সোমবার ● ৮ ফেব্রুয়ারী ২০১৬
প্রথম পাতা » অর্থ-বাণিজ্য » প্রশাসনের তদারকির অভাবে মাটিরাঙ্গায় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প বিভাগ ধ্বংসের মুখে
প্রশাসনের তদারকির অভাবে মাটিরাঙ্গায় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প বিভাগ ধ্বংসের মুখে
মাটিরাঙ্গা প্রতিনিধি :: উপজেলা নির্বাহী কার্যালয় সরেজমিন পরিদর্শণ ও তদারকি না করায় মাটিরাঙ্গা ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প বিভাগ বর্তমানে ধবংসের শেষ প্রান্তে দাড়িয়ে৷ ১৯৮৭-৮৮ সালের দিকে দেশের বেকার যুবক ও যুব মহিলাদের আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি,দেশের ক্রম বর্ধমান জনগোষ্টিকে দক্ষ জনশক্তিতে রুপান্তরসহ আগামী প্রজন্মকে ঘরে বসে পার্বত্য অঞ্চলের গাছ,বাঁশ ও বেতকে কাজে লাগিয়ে কিভাবে আয় বাড়ানো করা যায় তার-ই প্রশিক্ষণ মুলক কর্মকান্ড পরিচালনার জন্যে সরকারী পৃষ্টপোষকতায় চালু করা হয়েছিল ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প বিভাগটি৷
এই বিভাগটি মাটিরাঙ্গায় চালু হওয়ার পর বেশ কিছুদিন প্রত্যন্ত এলাকার বেকার যুবক,যুব-মহিলা ও দু:স্থ মহিলারা প্রশিক্ষণ গ্রহন করে নিজেদের অর্থনৈতিক উনয়নে ব্যপকভাবে সফলতা লাভ করেছিল৷ প্রশিক্ষণ গ্রহন শেষে প্রশিক্ষিতরা এলাকা থেকে বাঁশ,বেত ও কাঠ সংগ্রহ করে নানা রকম আসবাবপত্র তৈরিসহ বাঁশের মোড়া,মাছের ডুলা,কুলা,ডালা,শীতল পাটি,টুকরি,বাঁশের ছাকনী (চালুন বিশেষ)তৈরির মাধ্যমে বেকারত্ব দুর করতে সক্ষম হয়েছিল৷ প্রতিষ্ঠানটি প্রতিদিন ছেলে ও মেয়েদের আলাদা আলাদা ভাবে,সে সময় যে কটি ব্যাচকে প্রশিক্ষণ প্রদান করেছিল শুধুমাত্র তারা-ই আজকাল এই সব এলাকার বাঁশ,বেত ও গাছকে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করে তৈরি করছে কুটির শিল্পের নানা রকম বাহারী পণ্যসামগ্রী৷ প্রশিক্ষণের অভাবে এই খাতে নতুন কোন প্রশিক্ষিত বা অভিজ্ঞদের বর্তমানে পাওয়া যাচ্ছেনা বলে জানান প্রত্যন্ত জনপদের সাধারণ মানুষ ৷
আলুটিলা ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প বিভাগে প্রশিক্ষিত একজন সফল ব্যক্তি মৌলবী আব্দুস ছালামের বড় ছেলে মো: হাফিজ জানান, বেকারত্ব দুর করতে আমি ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে বর্তমানে বিভিন্ন আসবাবপত্র তৈরি ও কাঠ দিয়ে বাসাবাড়ীর কাঠামো তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করছি৷ আমি স্ত্রী সন্তান নিয়ে অর্থনৈতিকভাবে ভাল আছি৷
এ বিষয়ে মাটিরাঙ্গা পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো: এমরান হোসেন জানান, বেকাররা হচ্ছে সমাজ ও সংসারের বোঝা স্বরুপ৷ যে সব এলাকায় বেকারত্বের সংখ্যা বেশী তাদের দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি মাটিরাঙ্গা আলুটিলা বটতলী ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কেন্দ্রটি দ্রুত চালু করে বেকার যুবক,যুব-মহিলা ও দু:স্থ মহিলাদের কর্মসংস্থানের পথকে সুগম করতে উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন৷
নাম প্রকাশ না করা শর্তে স্থানীয় এলাকাবাসীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান,সরকারী তদারকির অভাবে আলুটিলা ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প ভবনটি বর্তমানে বখাটে ছেলেদের আড্ডাস্থলে পরিণত হয়েছে৷ প্রায়ই নানা ধরণের অসামাজিক কর্মকান্ড পরিচালিত হয় বলেও জানান৷ তারা মনে করেন,যদি ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পটি পুরোদমে চালু করা হয় তাহলে এই সব অন্যায় ,অনাচার সহজেই বন্ধ হবে৷
অন্যদিকে মাটিরাঙ্গা ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প বিভাগে বর্তমানে যারা কর্মরত আছেন,তারাও অলস সময় পার করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে৷ তাদের দাপ্তরিক কোন কর্মকান্ড ইদানিং দেখা যায় না বলেও জানা গেছে৷