সোমবার ● ২৫ মে ২০২০
প্রথম পাতা » গাজিপুর » আমফান ভালোবাসার স্নান
আমফান ভালোবাসার স্নান
এম এস হাবিবুর রহমান :: বাংলা ও ওড়িশাকে তছনছ করে দিয়েছে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত জাগিয়ে ঘূর্ণিঝড় আমফান। ২৩ শে মে-২০২০ ইং তারিখে আমফানের তাণ্ডবে প্রাণ হারিয়েছেন বহু মানুষ৷ ক্ষতি হয়েছে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তির৷গত ৩ দিনে নিজের শক্তি বাড়িয়ে এটি সুপার সাইক্লোন অর্থাৎ ভযঙ্কর ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে। সুপার সাইক্লোনের ধংসলীলায় তছনছ হয়ে গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা ও বাংলাদেশ৷ঘণ্টায় ১৫৫-১৬৫ কিমি বেগে ধেয়েযায় আমফান। ঝড়ের সর্বোচ্চ বেগ ছিল ঘণ্টায় ১৮৫ কিমি। ঘূর্ণিঝড় আমফানের এই ভয়াবহতাকে আয়লার থেকে ভয়ঙ্কর বলেই ব্যাখ্যা করল রাষ্ট্রসংঘ৷
বিশ্বজুড়ে প্রতিটি সমুদ্র অববাহিকায় যে ঘূর্ণিঝড়গুলি তৈরি হয়, আঞ্চলিক ভাবে বিশেষায়িত আবহাওয়া কেন্দ্র এবং ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কতা কেন্দ্রগুলির দ্বারা সেগুলির নামকরণ করা হয়। ওয়ার্ল্ড মেটিরিওলজিকাল অর্গানাইজেশন, ইউনাইটেড নেশন্স ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কমিশন ফর এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগর বা ডব্লিউএমও ইস্কাপের তালিকাভূক্ত দেশগুলি বিভিন্ন ঝড়ের নাম প্রস্তাব করে।
ভালভাবে বেঁচে থাকার জন্য ভালবাসা ছাড়া আর কিছুই লাগেনা।এই ভালোবাসা মানুষের সব কাজের প্রেরণা। অকল্যাণকর কাজেও রয়েছে ভালোবাসা বা প্রেমের নিগূঢ় সম্পর্ক। ভালোবাসা ফকিরকে যেমন রাজার ঐশ্বর্য দান করতে পারে, তেমনি রাজাকে পরিণত করতে পারে পথের ভিখিরিতে।সত্যিকারের ভালোবাসা আমাদের মধ্যে অনেক ধরণের পরিবর্তন আনতে সাহায্য করে। আমাদের ভেতরের মনুষ্যত্বটাকে জাগিয়ে তুলতে সাহায্য করে। সত্যিকারের ভালোবাসার সম্পর্কে থাকা মানুষগুলো পৃথিবীর সবচাইতে সুখী মানুষ হন।
ভালোবাসা হচ্ছে এমন এক ধরনের অনুভূতি, যা অন্য যেকোনো ধরনের অনুভূতির থেকে বেশি শক্তিশালী, যা মানুষের বুদ্ধিবৃত্তির থেকে হৃদয়বৃত্তিতে বেশি সক্রিয় থাকে এবং যা মানুষের মাঝে ভালো অনুভূতি সঞ্চার করে। এই অনুভূতি কেবল নির্দিষ্ট কোনো মানুষের সঙ্গেই কার্যকর থাকবে ব্যাপারটা তা নয়, যেকোনো প্রাণী কিংবা বস্তুগত বিষয়ও থাকতে পারে, থাকতে পারে কোন স্থান বা ঘটনাও।
অথচ, আমরা অনেকেই মনে করি ভালোবাসা মানে একজন নারী ও পুরুষের মধ্যে আন্তরিক ও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। অবশ্যই একজন নারী ও পুরুষের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপিত হওয়ার জন্য ভালোবাসা অনুভূতিটা প্রয়োজন। একজন নারী ও পুরুষ কেন, একজন নারীর সঙ্গে একজন নারীর, একজন পুরুষের সঙ্গে একজন পুরুষের- অর্থাৎ যে কারো সঙ্গে যে কারো সম্পর্ক স্থাপিত হওয়ার জন্য ভালোবাসা জরুরি। ভালোবাসা যেহেতু এক ধরণের অনুভূতির নাম সেহেতু যে কোনো সম্পর্ক থেকে সেই অনুভূতিটা উপলব্ধি করতে পারা প্রয়োজন।
বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরাম (বিএমএসএফ)’র প্রতিষ্ঠাতা ও কেন্দ্রীয় সাধারন সম্পাদক আহমেদ আবু জাফর সাহেব বুধবার দিন রাত সাড়ে নয়টার দিকে ফোন দিয়ে আমাকে বলেন আমাদের এক মহিলা সাংবাদিক ঢাকা থেকে রওনা হয়েছে যাবে কিশোরগঞ্জ এখন রাজেন্দ্রপুর আছে একটু সহযোগিতা করতে হবে ওনাকে। আমি বললাম ঠিক আছে। ওনার নাম্বার দেন। তারপর ওই মহিলা সাংবাদিকের সাথে কথা বলি ওনি সিএজি করে আসছে। সঠিক লোকেশন বলতে পারতেছে না। আর মুষলধারে বৃষ্টি হচ্ছে .. টেনশনে পড়ে গেলাম। কি করা যায়। হঠাৎ মনে পড়লো কাপাসিয়া প্রেস ক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক সিনিয়র সাংবাদিক মোঃ বেলায়েত হোসেন সামিম ভাইয়ের কথা সাথে সাথে ফোন দিলাম । বিষটা জানালাম তখন বাজে রাত সাড়ে দশটা।
এদিকে ওই মহিলা সাংবাদিক ফোন দিয়ে বলতেছে দস্যু নারায়নপুর পুলিশ চেক পোষ্টে আছি সিএনজি আসতে দিচ্ছে না কি করবো। আমি বললাম আপনার নাম্বার বেলায়েত ভাইকে দিয়েছি ভাই আপনাকে ফোন দিবে আর সার্বিক সহযোগিতা করবে। এরই মধ্যে ভাই ফোন দিয়েছে বললো মহিলা সাংবাদিক।
কাপাসিয়া বাসস্ট্যান্ডে ব্রিজের মাথায় সিএনজি পৌঁছে মহিলা সাংবাদিককে নামিয়ে দিয়ে সিএনজি চলে গেছে রানিগঞ্জ রোডে। মহিলা সাংবাদিক কাপাসিয়া ব্রিজ সংলগ্ন যাত্রী ছাউনিতে অবস্থান নেয়। কিছুক্ষনের মধ্যে বেলায়েত ভাইও যাত্রী ছাউনিতে পৌঁছে যায়। বেলায়েত ভাই সার্বিক সহযোগিতা করে ওই মহিলা সাংবাদিককে কিশোরগঞ্জ বাড়িতে পৌঁছে দেয়।
তারপর বেলায়েত ভাই নিজের বাড়িতে এসে আমাকে ফোন দিয়ে বিস্তারিত জানায় ।
আজ রাত সোয়া বারোটার দিকে আমার এক রিলেটিভ ফোন করে জানায় ওর ওয়াইফের সিজারের জন্যে ও নেগেটিভ রক্তের প্রয়োজন কিন্তু কোথাও পাওয়া যাচ্ছে না। আমি বললাম দেখি কি করা যায়। সে বললো ভাই দেখি নয় তাড়াতাড়ি ব্যবস্থা করার চেষ্ঠা করেন ওর অবস্থা সুবিধাজনক নয়। কিছুক্ষণ ভাবলাম কি করা যায় কাকে কাকে ফোন দেয়া য়ায়। জানামতে যাদের রক্তের গ্রুপ ও নেগেটিভ তাদের থেকে টার্গেট করে ফোন দিলাম । ১ম যাকে ফোন দিলাম সে জানায় রক্ত দেয়া যাবে। সে গাজীপুর সদরে আছে কিন্তু এই ঝড়-তুফানের মধ্যে কাপাসিয়া আসবে কিভাবে?
ফোন দিলাম গাজীপুর সদরের এক ফ্রেন্ডকে সে তার বাইক দিয়ে নিয়ে আসলো সাফা-মারুয়া হাসপাতালে।
পরিশেষে বলতে চাই আমাদের ভুল ধারণা এবং বিভ্রান্তি আমাদের চরম অনিষ্টের কারণ হওয়ার আগেই আমাদের নিজেদের শুধরে নিতে নিজের উদ্যোগ নিতে হবে। মনে রাখতে হবে ভালোবাসা এমন এক পাথেয় যা আমাদের জীবনীশক্তিকে বাড়িয়ে দেয় শতগুণ, তাই ভালোকে ভালোর মতো করেই ভালোবাসতে হবে। আপনি যদি মানুষের মঙ্গলের জন্যে কাজ করেন আর মানুষকে সত্যি সত্যি ভালোবাসেন, মন থেকে বড়দের প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন করেন ছোটদের স্নেহ করেন তবে আপনিও মানুষের হৃদয়ের গভীরে স্থান পাবেন।
লেখক : এম এস হাবিবুর রহমান, সম্পাদক ও প্রকাশক, নিউজ সমাহার। সিইও, জোনাকি মিডিয়া গ্রুপ।