রবিবার ● ২৪ মে ২০২০
প্রথম পাতা » প্রধান সংবাদ » অঘোষিত লকডাউন বিশ্বনাথ থানা করোনায় আক্রান্ত ২৭ পুলিশ
অঘোষিত লকডাউন বিশ্বনাথ থানা করোনায় আক্রান্ত ২৭ পুলিশ
স্টাফ রিপোর্টার :: সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় অধিকাংশ পুলিশের করোনা পজেটিভ হওয়ায় ‘অঘোষিত’ লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে থানা ভবন। আজ রবিবার ২৪ মে পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন থানা পুলিশের ২৭ সদস্য। পুলিশে আক্রান্ত বেশি হওয়ায়, সংক্রমণ রোধে সম্প্রতি এ সিদ্ধান্ত নেয় স্থানীয় প্রশাসন। বিকল্প পুলিশ দিয়ে সদরের একটি স্কুল থেকে উপজেলাবাসিকে দেয়া হচ্ছে পুলিশি সেবা। আইনশৃংখলা নিয়ন্ত্রণ ও জনসাধারণের স্বাস্থ্য সুুরক্ষায় কাজ করছে পুলিশের ওই বিশেষ টিম।
সূত্র জানায়, গেল ১৩ মে প্রথম একসাথে করোনা শনাক্ত হয় থানা পুলিশের ৫ সদস্যের। এরপর ক্রমান্বয়ে একে একে আক্রান্ত হন আরো ২২জন। পুলিশে আক্রান্তের সংখ্যা দাড়ায় ২৭জনে। আক্রান্তদের পাঠানো হয় আইসোলেশনে। এতে স্থবিরতা দেখা দেয় থানা পুলিশের কার্যক্রমে। এ অবস্থায় পুলিশি সেবা অব্যাহত রাখতে নেয়া হয় বিকল্প এ সিদ্ধান্ত। থানা ‘লকডাউন’ করে সিলেট পুলিশ লাইন আনা হয় ২০/২৫ জন পুলিশের একটি ইউনিট। তারা উপজেলা সদরের রামসুন্দর উচ্চ বিদ্যালয়ের নতুন ভবনের অস্থায়ী ব্যরাক থেকে দায়িত্ব পালন করছেন।
পুলিশ সূত্র জানায়, শুরু থেকেই করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সক্রিয় ভূমিকা রাখে থানা পুলিশ। অংশ নেয় নানা মানবিক কাজে। আইনশৃংখলা নিয়ন্ত্রণ, জনসাধারণের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত ও আক্রান্তদের আইসোলেশন নিশ্চিতে রাত-দিন মাঠে দায়িত্ব পালন করেন পুলিশ সদস্যরা। এসব করতে গিয়েই আক্রান্ত হন তারা।
বিশ্বনাথ পুলিশ স্টেশনের ওসি (তদন্ত) রমা প্রসাদ চক্রবর্তী বলেন, আমাদের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় থানার কার্যক্রম পরিচালনায় ব্যঘাত ঘটছে। পুলিশি সেবা নিশ্চিতে সিলেট পুলিশ লাইন থেকে অতিরিক্ত ফোর্স আনা হয়েছে। তারা রামসুন্দর স্কুলের নতুন ভবনে অবস্থান নিয়ে দায়িত্ব পালন করছেন।
এ বিষয়ে কথা হলে বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. কামরুজ্জামান বলেন, আমাদের পুলিশে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। তাই সংক্রমণ রোধে বিকল্প পুলিশি সেবার ব্যবস্থা করা হয়েছে। থানা পুলিশের সুস্থ সদস্যরা ভেতর থেকেই, মাঠে থাকা অন্য সদস্যদের সাথে সমন্বয় করে কাজ করছেন।
বিশ্বনাথে করোনা জয় করে ফিরলেন পুলিশ সদস্য
বিশ্বনাথ :: নবেল করোনাভাইরাস জয় করে নিজ কর্মস্থল সিলেটের বিশ্বনাথ পুলিশ স্টেশনে ফিরেছেন এএসআই মো. হেলাল উদ্দিন। সম্প্রতি চিকিৎসকরা তাকে করোনামুক্ত ও সুস্থ ঘোষণা করে হাসপাতাল ত্যাগের ছাড়পত্র দিলে আজ রবিবার বিশ্বনাথে ফেরেন তিনি।
সূত্র জানায়, গেল ১০ মে কোভিড-১৯ পরীক্ষার জন্যে নমুনা নেয়া হয় এএসআই মো. হেলাল উদ্দিনের। পরে ১৩ মে প্রাপ্ত রিপোর্টে ফলাফল পজেটিভ আসে তার। এরপর থেকেই সিলেট বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। এই ক’দিন চিকিৎসা নেয়ার পর সুস্থতা অনুভব করলে গত ১৯ মে আবারো নমুনা দেন তিনি। এ পরীক্ষা রিপোর্ট আসে ২২ মে। পরীক্ষার শেষ রিপোর্ট নেগেটিভ হওয়ায় আশঙ্কামুক্ত হন থানা পুলিশের এই সদস্য।
এ বিষয়ে কথা হলে এএসআই মো. হেলাল উদ্দিন জানান, এ ক’দিন চিকিৎসকের পরামর্শ যথাযথ ভাবে মেনে চিকিৎসা নিয়েছি। আমাদের এসপি মহোদয়েরও (মো.ফরিদ উদ্দিন পিপিএম) সার্বক্ষণিক তদারকি ছিলো। ঔষধের পাশাপাশি ভিটামিন সি জাতীয় ফলমূল খেতে হয়েছে। আল্লাহর রহমতে সকলের দোয়ার আমি করোনা থেকে পরিত্রাণ পেয়েছি। এখন নির্দেশনা মতো আরো ১৫ দিন নিজ বাসায় হোমকোয়ারেন্টিনে থাকছি আমি।
বিশ্বনাথে ঈদের জামাত হবে মসজিদে মসজিদে
বিশ্বনাথ :: নবেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় এবারের পবিত্র ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হবে প্রত্যেক মসজিদে। স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করেই পড়তে হবে ঈদের জামাত। জনসমাগম রোধে নিষেধ করা হয়েছে ঈদগাহে জামাত আয়োজনের। এবার কোন ঈদগাহে ঈদের জামাত না পড়তে নির্দেশনা দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। বলা হয়েছে, সামাজিক দূরত্ব মেনে মসজিদে ঈদের জামাত আদায়ের। একটি মসজিদে প্রয়োজনে করা যেতে পারে একাধিক ঈদের জামাত। নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে, জামাতে আগে জীবাণুনাশক দ্বারা মসজিদ পরিস্কার করা, মসজিদে কার্পেট না বিছানো, সবাই মাস্ক পরে মসজিদে প্রবেশ করা, দূরত্ব বজায় রাখা, জামাত শেষে কোলাকুলি ও হাত না মেলানো, সবাই নিজ নিজ জায়নামাজ নিয়ে আসা ইত্যাদি।
এ বিষয়ে কথা হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. কামরুজ্জামান বলেন, সংক্রমণ রোধে এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে উপজেলার সকল মসজিদে এ বার্তা প্রেরণ করা হয়েছে।