সোমবার ● ২৫ মে ২০২০
প্রথম পাতা » নওগাঁ » স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদ উদযাপনের আহ্বান জানিয়েছেন ইউএনও - ওসি
স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদ উদযাপনের আহ্বান জানিয়েছেন ইউএনও - ওসি
নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই (নওগাঁ) প্রতিনিধি :: বৈশ্বিক মহামারী করোনা সংকটে আক্রান্ত বিশ্ব সমাজ। এই সংকটে সুনিশ্চিত ও নিরাপদ ভবিষ্যতের স্বার্থে শারীরিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে দেশবাসীকে ঈদ উদযাপনের আহ্বান জানিয়েছেন নওগাঁর আত্রাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ছানাউল ইসলাম।
সোমবার (২৪৫ মে) নিজ বাসভবন থেকে দেশ ও বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসী ভাই ও বোনদের এ আহ্বান জানান তিনি।
ইউএনও ছানাউল ইসলাম বলেন, আমি করোনা আক্রান্তদের নিরাময় কামনা করছি। প্রত্যাশা করছি সুস্বাস্থ্য, নিরবচ্ছিন্ন, শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি। সৌহার্দ্য, সম্প্রীতি, সহমর্মিতা ও ভ্রাতৃত্বের চেতনায় ঈদুল ফিতর আমাদের মধ্যে গড়ে উঠুক মহামারি করোনাসহ সব সংকট জয়ের সুসংহত বন্ধন। পারস্পারিক ভ্রাতৃত্ববোধ সামাজিক দায়বদ্ধতা ও করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে শারীরিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপিত হোক এবারের ঈদ।
করেনা সংকট কেটে যাওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে তিনি বলেন, অতীতে বাংলাদেশে যেভাবে সংকট পেরিয়ে আশার সুবর্ণ প্রদীপ জ্বালেছে, ঠিক একইভাবে করোনা সংকট জয় করে আবারো নব উদ্যোমে কাঙ্ক্ষিত উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ। আসুন মনের গহীনের আলো জ্বেলে অমানিশার আধার দূর করি। সহমর্মিতা সহজাত বাঙালি চেতনায় জাগিয়ে তুলি নিজেকে, সমাজকে ও দেশকে।
তিনি আরো বলেন, করানো যুদ্ধের ফ্রন্টলাইনের যোদ্ধা এবং সুপার সাইক্লোন আম্পানে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন কাজে নিয়োজিতদের ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
ঘরে বসেই পরিবারের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করুন : ওসি মোসলেম উদ্দিন
আত্রাই :: করোনা সংক্রমণ রোধে এবছর সবাইকে ঘরে বসেই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করার অনুরোধ জানিয়ে নওগাঁর আত্রাই থানা অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মোসলেম উদ্দিন বলেছেন, সবাইকে আমি ঘরে বসেই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করার অনুরোধ জানাচ্ছি।
সোমবার (২৫ মে) সকালে একান্ত সাক্ষাৎকারে আত্রাই উপজেলাবাসীর উদ্দেশ্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
ওসি মোসলেম উদ্দিন বলেন, ঈদুল ফিতর মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব হলেও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাংলাদেশে সকল ধর্ম এবং বর্ণের মানুষ এ উৎসবে সমানভাবে সামিল হয়ে থাকেন। ঈদের আনন্দ সকলে ভাগাভাগি করে উপভোগ করেন। কিন্তু এ বছর এক ভিন্ন প্রেক্ষাপটে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হচ্ছে। করোনা নামক এক প্রাণঘাতী ভাইরাস সারা বিশ্বে মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। তার উপর ঘূর্ণিঝড় আমপানের তা-বে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বেশ কয়েকটি জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে এবছর আমরা সকল ধরনের গণ-জমায়েতের উপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছি। কাজেই স্বাভাবিক সময়ের মত এবার ঈদুল ফিতর উদযাপন করা সম্ভব হবে না। ঈদগাহ ময়দানের পরিবর্তে মসজিদে মসজিদে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদের নামাজ আদায় করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
‘ইতঃপূর্বে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীর উদ্বোধন অনুষ্ঠান, স্বাধীনতা দিবস এবং বাংলা নববর্ষের অনুষ্ঠানও জনসমাগম এড়িয়ে রেডিও, টেলিভিশন এবং ডিজিটাল মাধ্যমে উদযাপন করা হয়েছে।’
ঘরে বসে ঈদ উদযাপনের আহ্বান জানিয়ে তিনি আরো বলেন, সবাইকে আমি ঘরে বসেই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ উপভোগ করার অনুরোধ জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে সামর্থ্যবানদের প্রতি আহ্বান জানাই, এই দুঃসময়ে আপনি আপনার দরিদ্র প্রতিবেশী, গ্রামবাসী বা এলাকাবাসীর কথা ভুলে যাবেন না।
আপনার যেটুকু সামর্থ্য আছে তাই নিয়ে তাদের পাশে দাঁড়ান। তাহলেই ঈদের আনন্দে পরিপূর্ণ হয়ে উঠবে আপনার ঘর এবং হৃদয়-মন।
করোনা আক্রান্তদের যারা সেবা দিচ্ছেন তাদের শুভেচ্ছা জানিয়ে ওসি বলেন, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে আমি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি ডাক্তার, নার্সসহ অন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের যারা সামনে থেকে করোনায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
শুভেচ্ছা জানাই পুলিশ, বিজিবি, আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী, সশস্ত্রবাহিনীর সদস্য এবং কেন্দ্রীয় ও মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের যারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ত্রাণসামগ্রী বিতরণসহ সরকারের নানা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন।
অনেকক্ষেত্রে করোনায় আক্রান্ত মৃত ব্যক্তির দাফন ও সৎকারের ব্যবস্থাও তাদের করতে হচ্ছে।
সংবাদকর্মীরা সংক্রমণের ঝুঁকি উপেক্ষা করে করোনা পরিস্থিতি তুলে ধরছেন এবং মানুষকে সচেতন করতে সহায়তা করছেন। তাদেরও ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।
‘এসব কাজ করতে গিয়ে আমাদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য, ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মী, প্রশাসনের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কর্মকর্তা, ব্যাংক কর্মী এবং সংবাদকর্মী করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন। বেশ কয়েকজন ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মী, পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্য, প্রশাসনের কর্মকর্তা এবং ব্যাংক ও সংবাদকর্মী ইতোমধ্যে মারা গেছেন। আমি তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোক-সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।’
এরপর বিদ্রোহী কবি, মানবতার কবি, ইসলামীভাবের কবি কাজী নজরুল ইসলামের কালজয়ী গান “ও মন রমজানের ঐ রোজার শেষে এলো খুশির ঈদ” এর কয়েকটি চরণ উদ্ধৃত করে তিনি তার বক্তব্য শেষ করেন।