বৃহস্পতিবার ● ২১ মে ২০২০
প্রথম পাতা » চট্টগ্রাম বিভাগ » রাঙামাটিতে ২ সপ্তাহে ৪৩ জনের করোনা শনাক্ত : ৫ উপজেলা সংক্রমিত
রাঙামাটিতে ২ সপ্তাহে ৪৩ জনের করোনা শনাক্ত : ৫ উপজেলা সংক্রমিত
নির্মল বড়ুয়া মিলন :: বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় প্রথম সারির সৈনিক ডাক্তার নার্স সর্বোপরি হাসপাতালের সকল কর্মকর্তা কর্মচারী ও স্থানীয় প্রশাসন। করোনা সংক্রমনরোধে স্থানীয় প্রশাসনের কড়া নজরদারি থাকা সত্বেও রাঙামাটি জেলায় করোনার থাবা যেন বিনা মেঘে বজ্রপাত হয় গত ৬ মে ৪ জনের প্রথম শনাক্তের মধ্যে দিয়ে। মাত্র ২ সপ্তাহে আক্রান্তের সংখ্যা দাড়ায় ৪৩ জনে। জেলা শহর ছাড়িয়ে ১০টি উপজেলার মধ্যে ৫টি (লংগদু, জুরাছড়ি, বিলাইছড়ি, রাজস্থলী ও কাউখালী) উপজেলা করোনা সংক্রমিত হওয়ায় উদ্বেগ আর আতংক বহুমাত্রায় বাড়লেও রাঙামাটি সদর হাসপাতালের একটি বড় অংশ স্টাফদের ১৭ জন করোনা পজেটিভ শনাক্ত হওয়ায় জেলাবাসীর আতংক আরো কয়েকগুন বৃদ্ধি পেয়েছে। এক কথায় বলা যায় করোনা সংক্রমনের ঝুঁকি আর আতংক সমানতালে চলছে। এ ঝুঁকি সামাল দিতে রাঙামাটিতে করোনা টেষ্ট ল্যাব স্থাপনের জন্য তোড়জোর চেষ্টা চালাচ্ছে স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসন।
রাঙামাটি পার্বত্য জেলায় করোনা টেস্ট ল্যাব স্থাপনের প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়ে রাঙামাটি করোনা ফোকাল পারসন সিভিল সার্জন অফিসের ডা. মোস্তফা কামাল সিএইচটি মিডিয়াকে বলেন, করোনা টেষ্ট ল্যাব স্থাপন বর্তমানে অত্যন্ত জরূরী। রাঙামাটি জেলায় নিয়োজিত সচিব প্রবন চৌধুরী টেষ্ট ল্যাব স্থাপনের বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে কাজ করছেন। আমরাও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তিনি আরো বলেন রাঙামাটি সদর হাসপাতালে আইসিইউ নাই প্রয়োজন আছে কিন্তু আইসিইউ থেকে বেশী জরুরী প্রয়োজন হলো করোনা টেস্ট ল্যাব। জেলা শহর পর্যায় থেকে উপজেলা পর্যায়ে করোনা সংক্রমন ছড়িয়ে পড়ছে যা অত্যন্ত ঝুঁকির বিষয়, উপজেলা গুলোর অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা ও প্রত্যান্ত এসব উপজেলার জীবণযাত্রার মান নিন্ম হওয়ায় বিভাগীয় শহরে সময় স্বাপেক্ষ করোনা টেষ্ট করার মত পরিবেশ নাই বললে চলে। জেলা শহরের রোগীদের করোনা টেষ্টের রিপোর্ট পেতে যেখানে দুই তিন লাগে তাও ৩ থেকে ৪ শতাংশ রিপোর্ট পাওয়া যায়। সে অবস্থায় উপজেলার রোগীদের টেষ্ট করতে কয়েক বছর লেগে যাবে। তাছাড়া রাঙামাটি জেলা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জেলা ভৌগলিক বিষয় বিবেচনা করেও জেলায় একটি টেষ্ট ল্যাব স্থাপন জরুরী বলেন ডা. মোস্তফা কামাল। যত দ্রুত টেস্ট হবে তত দ্রুত ফলাফল আসবে। আর সর্বসাধারনের মনেও সচেতনতা আসবে।
এসময় করোনা ফোকাল পারসন সিভিল সার্জন অফিসের ডা. মোস্তফা কামাল সিএইচটি মিডিয়ার মাধ্যমে রাঙামাটি জেলাবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, করোনা ঝুঁকি এড়াতে চাইলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কোন বিকল্প নেই। সাবান দিয়ে ঘনঘন হাত ধোয়া, মাস্ক ব্যবহার করা, জনসমাগম এড়িয়ে চলা সর্বোপরি সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে পারলে করোনা ঝুঁকি অনেকাংশে কম হবে। মাস্ক ব্যবহার বিষয়ে তিনি বলেন আমরা মাস্ক ব্যবহার করতে বলি কিন্তু নিয়মাবলীটা বলিনা, তাই মাস্ক নিয়ম মেনে পরতে হবে, যেমন খারাপ লাগলে আমরা মাস্ক খুলে ফেলছি এটা ঠিক নয়, যেভাবে হোক মাস্ক পরতে হবে। তবে করোনা ঝুঁকি কমবে।
উল্লেখ্য, গত ৬ মে থেকে আজ ২১ মে পর্যন্ত মোট করোনা শনাক্ত হয়েছেন ৪৩ জন, তারমধ্যে ১৭ জনই হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও ষ্টাফ। চলিত সপ্তাহে আক্রান্ত হন ১৯ জন।
জেলায় হোম কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন ১৬৮৬ জন মোট কোয়ারেন্টাইনে ২৬১৯ জন। তারমধ্যে ২০৭১ জনকে ছুটি পেয়েছেন। আঞ্চলিক জনসংখ্যা প্রশিক্ষণ ইন্সষ্টিটিউট চম্পকনগরে আইসোলেশনে রয়েছেন ৪ জন। এ পর্যন্ত ৮২২ টি নমুনা সংগ্রহ করে বাংলাদেশ ইন্সষ্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল ইনফেকসাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটে করোনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। তারমধ্যে ৫২২টি রিপোর্ট পাওয়া যায়। যার মধ্যে ৪৩টি করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়।