সোমবার ● ৮ জুন ২০২০
প্রথম পাতা » ঝালকাঠি » করোনা উপসর্গ নিয়ে ঝালকাঠিতে দুই ব্যক্তির মৃত্যু
করোনা উপসর্গ নিয়ে ঝালকাঠিতে দুই ব্যক্তির মৃত্যু
গাজী মো.গিয়াস উদ্দিন,ঝালকাঠি প্রতিনিধি :: ঝালকাঠিতে করোনা উপসর্গ নিয়ে ঝালকাঠির নলছিটিতে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। আজ সোমবার সকালে তিমিকাঠি গ্রামে একজন এবং কুমারখালী গ্রামের অপরজনের মৃত্যু হয়। দপদপিয়া ইউপি চেয়ারম্যান ছোহরাব হোসেন বাবুল মৃধা জানান, কুমারখালী গ্রামের লাবলু সিকদার (৪৫) নামে এক ব্যক্তি ঈদের পর থেকে জ্বর, সর্দি ও কাশিতে আক্রান্ত ছিলেন। বাড়িতে বসেই তিনি চিকিৎসা নিয়েছেন। সোমবার সকালে তাঁর অবস্থা গুরুতর হলে বরিশাল নেওয়ার পথে মৃত্যু হয়। অপর দিকে তিমিরকাঠি গ্রামের ব্যবসায়ী আবদুর রশীদ হাওলাদার (৬৫) নামে এক বৃদ্ধের দোকানের মধ্যেই মৃত্যু হয়। তিনিও চারদিন ধরে জ্বর ও বুকে ব্যাথায় আক্রান্ত ছিলেন। রাতে দোকানের মধ্যে ঘুমানোর পরে সকালে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। তাদের দুইজনেরই নমুনা সংগ্রহ করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। স্থানীয় সেচ্ছাসেবী সংগঠন শাবাব ফাউন্ডেশন তাদের দাফন কার্য সম্পন্ন করে। অন্যদিকে ঝালখাঠিতে করোনা আক্রান্ত দুই পুলিশ সদস্যর মধ্যে একজনকে গুরুতর অবস্থায় ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। অপরজনকে পুলিশ লাইনসে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন ডা. শ্যামল কৃষ্ণ হাওলাদার।
নিরাপত্তাহীনতায় ঢাবি ছাত্রের পরিবার
ঝালকাঠি :: রাজাপুরের বামুনখান গ্রামের বাসিন্দা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মো. ইসমাইল হোসাইন ও তার বাবা ফারুক হোসেনকে নানাভাবে হয়রানী করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আর এ অভিযোগ একই গ্রামের বাসিন্দা রাজাপুর উপজেলা ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি জামায়েত নেতা মো. সাইদুল ইসলামের বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে ইসমাইল হোসাইন গত শনিবার রাজাপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি এবং সোমবার ঝালকাঠি প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছে। রাজাপুর থানায় দায়ের করা ২২৮ নং (৬/৬/২০২০) জিডি এবং সোমবার ঝালকাঠি প্রেসক্লাবে ইসমাইল হোসাইনের সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য থেকে জানা যায়, রাজাপুর উপজেলার বামুন খান গ্রামের মো. ফারুক হোসেনের ছেলে মো. ইসমাইল হোসাইন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবী বিভাগের চতুর্থ বর্ষে পড়াশোনা করে। করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় সম্প্রতি সে বাড়িতে আসে। গত ২০ মে বাড়ির সামনে চায়ের দোকানে বসে তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে রাজাপুর উপজেলা ছাত্র শিবিরের সাবেক সভাপতি এবং উপজেলা জামায়েতের আমির মাওলানা আবুবকরের জামাতা সাইদুল ইসলামের দুই মামাত ভাই ওয়াহিদুজ্জামান এবং কামরুজ্জামানের সাথে ইসমাইল হোসাইনের হাতাহাতি এবং তর্কাতর্কি হয়। এ ঘটনার জেরে গত ২৫ মে সাইদুল ইসলাম, তার দুই মামাত ভাই ওয়াহিদুজ্জামান ও কামরুজ্জামান মিলে ইসমাইলকে লাঠি দিয়ে ব্যাপক মারধর করে। মারধরের ঘটনায় উভয় পক্ষ রাজাপুর থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ দায়ের করলে থানার ওসি এসআই খোকনকে তদন্তের দায়িত্ব দেন। এসআই খোকনের মধ্যস্ততায় উভয় পক্ষ তিনশত টাকার স্টাম্পে স্বাক্ষর করে দুইজন ইউপি সদস্যসহ পাঁচজন গন্যমান্য ব্যাক্তিকে সালিশ মনোনীত করেন। সালিশদাররা। শুক্তাগড় ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়ার্ডের সদস্য শাহজাহান খান এবং ২নং ওয়ার্ড সদস্য মনিরুজ্জামানসহ পাঁচজন সালিশদার তাদের রোয়েদাদে উল্লেখ করেন বারবার ইসমাইলের ওপর আক্রমন করা হয়েছে। তারপরও উভয় পক্ষ একই এলাকার আত্মীয় স্বজন হওয়ায় থানার দরখাস্ত উঠিয়ে আনবে এবং উভয় পক্ষ একে অপরের বাড়িতে দাওয়াত খেয়ে মিলেমিশে বসবাস করবে। সালিশদারদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওয়াহিদুজ্জামান ও কামরজ্জামান পরিবার পরিজন নিয়ে ইসমাইলদের বাড়িতে ৩০ মে মধ্যহ্নভোজে অংশ নেয়। উভয় পক্ষ শন্তিপিূর্ন সহবস্থান মেনে নিলেও জামায়েতে ইসলামীর মুখপাত্র দৈনিক সংগ্রামের উপজেলা সংবাদদাতা সাইদুল ইসলাম ঘটনা ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইসমাইল হোসাইনকে সন্ত্রাসী এবং শিবির ক্যাডার উল্লেখ করে ফেসবুকে আপত্তিকর পোস্ট দেয় এবং ১০ থেকে ১২ টি অনলাইন পোর্টালে মিথ্যা আজগুবি এবং মানহানীকর সংবাদ প্রকাশ করে। উক্ত সংবাদ দেখতে পেয়ে ইসমাইল ও তার বাবা ফারুক হোসেনকে সাইদুল ইসলামের কাছে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশের কারণ জিজ্ঞেস করলে সাইদুল তাদেরকে জীবননাশের হুমকি দিয়ে বলে, ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে পড়ে আমি আমি ঠেকো, একাধিক মামলা মোকদ্দমা করে জীবন অন্ধকার বানিয়ে দেব, চাকরী করে খাওয়া লাগবে না। ইসমাইল হোসেন বলেন, আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে সার্জেন্ট জহিরুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের সক্রিয় সদস্য কোনকালে শিবিরের বা অন্য রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলাম না। অথচ আমার এলাকার বাসিন্দা রাজাপুর উপজেলা শিবিরের দুইবারের সাবেক সভাপতি, বর্তমানে ইউনিয়ন জামায়াত নেতা এবং উপজেলা জামায়েতের আমিরের মেয়ে জামাই সাইদুল আমাকে শিবির বানানোর ষড়যন্ত্র করছে। আমি থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অভিযোগ দিয়েছি। থানা মামলা না নিলে আদালত খুললে আমি সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করবো। অভিযুক্ত শিবির নেতা সাইদুল ইসলাম বলেন, আমি ২০০৯ সাল পর্যন্ত শিবিরের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলাম। এখন আমি ছাত্রলীগ করি। আমি যেহেতু দৈনিক সংগ্রামসহ বিভিন্ন অনলাইনে সাংবাদিকতা করি তাই এলাকার এক বাড়িতে ইসমাইল হামলা করলে বাড়ির লোকজনের অভিযোগের ভিত্তিতে আমি সংবাদ প্রকাশ করেছি। ইসমাইলের সাথে আমার ব্যাক্তিগত কোন দ্বন্দ নাই। রাজাপুর উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি আহসান হাবিব রুবেল জানান, ‘‘সাইদুল ইসলাম ছাত্রলীগের সাথে সম্পৃক্ত নয়’’ তার জানা মতে কখন ছিলও না বলেও জানান উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি। রাজাপুর থানার ওসি মো. জাহিদ হোসেন বলেন, ইসমাইল হোসেন ডিজিটিাল নিরাপত্তা আইনে সাইদুল ইসলামের বিরুদ্ধে একটি দরখাস্ত এবং একটি সাধারণ ডায়েরী করেছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।