বুধবার ● ১৩ মে ২০২০
প্রথম পাতা » খুলনা বিভাগ » করোনা ভাইরাস দোকানপাট খুলছে, বাড়ছে সংক্রমণ শঙ্কা
করোনা ভাইরাস দোকানপাট খুলছে, বাড়ছে সংক্রমণ শঙ্কা
শেখ সাইফুল ইসলাম কবির,বাগেরহাট প্রতিনিধি :: বাগেরহাটের জেলা প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ ও জনপ্রতিনিধিদের নানামুখী উদ্যোগের কারনে বাগেরহাটে করোনা ভাইরাস বিস্তার লাভ করতে না পারলেও দোকানপাট খুলে দেয়ার পর থেকেই বাড়ছে সংক্রমনের শঙ্কা। ভিন্ন জেলা থেকে বাগেরহাটে এসে নারী ও শিশুসহ এখন পর্যন্ত ৬জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। এরই মধ্যে বাগেরহাটে জনসাধারনের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে কাজ করছে ভ্রাম্যমান মেডিকেল টিম। জেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের এসব উদ্যোগ সর্বস্তরে প্রশংসিত হলেও কিছু দিন হলো সব উদ্যোগ যেন ভেস্তে যেতে বসেছে।
করোনা সংক্রমণের ঝুকি এড়াতে প্রায় দেড় মাস বন্ধ থাকার পর ব্যবসা-বাণিজ্য চালু হওয়ায় পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে, তা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। কারণ, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ মানুষ স্বাস্থ্য বিধি কোনো শর্তই মানছে না। তবে ঈদকে সামনে রেখে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড চালুর উদ্যোগ হিসেবে দোকানপাট খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও, এর ফলে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ঝুকি বাড়ছে বলে ধারণা জেলার অধিকাংশ মানুষের।
খোঁজ নিয়ে জানাযায়, করোনার সংক্রমণ রোধে সরকারের দেয়া নির্দেশনা মেনে গত ২৬ মার্চ থেকে জেলার দোকান মালিকরা তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখে। খোলা রাখা হয় নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ও ওষুধের দোকান। শুরুতে কঠোরতা এবং মানুষের সচেতনতা ল করা গেলেও সাধারন মানুষ এখন ঘর থেকে বের হচ্ছে। তার উপর গত ১০ মে থেকে খুলে দেয়া হয়েছে দোকানপাট, ফলে হাটবাজারে বাড়ছে ভিড়। এ অবস্থায় করোনা ভাইরাস সংক্রমনের ভয়াবহ ঝুকির মধ্যে পরেছে জেলার অধিকাংশ মানুষ।
তবে দোকান মালিকরা বলছেন, করোনা আক্রান্ত হওয়ার ভয় নিয়ে জীবিকার তাগিদে দোকান খুলতে হচ্ছে। কিন্তু অনেকেই মনে করছেন ভিড় বাড়লে সুরা মানা সম্ভব হবে না। সীমিত সময়ের জন্য দোকান খোলা থাকায় ক্রেতাদের তাড়াহুড়া থাকবে। ফলে করোনা সংক্রমনের ঝুকি আরও বাড়বে।
বাগেরহাট শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি শেখ লিয়াকত হোসেন লিটন জানান, সরকারের দেয়া সব শর্ত মেনে ব্যবসায়ীরা বেচাকেনা করছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ও ওষুধের দোকান বাদে দীর্ঘ দেড় মাস জেলার সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় তারা লোকসানের মুখে পড়েছেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যবসায়ীরা কেনাবেচা করে যদি কিছুটা তি কাটিয়ে উঠতে পারেন।
বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. কেএম হুমায়ুন কবির জানান, দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পর বাগেরহাট জেলায় তা প্রতিরোধে প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ নানা পদপে নেয়। জনসমাগম রোধ, সচেতনতামূলক প্রচারণা, বহিরাগতদের ঠেকাতে সীমান্তে চেক পোস্ট বসায় প্রশাসন। যার কারনে এই জেলায় ভাইরাসের সংক্রমণ অনেকটাই নিয়ন্ত্রনে। ৫ এপ্রিল থেকে জেলায় করোনা ভাইরাসের নমুনা সংগ্রহ শুরু হয়। এখন পর্যন্ত বাগেরহাটে নারী ও শিশুসহ মোট ৬ জনের শরীরে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি মিলেছে। তারা কেউই বাগেরহাটে বসে করোনায় আক্রান্ত হননি। সবাই জেলার বাইরে থেকে বাড়ীতে ফেরেন।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ জানান, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সকল শর্ত মেনে ১০ মে থেকে জেলার দোকানপাট থেকে খুলে দেয়া হয়েছে। এখানকার দোকান মালিকদের সরকারের দেয়া শর্ত অনুযায়ী কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে দোকানগুলোতে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা, সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে বেচাকেনা করা, মুখে মাস্ক, হ্যান্ড গ্লোভস পড়তে হবে। সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যবসা বানিজ্য করতে হবে। এছাড়া, সার্বিক তদারকির জন্য জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতসহ গোয়েন্দা সংস্থার একাধিক টিম মাঠে থাকবে। নির্দেশনা অমান্য করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কর্মহীন মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের পাশে আশা
বাগেরহাট :: বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার কর্মহীন ও অসহায় মুক্তিযোদ্ধাদের মাঝে বুধবার খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। বেসরকারি সংস্থা আশার সহযোগীতায় খাদ্য সহায়তা বিতরণ প্রদান অনুষ্ঠানের উপস্থিত ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান এ্যাড. শাহ-ই-আলম বাচ্চু, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. কামরুজ্জামান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফাহিমা খানম, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার লিয়াকত আলী খান, উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দিন, মোরেলগঞ্জ প্রেস কাব সভাপতি মেহেদী হাসান লিপন প্রমুখ।
উপজেলা ১৬ ই্উনিয়নের ১৬০ জন মুক্তিযোদ্ধাকে এ সহায়তা প্রদান করা হয়।
সাইনবোর্ড-বগী মহাসড়কে মটরসাইকেল চাপায় বৃদ্ধা নিহত
বাগেরহাট :: বাগেরহাটের কচুয়ায় বেপরোয়া গতির হেড লাইট নেভানো সাইনবোর্ড গামী মোটরসাইকেল চাপায় লিলি দেবনাথ(৬৫) নামে এক ‘গুরু মাতা’ নিহত হয়েছেন। তিনি বাধাল ইউপির বিলকুল গ্রামের নারায়ন দেবনাথের স্ত্রী।
মঙ্গলবার (১২ মে) রাতে বিলকুল গ্রামে নিজ বাড়ির সামনে সাইনবোর্ড-বগী আঞ্চলিক মহাসড়ক পার হওয়ার সময় মটর সাইকেলটি চাপা দেয় তাকে।
এ সময় ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। পুলিশ ঘাতক মটর সাইকেলটিকে আটক করলেও চালক পালিয়ে গেছে।
বুধবার (১৩ মে) সকালে পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেছে। মটর সাইকেল চালক রহিমকে আসামি করে কচুয়া থানায় একটি মামলা হয়েছে।
কচুয়া থানার ওসি মো. শফিকুর রহমান বলেন, রাস্তা পারাপারের সময় হেডলাইট নেভানো দ্রুতগতির একটি মটর সাইকেলের চাপায় লিলি দেবনাথ নিহত হয়েছেন। বুধবার সকালে আমরা নিহত লিলি দেবনাথের মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছি। ঘাতক মটর সাইকেলটিকে জব্দ করেছি। মটরসাইকেল চালক রহিমকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সুন্দরবনে করমজলে বিলুপ্তপ্রায় বাটাগুর বাসকা ৩৪ বাচ্চা ফুটেছে
বাগেরহাট :: বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের করমজল বন্যপ্রাণি প্রজনন কেন্দ্রে বিলুপ্ত প্রজাতির কচ্ছপ ‘বাটাগুর বাসকা’র ৩৪টি বাচ্চা ফুটেছে।
বুধবার (১৩ মে) সকালে এ বাচ্চাগুলো ডিম থেকে ফুটে বের হয়। ডিম থেকে বের হওয়া বাচ্চাগুলোকে কচ্ছপের জন্য তৈরি ‘হ্যাচিং প্যানে’ রাখা হয়েছে। এগুলোকে ছয় মাস পরে অন্য জায়গায় হস্তান্তর করা হবে।এছাড়া গত ২৭ মার্চ আরও একটি কচ্ছপ ২১টি ডিম দেয়। আশা করছি ওই ডিমগুলো থেকে ২৭ বা ২৮ মে বাচ্চা পাওয়া যাবে।
সুন্দরবনের করমজল কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির এসব তথ্য জানান।
তিনি জানান, ১০ মার্চ একটি কচ্ছপের দেওয়া ৩৫টি ডিম থেখে ৩৪টি বাচ্চা ফুটলো। এর আগেও এই বন্যপ্রাণি প্রজনন কেন্দ্রে পাঁচবার বাটাগুর বাচ্চা ফুটেছে।২০১৭ সালে দুটি কচ্ছপের ৬৩টি ডিম থেকে ৫৭টি বাচ্চা হয়। ২০১৮ সালে দুটি কচ্ছপের ৪৬ ডিম থেকে ২১টি বাচ্চা পাওয়া যায়। সর্বশেষ ২০১৯ সালে একটি কচ্ছপের ৩২টি ডিম থেকে ৩২টিই বাচ্চা পাওয়া যায়।
সুন্দরবনের করমজল কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির বলেন, ‘‘গত ১০ মার্চ একটি কচ্ছপ ৩৫টি ডিম পাড়ে। আমরা যথাযথ নিয়মে ডিমগুলোকে প্রাকৃতিক ইনকিউবেটরে রাখি। সেখান থেকে আজ ৩৪টি বাচ্চা ফুটে বের হয়েছে। বাচ্চাগুলোকে ‘হ্যাচিং প্যানে’ রাখা হয়েছে। এখানে ছানাগুলোকে পর্যাপ্ত খাদ্য ও যত্ন করা হবে। ছয় মাস পরে অন্য খাচায় নেওয়া হবে।এছাড়া গত ২৭ মার্চ আরও একটি কচ্ছপ ২১টি ডিম দেয়। আশা করছি ওই ডিমগুলো থেকে ২৭ বা ২৮ মে বাচ্চা পাওয়া যাবে।
করোনা রোগীর বাড়িতে প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তা
বাগেরহাট :: বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার পাটরপাড়া গ্রামের করোনা জয়ী মোঃ কবিরুল মোল্লা (৩৫) উপহার স্বরুপ প্রধান মন্ত্রীর দপ্তরের ৩০ হাজার টাকার চেক পেয়েছেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে থেকে তাকে এ চেক প্রদান করা হয়। এ সময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। বুধবার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মারুফুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ মারুফুল জানান, করোনায় আক্রান্ত মোঃ কবিরুল মোল্লা ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার আজিমপুর ইউনিয়নের পাতরাইল জামে মসজিদের মোয়াজ্জিম ছিলেন। গত ৯ এপ্রিল তিনি ফরিদপুরের পাতরাইল থেকে পাটরপাড়া গ্রামে আসেন। খুঁসখুঁসে কাশিসহ করোনা আক্রান্তের উপসর্গ থাকায় তাকে হোম কোয়ারেন্টাইনে রেখে ১১ এপ্রিল নমুনা পরিক্ষার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। আইইডিসিআরের রির্পোটে তার শরীরে করোনা পজেটিভ আসে। এরপর ১৫ এপ্রিল বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ ঘটনাস্থলে গিয়ে পাটরপাড়া গ্রামে আক্রান্তের বাড়ীসহ আশপাশের ১৬ বাড়ী লকডাউন ঘোষণা করেন। এরপর থেকে হোম আইসোলেশনে রেখেই তাকে স্বাস্থ্য বিভাগ চিকিৎসাসেবা শুরু করেন।
১৮ এপ্রিল ওই রোগীর দ্বিতীয় বারের মত নমুনা সংগ্রহ করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। আইইডিসিআরের রির্পোটে তার শরীরে করোনা নেগেটিভ আসে। ২০ এপ্রিল তার তৃতীয় বারের মত নমুনা সংগ্রহ করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। তৃতীয় টেস্টের রিপোর্ট নেগেটিভ আসলে ২৩ এপ্রিল স্বাস্থ্য বিভাগ কবিরুলকে করোনামুক্ত ঘোষণা করেন।
করোনা জয়ের পর তিনি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে আর্থিক অনুদান চেয়ে একটি আবেদন করেন। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে উপহার স্বরুপ প্রেরিত ৩০ হাজার টাকার চেকটি মঙ্গলবার দুপুরে তাকে প্রদান করা হয়।
করোনা জয়ী মোঃ কবিরুল মোল্লা বলেন, আমি এখন পুরোপুরি সুস্থ্য। হোম আইসোলেশনে ১৪ দিন কেবল ডাক্তারি পরামর্শ মেনে চলেছি আর কোরান শরিফ পাঠ করেছি। আল্লাহর রহমতে এখন আমি পরিবারের সকলকে নিয়ে ভাল আছি।
ছেলের নির্দেশে মা অবরুদ্ব
বাগেরহাট :: মা-কথাটি ছোট্র অতি কিন্তু জেনো ভাই ইহার চেয়ে নাম যে মধুর ত্রিভুবনে নাই। সেই মধুর নামটি আজ সম্পূর্ন ভূলে গেছে বাগেরহাটের শরনখোলা উপজেলার রতিয়া রাজাপুর গ্রামের বাসিন্দা মৃতঃ-জগদীশ চন্দ্র হালদারের ছেলে নারায়ন চন্দ্র হালদার (৩৮)। বর্তমানে তিনি ওমান প্রবাসী হলেও নারায়নের নির্দেশে তার স্ত্রী সুপ্রিয়া রানী সব কিছুরই কলকাঠি নাড়ছেন স্থানীয় এক স্কুল শিক্ষকের ইশারায়।প্রবাসী নারায়নের মা ময়না রানী (৬৫) বলেন, দিন মজুর স্বামীর ঘরে থেকে নানা প্রতিকুলতার মধ্যে ৪টি সন্তানকে আমি অনেক কষ্টে বড় করেছি। আজ মেজ ছেলে অনেক পয়সা ওয়ালা হওয়ায় আমার নাম পর্যন্ত শুনতে পারে না। কোন দিন ফোন করে বলে না মা তুমি কেমন আছ ? বৌ এবং প্রতিবেশি এক স্কুল মাষ্টার এখন নারায়নের সব। তাদের কথা শুনলেও আমার কোন কথা শোনে না এক সময়ের ছোট্র নারায়ন। গেল দশ বছর পুর্বে আমার স্বামী মারা যায়। তার রেখে যাওয়া বসত ভিটা ভাগ করে ছেলেরা যে যার মতো এখন আলাদা। বড় ছেলে গঙ্গাচরন ও মেজ ছেলে নারায়ন দীর্ঘ দিন ধরে কোন খোঁজ-খবর না নেওয়ায় ছোট ছেলে দিন মজুর বাসুদেবের ঘরে আছি। এখন আমি মরে গেলে হয়তো ওরা শান্তি পাবে। মনের ভুলেও নারায়নের ঘরে যাইনা। কিন্তু কয়েক মাস আগে নারায়ন বিদেশ থেকে বাড়িতে আসে তখনও মেজ খোকা আমাকে ডাকেনি। লোক মুখে শুনেছি বিদেশ থেকে কত জনের জন্য কতকিছুই নিয়ে এসেছেন আমার বাবা কিন্তু তাতে আমি কোন কষ্ট পাইনি। ঠাকুরের কাছে সব সময় প্রার্থনা করি বিদেশের মাটিতে আমার খোকা যেন ভালো থাকে।
তবে, দেশে আশার কিছু দিন পর তুচ্ছ ঘটনায় ছোট খোকা বাসুদেব ও নারায়নের মধ্যে মারামারি হয়। এতে নারায়ন তার স্ত্রী সুপ্রিয়া রানীর গর্ভের সন্তান নষ্টের মিথ্যা অভিযোগ সাজিয়ে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে শরণখোলা থানায় বাসুদেব (৩২) ও তার স্ত্রী মনিকা রানী (২৮) কে আসামী করে একটি মামলা করেন। সম্প্রতি ওরা জামিনে আসলে প্রবাসে থাকা নারায়নের নির্দেশে ছোট বৌ সুপ্রিয়া রানী আমাকেসহ বাসুদেবদের বাড়ী থেকে বাহিরে বের হওয়ার পথে কাঁটা তারের বেড়া দিয়ে আটকে দেয়। গত ১৫ দিন ধরে অবরুদ্ধ অবস্থায় আছি। বিষয়টি থানা পুলিশ ও স্থানীয় চেয়ারম্যান, মেম্বার সহ গন্য-মান্যদের জানালেও কেউ নারায়নের বিরুদ্ধে কথা বলেনি।এছাড়া বাসুদেবের স্ত্রী মনিকা রানী বলেন, সামান্য বিষয়ে নিয়ে ঝগড়া-বিবাদ হওয়ার পর আমার স্বামী মেজ-দাদার পায়ে ধরে ক্ষমা চেয়েও রেহাই পাননি। টাকার জোরে আমাদের বিরুদ্ধে তিনি মিথ্যা মামলা করেছেন। এমনকি এবার বিদেশ যাওয়ার আগ মুহুর্তে চলতি বছরের ৯ ফেব্রুয়ারী বাগেরহাট আদালতে আমাদের বিরুদ্ধে আরো একটি মিথ্যা মামলা করে গেছেন। জামিন নিয়ে আমরা বাড়িতে আসলে তার নির্দেশে যাতায়াতের পথ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
অপরদিকে, থানায় কোন মামলা হবে না, বলে তৎকালীন সময়ে স্থানীয় এক ইউপি সদস্য পুলিশকে দেয়ার কথা বলে আমাদের কাছ থেকে দশ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। কিন্তু মামলা হওয়ার পর ঘর-বাড়ী ফেলে আমরা স্বামী-স্ত্রী চার মাস পালিয়ে থাকি। কিছুদিন হয়েছে জামিন নিয়েছি। তবে, এ পর্যন্ত একটি টাকাও উদ্ধার করতে পারিনি ওই প্রতারকের কাছ থেকে।
এ বিষয়ে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা মোঃ কবির হোসেন তালুকদার বলেন, শ্রদ্ধা সম্মান ও ভালোবাসা দিয়ে একজন মাকে খুশি করা যায় কিন্তু তার ঋন কখনো শোধ করা যায় না। এমনকি কোন প্রলোভন দিয়ে মাকে তার সন্তানের বিরুদ্ধে কোন ক্ষতির কাজে দাঁড় করানো যায় না কিন্তু সন্তানের জন্য মা-তার জীবন দিতে পারে। সেই মায়ের পথ যে বন্ধ করতে পারে, সে সন্তান নামের কলংঙ্ক। তবে, এ বিষয়টি নিয়ে আমিও মিমাংসার চেষ্টা করেছি কিন্তু নারায়নের কাছে পরাজিত হয়েছি।
এ ব্যাপারে প্রবাসী নারায়নের কাছে জানতে চাইলে তিনি মুঠোফোনে বলেন, আমি কোন মা-ঠা চিনি না ওই জমি আমার তাই তাদেরকে কোন পথ দেয়া হবে না। উনি (মা) এবং বাসুদেবরা কোথা থেকে বাহিরে আসা-যাওয়া করবে সেটা আমার দেখার বিষয় নয়।
শরণখোলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসকে আব্দুল্লাহ আল-সাইদ জানান, ওই মা’র অবরুদ্ধ হওয়ার কোন অভিযোগ আমাদের কাছে নেই। তবে, তিনি লিখিত অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে ।