারের নির্দেশে রোববার সকাল থেকে বিপনী বিতান গুলো খুলে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে বেচা কেনা করার কথা থাকলেও তা মানছে না কেউ। ক্রেতা কিংবা বিক্রেতাদের হাতে গ্লাবস নেই। নেই মুখে মাস্ক। বিপনীবিতানগুলোতে সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখার বালাই নেই। দীর্ঘ্যদিন বন্ধের পর মনে হচ্ছে তারা মোক্ষম সময় পেয়ে গেছে। হুড়োহুড়ী, ঠেলাঠেলি আর গাদাগাদি করে চলাচল করছে মানুষ। সরকারী ও বেসরকারী ব্যাংকেও রয়েছে মানুষের ঢল। ঝিনাইদহ শহরের কেপি বসু সড়ক গীতাঞ্জলী সড়ক, পোষ্ট অফিস মোড় ও সাপ্তাহীক বাজারে মানুষের কোলাহল ছোখে পড়ার মতো। তবুও ঝিনাইদহের প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা করোনা ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে বিপথগামী মানুষকে সচেতনতা কার্যক্রম অব্যহত রেখেছে।
পুলিশ পরিচয়ে ভিকটিমের থেকে হাতিয়ে নিল টাকা
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের মহেশপুরে একটি প্রতারক চক্র পুলিশ পরিছয়ে এক ভিকটিমের কাছ থেকে হাতিয়ে নিল টাকা। জানা গেছে, উপজেলার নস্তি গ্রামের পলি খাতুন ভাইয়েদের দ্বারা নির্যাতিত হলে মহেশপুর থানার গত ৬/৫/২০ইং তারিখে একটি মামলা করে। সেই মামলায় সহযোতিার কথা বলে মহেশপুর থানার নাম ভাঙ্গিয়ে ঐ ভিকটিমের কাছ থেকে পার্সনাল বিকাশ একান্ট ০১৭১৮-৩৬৩৩৩৯ নাম্বারে বুধবার সন্ধ্যায় ৭টায় ৩হাজার ৫শ টাকা হাতিয়ে নেয়। রোববার সকালে ঐ নাম্বারে যোগাযোগ করলে প্রতারক জানায় তার নাম মেহেদী সে যশোর ক্যান্টেনমেন্ট এলাকায় থাকে। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা এস.আই রাকিব জানায়, মেহেদী নামে মহেশপুর থানায় কেউ নেই।
ট্রাক ও বাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ইউপি মেম্বর ও সমাজকর্মী নিহত
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলায় মর্মান্তিক এক সড়ক দুর্ঘটনায় একজন ইউপি মেম্বর ও সমাজসেবা অফিসের ইউনিয়ন সমাজকর্মী নিহত হয়েছেন। মহেশপুরের ভালাইপুর সাহেববাড়ি নামক স্থানে আজ রবিবার সকালে ট্রাক ও মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে আজমপুর ইউনিয়নের মেম্বর লুৎফর রহমান (৬২) ও মহেশপুর উপজেলা সমাজসেবা অফিসের ইউনিয়ন সমাজকর্মী আব্দুল কুদ্দুস (৫৯) নিহত হন। নিহত ইউপি মেম্বর লুৎফর রহমান আলামপুর গ্রামের মৃত নিয়ত আলীর ছেলে। নিহত সমাজসেবা কর্মী আব্দুল কুদ্দুস কোটচাঁদপুর উপজেলার দয়ারামপুর গ্রামের মৃত আনারউদ্দীনের ছেলে। তিনি অল্পদিনের মধ্যে অবসরে যেতেন বলে জানা গেছে। মহেশপুর থানার ওসি মোরশেদ হোসেন খান জানান, ইউপি মেম্বর লুৎফর রহমান ও আব্দুল কুদ্দুস রোববার সকাল ১০টার দিকে মটরসাইকেলযোগে মহেশপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। তারা মহেশপুরের ভালাইপুর ব্রীজ পার হয়ে সাহেব বাড়ি নামক স্থানে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা ট্রাকের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ইউপি সদস্য লুৎফর রহমান ঘটনাস্থলে নিহত হন। আব্দুল কুদ্দুকে মুমুর্ষ অবস্থায় মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপরে মৃত্যুবরণ করেন। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছে। দুর্ঘটনার পর ট্রাকের ড্রাইভার ও হেলপার পালিয়ে গেছে। পুলিশ ট্রাকটি আকট করেছে। মহেশপুর থানায় এ ব্যাপারে মামলা হয়েছে।
এবার কৃষকের ধান কেটে দিল স্বেচ্ছাসেবক দল
ঝিনাইদহ :: ঝিনাইদহে করোনার প্রভাবে শ্রমিক সংকট নিরসণে এক কৃষকের ২ বিঘা জমির ধান কেটে দিয়েছে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীরা। আজ রবিবার সকালে সদর উপজেলার গিলাবাড়িয়া গ্রামের মাঠে কৃষক মজনু খানের ক্ষেতের ধান কেটে দেয় তারা। ধান কেটে জমিতে রেখেন আসেন। পরে শুকালে তা বেঁধে মাড়াই করে দেওয়া হবে বলে জানায় জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শফি। এসময় তিনি জানান, বোরো ধান কর্তনে কৃষকদের শ্রমিক সংকট নিরসনে স্বেচ্ছাসেবক দল এ কার্যক্রম শুরু করেছে। স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদের সাথে যোগাযোগ করলে কৃষকদের ধান কেটে দেওয়া হবে।
দোকানীদের মাঝে ইফতার বিতরণ
ঝিনাইদহ :: মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য, স্লোগানে করোনার প্রভাবে বিপাকে পড়া অসহায়, রোজাদার পথচারী ও হলিধানী বাজারের বিভিন্ন দোকানীদের মাঝে ইফতার বিতরণ করেছেন স্বপ্ন পূরণ ব্লাড ডোনার ক্লাব ও বিল্পবী বাঘা যতীন থিয়েটার। গতকাল শনিবার বিকালে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার হলিধানী বাজারের বিভিন্ন দোকানী ও পথচারিদের মাঝে এ প্যাকেট ইফতারি বিতরন করা হয়। পরবর্তীতে সামাজিক দুরুত্ব বজায় রেখে স্বপ্নপূরণ ব্লাড ডোনার ক্লাবের প্রধান উপদেষ্টা ও বিল্পবী বাঘা যতীন থিয়েটারের সভাপতি শামীম আহমেদ টফির সভাপতিত্বে হলিধানী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাশে^ জেলার বিভিন্ন সামাজিক, স্বেচ্ছাসেবী ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের নিয়ে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। ঝিনেদা থিয়েটারের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক হুমায়ন কবীর হিমু, সমাজ কর্মী রেল আব্দুল্লাহ, শেখ মারুফ, কে পি বসু ব্লাড ডোনেট ক্লাবের মামুন। এছাড়াও সমাজ কর্মী ও শিক্ষক ফারুক শেখ, স্থাণীয় সংবাদ কর্মী জাহিদুল হাক বাবু, স্বপ্নপূরণ ব্লাড ডোনেট ক্লাবের সাকিল হাসান, ইমরান, বাবু, দিপু, সোহান, রাজন, স্বাধীন, সবুজসহ ব্লাড ডোনেট ক্লাবের সকল সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। পরে আলোচনা শেষে বাজারের কেন্দ্রিয় জামে মসজিদের ইমাম শফিকুল ইসলাম বিশেষ দোয়া ও মোনাজাতের মধ্যে দিয়ে ইফতার ও দোয়া অনুষ্ঠান শেষ হয়। অনুষ্ঠানটি সার্বিক সঞ্চালনা করেন স্বপ্নপূরণ ব্লাড ডোনেট ক্লাবের আহ্বায়ক বাঘাযতীন থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদক শেখ মামুন।
গরু ছাগলের বিরুদ্ধে কালীগঞ্জ পৌর মেয়রের কাছে নালিশ
ঝিনাইদহ :: গরু ছাগলের অত্যাচারে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ সরকারী ভুষনস্কুল রোড ও মাঠের কাঁচাবাজারের ব্যাবসায়ীরা অতিষ্ট হয়ে পড়েছে। কিছু গরু মালিকের ছেড়ে দেওয়া গরুতে তাদের সবজি খেয়ে সাবাড় করে দিচ্ছে। এ অবস্থায় ক্ষতিগ্রস্থ ওই ব্যাবসায়ীরা পৌরমেয়রের কাছে নালিশ করেছে। এছাড়াও ওই গরু গুলো রাতেও সমানহারে বাজারের ব্যাবসায়ীদের সবজি খেয়ে ফেলছে। সেই সাথেই সড়কে যত্রতত্র গরুর বর্জ্যতে পথচারীদের চলার পথ নোংরা করে চলেছে। ক্ষতিগ্রস্থরা জানিয়েছে, শহরের মধুগঞ্জ ও নিশ্চিন্তপুর এলাকার কিছু মানুষ তাদের পোষা গরুর দড়ি খুড়ে বাজারে উন্মুক্তভাবে ছেড়ে দিয়েছে। গলায় দড়ি বিহিন ছেড়ে দেওয়া গরুতেই বাজারের দোকান, রাস্তা, ও মাঠের ফসল নষ্ট করে চলেছে। করোনার মহামারিতে ভুষনস্কুল মাঠে বসানো সবজি দোকানদাররা জানান, এই দূর্যোগে বেচাকেনা কম হলেও দলে দলে গরু এসে তাদের দোকানে সাজানো সবজি তরিতরকারী খেয়ে ফেলছে। এ বাজারে বসে এমনিতেই তাদের পেট চলছে না। তরা উপরে গরু ছাগলের অত্যাচারে তারা বেশ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। ব্যাবসায়ীরা আরো জানান, দিনে এমন ক্ষতির পরও ওই গরুগুলো রাতে বাজারে ঢুকে ব্যাপক সবজি নষ্ট করছে। বাধ্য হয়ে তারা এ বিষয়টি পৌর মেয়রকে অবহিত করেছেন। তিনি দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে তারা গরুর অত্যাচারে এ হাট ছাড়তে বাধ্য হবেন বলেও জানান। ব্যাবসায়ীদের এমন অভিযোগ শুনে পৌরমেয়র আশরাফুল আলম আশরাফ সাংবাদিকদের ডেকে সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে জানান, গরুর অত্যাচারে ভুষনস্কুল মাঠের সবজি ব্যাবসায়ীরা তার কাছে বিচার প্রার্থনা চেয়েছেন। তিনি ওইসব ছেড়ে দেওয়া গরু মালিকদের পৌরসভা থেকে নোটিশ বা মাইকিং করে গরু বেধে রাখতে নির্দ্দেশনা দিবেন। এরপরও নির্দ্দেশনা না মানলে তিনি গরুর মালিকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান।
একঝাঁক তরুণ-কিশোর কিশোরীদের প্রবর্তন নামের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন
ঝিনাইদহ :: করোনাভাইরাস যখন বাংলাদেশে তার জায়গা করে নিতে ব্যাস্ত ঠিক তখন ঝিনাইদহের একঝাঁক তরুণ-কিশোর কিশোরী দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে পাড়া-মহল্লা তৈরি করেছেন প্রবর্তন নামের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। এই ভয়ঙ্কর মহামারীর সময় সবাই যখন ঘরে কিন্তু তারা ঘরে বসে থাকেনি। দিন রাত কজ করে যাচ্ছেন তারা। অসহায় মানুষের কল ফোনে পেলেই ছুটে যাচ্ছে তারা। অসহায় মানুষের পাশে থাকায় যে তাদের মূল উদ্দেশ্য। তাদের কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চাইলে সাজ্জাদ হোসেন বলেন, এখন পর্যন্ত তিন ধাপে ৩০০ টি পরিবারের মাঝে ১,২৫,০০০ টাকার খাদ্য সহায়তা বিতরণ করেন। প্রথম ধাপে ৬০টি পরিবারের মাঝে প্রায় ২০ হাজার টাকার এবং দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপে প্রায় ২৪০ টি পরিবারের মাঝে ১,০৫,০০০ টাকার খাদ্য সহায়তা করেন বলে জানিয়েছেন তিনি। তাদের সংগঠন সম্পর্কে জানতে চাইলে নাহিদুজ্জামান সম্রাট বলেন, আমরা বিভিন্ন ভার্সিটি পড়ুয়া শিক্ষার্থী সামাজিক দ্বায়বদ্ধতার জায়গা থেকে ফেসবুকে পোস্ট দেয়ার মাধ্যমে আমাদের ফান্ড কালেকশন শুরু করি। আল্লাহর রহমতে স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীর টিফিনে জমানো ৩০ টাকা থেকে শুরু করে আমাদের বেশ কিছু সিনিয়র, ব্যাচমেট জুনিয়র সবার অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছি। তাদের এই সহযোগিতাপূর্ণ আচরণ আমাদের চতুর্থ ধাপে অসহায় মানুষদের ঈদ বাজার করে দেয়ার সাহস যোগাচ্ছে আবারো। আমাদের পাশে নতুন করে “এস এস সি-২০১৮” ব্যাচের কিছু ছোটোভাই কাজ করবে। ইনশাআল্লাহ এভাবে ঝিনাইদহের সকল সামর্থ্যবান এগিয়ে আসলে দেশের এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে আমাদের প্রতিবেশী কাওকে ক্ষুধার্ত থাকা লাগবে না। সবাই মিলে আবার ইনশাআল্লাহ সুস্থ স্বাভাবিক পৃথিবীতে একসাথে বাঁচবো তারা স্বাস্থ্যনীতি মেনে কাজ করছে কিনা জানতে চাইলে রিপা কুন্ডু জানান, আমাদের সকল স্বেচ্ছাসেবক স্বাস্থ্যনীতি ও বাংলাদেশ সরকারের সকল দিক নির্দেশনা মেনেই সকাল ৮ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা একটানা কাজ করছে। ছবি প্রদানের উদ্দেশ্য অন্যদেরকেও অনুপ্রানিত করা।আমাদের পরিশ্রম দেখে কোনো পরিবারের যদি একবেলা খাবার ও জোটে সেইটাই হবে আমাদের সফলতা। আরও যারা কাজ করছেন, সবুজ, আশিক, আশিক, অলিভ, শিহাব, সায়েম, সানি, টাইসন, প্রান্ত, লিজা, তথি , অনিক সহ অনেকে দিন রাত খেটে যাচ্ছে অসহায় মানুষের জন্য।