মঙ্গলবার ● ১৯ মে ২০২০
প্রথম পাতা » ঢাকা » ত্রাণের নগদ অর্থ ও খাদ্য সামগ্রী নিয়ে নয় ছয় ও জালিয়াতি বন্ধ করুন: বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি
ত্রাণের নগদ অর্থ ও খাদ্য সামগ্রী নিয়ে নয় ছয় ও জালিয়াতি বন্ধ করুন: বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি
ঢাকা :: আজ সকালে বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির রাজনৈতিক পরিষদের অনলাইন মিটিং এ ঈদের আগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেফতারকৃতদের মুক্তি দেবার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে এবং বলা হয়েছে সমালোচক ও রাজনৈতিক বিরোধীদের জেলে পাঠিয়ে ও তাদের নামে হয়রানিমূলক মিথ্যা ও সাজানো মামলা দিয়ে সরকারের ব্যর্থতাকে লুকানো যাবে না। মিটিং এ নেতৃবৃন্দ বলেন যাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে তারা সরাসরি সরকারের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নয়। করোনার এই দুর্যোগ কাটিয়ে সমালোচকদের গ্রেফতার না করে বরং তাদের ইতিবাচক মতামত ও পরামর্শসমূহকে সরকারের বিবেচনায় নেয়া দরকার। নেতৃবৃন্দ অনতিবিলম্বে রাষ্ট্রচিন্তার সংগঠক দিদারুল ভূঁইয়া, লেখক মোশতাক আহমেদ, কাটুর্নিস্ট কবীর কিশোর ও সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলসহ রাজনৈতিক কারণে আটক সবাইকে মুক্তি দেবার দাবি জানান। একই সাথে নেতৃবৃন্দ আগামী সংসদ অধিবেশনে নিবর্তূনমূলক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করারও আহ্বান জানান।
অনলাইন সভায় নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে গার্মেন্টস শ্রমিকসহ সকল খাতের শ্রমিকদের শতভাগহ বেতন-ভাতা পরিশোধের জন্য মালিক ও সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। নেতৃবৃন্দ এই ব্যাপাওরে সরকারকে কার্যকরি ভূমিকা গ্রহণেরও আহ্বান জানান।
সভায় গৃহীত আর এক প্রস্তাবে সরকারি ত্রাণের চাল ও নগদ টাকা নিয়ে নয় ছয়, দলীয়করণ ও জালিয়াতি বন্ধ করার আহ্বান জানান। একই সাথে নেতৃবৃন্দ আরো এক কোটি নিঃস্ব গরীব মানুষকে ত্রাণের আওতায় নিয়ে আসারও দাবি জানান। তারা বলেন গত তিন মাসে আরো ১ কোটি মানুষ দরিদ্রসীমার নীচে নেমে গেছে।
সভায় নেতৃবৃন্দ সুনামগঞ্জে বাউল সম্ররাট শাহ আবদুল করিম এর শিষ্য বাউল রমেশ ঠাকুরের সর্বস্ব পুড়িয়ে দেবার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানান এবং অনতিবিলম্বে ঘটনার সাথে যুক্ত দুর্বৃত্তদের গ্রেফতার, দৃষ্টান্তমূলক বিচার ও রমেশ ঠাকুরের পরিবারের পুনর্বাসনের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
সভায় বাংলাদেশের উপকুলের দিকে ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড় আম্পান এর সম্ভাব্য তা-ব মোকাবিলায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতি ও জানমালের নিরাপত্তা বিধানে জরুরী ভিত্তিতে উদ্যোগ নিতে সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানান।
পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক এর সভাপতিত্বে এই অনলাইন মিটিং এ অংশগ্রহণ করেন রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য বহ্নিশিখা জামালী, আকবর খান, আবু হাসান টিপু ও আনছার আলী দুলাল।
বাউল রনেশ ঠাকুরের সর্বস্ব জ্বালিয়ে দেওয়া দেশের অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক চেতনার উপর হামলার সামিল
সংহতি সংস্কৃতি সংসদ এর সভাপতি ইফতেখার আহমেদ বাবু এবং সাধারণ সম্পাদক এ্যাপোলো জামালী আজ গণমাধ্যমে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে সুনামগঞ্জ শাহ আব্দুল করিমের শিষ্য বাউল রনেশ ঠাকুর এর চার দশকের বইপত্র, বাদ্যযন্ত্রসহ সব পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানিয়েছেন।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, বাউল গান আমাদের দেশের হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী গণমানুষের সংস্কৃতির অন্যতম বাহক। প্রাণের গান, জনমানুষের মনের গান এই বাউল গান। এই গানের ধারক-বাহক যারা তারা বাংলার অসাম্প্রদায়িক সংস্কৃতির অপরিহার্য অংশ। এই ধরনের সাধক ও সংস্কৃতি চর্চাকারী ব্যক্তিদের উপর হামলা মূলত দেশের অসাম্প্রদায়িক, গণসংস্কৃতির উপর হামলার সামিল।
নেতৃবৃন্দ আরো বলেন যে বা যারা এই নৃশংস কাপুরুষোচিত হামলা করেছে তাদের এবং তাদের মদদদাতাদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করতে হবে। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। দেশের এই করোনাকালীন দুর্যোগের সময় যেসকল দুস্কৃতিকারী ও সন্ত্রাসীরা এই ধরনের ন্যাক্কারজনক হামলা করতে পারে তারা নিছক কোন ছিচকে দুস্কৃতিকারী নয়। এটা একটা চেতনা ও সংস্কৃতির উপর পরিকল্পিত হামলা যা আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী।
নেতৃবৃন্দ বাউল রনেশ ঠাকুরকে পুনমর্যাদায় পুনর্বাসন, যথাযথ ক্ষতিপূরণ এবং এই গণসংস্কৃতি রক্ষায় উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান। পাশাপাশি দেশের সচেতন মানুষদেরকে এর প্রতিবাদ-প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।