বুধবার ● ৩ জুন ২০২০
প্রথম পাতা » সকল বিভাগ » ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন তাসমিন
ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন তাসমিন
আমির হামজা, রাউজান প্রতিনিধি :: গরীবের ঘরে জন্ম নেয়া শিক্ষার্থী তাসমিন আকতারের চোখে মুখে এখন স্বপ্নছোঁয়ার আশা। সে প্রাথমিক সমাপনী ও জুনিয়ার স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়ার ধারাবাহিকতা বজায় রেখে এবার এসএসসি পরীক্ষাতেও অর্জন করেছে জিপিএ-৫। এখন তার সাধনা স্বপ্নছোঁয়ার সিঁড়ির শীষে উঠে মানবিক গুনাবলি সম্পর্ণ একজন ডাক্তার হওয়া। রাউজান পৌরসভার ছিটিয়াপাড়ার গরীব সিএনজি চালক মোহম্মদ শাহজাহান দুলাল ও রাবেয়া বেগমের চার কন্যা সন্তানের মধ্যে তাসমিন তৃতীয়। সংসারের একমাত্র উপার্জনকারী বাবা বিগত পাঁচ বছর ধরে ব্রেন ষ্টোকে আক্রান্ত হয়ে ঘরে। মা রাবেয়া বেগম অসহায় অবস্থার মধ্যে পড়ে আত্মীয় স্বজন ও পাড়া প্রতিবেশিদের সহযোগিতায় সংসার চালানোর পাশাপাশি বড় দুই কন্যাকে বিয়ে দিয়ে সংসারের বোঝা কিছুটা কমিয়ে দায়মুক্ত হয়েছে। ঘরে অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে রাবেয়া কন্যা তাসমিন ও ছোট কন্যাকে নিয়ে এখন সংসারের ঘানি টানচ্ছেন। পরিবারের এমন টনাপোড়নের মধ্যে গত পাঁচ বছর আগে তাসমিনদের স্কুলে যাওয়া আসা বন্ধ হয়ে যায়। পরিবারটির এমন দুসময়ে ত্রাণ কর্তা হয়ে আসেন পাড়ার ঐতিহ্যবাহী চৌধুরী পরিবারের সন্তান তরুন রাজনীতিক সাইফুল ইসলাম চৌধুরী রানা। তিনি পরিবারটিকে আশ্বস্থ করেন তাসমিনদের লেখা পড়া চলিয়ে যাওয়ার সহায়তা দেয়ার। সেই থেকে তাসমিনরা স্বপ্ন দেখতে শুরু করে স্বপ্ন জয়ের। তাসমিন ছিটিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে সমাপনী ও রাউজানের কৃতি সন্তান উপজেলা আওয়ামীলীগের মরহুম সভাপতি শফিকুল ইসলাম চৌধুরী প্রতিষ্ঠিত সাজিনা চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জুনিয়ার স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা ও এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে অর্জন করেছে জিপিএ-৫।
কৃতি ছাত্রী তাসমিনা বলেছেন তাকে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখিয়েছেন এলাকার কৃতি সন্তান সজিনা চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয় এর পরিচালনা কমিটির সভাপতি সাইফুল ইসলাম চৌধুরী রানা। বিভিন্ন ভাবে আমার পরিবারকে সহায়তা করেছেন তরুন সমাজ সেবক আলহাজ্ব ফরহাদ গণি নয়ন। তাদের সাহার্য্য সহযোগিতায় আমি এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা পেয়েছি। আমার ছোট বোনও এখন সাজিনা চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয় এর নবম শ্রেণির ছাত্রী। সে জানায় আমার কোনো ভাই নাই। একারণে বাবা মা দুজনেরই স্বর্প্ন ছিল তাদের চার কন্যা সন্তানকে লেখাপড়া শিখাবেন। কিন্তু বাবা রোগাক্রান্ত হয়ে গেলে বাবা-মা’র স্বর্প্ন ভেঙ্গে যায়। বড় বোন নবম শ্রেণি ও মেঝ বোনকে কলেজ থেকে নামিয়ে এনে একে একে বিয়ে সিড়িঁতে বসিয়ে দিতে হয়েছে।
কৃতি শিক্ষর্থী তাসমিনা সাইফুল ইসলাম চৌধুরী রানাসহ, ছিটিয়াপড়া প্রাইমারী ও সাজিনা চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক ও পরিচলনা কমিটির সকল সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়ে বলেছে তাদের অনুপ্রেরণা না পেলে এতটুকু অর্জন সম্ভব হতো না। আমার আশা সকলের সহযোগিতায় পড়ালেখার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারব। সকলের সহযোগিতা নিয়ে আগামীতে একজন মানবিক গুনাবলি সম্পর্ণ ডাক্তার হওয়ার আশায় আছি। আমি সকলের কাছে দোয়া প্রার্থনা করছি।