মঙ্গলবার ● ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫
প্রথম পাতা » জাতীয় » সরকারের নীতি নির্ধারনী মহল পার্বত্য অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় গুলি নিয়ে উদাসীন !
সরকারের নীতি নির্ধারনী মহল পার্বত্য অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় গুলি নিয়ে উদাসীন !
ষ্টাফ রিপোর্টার :: ২৯ সেপ্টেম্বর : ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চুক্তির পর পার্বত্য চট্টগ্রাম রাঙামাটি,বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি জেলায় জাতীয় ও আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল গুলির জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ক্ষমতায়নের হিসাব নিকাশ পর্যালোচনা ৷
পার্বত্য জেলা গুলিতে সক্রিয় জাতীয় রাজনৈতিক দল গুলি হচ্ছে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ,বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল(বিএনপি),বাংলাদেশ জামায়েত ইসলাম ও জাতীয় পার্টি(এরশাদ) এছাড়াও বেশ কয়েকটি বামপন্থী রাজনৈতিক দলের কার্যক্রম চোখে পড়ে ৷
এছাড়াও বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন ছাড়া পার্বত্য জেলায় রয়েছে পাহাড়ি ও বাঙ্গালীদের বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল বা সংগঠন এদের ভিতর পাহাড়িদের পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি(পিসিজেএসএস-সন্তু গ্রুপ),ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ- পার্বত্য চুক্তি বিরোধী প্রসিত গ্রুপ), পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (সংস্কারপস্থি), পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (করুনালংকার ভিক্ষু গ্রুপ), বাঙ্গালীদের পার্বত্য গণ পরিষদ, পার্বত্য সমধিকর আন্দোলন, পার্বত্য বাঙ্গালী পরিষদ, পার্বত্য যুব ফ্রন্ট,পার্বত্য ছাত্র ঐক্য পরিষদ, পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদ ইত্যাদি ৷
মুলতঃ গত ২০১৫ সালের ৫ ই জানুয়ারী বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ৩য় মেয়াদের ক্ষমতায় আসার পর পার্বত্য জেলা গুলিতে ক্ষমতায় নড়ে চড়ে বসে সাবেক গেরিলা নেতার নেতৃত্বাধীন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস-সন্তু গ্রুপ)৷
২০১৫ সালে বিএনপি দলীয় জোট ভোট বর্জন করায় (২০ দলীয় জোটের রাজনৈতিক ভাষায় ভোটার বিহীন নির্বাচন) রাঙামাটি জেলা বিএনপি’র একজন পাহাড়ি নেতা গোপনে পিসিজেএসএস-সন্তু গ্রুপ এর সাথে আতাত ও ষড়যন্ত্র করে রাঙামাটি - ২৯৯ আসনে সাংসদ সদস্য হিসাবে ক্ষমতায় অধিষ্টিত করেন কট্টরপস্থী পিসিজেএসএস- সন্তু গ্রুপ এর নেতা ঊষাতন তালুকদারকে ৷
বেসরকারী ভাবে ঘোষিত নির্বাচনী ফলাফলে দেখা যায় জাতীয় নির্বাচনের পর চতুর্থ উপজেলা নির্বাচনে পার্বত্য জেলার উপজেলা গুলিতে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ পায় রাঙামাটি জেলায় ১০টি উপজেলার মধ্যে উপজেলা চেয়ারম্যান ৩ জন,ভাইস চেয়ারম্যান ২ জন,মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ১ জন, ২০ দলীয় বিএনপি পায় চেয়ারম্যান ২ জন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ২ জন, জামায়াত ভাইস চেয়ারম্যান ১ জন, ইউপিডিএফ ভাইস চেয়ারম্যান ২ জন, পিসিজেএসএস-সন্তু গ্রুপ চেয়ারম্যান ৬জন, ভাইস চেয়ারম্যান ৬ জন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ৭ জন, পিসিজেএসএস- সংস্কারপস্থি গ্রুপ চেয়ারম্যান ১ জন, ভাইস চেয়ারম্যান ১ জন ও স্বতন্ত্র মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ১ জন ৷
ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ বান্দারবান জেলায় ৭টি উপজেলার মধ্যে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে ১ টিও পায়নি,ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১ টিও পায়নি, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ১ জন, ২০ দলীয় বিএনপি পায় চেয়ারম্যান ৩ জন, ভাইস চেয়ারম্যান ৪ জন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ৪ জন, জামায়াত চেয়ারম্যান ১ জন, ইউপিডিএফ বান্দরবানে উপজেলা পর্যায়ে কোন প্রার্থী দেয় নাই ৷ পিসিজেএসএস-সন্তু গ্রুপ চেয়ারম্যান ৩ জন, ভাইস চেয়ারম্যান ২ জন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ১ জন, পিসিজেএসএস- সংস্কারপস্থি গ্রুপ এর কোন প্রার্থী জয়লাভ করেনি ও স্বতন্ত্র কোন প্রার্থীও জয়লাভ করেনি ৷
ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ পায় খাগড়াছড়ি জেলায় ৮টি উপজেলার মধ্যে উপজেলা চেয়ারম্যান ১ জন,ভাইস চেয়ারম্যান ৩ জন,মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ১ জন, ২০ দলীয় বিএনপি পায় চেয়ারম্যান ২জন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ২জন, ভাইস চেয়ারম্যান ২জন, ইউপিডিএফ চেয়ারম্যান ৪ জন,ভাইস চেয়ারম্যান ২ জন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ২জন, পিসিজেএসএস-সন্তু গ্রুপ খাগড়াছড়িতে উপজেলা পর্যায়ে কোন প্রার্থী দেয় নাই ৷ পিসিজেএসএস- সংস্কারপস্থি গ্রুপ চেয়ারম্যান ১ জন, ভাইস চেয়ারম্যান ১ জন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ২ জন ও স্বতন্ত্র মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ২ জন ৷
উপ নির্বাচনসহ ৩ পার্বত্য জেলার ২৫টি উপজেলার মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ রাঙামাটি,বান্দরবান ও খাগড়াছড়িতে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানসহ মোট ১৩ টি পদ পায়, ২০ দলীয় বিএনপি পায় চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানসহ মোট ২১টি পদ, জামায়াত চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানসহ মোট ২টি পদ পায়, ইউপিডিএফ চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানসহ মোট ১১টি পদ পায়, পিসিজেএসএস-সন্তু গ্রুপ এর চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানসহ মোট ২৫টি পদ পায়, পিসিজেএসএস- সংস্কারপস্থি গ্রুপ পায় ৫টি পদ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা মাত্র ৩টি পদে জয়লাভ করে ৷
এছাড়াও পিসিজেএসএস-সন্তু গ্রুপ পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও রাঙামাটি- ২৯৯ আসনের ক্ষমতায় রয়েছে ৷
বর্তমান ক্ষমতাসীন মহাজোট সরকারের মন্ত্রী সভায় রয়েছে বেশ কয়েকজন মন্ত্রী পদ মর্যাদার রাজনৈতিক নেতা যারা পিসিজেএসএস-সন্তু গ্রুপ এর জোর সমর্থক ও রাজনৈতিক মিত্র হিসাবে চিহ্নিত ৷
সকল ক্ষেত্রে পিসিজেএসএস-সন্তু গ্রুপ এর নেতা কর্মীরা সামরিক ও বেসামরিক প্রশাসনের অনুকুল্য এবং সহযোগিতা পেয়ে আসছে বলে পাহাড়ে বসবাসরত পাহাড়ি ও বাঙ্গালীদের বড় একটি অংশের অভিযোগ রয়েছে ৷
ফলে পিসিজেএসএস-সন্তু গ্রুপ পার্বত্য চুক্তির আড়ালে যে কোন সময়ে জুম্ম ল্যান্ড ঘোষণা দিতে পারে ৷
পার্বত্য অঞ্চলের অভিজ্ঞ মহলের ধারনা কেন্দ্রীয় সরকারের নীতি নির্ধারনী মহল পার্বত্য অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় গুলি নিয়ে উদাসীন ৷
আপলোড : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫ : বাংলাদেশ : সময় : রাত ৯.৭মিঃ